Saturday, May 19, 2012

নতুন ফরাশি সরকারের গ্ল্যামার্সপূর্ণ মন্ত্রিসভা, প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রীদের বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত

ফ্রান্সের বহুল আলোচিত সাবেক ফার্স্ট লেডি কারলা ব্রুনি এলিসি প্রাসাদ থেকে সরে গেছেন মাত্র দিন কয়েক হলো। ইতিমধ্যেই তার ঘটনাবহুল জীবনকে ধূসর স্মৃতিতে পরিণত করতে প্রাসাদে গ্ল্যামার্স সম্পন্ন সুন্দরী রাজনৈতিক নেত্রী এবং মন্ত্রীদের আনাগোনা শুরু হয়ে গেছে। ফ্রান্সের সমাজতন্ত্রপন্থি নতুন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলান্দে গত বৃহস্পতিবার রাতে ৩৪ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভার নাম ঘোষণা করেছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় দেয়া প্রতিশ্রুতি মোতাবেক প্রেসিডেন্ট তার নতুন মন্ত্রিসভার অর্ধেকই নারীদের নিয়োগ করেছেন। আধুনিক ফ্রান্সের ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা এই প্রথম। এদিকে প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রীদের বেতন ৩০ শতাংশ কমানোর মধ্য দিয়ে ফ্রান্সের নতুন সরকারের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দেশের বিপুল পরিমাণ ঋণ এবং বেকার সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। নতুন এ মন্ত্রিসভায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী মন্ত্রীর উপস্থিতির কারণে ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে। এতদিন কেবল ইতালিতেই সুন্দরী নারীদের সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়োগ দেয়ার একচ্ছত্র অধিকার ছিল বলে ধারণা করা হতো। নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে গৃহায়ণমন্ত্রী গ্রীন পার্টি নেত্রী সিসিলে ডুফলট (৩৭), সংস্কৃতিমন্ত্রী অরুলি ফিলিপেটি (৩৮) এবং নারী অধিকার বিষয়কমন্ত্রী নাজাত ভ্যালুড-বেলকাসেম যেন অনেকটা ক্যাটওয়াকের মতো করেই হেঁটে এসে বৈঠকে যোগদান করেন। প্রবাসী ফরাশি নাগরিক বিভাগের জুনিয়র মন্ত্রী চলচ্চিত্র পরিচালক ইয়ামিনা বেনগুইগুই রীতিমতো ছয়ইঞ্চি হিল আর কালো গ্লাস পরে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে যোগ দেন। তবে এ বৈঠকের সবার দৃষ্টি গিয়ে পড়েছিল মরক্কো বংশোদ্ভূত নেভি-ব্লু ব্যুট পরিহিত নাজাত ভ্যালুড-বেলকাসেম-এর ওপর। কৃষ্ণ কালো চুলের অধিকারী ইতালীয় বংশোদ্ভূত ঔপন্যাসিক অরুলি ফিলিপেটি এর আগেরই সমাজতান্ত্রিক নেতা ডমিনিক স্ট্রস কানের হাতে প্রহৃত হওয়ার অভিযোগ এনে পত্রিকার শিরোনামে এসেছেন। নতুন এ মন্ত্রিসভায় পুরুষদের সংখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ১৭জন নারীকে মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারাভিযানে এমনটাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলান্দ। তবে মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বই কেবল ৬০ বছর বয়সী নারী এমপি ক্রিস্টিয়ানে তাওবিরাকে দেয়া হয়েছে। ফ্রান্সের এমপিদের মধ্যে ৮০ ভাগই হচ্ছেন পুরুষ। তাই মন্ত্রিসভার নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলান্দ তেমন অভিজ্ঞ নারীদের দায়িত্ব দেয়ার সুযোগ পাননি। তবে আগামী ১৭ই জুন পার্লামেন্টারি নির্বাচন শেষ হওয়ার পর এ মন্ত্রিসভায় আবার রদবদলের সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে প্রেসিডেন্ট ফঁ্রাঁসোয়া ওলান্দ ও তার নবগঠিত মন্ত্রিসভার ৩৪ সদস্য গত ১৫ই মে শপথ নেয়ার পর বৃহস্পতিবার প্রথম বৈঠকে বসেন।  প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ মার্ক এহোর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার সদস্যরা বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ফঁ্রাসোয়া ওলান্দের মাসিক বেতন ২১ হাজার তিনশ’ ইউরো থেকে কমিয়ে ১৪ হাজার নয়শ’ ১০ ইউরো করার সিদ্ধান্ত নেন। এছাড়া মন্ত্রিসভার সব সদস্যের বেতনও ৩০ শতাংশ কমানোর ব্যাপারে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভ্রমণসহ বিণন্ন মন্ত্রণালয়ের খরচের পরিমাণ কমিয়ে আনার লক্ষ্যেও তারা একটি নৈতিক সনদে স্বাক্ষর করেছেন। 

No comments:

Post a Comment