Thursday, April 26, 2012

ভারত-পাকিস্তান পরমাণু যুদ্ধ হলে বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা

Source: The daily Manabzamin
ভারত-পাকিস্তান যদি কোন কারণে একে অপরের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করে তবে সারা বিশ্বের ৫০ কোটির বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার হবে। মঙ্গলবার এক নতুন সমীক্ষাতে এ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, তাদের এ পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার এ অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এর প্রভাব পড়বে সারা বিশ্বে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বিধ্বংসী এ অস্ত্র ব্যবহারের ফলে সারা বিশ্বের জলবায়ুতে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা দেবে। আর তাই চীন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে খাদ্য উৎপাদন নাটকীয়ভাবে হ্রাস পাবে। সমীক্ষার লেখক ইন্টারন্যাশনাল ফিজিশিয়ানস ফর দ্য প্রিভেনশন অব নিউক্লিয়ার ওয়ারের ডা. ইরা হেলফান্ড বলেছেন, পরমাণু অস্ত্রের কারণে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষের বিষয়টি বোঝার জন্য পরমাণু অস্ত্রের ব্যাপারে আমাদের মৌলিক চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, সমীক্ষায় প্রাপ্ত নতুন তথ্যে প্রতীয়মান হচ্ছে, ভারত ও পাকিস্তানের মতো দুই দেশের ছোট পরিসরের পরমাণু অস্ত্রও বিশ্বের প্রাকৃতিক ভারসাম্যে দীর্ঘ মেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে এবং ইতিমধ্যেই অপুষ্টির শিকার লাখ লাখ মানুষের অস্তিত্বকে হুমকির সম্মুখীন করতে পারে। তিনি বলেছেন, এক দশক সময়ের মধ্যে অকারণে এবং প্রতিরোধ যোগ্য ১০০ কোটি মানুষের মৃত্যু মানব জাতির ইতিহাসে একটি ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এতে মানব জাতির অস্তিত্ব বিনষ্ট হবে না। তবে আধুনিক সভ্যতা বলে আমরা যেটাকে চিনি সেটার পরিসমাপ্তি ঘটাবে। শিকাগোতে নোবেল লরিয়েটদের ওয়ার্ল্ড সামিটে উপস্থাপিত সমীক্ষাটি ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালে প্রকাশিত হবে। এতে দেখানো হয়েছে, এ ধরনের কোন পারমাণবিক ঘটনার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ভুট্টা উৎপাদন এক দশকের জন্য গড়ে ১০ শতাংশ কমে যাবে। আর সয়াবিন উৎপাদনও ১০ শতাংশ হ্রাস পাবে। পরমাণু যুদ্ধের ঠিক পরের পাঁচ বছরই উৎপাদন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে। সমীক্ষাতে আরও দাবি করা হয়েছে, এ ধরনের পরমাণু যুদ্ধের পরবর্তী চার বছর চীনে ধান উৎপাদনে গড়ে ২১ শতাংশ কমে যাবে। আর পরবর্তী ছয় বছর সেটা ১০ শতাংশ কমে যাবে। এর ফলে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং কৃষি পণ্যে স্বল্পতা বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক ছড়িয়ে দেবে। এতে করে খাবার মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে।
গত সপ্তাহে ভারত অগ্নি-৫ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর গতকাল পাাকিস্তান পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম একটি মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য দিয়েছে। এ খবর দিয়ে অনলাইন আল-জাজিরা জানিয়েছে, হ্যাফট-৪ শাহীন-১ এ ক্ষেপণাস্ত্রটি পরমাণু ও গতানুগতিক অস্ত্র বহনে সক্ষম। পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন্সের (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে গতকাল বলা হয়েছে, ভারত মহাসাগরের একটি লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্রটি পরীক্ষামূলকভাবে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ক্ষেপণাস্ত্রটি আগের চেয়ে আরও উন্নত ও অপেক্ষাকৃত দূরের কোন লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল নিশানায় আঘাত হানতে সক্ষম। তবে, এ সম্পর্কে কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য দেয়া হয়নি। তবে, এর আগের ভার্সনের ক্ষেপণাস্ত্রটি ৭৫০ কিলোমিটার দূরের যে কোন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

No comments:

Post a Comment