কেয়ামতের ভয়ে আত্মহত্যা!

পৃথিবীর শেষ দিন বা কেয়ামত নিয়ে ইন্টারনেটের তথ্য
ঘাঁটাঘাঁটি করতে করতে টিনেজার ইসাবেল টেলর (১৬)-এর মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা
জন্মায় যে, এ বছরই ধ্বংস হবে পৃথিবী। তার মধ্যে এ বিশ্বাস এতটাই শিকড়
গেঁড়েছিল যে, শেষ পর্যন্ত সেই কিয়ামতের ভয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। এ নিয়ে
অনলাইন ডেইলি মেইল একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ইসাবেল
আধুনিক বিশ্বের বিভিন্ন অনিয়ম ও জটিলতা দেখে সমপ্রতি বৌদ্ধ ধর্মে
ধর্মান্তরিত হয়। এরপর বিশ্ব কিভাবে শেষ হবে, সভ্যতার কিভাবে বিনাশ ঘটবে- তা
নিয়ে সে গবেষণা শুরু করে দেয়। ইন্টারনেটে এ নিয়ে সে দিনরাত পড়ে থাকতে শুরু
করে। একপর্যায়ে তার মধ্যে ধারণা বদ্ধমূল হয়, একটি পারমাণবিক চুল্লির
বিগলনের ফলে এই সভ্যতা ধ্বংস হবে এবং তা আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ঘটবে। এমন
ধারণায় সে তার বেডরুমে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তার পিতা গ্যারি
(৫১) ও মা ইংরিড (৪৮) বলেছেন, সে সম্ভবত আধুনিক দুনিয়া নিয়ে বিরক্ত হয়ে
পড়েছিল। চারদিকে যে অন্যায়, অবিচার- এসবের মাঝে সে নিজেকে ভবিষ্যতে সুখী
দেখতে পায়নি। তাই হয়তো সে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনা ঘটেছে বৃটেনের
উইলটশায়ারের নেস্টনে। ইসাবেলের পিতামাতা বলেছেন, তার মধ্যে দৃঢ় ধারণা
হয়েছিল, শিগগিরই পৃথিবী ধ্বংস হবে। তার পিতা গ্যারি টেলর একজন অবসরপ্রাপ্ত
সরকারি কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, ২০১২ সালে পৃথিবী ধ্বংস হবে- এমন ঘটনার কথা
সে আমাদের বলেছিল। এমনকি রাতের খাবার টেবিলেও সে এ নিয়ে আলোচনা করতো। তিনি
বলেছেন, তবে আমরা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তাকে বলেছি- এ বিষয়টি
হালকাভাবে নাও। সামনের দিকে তাকাও। আগামী দিনে রয়েছে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।
কিন্তু সে এ যুুক্তিকে উড়িয়ে দিত। বলতো, ওহ্ তোমরা বুঝতেই পারছো না।
পৃথিবী এ বছরেই যেকোন উপায়েই হোক শেষ হবে। এ নিয়ে আমাদের ঠাট্টা, তামাশা
করা উচিত নয়। সে মনে করতো- এমন কিছু ঘটতে চলেছে, যাতে পৃথিবী পাল্টে যাবে।
তবে আমি শতভাগ নিশ্চিত ছিলাম না, সে এই ধারণাকেই মাথায় ঢুকিয়ে বসে আছে।
গ্যারি টেলর বলেছেন, সে সব সময় ইন্টারনেটে বিভিন্ন রকম আর্টিকেল পড়ত। সে
পড়তো কিভাবে পৃথিবী ধ্বংস হবে তা নিয়ে। তার বেস্ট ফ্রেন্ডের সঙ্গে ২০১১
সালে এ নিয়ে ১৫ থেকে ২০টি লেখা পড়েছে। সর্বশেষ সে পড়েছে সূর্যের গায়ে দাগ
কেন তা নিয়ে। তার মধ্যে একটি ভুল ধারণা জন্মেছিল, কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার
কারণে এমনটা হতে পারে। ২০১২ সালে পৃথিবী ধ্বংস হবে- এমন অনেক ওয়েবসাইট হঠাৎ
যেন গজিয়ে ওঠে। এর ফলে সে ইন্টারনেটে বেশির ভাগ সময় লেগে থাকতো। তবে এ
ধারণা বেশি পেয়ে বসে মায়ানদের। ফ্রান্সের একটি ছোট্ট গ্রাম বাগারাচে সমবেত
হয়েছিলেন বেশকিছু এমনই বিশ্বাসী। তাদের মাঝে বিশ্বাস ছিল, পৃথিবী শেষ হলেও
ওই গ্রামের অবস্থান নেয়া মানুষরা বেঁচে থাকবে।
No comments:
Post a Comment