
মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় দেশগুলো নিয়ে নতুন একটি ইউনিয়ন
গঠনের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন লাখ লাখ শিয়া মতাবলম্বী মুসলিম। এ সময় তারা
স্লোগান দেন- আর নয় কোন ইউনিয়ন। বাহরাইন বিক্রির জন্য নয়! গত শুক্রবার এ
প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়েছে তেহরান, দুবাই ও মানামায়। অনলাইন বিবিসি এ খবর দিয়ে
আরও জানায়, উপসাগরীয় আরব দেশগুলোকে নিয়ে নতুন করে একটি ইউনিয়ন গঠনের
প্রতিবাদে ওইদিন বিভিন্ন দেশের রাজধানীতে কয়েক লাখ মুসলমান বিক্ষোভ করে।
বাহরাইনের রাজধানী মানামায় বিক্ষোভকারীরা প্রায় ৩ মাইল এলাকা দখল করে
রাখেন। এতে সড়কপথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সমপ্রতি সৌদি আরবের বাদশাহ
পারস্য উপসাগরীয় ৬টি দেশকে নিয়ে একটি নতুন ইউনিয়ন গঠন করার প্রস্তাব দেন।
এই ৬টি দেশ হলো বাহরাইন, কুয়েত, কাতার, ওমান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব
আমিরাত। ওদিকে বাদশাহর ওই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে দুবাই ও
ইরানে। ইরানে বাহরাইনের রাষ্ট্রদূতকে তিরস্কার করা হয়েছে। প্রস্তাবিত
ইউনিয়ন গঠন করার প্রশ্নে বাহরাইন ও সৌদি আরবকে নিয়ে দেখা দিয়েছে উত্তেজনা। এ
প্রস্তাবের মাধ্যমে বাহরাইনকে সৌদি আরবের সঙ্গে অংশ বানানোর চেষ্টা করা
হতে পারে বলে অভিযোগ করেছে ইরান। এ ঘটনায় তেহরানে শুক্রবার রাজপথে
বাহরাইনের পতাকা হাতে বিপুলসংখ্যক মানুষ বিক্ষোভ করেন। সৌদি আরবের সঙ্গে
ইউনিয়ন গঠন একান্তই বাহরাইনের নিজস্ব ব্যাপার- এই বলে এরই মধ্যে ইরানকে
সতর্ক করেছেন বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ খালিদ। একই সঙ্গে তিনি
বাহরাইনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ইরানকে নাক গলাতে বারণ করেন। এর পরই ইরানে
নিযুক্ত বাহরাইনের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নিয়ে তিরস্কার করা হয়। ইরানের
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যে মন্তব্য করেছেন তা ইরান প্রত্যাখ্যান করে। একই সঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ
করেন যে, বাহরাইন সরকার সামনে চলার পথে সন্তোষজনক পথ বেছে নেবে। অন্যদিকে
দুবাইতে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। এ সময় তারা স্লোগান দেয়- চাই না
কোন ইউনিয়ন। বাহরাইন বিক্রির জন্য নয়! ওদিকে নতুন এই ইউনিয়ন গঠনের
প্রস্তাবে এরই মধ্যে নেতারা বৈঠক করেছেন। তবে উপসাগরীয় নেতারা একীভূত
সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বিলম্ব করার কথা বলেছেন। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে
বাহরাইনে গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলন শুরু হয়। তারপর থেকে সেখানকার বিক্ষোভে
কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই শিয়া মতাবলম্বী। বাহরাইনে
সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হলে সেখানে সৌদি আরব সেনা পাঠায়। তারা সেখানকার
আন্দোলনকে নস্যাৎ করে দেয়ার উদ্যোগ নেয়। এ থেকেই ইরান ও বাহরাইনের মধ্যে
উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
No comments:
Post a Comment