নৃশংস এক হত্যাকাণ্ড

গায়ে একটি শাল জড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ফাঁকা একটি স্থানে
সেই শাল গায়ে পিছন ফিরে নিচের দিকে মাথা রেখে বসে আছেন এক নারী। তাকে
লক্ষ্য করে রাইফেল তাক করছে এক তালেবান সদস্য। রাইফেলের ট্রিগারে হাত রেখে
ধীর পায়ে সে এগিয়ে যাচ্ছে ওই নারীর দিকে। তার কাছাকাছি গিয়ে তার ট্রিগার
নড়ে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে ৫টি গুলি গিয়ে বিদ্ধ হয় ওই নারীর শরীরে। তিনি আর্তনাদ
করে কাত হয়ে পড়ে গেলেন মাটিতে। সেখানেই সমাপ্তি ঘটলো তার জীবনের। এ দৃশ্য
প্রত্যক্ষ করতে সমবেত হয়েছিল ১৫০ জনের মতো মানুষ। এসব দৃশ্য ধারণ করে ৩
মিনিটের একটি ভিডিও ছেড়ে দেয়া হয়েছে ইন্টারনেটে। ঘটনা আফগানিস্তানের
পারওয়ান প্রদেশের। ওই প্রদেশের এক নারী কাবুলে প্রকাশ্যে ব্যভিচারিতার দায়ে
অভিযুক্ত। এ অভিযোগে শাস্তি হিসেবে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা হয়েছে তাকে।
পারওয়ান প্রদেশে ওই ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়েছে তালেবানদের। ওই ভিডিওটি
সেন্সর করে ফের অনলাইনে প্রকাশ করেছে অনলাইন আল জাজিরা। তাতে দেখা গেছে,
মাথায় পাগড়ি পরা এক ব্যক্তি হাঁটু গেঁড়ে বসা ওই নারীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
একটি ফাঁকা স্থানে ওই নারীকে বসিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি বসে আছেন পিছন ফিরে।
অস্ত্র হাতে তার কাছে এগিয়ে গিয়ে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল থেকে ওই নারীর দিকে ৫টি
গুলি ছোড়ে। এ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করতে সমবেত হয়েছিল ১৫০ মানুষ। গুলির দৃশ্য
দেখে তারা উল্লাস করেছে। অস্ত্র হাতে ওই নারীর কাছে যখন ওই ব্যক্তি এগিয়ে
যাচ্ছিল তখন সমবেতদের একজন বলে ওঠে- ব্যভিচারিতা অন্যায়। তাই এ থেকে আমাদের
দূরে থাকার জন্য সতর্ক করেছেন আল্লাহ। তার নির্দেশ মেনেই এই নারীকে হত্যা
করা হচ্ছে। পারওয়ান প্রদেশের গভর্নর বছির সালাঙ্গি বলেছেন, ওই ভিডিওটি
শিনওয়ারি জেলার কিমচোক গ্রামে এক সপ্তাহ আগে ধারণ করা হয়েছিল। গ্রামটি
কাবুল থেকে কয়েক ঘণ্টার পথ। প্রকাশ্যে এমন শাস্তির ঘটনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল
সময়কালের আফগান সরকারের প্রকাশ্য নৃশংস শাস্তির কথা মনে করিয়ে দেয়।
তালেবান বিরোধী ন্যাটোর ১১ বছরের অভিযানে তাহলে আফগানিস্তান কি অর্জন করেছে
তা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। গভর্নর বছির সালাঙ্গি বলেছেন, যখন আমি এই
ভিডিওটি দেখতে গিয়েছি তখনই চোখ বন্ধ করতে হয়েছে। এত ভয়ঙ্কর দৃশ্য কি করে
দেখা যায়! তবে ওই নারীকে আমার কাছে দোষী মনে হয়নি। আমার মনে হয়েছে, দোষী
হলো ওই তালেবান।
No comments:
Post a Comment