Saturday, March 24, 2012

মালিতে পাল্টা অভ্যুত্থানের গুজব, নিরাপদে প্রেসিডেন্ট


মালিতে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক বাহিনীর ক্যাপ্টেন আমাদো সানোগো লুটপাট বন্ধ করে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। রাজধানী বামাকোর সর্বত্র বন্দুকযুদ্ধ এবং সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে শুক্রবার হঠা করেই মালির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রচার ভবনে সেনা বাহিনীর ব্যারিকেড দেয়ার কারণে সেখানে পাল্টা অভ্যুত্থানের আশঙ্কা করা হয়েছিল। সামরিক অভ্যুত্থানের পর আত্মস্বীকৃত নেতা ক্যাপ্টেন সানোগো আগে ধারণ করা একটি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে টেলিভিশনে উপস্থিত হয়েছিলেন। সেখানে তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি পেট্রোল স্টেশনে সেনা সদস্যদের লুটপাট এবং রাজধানীতে গাড়ি ছিনতাইয়ের অভিযোগ  
অস্বীকার করেছেন। শুক্রবার সম্প্রচারিত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সবাইকে লুটপাট বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের সেনা সদস্যরা কোন ধরনের লুটপাটের সঙ্গে জড়িত নয়। এটা তাদের লক্ষ্য নয়। এটা তাদের লড়াইও নয়। ক্যাপ্টেন সানোগো বলেন, যে কেউ বাজার থেকে সামরিক পোশাক কিনে তা পরে ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। আপনাদের কি মনে হয় না আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে অন্য কেউ ঘটনা ঘটাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট আমাদো তোমানি তোরের বিরুদ্ধে সেনা অভ্যুত্থানের ৪৮ ঘণ্টা পরেও সেখানকার পরিস্থিতি থমথমে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বন্দুকযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রেসিডেন্ট তোরের অনুসারীরা পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সানোগোকে হত্যা করেছে বলেও শুক্রবার গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের পক্ষ থেকে পরে ধরনের গুজব অস্বীকার করা হয়েছে। সানোগোর পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমি আপনাদের আশ্বস্ত করে বলছি সব কিছু স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা আপনাদেরকে দৈনন্দিন কাজকর্ম স্বাভাবিকভাবে চালিয়ে যাবার আহবান জানাচ্ছি। তবে বামাকোর এক বাসিন্দা বলেছেন, সেনাবাহিনীর গতিবিধির কারণে জনগণ ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে আছে। যখন তখন তারা যা ইচ্ছে তাই নিয়ে চলে যাচ্ছে। পরিস্থিতির কারণে বামাকোর সব পেট্রোল স্টেশন এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে অনেকেই বাইরে বের হচ্ছে। বাসিন্দারা বলছেন, সেনাবাহিনীর লুটের কারণে বিভিন্ন পণ্যের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জ্বালানির দাম লিটারপ্রতি দ্বিগুণ বেড়ে .৬০ ডলারে পৌঁছে গেছে। এদিকে আফ্রিকান ইউনিয়ন জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট তোরের অবস্থান সম্পর্কে জানতে না পারলেও তিনি নিরাপদে আছেন বলে তাদের নিশ্চিত করা হয়েছে। আদ্দিস আবাবাতে এক বৈঠকের পর এইউ কমিশন প্রধান জঁ পিং বলেছেন, আমাদেরকে বলা হয়েছে গুটি কয়েক সমর্থকের তত্ত্বাবধানে প্রেসিডেন্ট নিরাপদেই রয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট মালিতেই আছেন এটা নিশ্চিত। তাকে রক্ষাকারী সমর্থকের কাছ থেকে ধরনের নিশ্চিয়তায় প্রতীয়মান হচ্ছে, তিনি বামাকো থেকে খুব বেশি দূরে অবস্থান করছেন না। অভ্যুত্থানের পরপরই এইউ মালির সদস্যপদ স্থগিত ঘোষণা করেছে। শান্তি নিরাপত্তা পরিষদের চেয়ারম্যান পল লোলো গতকাল বলেছেন, বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনা করতে এইউ এবং পশ্চিম আফ্রিকার আঞ্চলিক ব্লক ইকোয়াসের একটি যৌথ মিশন শুক্রবার মালির রাজধানী বামাকোতে পৌঁছেছে। তারা আশা করছেন, বিদ্রোহীরা তাদের কথা শুনবেন এবং অবিলম্বে মালিতে সাংবিধানিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে দেবেন। পল লোলো বলেছেন, অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জোর করে ক্ষমতা দখলের মাধ্যমে বিদ্রোহ করা হয়েছে। মালিতে এখন কোন বৈধ সরকার নেই। আমাদের দৃষ্টিতে ৎখাত করা সরকার এখনও বৈধ। তিনি বিদ্রোহীদের সরে গিয়ে সেখানে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানানো হবে বলে জানালেও সেখানে কোন ধরনের সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপের কথা ভাবা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন। এদিকে জিম্বাবুয়ে সরকার গতকাল জানিয়েছে, মালিতে অভ্যুত্থানের কারণে সেখানে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আটকে পড়েছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার কেনিয়া জানিয়েছিল, তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও মালিতে অভ্যুত্থানের কারণে আটকা পড়ে আছেন।

No comments:

Post a Comment