যৌন হয়রানির শিকার বৃটিশ সাংবাদিক

রোববার রাতে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত মিশরের
প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসির সমর্থকদের বিজয় উদযাপনের সময় ঐতিহাসিক তাহরির
স্কোয়ারে ঘটে গেছে এক নিপীড়নের ঘটনা। আনন্দে আত্মহারা একদল উচ্ছৃঙ্খল
যুবকের লালসার শিকার হয়েছেন বৃটিশ নারী সাংবাদিক নাতাশা স্মিথ (২২)।
ঐতিহাসিক এই বিজয়ের মুহূর্তে নাতাশা গিয়েছিলেন সেখানে উপস্থিত নারীদের
অধিকার নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করতে। আর সেই সময় উচ্ছৃঙ্খল একদল যুবকের
হাতে চরম যৌন নিপীড়নের শিকার হন উদ্যমী বৃটিশ সাংবাদিক নাতাশা। যুবকেরা
তার সমস্ত কাপড় খুলে নেয়। ক্ষতবিক্ষত করে দেয় তার শরীর। এমনকি নাতাশার
শরীরের আঙুল দিয়ে আঘাত করে তারা। আর এমন সঙ্কটময় মুহূর্তে দু’জন পুরুষের
বদান্যতায় তাদের পোশাক পরে নিজেকে রক্ষা করেন আন্তর্জাতিক সাংবাদিকতায়
মাস্টার্স করা নাতাশা। নিজের ব্লগে নাতাশা লিখেছেন, অনেকগুলো
ব্যঙ্গ-বিদ্রূপকারী, কটাক্ষকারী ও অবিশ্বাসী মুখের সামনে পড়ে আমার অবস্থা
ছিল- অনেকগুলো ক্ষুধার্ত সিংহের সামনে এক টুকরো তাজা মাংসের মতো। নাতাশা
বলেছেন, হঠাৎ করে যেন আনন্দ উৎসবমুখর পরিবেশ আমার বিপক্ষে চলে গেল। তিনি
আরও লিখেছেন, আমি অনুধাবন করতে পারছিলাম যেন আমি ব্রিজের শেষ প্রান্তে
পৌঁছে গেছি। জনতার মিছিল দীর্ঘায়িত হচ্ছিল। সবাই তাহরির স্কোয়ার থেকে বের
হওয়ার চেষ্টা করছে। আমি এবং আমার বন্ধুরা ওই জায়গা ত্যাগ করার অনেক চেষ্টা
করেছি কিন্তু পারিনি। হঠাৎ অনুভব করলাম বন্ধুদের হাত থেকে তারা আমাকে টেনে
নিয়ে যাচ্ছে। তারা শক্তি ও আগ্রাসন বৃদ্ধি করছে। আমি এমন একটা পরিস্থিতিতে
পড়েছি ভাবতেই পারি না। মনে হচ্ছিল খুব শিগগিরই আমি মারা যেতে পারি। নাতাশা
লিখেছেন, আমার মনে হয়েছিল সব মানুষ রক্তের জন্য পিপাসিত হয়েছিল। যারা রক্ত
পান করে তৃষ্ণা মেটাতে চায়। পরে এক বন্ধু তাকে কোন মতে রক্ষা করতে সমর্থ
হন। এবং সেখান থেকে অপরিচিত এক লোকের স্ত্রী হিসেবে তার সঙ্গে বেরিয়ে আসেন
নাতাশা স্মিথ। পরে অন্য মহিলাদের কাছ থেকে তিনি জেনেছেন যে সেখানে গুজব
ছড়িয়ে পড়েছিল নাতাশা বিদেশী গোয়েন্দা। তবে তার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় এমন
একজন বিদেশী তরুণীর বিরুদ্ধে এভাবে হামলে পড়তে পারে ভিনদেশী যুবকের দল। তবে
এই পরিস্থিতি তাকে দমাতে পারবে না বলে জানান উদ্যমী এই বৃটিশ। তিনি এর
থেকে ভালো শিক্ষা নিয়ে আবারও ডকুমেন্টারি তৈরি করতে আসবেন বলে জানিয়েছেন
ডেইলি মেইলকে। কেননা, আরব ও ওয়েস্টার্ন সব নারীরাই ভুক্তভোগী। এসব বিষয়
বন্ধ করতে হবে।
No comments:
Post a Comment