৭ বামনের পরিবার

অন্যসব মানুষের দৃষ্টিতে তারা ভিন্ন রকম। কিন্তু
জনস্টন পরিবারের মতে তারা অন্যদের চেয়ে সামান্য খাটো। এই যা পার্থক্য।
এছাড়া, অন্য মানুষের সঙ্গে তাদের কোন পার্থক্য নেই। জর্জিয়ার বার্নেসভিলের
অ্যামবার ও ট্রেন্ট জনস্টন তাদের পাঁচ সন্তানসহ বিশ্বের সবচেয়ে বড়
অ্যাকোন্ডোপলেসিয়া বামন পরিবার তারা। নিজেদেরকে রিয়্যাল লাইফ সেভেন
‘ডোয়ারফস’ বা বাস্তব জীবনের সাত বামন সম্বোধন করা এই ফ্যামিলি তাদের আকার
ধরে রেখেছে। নিজেরা যেখানে যেতে পারেননি সন্তানদের সেখানে পৌঁছে দিতে চান
অ্যামবার জনস্টন দম্পতি। সব কিছুকে বাচ্চাদের জন্য স্বাভাবিক রাখতে চান
তারা। এবিসি টিভি’র শুক্রবারের টুয়েন্টি টুয়েন্টি অনুষ্ঠানে জনস্টন বলেন, এ
জন্য তারা নিজেদের উপযোগী ছোট ঘর না বানিয়ে স্বাভাবিক ঘর বানিয়েছেন।
বাচ্চাদেরকে বাধা ডিঙ্গিয়ে যেতে উৎসাহ দিচ্ছেন। যেমন ঘরের বিভিন্ন উপরের
স্থানে পৌঁছার জন্য এক ধরনের চেয়ার ও বাতি জ্বালাতে ও নেভাতে লাঠি ব্যবহার
করছেন তারা। এক অনুষ্ঠানে জনসনের সঙ্গে পরিচয় হয় অ্যামবারের। চার বছর ডেটিং
করার পর অ্যামবার সন্তান সম্ভবা হলে বিয়ে করেন তারা। জনস্টন বামন পরিবারের
সন্তান হলেও তার স্ত্রী অ্যামবারের পরিবার ছিল স্বাভাবিক। তারা মনে করেছিল
প্রথম সন্তান স্বাভাবিক ও লম্বা হবে। কিন্তু পরে দেখা গেল সে বামন হয়েই
জন্মেছে। এই দম্পতি জানান, তারা সুখী। কেননা, তারা নিজেদের মতোই সন্তান
চাচ্ছিলেন। তাদের দ্বিতীয় বায়োলজিক্যাল সন্তান এলিজাবেথও একই রকম বামন হয়।
সবাই চার ফুট থেকে খাটো পরিবারটির বাবা-মা চেয়েছিলেন একটি বড় পরিবার।
কিন্তু স্ত্রীর সমস্যা হবে তাই তিনজন বামন শিশু দত্তক নেন তারা। এর মধ্যে
সাইবেরিয়া থেকে এনা, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে অ্যালেক্স ও ইমাকে নেন চীন থেকে।
তারা এবিসিকে বলেন, তাদের বন্ধুরা জোক করে তাদেরকে খাটো ব্রাড-অ্যাঞ্জেলিনা
জুটি বলে। কেননা, তারা একই ওয়েতে সন্তানদের সংস্কৃতি ধরে রেখেছেন। জনস্টন
দম্পতি দত্তক নেয়ার জন্য কোন লোন ও সরকারি সহায়তা নেননি। অথচ তাদেরকে
প্রতিবন্ধী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জনস্টন বলেন, আমরা আমাদের মতো করে
বাঁচি। সবকিছু আমাদের মতো করে করার চেষ্টা করি। অ্যামবার বলেন, আমি বিশ্বাস
করি খুব কম মানুষই আছে অসমর্থ্য বা প্রতিবন্ধী। কিন্তু আমরা সেটা নই।
অ্যামবার একজন গৃহিণী। তিনি পেরেন্ট-টিচার এসোসিয়েশন ও মেয়ে স্কাউট হিসেবে
কাজ করেন। জনস্টন এক ধরনের প্যাডেল তৈরি করেন, যা দিয়ে বামনরা ড্রাইভিং
করতে পারেন। তবে তার মূল কাজ একটি। তাহলো কলেজের মাঠ তত্ত্বাবধায়ন করা।
মানুষ কোণা চোখে দেখলেও তারা সেগুলোকে পাত্তা না দিয়ে নিজেদের মতো চলতে
চেষ্টা করেন। মাঝে মাঝে কিছু মানুষ তাদেরকে রাস্তায় থামায় ও ফটো তোলে বলে
জানান জনস্টন। বাচ্চাদের জন্য এটা একটা কঠিন পরিস্থিতি, এতে তারা মানসিক
আঘাত পায় তাদের স্কুলে। এলিজাবেথ যখন তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে তখন তাকে
উত্ত্যক্ত করতে কেউ ‘বামন’ বলে। উত্তরে সে স্বাভাবিকভাবে বলে, ‘স্রষ্টা
আমাকে যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই সৃষ্টি করেছেন।’
No comments:
Post a Comment