Monday, January 4, 2016

ফায়ারিং স্কোয়াড সৌদি আরবে ১ দিনে ৪৭ মৃত্যুদ- কার্যকর

একই দিনে শিয়া মতাবলম্বী একজন ধর্মীয় নেতা সহ ৪৩ জনের শিরñেদ করা হয়েছে সৌদি আরবে। এ ছাড়া ওই দিনেই ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়েছে ৪ জনের। এ নিয়ে গতকাল শনিবার শিরñেদ ও ফায়ারিং স্কোয়াডে হত্যা করা হলো মোট ৪৭ জনকে। এর মধ্যে রয়েছে আল কায়েদার কয়েকজন সদস্য। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ইরান। ইরানের শীর্ষ এক ধর্মীয় নেতা সতর্ক করে দিয়েছেন সৌদি আরবকে। তিনি বলেছেন, ইতিহাসের পাত থেকে মুছে দেয়া হবে ক্ষমতাসীন আল সাউদ পরিবারকে। ওদিকে ইয়েমেনের হুতি গ্রুপ নিমরকে ‘শহীদ’ বলে বর্ণনা করেছেন। লেবাননের যোদ্ধা গোষ্ঠী হেজবুল্লাহ বলেছে, এর মাধ্যমে রিয়াদ বড় একটি ভুল করেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর দিয়ে বলেছে, এর বেশির ভাগই সৌদি আরবে আল কায়েদার হামলায় জড়িত থাকার দায়ে অভিযুক্ত। তারা এক দশক আগে এ হামলা চালিয়েছিল। তবে এর মধ্যে শিয়া মতাবলম্বী ধর্মীয় নেতা নিমর আল নিমর সহ চারজন সাম্প্রতিক সময়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের ওপর গুলি করার দায়ে অভিযুক্ত। সৌদি আরবের ১২টি শহরে এসব শিরñেদ করা হয়। সেখানে চারজনকে ফায়ারিং স্কোয়ারে হত্যা করা হয়। বাকিদের করা হয় শিরñেদ। শরিয়া আইন অনুযায়ী, সবচেয়ে ভয়াবহ শাস্তি হিসেবে মৃতদেহগুলো ফাঁসিকাষ্ঠ থেকে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনার পর পরই সৌদি আরবের প্রধান আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরান নিন্দা জানিয়েছে। বিশেষ করে ধর্মীয় নেতা নিমরকে হত্যা করায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তারা। ওদিকে, স্থানীয় অধিবাসীরা বলছেন, বড় ধরনের প্রতিবাদ বিক্ষোভের আশঙ্কায় শিয়া অধ্যুষিত প্রদেশগুলোতে সৌদি আরবের পুলিশ কড়া নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। সৌদি আরবে একসঙ্গে এতগুলো মৃত্যুদ- কার্যকরের ঘটনা অনেক বছর ধরে ঘটে নি। এর আগে সর্বশেষ ১৯৮০ সালে হত্যা করা হয়েছিল ৬৩ জন কট্টরপন্থি বিদ্রোহীকে, তারা ১৯৭৯ সালে মক্কায় গ্রান্ড মসজিদ দখল করেছিল। গতকাল যে ৪৭ জনের মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয় তার মধ্যে ৪৩ জন সুন্নি মতাবলম্বী কট্টরপন্থি। এর মধ্যে কিছু আছে আল কায়েদার পরিচিত নেতা। তারা ২০০৩ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে পশ্চিমা বিভিন্ন অফিস, সরকারি ভবন, কূটনৈতিক মিশনে হামলা চালিয়ে কয়েক শত মানুষকে হত্যা করেছিল। অন্যদিকে নিহতদের মধ্যে নিমর সহ চারজন শিয়া রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ২০১১ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ প্রতিবাদের সময় কাতিফে গুলি ও পেট্রোল বোমা হামলা করে বেশ কিছু পুলিশকে হত্যা করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইস্টার্ন প্রদেশের কাতিফ জেলায় নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেছে সৌদি আরব পুলিশ। ওদিকে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, নিমরের মৃত্যুদ- কার্যকর করার পর বেশ কিছু মানুষ বিক্ষোভ করেন বাহরাইনে। এ সময় বাহরাইনের পুলিশ তাদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। মৃত্যুদ- কার্যকর নিয়ে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে একটি বিবৃতি দেয়া হয়। সরকারি অন্যান্য মিডিয়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মৃত্যুদ- কার্যকর করা ব্যক্তিদের নাম ও তাদের অপরাধের ধরন প্রকাশ করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা বিশ্লেষণকারী মুস্তাফা আলানি বলেন, এসব ব্যক্তির শাস্তি কার্যকরের জন্য সরকারের ওপর বড় ধরনের চাপ ছিল।

No comments:

Post a Comment