Wednesday, November 14, 2012

সিআইএ’র যৌন কেলেঙ্কারি নাটকীয় মোড় নিয়েছে



সিআইএ’র যৌন কেলেংকারি নাটকীয় মোড় নিয়েছে। সিআইএ’র সাবেক প্রধান জেনারেল (অব.) ডেভিড পেট্রাউসের যৌন কেলেঙ্কারি এখন নানা মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ছে। এতে জড়িয়ে গেছে, আফগানিস্তানে নিয়োজিত মার্কিন কমান্ডার জেনারেল জন অ্যালেনের নাম। বলা হচ্ছে, তিনিও কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকতে পারেন। ডেভিড পেট্রাউসের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন পলা ব্রডওয়েল নামে এক নারী। এখন বলাবলি হচ্ছে, তাদের এই প্রেমের কথা ফাঁস হওয়ার নেপথ্যে রয়েছেন জিল কেলি নামের আরেক নারী। তিনি ডেভিড পেট্রাউসের ঘনিষ্ঠ আরেক নারী বন্ধু। ওদিকে এই জিল কেলির সঙ্গে অনৈতিক যোগাযোগের অভিযোগ আছে জেনারেল জন অ্যালেনের। ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে তাদের দু’জনের মধ্যে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট বিনিময় হয়েছে। এ জন্য তার বিরুদ্ধে এফবিআই তদন্ত করেছে। ফলে এই কেলেঙ্কারিতে এখন জড়িয়ে পড়লেন চার জন। তারা হলেন- ডেভিড পেট্রাউস, পলা ব্রডওয়েল, জিল কেলি ও জন অ্যালেন। যুক্তরাষ্ট্রের অভিজাত গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএতে এমন ভয়াবহ কেলেঙ্কারিতে চারদিকে শোরগোল চলছে। মার্কিন প্রশাসন, সাধারণ জনগণ, রাজনীতিবিদ সবাই এ নিয়ে সমালোচনায় সোচ্চার। এমনই এক প্রেক্ষাপটে এফবিআই এজেন্টরা নর্থ ক্যারোলিনায় অবস্থিত পলা ব্রডওয়েলের বাড়িতে সোমবার তল্লাশি চালিয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এপি। এতে বলা হয়, নর্থ ক্যারোলিনার চার্লটে’তে পলা ব্রডওয়েলের বাড়িতে স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে প্রবেশ করে এফবিআই এজেন্টরা। সেখানে তারা প্রায় ২ ঘণ্টা অবস্থান করে। তবে এ সময় পলা ব্রডওয়েল বা তার পরিবারের কোন সদস্য বাড়িতে ছিলেন কিনা তা জানা যায় নি। এফবিআই’র মুখপাত্র শেলি লিঞ্চ এ অভিযানের বিষয়ে নিশ্চিত করলেও কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নি। সমপ্রতি ডেভিড পেট্রাউসের বান্ধবী জিল কেলি অভিযোগ করেন যে, তাকে ই-মেইলে হুমকি দিচ্ছেন পলা ব্রডওয়েল। জেনারেল ডেভিড পেট্রাউসের সঙ্গে রমরমা সম্পর্ক থাকার পরেও কেন জিল কেলিকে পলা ব্রডওয়েল হুমকি দিতে গেলেন! এ অনুসন্ধানে ধারণা করা হয়, পলা ব্রডওয়েল ভেবে থাকতে পারেন যে, পেট্রাউসের সঙ্গে তার মতো জিল কেলিরও সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে বা আছে। এমনতরো নানা রিপোর্টে এখন ভরপুর যুক্তরাষ্ট্র সহ সারাবিশ্বের মিডিয়া। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন পানেটা হনলুলু থেকে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে যাওয়ার সময় বিমানে সফরসঙ্গী সাংবাদিকদের লিখিতভাবে জানিয়েছেন, এসব বিষয় পেন্টাগনকে গত রোববার এফবিআই অবহিত করেছে। তিনি বলেন, ঘটনা জানার পর তিনি সোমবার আফগানিস্তানে নিয়োজিত মার্কিন কমান্ডার জেনারেল জন অ্যালেনের বিষয়ে তদন্ত করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দিয়েছেন। ফ্লোরিডায় ম্যাকডিল এয়ারফোর্সের ঘাঁটিতে স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন জিল কেলি। তিনি ডেভিড পেট্রাউসের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। ধারণা করা হয়, সিআইএ থেকে এর প্রধান জেনারেল ডেভিড পেট্রাউসকে সরানোর নেপথ্যে তার ভূমিকা বড়। কারণ, তিনি অভিযোগ করেছিলেন পলা ব্রডওয়েল তাকে হয়রানিমূলক ই-মেইল পাঠাচ্ছে। এ ঘটনায় এফবিআই তদন্তে নামে। এরপরেই বেরিয়ে আসে পেট্রাউসের সঙ্গে পলার গোপন প্রেমের কথা। ওদিকে পেট্রাউসের ঘনিষ্ঠজনরা জানতেন কেলি হলেন তার পারিবারিক বন্ধুর মতো। তাদের মধ্যে কোন প্রেম ছিল না। তবে কেন ব্রডওয়েল তাকে হুমকি দিতে গেলেন! কারণ, তার ধারণা হয়েছিল পেট্রাউসের সঙ্গে তার মতো শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন জিল কেলি। কিন্তু এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে সম্মানের পাত্র একজন জেনারেলের সুনাম একেবারে ধুলায় মিশে গেছে। প্রশ্ন উঠেছে, এফবিআই কিভাবে এ ঘটনা নাড়াচাড়া করেছে, কখন হোয়াইট হাউস তাদের গোপন প্রেমের কথা জানতে পেরেছে, কেন তা ৬ই নভেম্বর যুুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরে প্রকাশ পেল! বলা হচ্ছে, এফবিআই তাদের ওই গোপন প্রেমের কথা কয়েক মাস আগেই জানতো। কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার প্রভাব পড়তে পারে এমন সন্দেহে তা প্রকাশ করা হয় নি। এখন তা প্রকাশ পাওয়ায় ঘটনা কোথায় গিয়ে শেষ হয় তা এখন সময়ই বলে দেবে।

No comments:

Post a Comment