Sunday, April 22, 2012

সামরিক শাসনের অবসানের দাবিতে তাহরির স্কোয়ারে বিক্ষোভ

মিশরে সেনাবাহিনীর দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তর এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট মুবারক শাসনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে প্রতিহত করার দাবিতে হাজার হাজার মানুষ বিখ্যাত তাহরির স্কোয়ারে সমাবেশ করেছে। শুক্রবারের জুমার নামাজের পর জনতা ‘সামরিক শাসন নিপাত যাক’ বলে স্লোগান দিতে দিতে তাহরির স্কোয়ারে এসে সমবেত হয়। কট্টরপন্থি এবং উদারপন্থি সবাই এক সঙ্গে শুক্রবারের এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। তারা সবাই দেশের বর্তমান রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার জন্য ক্ষমতাসীন সামরিক শাসনকেই দায়ী করেছেন। সমাবেশে তারা বিশাল একটি ব্যানার প্রদর্শন করেছেন। এতে লেখা ছিল- ‘সামরিক শাসন প্রত্যাখ্যান’। এদিকে এ মাসের শুরুতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধাপ্রাপ্ত প্রার্থীদের সমর্থকরা সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গত বসন্তের মিশরের অভ্যুত্থান ছিনতাই করার অভিযোগ এনেছেন। তাহরির স্কোয়ারে শুক্রবার সকাল থেকেই বিক্ষুব্ধ জনতা সমবেত হতে শুরু করে। সমাবেশে তারা বেমারিক নাগরিকদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে সামরিক নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আল-জাজিরা জানিয়েছে, তাহরির স্কোয়ারের সামপ্রতিক বিক্ষোভের মধ্যে শুক্রবারের সমাবেশটি ছিল একেবারেই অন্যরকম। সেখানে কমপক্ষে ২০টি রাজনৈতিক দল বা সংগঠন যোগ দিয়েছে। সমাবেশে আগত সবার প্রতি একাত্ম ঘোষণার আহ্বানের পর সবাই মিলে ‘একহাত, একহাত, একহাত’ বলে সমস্বরে স্লোগান দিতে থাকেন। ফেব্রুয়ারির বিক্ষোভের সময় সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সাধারণ জনতা এক হয়ে সারা দেশে একযোগে আন্দোলন করেছিলেন। সেই ঐক্যকে স্মরণ করেই সবাই এবার একহাত একহাত বলে স্লোগান দিয়েছেন। তবে আল-জাজিরা জানিয়েছে, জুমার নামাজের সময় সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সমাবেশে অংশ নিলেও পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অধীনে সবাই আলাদা আলাদাভাবে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মুসলিম ব্রাদারহুডের সালাফি আন্দোলন (তীব্র কট্টরপন্থি) এবং উদারপন্থিদেরকে জন্য আলাদা স্থানে নিজেদের দাবি তুলে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। আল-জাজিরা বলছে, তাহরির স্কোয়ারের সমাবেশে রাজনৈতিক বিভেদ তীব্রভাবে লক্ষ্য করা গেলেও তারা সবাই মুবারক শাসনের কর্মকর্তাদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রতিহত করতে একযোগে দাবি জানিয়েছে। মুবারকের শাসনামলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এমন কেউ যাতে আগামী ২৩ এবং ২৪শে মে অনুষ্ঠেয় মিশরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারেন সেজন্য গত সপ্তহে মিশরে পার্লামেন্টে একটি খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। মুবারকের গোয়েন্দা প্রধান ওমর সোলাইমানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতেই এ খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। তবে এটি কার্যকর করতে হলে ক্ষমতাসীন সামরিক কাউন্সিলের অনুমোদন পেতে হবে।  

No comments:

Post a Comment