এইডস আক্রান্ত প্রেমিকের হাতে থেকে রেহাই পেতে ভাড়াটে খুনির
মাধ্যমে তাকে চিরতরে সরিয়ে দিয়েছে ভারতের এক নারী। দীর্ঘ তিন বছরের প্রেম
থাকলেও এইডসের ভয়ে ৭০০০০ রুপির বিনিময়ে এ কাজ করিয়েছে অযোধ্যা নগরীর ওই
নারী। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, অযোধ্যা নগরীর ব্যাংক অব মহারাষ্ট্রের
অফিস কর্মকর্তা দিপক পুরকেকে গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি নগরীর পুনাপুর এলাকার
নির্জন স্থানে নিয়ে হত্যা করা হয়।
এরপর মোবাইল ফোনের রেকর্ড ধরে পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে
মূল পরিকল্পনাকারী অনিতা চৌধুরীসহ চারজনকে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করে। অনিতার
পাশাপাশি এ খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সহোদর তেজরাম ও মুকেশ মুণ্ডেকার এবং
কিশোর কাৎওয়েকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদের প্রত্যেকেরই বয়স ২০-এর কোটায়।
পুলিশ বলেছে, দুই সন্তানের পিতা দিপক অন্য এক নারীর সঙ্গে প্রণয়ে জড়িত
থাকার পরেও তিন সন্তানের জননী অনিতার সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত রাখে। অনিতার
স্বামী পাঁচ বছর আগে মারা গেছেন। নিজের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দিপকেরও
সম্পর্ক ভাল ছিল না। তাই তিনি প্রায়ই বাড়ির বাইরে রাত কাটাতেন। অনিতার
বাড়িতেও তিনি বেশ কয়েকবার রাত যাপন করেছেন। পুলিশ দাবি করছে, অনিতাকে অনেক
টাকা পয়সা দিয়েছে দিপক। তার মোটরসাইকেলটিও অনিতা নিজের বাড়িতেই রেখে
দিয়েছিল। দিপকের শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে হঠাৎ তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি
ঘটে। অনিতার সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানতে পেরে তার পরিবারের সদস্যরাও অনিতার
ওপর চড়াও হয়েছিল। সে বিষয়টি পুলিশকে জানিয়ে অনিতা ২০১০ সালে দিপকের বাবা-মা
এবং ভাই-বোনের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করেছিল। পুলিশ
বলছে, দিপকের স্বাস্থ্যগত বিষয়টি নিয়েই অনিতার সঙ্গে তার কথা কাটাকাটির
সূত্রপাত ঘটে। এরপর অনিতা তাকে সরিয়ে দিতে কিশোরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার
সহযোগিতা চায়। কিশোর পরে তেজরাম এবং মুকেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পুলিশ
প্রথমে সংগৃহীত কললিস্ট ধরে চারটি সন্দেহভাজন নম্বর নিয়ে তদন্তে নামে।
অনিতা প্রথমে তার একটি নম্বর মালিকানার কথা স্বীকার করলেও পুলিশি তদন্তে
দেখা যায়, তিনি একাধিক সিম ব্যবহার করেন। পুলিশ বলেছে, হত্যাকাণ্ডের
পরিকল্পনা করার জন্য একটি সিম ব্যবহার করা হয়েছিল। এ কাজ বাস্তবায়নের জন্য
মুকেশকেও একটি মোবাইল ফোন দিয়েছিল অনিতা। ঘটনার দিন দিপককে তার বাইক নিয়ে
যাওয়ার জন্য বাড়িতে ডেকেছিল অনিতা। কিশোর দিপককে বাইকের পেছনে বসিয়ে নির্জন
স্থানের দিকে রওনা হয়। আরেকটি বাইকে মুকেশ এবং তেজরাম তাকে অনুসরণ করে।
তারা সবাই দিপককে বলেছিল যে, পুনাপুরে তার বাইক রাখা রয়েছে। সেখানে পৌঁছেই
তারা তাকে পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করে।
পুলিশ বলেছে মুকেশকে তার
বান্ধবীর সহযোগিতার মাধ্যমেই চিহ্নিত করা হয়েছে। অনিতা এ পর্যন্ত তাদেরকে
৫৫০০০ রুপি দিয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। পুলিশ হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ
হিসেবে বাইক এবং অন্যান্য প্রমাণাদিও উদ্ধার করেছে।
No comments:
Post a Comment