Friday, April 6, 2012

পাকিস্তানে সেনা অভ্যুত্থানের কোন তথ্য জানত না আইএসআই

পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে বিন লাদেনকে হত্যা করার জন্য যখন রেডব্লক বসায় যুক্তরাষ্ট্র, তখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের কোন পরিকল্পনা করেনি। বৃহস্পতিবার বিচারবিভাগীয় এক কমিশনের শুনানিতে এ কথা বলেছেন পাকিস্তানের সেনা গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) সাবেক প্রধান আহমাদ সুজা পাশা। এমন কোন হুমকি তৈরি হলে আইএসআই সেটা জানতো। অভ্যুত্থানের আশঙ্কা করে মার্কিন সহায়তা চেয়ে পাঠানো এক রহস্যজনক মেমোর তদন্তে গঠিত কমিশনের শুনানিতে এ কথা বলেন সুজা পাশা। গত বছরের মে মাসে অ্যাবোটাবাদে মার্কিন হামলায় ওসামা বিন লাদেন নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানের সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হলে স্বাক্ষরবিহীন ওই মেমোতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাওয়া হয়। পাকিস্তানি বংশোদভূত মার্কিন ব্যবসায়ী মনসুর ইজাজ মেমোর বিষয়টি প্রকাশ করার পর ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের বিচারবিভাগীয় কমিশন গঠন করা হয়। মি. ইজাজ দাবি করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত হোসাইন হাক্কানির ইঙ্গিতে ওই খসড়া মেমোটি মার্কিন সামরিক বাহিনীকে দেয়া হয়। একই সঙ্গে ইজাজ দাবি করেছিলেন, বিন লাদেনের নিহত হওয়ার পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেছিল। সরকার ইজাজের দাবিকে অস্বীকার করেছিল। মি. পাশাও শুনানিতে তার দাবিকে বাতিল করে দেন। তিনি বলেন, মার্কিন রেডব্লকের পর সেনাবাহিনীর এমন কোন পরিকল্পনা ছিল না। তবে ইজাজের সঙ্গে লন্ডনে বসার কথা স্বীকার করেছেন পাশা। তিনি বলেন, আইএসআই’র মিডিয়া উইং তাকে জানিয়েছিল ফিনান্সিয়াল টাইমে প্রকাশিত হওয়া ইজাজের প্রবন্ধের কথা। যেখানে তিনি প্রথমবারের মতো মেমো কেলেঙ্কারির কথা বলেছিলেন। এরপর তিনি সেনা নেতৃত্বের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন বলে জানিয়েছেন সাবেক এই শীর্ষ গোয়েন্দা। তিনি বলেন, আমি মেমো নিয়ে লেখা প্রাবন্ধিকের ব্যাপারে জানতে ও তার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য সোর্স ঠিক করেছিলাম। যার মাধ্যমে তিনি পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে আমার সঙ্গে বসতে ও বিস্তারিত জানাতে রাজি হয়েছেন। পাশা বলেন, সামরিক নেতৃত্ব তাকে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে বলার পর ২২শে অক্টোবর লন্ডনের এক হোটেলে তার সঙ্গে ইজাজের বৈঠক হয়। চার ঘণ্টার ওই বৈঠকে ইজাজ তাকে নিজ ব্ল্যাকবেরিতে ৩৫টি মেসেজ দেখান যেগুলো হাক্কানি ও ইজাজের মধ্যে বিনিময় হয়েছিল। তারপর পাশা এসব বিষয় ২৪শে অক্টোবর মৌখিকভাবে জানান সেনাপ্রধান আশফাক পারভেজ কিয়ানিকে। একই বিষয়ে তিনি প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেন ১৮ই নভেম্বর ২০১১। এই কমিশনের সময় শেষ হওয়ার তারিখ ছিল ৩১শে মার্চ। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তাদের মেয়াদ ৬ সপ্তাহ বাড়িয়েছে। ফলে বিস্তারিতভাবে বিষয়টি নিয়ে শুনানি করছেন কোর্ট। বৃহস্পতিবারের শুনানির পর কমিশন সাবেক যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত হোসাইন হাক্কানিকে তার মতামত জানাতে বলেছে ও তার ব্ল্যাকবেরির তথ্যগুলো দিতে বলেছে। একই সঙ্গে তার ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার থাকলে তাও জানাতে বলেছেন আদালত। একই সঙ্গে হাক্কানির অসুস্থতা দেখিয়ে শুনানি থেকে অব্যাহতি নিতে করা আবেদন বাতিল করে দিয়েছে কমিশন এবং সুপ্রিম কোর্ট তার বিদেশ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জবানবন্দি নেয়ার আবেদনের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত দেয়ার আগ পর্যন্ত তাকে শুনানিতে আসতে বলেন। Source- the daily Manabzamin

No comments:

Post a Comment