প্রিয়াঙ্কার স্বামীর ৩০০ কোটি রুপির দুর্নীতি!

সোনিয়া গান্ধীর মেয়ে প্রিয়াঙ্কার স্বামী রবার্ট ভদ্রের
বিরুদ্ধে গত তিন বছরে ৩০০ কোটি রুপির দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ভারতের
নেতৃস্থানীয় একটি রিয়েল এস্টেট ফার্ম ডিএলএফের সহায়তায় বিনা সুদে বিশাল
অঙ্কের ঋণ নেয়া ও বিভিন্ন ল্যান্ড চুক্তিতে এই দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন
দুর্নীতি বিরোধী কর্মী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। তবে
কংগ্রেস পার্টির পক্ষ থেকে এ অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন ও মানহানিকর’ বলে উল্লেখ
করে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। শুক্রবার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে রবার্ট
ভদ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়। প্রশান্ত বলেছেন, ডিএলএফ নগদ টাকা দিয়েছে
রবার্টকে। একই সঙ্গে তার কাছে অনেক বেশি সস্তা দামে জমি বিক্রি করেছে।
এটাকে ‘রবার্ট ভদ্র স্ক্যাম’ বলা হবে বলে জানান প্রশান্ত। তিনি দেশের
শীর্ষনেত্রীর মেয়ের জামাইয়ের বিরুদ্ধে এফআইআর করার কথাও বলেছেন। কেজরিওয়াল
বলেছেন, ডিএলএফ কয়েকটি প্রদেশে রবার্ট ভদ্রের কাছে খুবই সস্তা দামে জমি ও
সম্পদ বিক্রি করেছে। এই অপকর্মে রাজ্যগুলোর কংগ্রেস সরকারও তাদের সহায়তা
করেছে। হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, কেজরিওয়ালের দাবি ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল
এই তিন বছরের মধ্যে রবার্ট ভদ্রের সম্পদের মূল্য মাত্র ৫০ লাখ রুপি থেকে
৩০০ কোটি রুপিতে গিয়ে ঠেকেছে। তিনি বলেছেন, এসব অনিয়মের সবই হয়েছে কংগ্রেস
শাসিত কয়েকটি রাজ্যে। তিনি প্রশ্ন করেছেন, কে এসব অনিয়মের তদন্ত করবে?
কেজরিওয়াল বলেছেন, কোন সরকারি সংস্থাই এমন একজন ক্ষমতাশালী ও গুরুত্বপূর্ণ
ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত করার সাহস রাখে না। কেজরিওয়াল শক্তিশালী
লোকপাল বিলের দাবিতে আন্দোলনকারীদের একজন। গত সপ্তাহে তিনি একটি রাজনৈতিক
দল গঠন করেছেন। আগামী মাসে দলটির নাম ঘোষণা করা হবে। প্রশান্ত ভূষণ, তার
পিতা শান্তি ভূষণ ও মনীশ সিসোদিয়া দলটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। এদিকে রবার্ট
ভদ্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও কুৎসা রটনামূলক বলে উড়িয়ে
দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেস। একই সঙ্গে দুর্নীতির অভিযোগকারীদের বিরোধী দল
বিজেপির পক্ষে সাফাইকারী বলে নিজস্ব পদ্ধতিতে অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার
ঘোষণা দিয়েছে দলটি। কংগ্রেসের তথ্য ও সমপ্রচারমন্ত্রী আম্বিকা সোনি
বলেছেন, তাকে ঋণ দেয়া হয়েছে ব্যক্তিগত সম্পর্কের জের ধরে। দেশের প্রধান
একটি রাজনৈতিক পরিবারের সঙ্গে তার সম্পর্ক ঋণ পেতে তাকে সহায়তা করেছে
মাত্র। তিনি একজন ব্যবসায়ী এবং ঋণ ও লেনদেন তার ব্যক্তিগত বিষয়। এদিকে
বিষয়টি নিয়ে এ সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির রাজীব শুল্কা বলেছেন, রবার্ট তার
নেয়া সব ঋণের বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছেন। এতে দেখা যাচ্ছে, তার চুক্তিগুলো সব
বোর্ডের অনুমোদনে হয়েছে। এছাড়া ডিএলএফের সঙ্গে দীর্ঘসময় ধরে ব্যবসায়িক
সম্পর্ক রয়েছে রবার্ট ভদ্রের। শুল্কা আরও বলেন, এখানে সম্পর্কের কোন ইন্ধন
ছিল না। ডিএলএফ তার স্বার্থের অনুকূলে সুযোগ দিয়েছে এমন নয়। তাছাড়া কংগ্রেস
ক্ষমতায় নেই এমন রাজ্যেও জমি কিনেছেন রবার্ট। বিষয়টি কংগ্রেসের কোর
গ্রুপের মিটিংয়ে আলোচনায় এসেছে।
সেখানে নেতারা বলেছেন, যদিও বিষয়টি
আন্না হাজারের সহযোগীদের কাছ থেকে এসেছে কিন্তু এগুলো বিজেপির করা অভিযোগ।
তারা এর নিন্দা জানিয়ে অভিযোগকারীদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
গুজরাটের নির্বাচনকে সামনে রেখে সুবিধা নেয়ার জন্য বিজেপি এমন অভিযোগ করছে
বলে দাবি করা হয়েছে। কংগ্রেস নেতা ও কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সালমান খুরশিদ
অভিযোগকে ‘রাবিশ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment