Wednesday, May 9, 2012

ওজন মাত্র ৩৭০ কেজি

বিশ্বের সবচেয়ে মোটা মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন প্রায় ৩৭০ কেজি ওজনের কেইথ মার্টিন। এত বেশি মোটা হওয়ায় ঘর থেকে বের হতে পারেন না বৃটেনের হ্যাম্পশায়ারের এই যুবক। ৪২ বছর বয়সী মি. মার্টিন সর্বশেষ ঘর থেকে বের হয়েছিলেন প্রায় ১১ বছর আগে ২০০১ সালে টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার সময়। এ প্রসঙ্গে মার্টিন বলেন, সবাই রাস্তায় ভয়ে ছুটোছুটি করছিল। দিনটি ভয়ঙ্কর হলেও আমার জন্য আনন্দেরই ছিল। কেননা সেদিনই যে সর্বশেষ বাসা থেকে বের হয়েছিলাম আমি। তারপর থেকেই বাড়তে বাড়তে ৩৭০ কেজিতে পরিণত হয় তার ওজন। বন্ধ হয়ে যায় চলাফেরা। মার্টিন বলেন, একটি সময় আত্মহত্যা ছাড়া কোন পথ না দেখলেও এখন ওজন কমিয়ে বাঁচতে চান তিনি। তার কোমরের মাপও ছয় ফুট। তবে একদিনেই এমনটি হননি মি. মার্টিন। দীর্ঘদিনের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাসের কারণেই এমনটি হয়েছে। এক সময় দৈনিক ২০ হাজার ক্যালরি খাবার গ্রহণ করা মার্টিনের খাবারের তালিকা ছিল এই রকম। সকালের নাস্তায়  এক প্যাকেট স্পেশাল শূকরের মাংস, ছয়টি এক ধরনের বড় মাংস মিশ্রিত রুটি, ছয়টি ডিম এবং এক স্তূপ টোস্ট ও প্রচুর সবজি জাতীয় খাবার। লাঞ্চের সময় একই মেন্যুর সঙ্গে অতিরিক্ত কয়েকটি স্যান্ডউইচ। রাতের খাবারে ছিল দু’টি বড় পিৎজা, তিনটি কাবাব বা বড় একটি চায়নিজ কারী। হালকা নাস্তা ছিল কয়েকটি প্যাকেট বিস্কুট ও অনেক মিষ্টি। এছাড়া শোবার সময় নিয়মিত চারটি স্যান্ডউইচ ও হ্যাম সঙ্গে রাখতেন মি. মার্টিন। তাছাড়া নিয়মিত দুই লিটার করে কোলা ও প্রায় সাড়ে ছয় লিটার করে চিনি মিশ্রিত কফি খেতেন বিরল এই বিশ্ব রেকর্ডধারী। তবে বর্তমানে বাঁচার জন্য খাবারের পরিমাণ কমিয়েছেন ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি উচ্চতার এই বৃটিশ। তিনি জানান, বর্তমানে মাত্র চার টুকরো রুটি ও একটি রেডি হটডগ দৈনিক। খাবারের পরিমাণ নামিয়ে এনেছেন দৈনিক ১৫শ’ ক্যালরিতে। এই অবস্থার জন্য নিজেকেই দায়ী করে মার্টিন জানান, ডাক্তাররা বলেছেন যদি ওজন না কমান তবে ৫০ বছর পর্যন্ত বাঁচবেন না তিনি। গত সেপ্টেম্বরে তার বৃহৎ দু’টি হার্নিয়া কেটে ফেরার পর ডাক্তাররা তাকে বলেছিলেন, হয় আমাদের উপদেশ মানো, নয় মরো। তারপর থেকেই তিনি ওজন কমানোর প্রতি মনোযোগী হন। তিনি এখন অনেক মনোযোগী নিজেকে নিয়ে। সারাদিন শুয়ে থাকা মার্টিনের কাজ টিভি দেখা, সাইন্স ফিকশন ছবি দেখা, উপন্যাস পড়া ও নিজের প্লে-স্টেশনে গেম খেলা। তার সব কাজ করে দেয়া, খাবার তৈরি করার কাজ করেন তার এক বোন। দু’ বোন ও এক ভাইয়ের পরিবারে তার দু’ বোন ছাড়া আর কেউ নেই। মা মারা যান যখন তার বয়স ছিল ১৬ বছর। প্রতি দু’সপ্তাহ পর পর পৈতৃক সম্পদের ভাড়া হিসেবে ৩০৩ পাউন্ড করে পান মার্টিন। তিনি জানান, তিনি মোটা হচ্ছিলেন বিষয়টি প্রথম নজরে আসে যখন সবচেয়ে বড় সাইজের টি-শার্ট, ট্রাউজারও তার মাপে মিলছিল না। ৩২ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন অনলাইন স্পেশাল দোকান থেকে ৫ এক্সএল সাইজের কাপড় কিনতেন। সর্বশেষ ২০১০ সালে তাকে ৮ এক্সএল সাইজের কাপড় কিনতে হয়। এরপর থেকে আর সম্ভাব্য সাইজ না থাকায় এক টুকরো কাপড় দিয়ে শরীর ঢেকে রাখেন। সর্বশেষ একটি ডবল চেয়ারে বসা তার পক্ষে সম্ভব হয়েছিল প্রায় সাত বছর আগে। সর্বশেষ তিনি দাঁড়িয়েছিলেন গত বছরের সেপ্টেম্বরে যখন তাকে ডাক্তারের কাছে নেয়া হয়। মার্টিন জানান, তার টিনএজের সঙ্গে এখনকার কোন পার্থক্য দেখেন না তিনি। কেবল একটি মোটা বডি ছাড়া সবই আগের মতোই আছে।

No comments:

Post a Comment