ইরাকি তরুণীর পরনে টাইট ফতুয়া, জিন্স

ইরাকে হাল আমলে নতুন এক ফ্যাশন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে
তরুণ-তরুণীদের মধ্যে। তরুণদের মধ্যে স্পাইকি চুলের ফ্যাশনের সঙ্গে টাইটফিট
জিন্সের পশ্চিমা স্টাইল চালু হয়েছে। নারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে টাইট ফতুয়া ও
স্কার্ফের সঙ্গে টাখনুর বেশ উপর পর্যন্ত ছোট স্কার্ট বা জিন্সের আঁটসাঁট
প্যান্ট। তরুণীদের মধ্যে এ ধরনের পোশাক বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। রাস্তায়
মার্কেটে এমন স্টাইল অহরহ চোখে পড়ছে। বাদ যাচ্ছে না বিভিন্ন ধর্মীয়
প্রতিষ্ঠানও। বিভিন্ন মাজার ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এমন পোশাক পরে আসছেন
নারীরা। মূলত রমজানের পর থেকে এমন পোশাকের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে
বেড়েছে। এই ফ্যাশন খুব বেশি দেখা যাচ্ছে শিয়া অধ্যুষিত কাদিমিয়্যাহ ও
দিওয়ানিয়্যাহ এলাকায়। ফলে এতে বাদ সেধেছেন সেখানকার শিয়া ধর্মীয় নেতারা।
ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষার কথা বলে এমন পোশাককে নিরুৎসাহিত করতে পুলিশেরও
শরণাপন্ন হচ্ছেন তারা। এতে করে ইরাকের ঐতিহ্য ও স্বকীয়তাকে অপমান করা হচ্ছে
বলে সরকারি হস্তক্ষেপ করার দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। ইদানীং এসব অঞ্চলে
নারীদেরকে বোরকা পরে রাস্তায় ও মাজারে যাওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে
পোস্টারিং করা হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যানারে প্যান্ট ও জিন্স পরা নারীদের ছবিতে
লাল রঙের বড় ক্রস চিহ্ন এঁকে ঝুলানো হচ্ছে। ফতুয়া ও জিন্সের প্যান্ট পরা
মায়িদা হামিদ (৩২) বলেছেন, আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। পুলিশ এমনভাবে
তাকিয়ে ছিল যেন তারা আমার পোশাক পছন্দ করছে না। তবে তারা এর বিরুদ্ধে কোন
পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানা নেই। একজন শিয়া ধর্মীয় নেতা শেখ মিজান সাদি
বলেছেন, সবার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা রয়েছে। তবে কিছু জায়গার আলাদা একটা
মর্যাদা রয়েছে। কাদিমিয়্যাহ এলাকায় স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে হিজাব ছাড়া
নারীদের চলাচল নিষিদ্ধ বলে জানান সাদি। তবে বাগদাদে সরকারি কর্তৃপক্ষ
জানিয়েছে, এমন কোন আদেশ দেয়া হয়নি। বরং এমন অনেক পোস্টার ব্যানার তুলে ফেলা
হয়েছে। ইরাকের নারীরা দেশের ঐতিহ্য অনুযায়ী হিজাব পরে বাইরে যান। আর মাজার
জিয়ারত ও নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পুরো লম্বা বোরকা পরতে হয় তাদের। কিন্তু
২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন হামলা ও সাদ্দামের পতনের পর থেকে দেশটিতে পশ্চিমা
কালচার ছড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে ধর্মীয় পোশাকেও তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
No comments:
Post a Comment