কারজাইয়ের পক্ষ থেকে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার যে ঝুঁকি রয়েছে সে বিষয়টি স্পষ্ট করে ৩৭ বছর বয়সী ফৌজিয়া বলেছেন, তিনি (কারজাই) হয়তো তার ঘনিষ্ঠ কাউকেই ক্ষমতায় বসানোর ব্যাপারে সমর্থন করবেন। কারণ ক্ষমতায় আসার সব উপকরণই তাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক বাহিনীর আফগানিস্তান ছাড়ার ব্যাপারে ফৌজিয়া বলেন, এর ফলে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। আর এক্ষেত্রে আফগানিস্তানে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। তবে ফৌজিয়ার মতে, কারজাই ক্ষমতা আঁকড়ে থাকবেন এর চেয়েও আফগানদের জন্য বড় আশঙ্কা হচ্ছে পরিস্থিতি আবার সেই গৃহযুদ্ধ আর তালেবানদের আধিপত্যের অন্ধকার ইতিহাসের দিকে ফিরে না যায়। একজন নারী হিসেবে ফৌজিয়া চান না সেখানকার রক্ত এবং সম্পদ বৃথা যাক। তিনি বলেছেন, এ দেশের নারীরাই সবচেয়ে বেশি শান্তির দাবিদার। তবে সেই শান্তি হতে হবে সমন্বিত। যাতে গত ১০ বছরে আমাদের যে অর্জন সেটা যেন কোনভাবেই হারাবার আশঙ্কা না থাকে। যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে শান্তির পক্ষপাতী। তবে এ পর্যন্ত এ ধরনের আলোচনা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ফৌজিয়া বলেন, আমরা সবাই মনে করি সহিংসতা নয়, কেবল আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই এ বিষয়টি সুরাহা করা সম্ভব। তবে তালেবানরা যদি রাজনৈতিক অংশীদার হতে চায় তাহলে তাদের অবশ্যই অস্ত্র পরিহার করতে হবে। আফগানিস্তানের সংবিধানকে তাদের সম্মান করতে হবে।
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্যই কেবল ফৌজিয়া আফগান নারীদের দুর্দশা পরিবর্তনের ব্যাপারে মরিয়া নন। শিশু অবস্থায় তার বাবা-মা তাকে তপ্ত সূর্যের নিচে তাকে ফেলে গিয়েছিল। পরে তাদের মন পরিবর্তন হওয়ায় তারা হয়তো তাকে আবার তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। ফৌজিয়া বলেন, আফগানিস্তানে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি ঘটে সেটি হচ্ছে ঐতিহ্যগতভাবেই তারা সবকিছু করে থাকেন। তারা ভুলভাবে ধর্মকে বুঝছেন। হয়তো আমার মা একজন নারী হিসেবে যথেষ্ট ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। তিনি হয়তো চাননি তার মতো আরেকটি মেয়ে পৃথিবীতে একই রকম ভোগান্তির শিকার হোক। ফৌজিয়া আফগানিস্তানের এই বাস্তবতারই পরিবর্তন চান।
No comments:
Post a Comment