সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশীসহ শতাধিক শ্রমিকের মানবেতর জীবন

ব্যবসায়ে অংশীদারিত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বে সংযুক্ত আরব
আমিরাতের উম্ম আল কুওয়াইনের একটি ফার্নিচার কারখানায় নিয়োজিত বাংলাদেশীসহ
১২০ শ্রমিক মাসের পর মাস কোন বেতন পাচ্ছেন না। সেখানে তারা বেঁচে আছেন খুব
কষ্টে। তাদের দিন চলছে অন্যের সাহায্যে। ধার-দেনা করে এরই মধ্যে তারা হতাশ
হয়ে পড়েছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইমিরেটস ২৪৭। এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের
এক ব্যবসায়ী নারী ও মিশরীয় এক নারী যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে চালু
করেছিলেন ফার্নিচার ও ইন্টেরিয়র সাজসজ্জার একটি কোম্পানি। সেখানে কাজ
নিয়োজিত বাংলাদেশ, ভারত, ফিলিপাইন, পাকিস্তান ও মিশরের ১২০ শ্রমিক। তারা
বেশ কয়েক মাস বেতন পান না। ফলে কমিউনিটি থেকে সহায়তা ও এক দোকান মালিকের
সহায়তায় তারা কোনমতে বেঁচে আছেন। ওই দোকান মালিক তাদেরকে লোনে খাদ্য সরবরাহ
দিয়ে যাচ্ছেন। রিপোর্টে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার খ্যাতনামা এক
ডিজাইনার, যার রয়েছে হলিউডে একই ব্যবসায় সফলতা- তিনি ও মিশরীয় এক নারী মিলে
প্রতিষ্ঠা করেন দ্য পার্ল ফর হোম এন্ড অফিস ফার্নিচার ম্যানুফ্যাকচারিং
নামের প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু কোম্পানির লাইসেন্স নবায়ন না করায় কোম্পানিটি
বন্ধ করে দিয়েছে উম্ম আল কুওয়াইন কর্তৃপক্ষ। মালিকানা নিয়ে স্থানীয় আদালতে
রয়েছে মামলা। ফলে শ্রমিকরা রয়েছেন অসহায় অবস্থায়। যে বাড়ি ভাড়া নিয়ে তারা
ছিলেন সে চুক্তি পাড় হয়ে যাওয়ার ফলে তাদের অবস্থা আরও সঙ্গীন। ওই শ্রমিকদের
একচন বলেন, আমাদের বেতন দেয়া হয় না চার মাস ধরে। দুই বছর ভাল ব্যবসা করেছে
কোম্পানিটি। কিন্তু সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে সমপ্রতি। এখন ওই কোম্পানির
ওয়েবসাইটে ক্লিক করলে তা অন্য একটি ওয়েবসাইটে চলে যাচ্ছে। তাতে বিশ্বের
বিভিন্ন প্রান্তে অভিজাত প্রকল্প ও শোরুমের নানা রকম তালিকা সরবরাহ করছে।
এমিরেটস ২৪৭ ওই কোম্পানির দুই অংশীদারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। ওই
ওয়েবসাইটে দেয়া মোবাইল ফোন ও ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে এমিরেটস। কিন্তু কোন
সাড়া মেলেনি তাতে। কোন কোন ফোন নম্বর অকেজো। ভারতের রাজস্থানের সুতার
মেহবুব বলেছেন, এ ঘটনায় ভারতীয় শ্রমিকদের একটি দল ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে
শ্রম আদালতে মামলা করে দিয়েছেন। বাকিরা তাদের ক্যাম্পে এখনও অপেক্ষায় আছেন।
তারা যে ক্যাম্পে থাকেন সেখানকার বিদ্যুত সংযোগ গত এক সপ্তাহ ধরে
বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু সচেতন লোকজনের কারণে ফের সংযোগ দেয়া
হয়েছে। তিনি বলেছেন, এরই মধ্যে আমরা যে দোকান থেকে খাবার কিনে খাচ্ছি
সেখানে দেনা হয়ে গিয়েছি ১৭০০ দিরহাম। এখন ওই দোকানের মালিক আর বাকিতে মাল
দিতে চাইছেন না। তিনি বলেন, ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশন উম্ম আল কুওয়াইন ও দু’একটি
সংস্থা আমাদেরকে কিছু খাদ্য ও সহায়তা দিয়েছে। কিন্তু এভাবে তো
অনির্দিষ্টকাল চলতে পারে না। তবে মিশরীয় একদল শ্রমিক তাদের বেতন চেয়ে আবেদন
করেছেন আদালতে।
No comments:
Post a Comment