Tuesday, April 17, 2012

১৮ ঘণ্টা পর কাবুল শান্ত
















 অবশেষে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে তালেবানদের আক্রমণের সমাপ্তি ঘটেছে। ১৮ ঘণ্টা পর স্থানীয় প্রশাসন তালেবানদের হামলা থেকে কাবুলকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। কাবুল পুলিশ প্রধানের মুখপাত্র বলেছেন, গতকাল সকালে সর্বশেষ হামলাকারীকে আফগানিস্তানের পার্লামেন্টের কাছে হত্যা করা হয়েছে। রোববার দুপুরের দিকে তালেবান সন্ত্রাসীরা রাজধানী কাবুলের কূটনৈতিক পল্লী, পার্লামেন্ট ও বিভিন্ন দূতাবাসে একযোগে হামলা চালায়। হামলা চালায় তিনটি প্রদেশে- লোঘার, পাকটিয়া ও নাঙ্গারহারে। এ সময় কাবুলের বিভিন্ন স্থাপনা থেকে কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। চারপাশ থেকে ভেসে আসে গুলির শব্দ। সন্ত্রাসীরা সরকারি ভবন তাদের দখলে নিয়ে পার্লামেন্টের দিকে গুলি ছুঁড়তে থাকে। বৃটিশ দূতাবাসের একটি টাওয়ারে রকেট হামলা হয়। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে বাজানো হয় সতর্ক সাইরেন। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় জালালাবাদ বিমানবন্দর। পুরোপুরি কাবুল যেন সেদিন সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। সারা বিশ্বের মিডিয়া সে খবর ফলাও করে প্রচার করতে থাকে। অব্যাহত গতিতে চলতে থাকে হামলা। একপর্যায়ে তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ  মুজাহিদ এ হামলার দায় স্বীকার করেন। তিনি বলেন, তাদের আত্মঘাতী দলের কয়েক হাজার সদস্য এ অভিযানে নেমেছে। তাদের হাতে আছে একে-৪৭ রাইফেল। পরিস্থিতি যখন এমন তখন আফগানিস্তান কর্তৃপক্ষ জোর অভিযান চালায়। এতে ৩৬ তালেবান জঙ্গি নিহত হয়েছে। নিহতের তালিকায় আছে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর ৮ সদস্যও। এছাড়া নিহত হয়েছেন বেসামরিক ৩ ব্যক্তি। অর্থাৎ মোট নিহতের সংখ্যা ৪৭। গতকাল অনলাইন বিবিসি এ খবর দিয়ে জানায়, গত ৬ মাসের মধ্যে এটাই ছিল তালেবানদের সবচেয়ে বড় হামলা। তারা কাবুলে বিদেশী দূতাবাস, ন্যাটোর সদর দপ্তর, আফগান পার্লামেন্ট লক্ষ্য করে হামলা চালায়। হামলাকারীরা ওয়াজির আকবর খান এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনকে তাদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছিল। কাবুল থেকে বিবিসি’র সাংবাদিক বিলাল সারওয়ারি বলেন, খবর ছড়িয়ে পড়েছিল যে- ওই ভবনের ভিতরে নির্মাণ শ্রমিকদের জিম্মি হিসেবে ব্যবহার করছিল সন্ত্রাসীরা। ভিডিও ফুটেজে দেখানো হয়েছে- গতকাল ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে সেনারা সেই নির্মাণাধীন ভবনে অভিযান চালাচ্ছেন। আফগান কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা আত্মঘাতী দুই বোমারুকে আটক করেছে। তারা দ্বিতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ করিম খলিলিকে হত্যার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। ন্যাটো সমপ্রতি দাবি করেছে, তালেবানরা দুর্বল হয়ে পড়েছে। তালেবানদের দাবি- ন্যাটোর ওই দাবিকে বানচাল করতেই তারা এ হামলা চালিয়েছে। তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, এটা হলো বসন্তকালীন হামলার শুরু। আমরা কয়েক মাস ধরে এ হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছি। বিভিন্ন মিডিয়ায় বলাবলি হচ্ছে- এ হামলায় হাক্কানি গ্রুপও অংশ নিয়ে থাকতে পারে। ওদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমস নিউজ সার্ভিসের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ন্যাটো এবং আফগানিস্তানের সেনারা যে অর্জন করেছে তাকে হেয় করতে তালেবানরা সংগঠিত হয়ে এই হামলা চালিয়েছে।

No comments:

Post a Comment