দুবাই’র সবচেয়ে বড় মসজিদ

বর্তমানে বিশ্বের রাজধানী হিসেবে বিবেচিত শহর দুবাইতে
রয়েছে ছোট বড় মোট ১ হাজার ৪১৮টি মসজিদ। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ও জাঁকজমকপূর্ণ
মসজিদ হিসেবে ২৯শে জুলাই আল সাফা এলাকায় উদ্বোধন করা হয়েছে আল ফারুক ওমর
ইবনুল খাত্তাব মসজিদ। ‘ব্লু মস্ক’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এ মসজিদটি শেখ
যায়েদ রোডের আমিরাত পেট্রোল স্টেশনের পেছনে অবস্থিত। আরব আমিরাতের
উচ্চাকাঙক্ষার প্রতীক হিসেবে বানানো স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন, মসজিদটিতে
একসঙ্গে ২ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। এছাড়াও এর সঙ্গে সংযুক্ত
থাকবে একটি ইসলামিক সেন্টার। মসজিদ ও ইসলামী সেন্টার মিলিয়ে মোট ৮ হাজার
৭শ’ বর্গমিটার জায়গা। তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সপ্তদশ শতাব্দীর সুলতান আহমাদ
মসজিদের (এটিও ব্লু মস্ক হিসেবে পরিচিত) অনুপ্রেরণায় এটি নির্মাণ করা
হয়েছে। এতে কেবল নামাজের স্থানই হলো-৪ হাজার ২শ’ বর্গমিটার। মসজিদের সঙ্গে
ইসলামিক সেন্টার রাখার কারণ হলো-তুরস্কের ‘ব্লু মস্ক’র সঙ্গে মিল রাখা বলে
জানিয়েছেন দুবাই’র ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড চ্যারিটেবল অ্যাক্টিভিটিসের
ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান মোহাম্মাদ জসিম আল মনসুরি। যদিও তুরস্কে যেমন
মসজিদের সঙ্গে হাসপাতাল, কমিউনিটি সেন্টার, পাবলিক কিচেন ও বাজার রয়েছে।
কিন্তু আল ফারুক মসজিদে এগুলো রাখা হয়নি। তবে এতে রয়েছে কোরআন শিক্ষার
স্কুল, বিভিন্ন ধর্মের বইসহ ৪ হাজার বই ও আন্তঃধর্মীয় সংলাপের জন্য লেকচার
হল। ইসলামিক সেন্টারটির ম্যানেজার আবদুল মালেক বলেছেন, আমাদের এই আইডিয়া
হলো- হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর প্রিয় সাহাবী ও ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা ওমর
ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর শাসক হিসেবে সব ধর্মমতের মানুষের প্রতি উদারতা ও
সহনশীলতার বিষয়টি তুলে ধরা। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেছেন, জেরুজালেম জয়ের পর
ওমর (রা.) ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের সাধারণ ক্ষমার আওতায় মুক্ত করে দিয়েছিলেন।
ওমর (রা.) শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের লক্ষ্যকে সামনে রেখে মসজিদে নিয়মিত
আন্তঃধর্মীয় সংলাপের আয়োজন করা হবে। দুবাই ভিত্তিক ব্যবসায়ী খালাফ আল
হাবতুরের অর্থায়নে তৈরি মসজিদটিকে উসমানীয় সাম্রাজ্য ও আন্দুলসীয় স্থাপত্য
স্টাইলের মিশ্রণে বানানো হয়েছে। এর ভেতরের সাজ ও ডিজাইন করা হয়েছে মুসলিম
স্পেনের মুরিশ স্থাপত্যকলার অনুসরণে। একে মনোরমভাবে গম্বুজ দিয়ে আকর্ষণীয়
করা হয়েছে। ২১টি অর্ধ ও পূর্ণ গম্বুজের সমন্বয়ে ৩০ মিটার উপরে বড় একটি
গম্বুজ রাখা হয়েছে। এছাড়াও ৭০ মিটার উচ্চতায় চারটি মিনার রাখা হয়েছে। যা
উসমানীয় সাম্রাজ্যের স্থাপত্য রীতিকে মনে করিয়ে দেয়। এটি বিভিন্ন ধরনের
ক্যালিগ্রাফি, গ্লাসের নান্দনিক ব্যবহার ও সেরা স্থপতিদের তত্ত্বাবধানে
তৈরি, যা একইসঙ্গে মোগল, উসমানীয় ও মুরিশ স্থাপত্যশৈলীর কথা মনে করিয়ে দেবে
দর্শককে। ফলে এর নাম আল ফারুক (পার্থক্য নির্ণয়কারী) যথাযথ হয়েছে বলেছেন
আল মনসুরি।
No comments:
Post a Comment