Friday, April 6, 2012

বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি ইসরাইল



Source: The Daily Manabzamin (05-04-12): এবার ইসরাইলের দিকে আক্রমণের তীর ছুড়লেন জার্মানির নোবেল প্রাইজ পাওয়া সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাস। তিনি বলছেন, ইসরাইল বিশ্বশান্তির জন্য মারাত্মক হুমকি। কোনভাবেই তাকে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করতে অনুমতি দেয়া ঠিক হবে না। জার্মানির একটি পত্রিকায় তিনি একটি কবিতায় এমন সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন। ইসরাইল যখন ইরানে হামলা চালানোর জন্য উন্মুুখ, পশ্চিমা দেশগুলো অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে, তখন গুন্টার গ্রাসের এ সতর্কবাণী নিয়ে চারদিকে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়েছে, গুন্টার গ্রাস বামপন্থি ও ইরাকে পশ্চিমাদের আগ্রাসনের কঠোর সমালোচক। ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি করেছে জার্মানি। তিনি এ বিষয়টির তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। বুধবার প্রকাশিত জার্মান দৈনিক সুডয়েসে জেইতাং পত্রিকায় তিনি ‘হোয়াট মাস্ট বি সেইড’ (যে কথা বলতেই হবে) শিরোনামের কবিতাটি লিখেছেন। এতে তিনি সতর্ক করে দেন, ইসরাইল প্রথম হামলা চালিয়ে ইরানের জনগণকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলতে পারে। নোবেলজয়ী এ সাহিত্যিক তার দেশের কাছে দাবি করছেন, ইসরাইলকে যেন আর কোন পারমাণবিক ডুবোজাহাজ- জার্মান ইউবোট না দেয়া হয়। জার্মানি বেশ কিছুকাল থেকে ইসরাইলকে নিজেদের ইউ-বোট খ্যাত ডুবোজাহাজ সরবরাহ করছে। যে সব ডুবোজাহাজ পরমাণু অস্ত্রসজ্জিত করা সম্ভব। ইসরাইল যে ইরানকে আক্রমণ করতে যাচ্ছে, সে বিষয়টিকে ‘পূর্বাভাসযোগ্য অপরাধ’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলছেন জার্মান সরকারকে এ সহযোগিতা বন্ধ করতে হবে। ওই কবিতায় তিনি বলেন, জার্মানি অতীতে ইহুদীদের সঙ্গে যে আচরণ করেছিল সেই অভিজ্ঞতার কারণে তিনি এতদিন এ বিষয়ে বলতে ভয় পাচ্ছিলেন। তিনি এও বলেন যে, তিনি জানেন এ কবিতা প্রকাশ হওয়ার পর তাকে অতি পরিচিত কৌশল হিসেবে ‘ইহুদী বিদ্বেষী’ আখ্যা দেয়া হবে। তবুও তিনি না লিখে পারেননি। তিনি মনে করেন, ইসরাইল প্রথমেই আক্রমণ করে ‘ইরানি জনগণকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে’। কবিতায় ইরানি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদকে তিনি ‘বেহুদা বাচাল লোক’ বলে আখ্যা দেন। কবিতাটির ব্যাপারে গতকাল জার্মান চ্যান্সেলরের মুখপাত্রের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা। মুখপাত্র জবাব দিয়েছেন, জার্মানিতে শৈল্পিক অভিব্যক্তি প্রকাশ করার স্বাধীনতা আছে এবং সৌভাগ্যজনকভাবে প্রত্যেকটি শিল্পকর্মের ওপর মন্তব্য না করার স্বাধীনতাও সরকারের আছে। অবশ্য ইসরাইলপন্থি লেখক-সমালোচকরা এতটা সদয় নন। জার্মানি থেকে শুরু করে সারা দুনিয়ার ইসরাইলপন্থি ব্যক্তিত্বরা ইতিমধ্যেই তাকে ‘ইহুদী বিদ্বেষী’ আখ্যা দিয়ে তুমুল সমালোচনায় জেরবার করে তুলেছেন, যে সমালোচনার আশঙ্কা গুন্টার গ্রাস তার কবিতায় উল্লেখ করেছেন।

কবিতার শেষের দিকটা বাংলায় এমন দাঁড়ায়-
যে কথা বলতেই হবে

ভঙ্গুর বিশ্বশান্তিকে আরও বিপন্ন করছে
পরমাণু অস্ত্রসজ্জিত ইসরাইল,
এসব কথা আমি এখন কেন বলছি,
এই বার্ধক্যে এবং কলমের শেষ কালিতে?
কারণ এ কথা বলতেই হবে,
আগামীকালের অপেক্ষা অনেক দেরি হয়ে যেতে পারে,
(বলতেই হবে) কারণ আমরা- জার্মানরা পূর্বাভাসযোগ্য
এক অপরাধে অনেক সহায়তা দিয়েছি, এ দুষ্কর্মে
সহযোগিতার শাপমোচন হবে না, কোন সাধারণ অজুহাতেই।
এবং হ্যাঁ, আমি আর চুপ থাকবো না
পশ্চিমের ভণ্ডামিতে
আমি ক্লান্ত, এবং আশাবাদীও
অনেকেই নীরবতা ত্যাগ করবে।
আসন্ন বিপদের কারণ প্রতিরোধ করুন,
সহিংসতার নিন্দা করুন, আহ্বান করুন এবং
জোর দিয়ে বলুন,
দুই দেশের সরকার অনুমোদন করবে এমন
আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ইসরাইলের
পরমাণু অস্ত্রের ও ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির
বাধাহীন ও স্থায়ী নজরদারি করা হোক।    সূত্র বাংলা নিউজ

No comments:

Post a Comment