Sunday, April 1, 2012

অবশেষে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী দিলো মুসলিম ব্রাদারহুড



 নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে মিশরের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী মনোনীত করেছে রাজনীতিতে প্রাধান্য বিস্তারকারী মুসলিম ব্রাদারহুড। আগামী মাসে মিশরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ নির্বাচন। অনলাইন বিবিসি এ খবর দিয়ে জানিয়েছে- এতে মুসলিম ব্রাদারহুডের ডেপুটি চেয়ারম্যান খাইরাত আল শাতিরকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে তারা। আগে বলাবলি হচ্ছিল, এ নির্বাচনে প্রার্থী দেবে না মুসলিম ব্রাদারহুড। তিনি যদি নির্বাচনে বিজয়ী হন তাহলে তা দেশটির উদারপন্থি ও ক্ষমতাসীন সামরিক পরিষদের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। সাংবাদিকরা বলছেন, এরই মধ্যে সামরিক পরিষদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খারাপ যাচ্ছে। গত বছর প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের পতনের পর এই মুসলিম ব্রাদারহুড প্রথম পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রায় অর্ধেক আসন পায়। ফলে তারা যে আস্তে আস্তে শক্তিশালী রাজনৈতিক দলে পরিণত হচ্ছে এটা স্পষ্ট। মিশরের রাজধানী কায়রো থেকে বিবিসির সাংবাদিক ইয়োল্যান্ডি কেল বলছেন, কয়েক মাস ধরেই বলাবলি হচ্ছিল মুসলিম ব্রাদারহুড নির্বাচনে প্রার্থী দেবে না। কিন্তু মনোনয়ন জমা দেয়ার প্রায় শেষ সময়ের কাছাকাছি এসে তারা খাইরাত আল শাতিরের নাম ঘোষণা করলো। মিশরে জনঅভ্যুত্থানের আগে এই খাইরাত আল শাতির মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে ১২ বছর জেল খেটেছেন। তারপরও তিনি কয়েক কোটি ডলারের বাণিজ্য রক্ষণাবেক্ষণ করছেন। ১০ সন্তানের পিতা তিনি। এতসব ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রতিশ্রুতি ধরে রেখেছেন। তাকে গত বছর জেল থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। এই অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি তার প্রভাব এতটাই বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন যে, অনেকেই তাকে মুসলিম ব্রাদারহুডের জেনারেল গাইডের চেয়েও বেশি শক্তিমান মনে করেন। ৬২ বছর বয়সী এই নেতা দলকে পূর্ণাঙ্গ একটি রাজনৈতিক দলের রূপ দিতে মূল কৌশল অবলম্বন করছেন।

তিনিই ক্ষমতাসীন সামরিক পরিষদের সঙ্গে সব বোঝাপড়ার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিদেশী কোন কূটনীতিক বা বিনিয়োগকারীর সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে তিনিই মুসলিম ব্রাদারহুডের সাধারণ মুখ। ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হওয়ায় তিনি ইসলামপন্থি এই দলটির সিনিয়র নেতা ও মূল অর্থের যোগানদাতা। তবে শেষ মুহূর্তে কেন এ দলটি নির্বাচনমুখী হয়েছে সে সম্পর্কে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে- মুসলিম ব্রাদারহুড নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে এসেছে। এর কারণ তারা মিশরের অভ্যুত্থানের ঝুঁকি থেকে বেরিয়ে আসতে চায় এবং তারা সামরিক শাসকদের কাছ থেকে ক্ষমতা বেসামরিক শাসকদের হাতে তুলে দিতে চায়। নবনির্বাচিত পার্লামেন্টে তারা এরই মধ্যে নিজেদের আধিপত্য জাহির করেছে। নতুন সংবিধানের যে খসড়া তৈরির প্যানেল করা হয়েছে সেখানেও তাদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। তারা অভিযোগ করেছে, তারা পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর নতুন একটি মন্ত্রিসভা গঠন করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতে বাধা দেয়া হয়েছে। এমনকি পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছিল। কাকে কাকে মন্ত্রী বানানো হবে তা নিয়ে ক্ষমতাসীন সামরিক শাসকদের সঙ্গে মুসলিম ব্রাদারহুডের দূরত্ব অনেকটাই বেড়ে গেছে।

No comments:

Post a Comment