
Source: http://www.mzamin.com/details.php?nid=MTkxODA=&ty=MA==&s=Mjc=&c=MQ==
মার্কিন
কংগ্রেসে মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ১৩তম ডিস্ট্রিক্ট থেকে ২০১০ সালে নির্বাচিত
ক্ষমতাসীন কংগ্রেসম্যান হ্যানসেন হাশেম ক্লার্ক আগামী ৬ই নভেম্বরে অনুষ্ঠেয়
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচনে মিশিগান অঙ্গরাজ্যের নবগঠিত
নির্বাচনী ডিস্ট্রিক্ট ১৪ থেকে ডেমোক্রেটিক দলের পক্ষে পুনরায় প্রার্থী হয়ে
নিজ দলের মনোনয়ন লাভে ব্যর্থ হয়েছেন। সমপ্রতি অনুষ্ঠিত ডেমোক্রেটিক
প্রাইমারিতে ফ্রেশম্যান কংগ্রেসম্যান হাশেম ক্লার্ক ডেমোক্রেটিক দলীয়
অপরপ্রার্থী ও মিশিগানের ৯ম ডিস্ট্রিক্ট থেকে পরপর
দু’বারের নির্বাচিত কংগ্রেসম্যান গ্যারি পিটার্সের কাছে পরাজিত হন। নির্বাচনী ফলাফলে গ্যারি পিটার্স মোট ভোটের ৪৭% লাভ করেন, যেখানে হাশেম ক্লার্ক পান ৩৫% ভোট। নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের আরও তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ফক্স নিউজ এবং ডেট্রয়েট টাইমসের মতো জাতীয় ও আঞ্চলিক মিডিয়াগুলো ডেমোক্রেটিক প্রাইমারির এ নির্বাচনে হাশেম ক্লার্কের পরাজয়ের পেছনে নির্বাচনী প্রচারণায় বিরোধী শিবির কর্তৃক অনুসৃত প্রবল বর্ণবাদী প্রচারণা কৌশলকে দায়ী করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের আদমশুমারিতে মিশিগান স্টেটের জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় ভোটিং রাইটস অ্যাক্টের ৫ম ধারা মোতাবেক কংগ্রেসে মিশিগান স্টেটের জন্য বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা ১টি কমিয়ে দেয়া হয় এবং প্রতিটি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা হয়। বর্তমান কংগ্রেসে মিশিগান স্টেট থেকে নির্বাচিত ১৫ জন কংগ্রেসম্যান রয়েছেন, যার ৬ জন ডেমোক্রেট এবং ৯ জন রিপাবলিকান দলের। সীমানা পুনঃনির্ধারণের জন্য বর্তমানে রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ মিশিগান স্টেট হাউস এমনভাবে প্রস্তাব দিয়ে ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসে পাঠায় যাতে করে আসন কমানোর বিপদটা ডেমোক্রেটিক ডিস্ট্রিকগুলো থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসম্যানদের উপর দিয়েই যায়। একপর্যায়ে বিপদ টের পেয়ে মিশিগান ডেমোক্রেটিক পার্টির পক্ষ থেকে সীমানা পুনঃনির্ধারণের বিরুদ্ধে মামলাও ঠুকে দেয়া হয় কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবিত পুনর্বিন্যাসে বিচার বিভাগ অনুমোদন দেয় এবং কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট ৮, ৯ ও ১৩ এর বেশ কিছু অংশ নিয়ে ডিস্ট্রিক্ট ১৪ গঠন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ৬ই নভেম্বর অনুষ্ঠেয় প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচনে পুনর্বিন্যাসকৃত কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট ১৪ থেকে ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন লাভের জন্য ডেমোক্রেটিক পার্টির পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, যাদের দু’জন ডেমোক্রেটিক দলের ক্ষমতাসীন কংগ্রেসম্যান তারা হলেন ডিস্ট্রিক্ট ১৩ থেকে ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত বর্তমান কংগ্রেসম্যান হাশেম ক্লার্ক এবং ডিস্ট্রিক্ট ৯ এর পরপর দু’বারের নির্বাচিত বর্তমান কংগ্রেসম্যান গ্যারি পিটার্স। প্রথমদিকে গ্যারি পিটার্স অবশ্য কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট ১২তে ডেমোক্রেটিক দলের বিগত ৩০ বছরের নির্বাচিত কংগ্রেসম্যান লেভিন স্যান্ডারের বিরুদ্ধে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছিলেন, কিন্তু ওখানে সুবিধা করতে পারবেন না ভেবে পরে ফ্রেশম্যান কংগ্রেসম্যান হাশেম ক্লার্কের বিরুদ্ধে ডিস্ট্রিক্ট ১৪তে নির্বাচনী লড়াইয়ের ঘোষণা দেন এবং সমপ্রতি অনুষ্ঠিত ডেমোক্রেটিক দলীয় প্রাইমারিতে তিনি বিজয়ী হন।
দু’বারের নির্বাচিত কংগ্রেসম্যান গ্যারি পিটার্সের কাছে পরাজিত হন। নির্বাচনী ফলাফলে গ্যারি পিটার্স মোট ভোটের ৪৭% লাভ করেন, যেখানে হাশেম ক্লার্ক পান ৩৫% ভোট। নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের আরও তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ফক্স নিউজ এবং ডেট্রয়েট টাইমসের মতো জাতীয় ও আঞ্চলিক মিডিয়াগুলো ডেমোক্রেটিক প্রাইমারির এ নির্বাচনে হাশেম ক্লার্কের পরাজয়ের পেছনে নির্বাচনী প্রচারণায় বিরোধী শিবির কর্তৃক অনুসৃত প্রবল বর্ণবাদী প্রচারণা কৌশলকে দায়ী করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের আদমশুমারিতে মিশিগান স্টেটের জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় ভোটিং রাইটস অ্যাক্টের ৫ম ধারা মোতাবেক কংগ্রেসে মিশিগান স্টেটের জন্য বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা ১টি কমিয়ে দেয়া হয় এবং প্রতিটি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা হয়। বর্তমান কংগ্রেসে মিশিগান স্টেট থেকে নির্বাচিত ১৫ জন কংগ্রেসম্যান রয়েছেন, যার ৬ জন ডেমোক্রেট এবং ৯ জন রিপাবলিকান দলের। সীমানা পুনঃনির্ধারণের জন্য বর্তমানে রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ মিশিগান স্টেট হাউস এমনভাবে প্রস্তাব দিয়ে ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসে পাঠায় যাতে করে আসন কমানোর বিপদটা ডেমোক্রেটিক ডিস্ট্রিকগুলো থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসম্যানদের উপর দিয়েই যায়। একপর্যায়ে বিপদ টের পেয়ে মিশিগান ডেমোক্রেটিক পার্টির পক্ষ থেকে সীমানা পুনঃনির্ধারণের বিরুদ্ধে মামলাও ঠুকে দেয়া হয় কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবিত পুনর্বিন্যাসে বিচার বিভাগ অনুমোদন দেয় এবং কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট ৮, ৯ ও ১৩ এর বেশ কিছু অংশ নিয়ে ডিস্ট্রিক্ট ১৪ গঠন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ৬ই নভেম্বর অনুষ্ঠেয় প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচনে পুনর্বিন্যাসকৃত কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট ১৪ থেকে ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন লাভের জন্য ডেমোক্রেটিক পার্টির পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, যাদের দু’জন ডেমোক্রেটিক দলের ক্ষমতাসীন কংগ্রেসম্যান তারা হলেন ডিস্ট্রিক্ট ১৩ থেকে ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত বর্তমান কংগ্রেসম্যান হাশেম ক্লার্ক এবং ডিস্ট্রিক্ট ৯ এর পরপর দু’বারের নির্বাচিত বর্তমান কংগ্রেসম্যান গ্যারি পিটার্স। প্রথমদিকে গ্যারি পিটার্স অবশ্য কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট ১২তে ডেমোক্রেটিক দলের বিগত ৩০ বছরের নির্বাচিত কংগ্রেসম্যান লেভিন স্যান্ডারের বিরুদ্ধে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছিলেন, কিন্তু ওখানে সুবিধা করতে পারবেন না ভেবে পরে ফ্রেশম্যান কংগ্রেসম্যান হাশেম ক্লার্কের বিরুদ্ধে ডিস্ট্রিক্ট ১৪তে নির্বাচনী লড়াইয়ের ঘোষণা দেন এবং সমপ্রতি অনুষ্ঠিত ডেমোক্রেটিক দলীয় প্রাইমারিতে তিনি বিজয়ী হন।
বিপুলভাবে ডেমোক্রেটিক সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারের এ আসনে আগামী ৬ই নভেম্বরের
নির্বাচনে গ্যারি পিটার্স রিপাবলিকান দলীয় একমাত্র প্রার্থী জন হাউলারের
সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, যাতে ডেমোক্রেট গ্যারি পিটার্সের জয়ের
সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিত। আর নির্বাচনে জিতলে গ্যারি পিটার্স হবেন মার্কিন
কংগ্রেসে দ্বিতীয় ‘হোয়াইট’ কংগ্রেসম্যান যার নির্বাচনী আসনে সংখ্যাগরিষ্ঠ
ভোটার ‘ব্ল্যাক নাগরিক’। বর্তমানে সংখ্যাগরিষ্ঠ কালো ভোটার এলাকার একমাত্র
সাদা কংগ্রেসম্যান হলেন টেনেসি অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্রেটিক দলীয় স্টিভ কোহেন।
নির্বাচনে হ্যানসেন হাশেম ক্লার্কের হেরে যাওয়ার পেছনে পুনর্বিন্যাসকৃত নির্বাচনী ডিস্ট্রিক্টের সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অভিজ্ঞতা ও নির্বাচনী তহবিলের ঘাটতি এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভুল কৌশল, সর্বোপরি নির্বাচনী প্রচারণায় তুমুল বর্ণবাদী প্রচার কৌশলকে দায়ী করা হয়েছে। নতুন কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট ১৪ এর বৈশিষ্ট্য হলো এর ভোটারদের বেশিরভাগই নারী, এবং অর্থনৈতিক সক্ষমতার বিচারে এখানকার ভোটারদের অবস্থান ধনী-দরিদ্র কর্পোরেট মিলিয়ে বিপুল বৈচিত্র্যময়। এদের সবার কাছে গ্রহণযোগ্য কর্মসূচির কথা ক্লার্কের প্রচারণায় ছিল না। এছাড়া নির্বাচনে বিরোধী শিবির কর্তৃক ক্রমাগত বর্ণবাদী আক্রমণের প্রতিবাদে এক পর্যায়ে ক্লার্ক ঘোষণা করেন যে তিনি আর কোন নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নেবেন না। আবার শেষের দিকে আয়োজকদের না জানিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসম্যান গ্যারি পিটার্সের সঙ্গে এক নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নেয়ার জন্য মঞ্চে হাজির হন, কিন্তু সম্মতিপত্র পাঠানোর সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় তাকে আর বিতর্কে অংশ নিতে দেয়া হয়নি, পরে তিনি মঞ্চে দর্শক সারিতে বসেই বিতর্ক শুনেন। একপর্যায়ে ক্লার্কের ক্যাম্পেইন সাংবাদিকদের সামনে গ্যারি পিটার্সের সঙ্গে ক্লার্কের মুখোমুখি বিতর্কের প্রস্তাব দিলেও পিটার্সের ক্যাম্পেইন থেকে তা সরাসরি নাকচ করা হয়। এছাড়া ক্লার্কের তুলনায় পিটার্সের নির্বাচনী তহবিলের পরিমাণও ছিল তিন গুণ বেশি।
প্রচারণায় বর্ণবাদী আক্রমণের কৌশল তুঙ্গে ওঠে গত জুনে যখন একটি বিরোধী নির্বাচনী ক্যাম্পেইন থেকে বলা হয় যে, তারা ক্লার্কের মায়ের ডেথ সার্টিফিকেট গবেষণা করে দেখেছেন- তার মা আফ্রিকান আমেরিকান নন, তিনি একজন হোয়াইট আমেরিকান। এ বিষয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ম্যারি উয়াটার্স বলেন, ক্লার্ক একদিকে এশিয়ান আমেরিকান ও তার মুসলিম আমেরিকান উত্তরাধিকারের সুযোগ নিচ্ছেন, আবার মায়ের পরিচয়ে আফ্রিকান আমেরিকান উত্তরাধিকারের দাবি করে সংখ্যাগরিষ্ঠ ব্ল্যাক ভোটারদের প্রতারিত করছেন, কিন্তু তা আর হচ্ছে না। আজ এটা প্রমাণিত, তার মা আফ্রিকান আমেরিকান ছিলেন না, তিনি একজন সাদা আমেরিকান। এর প্রতিক্রিয়ায় ক্লার্কের মিডিয়া মুখপাত্র রন স্কট বলেন, ‘ক্লার্কের মা একজন ব্ল্যাক মহিলা ছিলেন, তিনি অনেক কষ্ট করে, অনেক নিচু বেতনের কাজ করে ক্লার্ককে মানুষ করেছেন, আজ এতদিন পর তার জাতপাত নিয়ে প্রশ্ন তোলা আর তার কবরে লাথি মারা সমান কথা। প্রতিক্রিয়ায় আবেগতাড়িত কণ্ঠে হ্যানসেন হাশেম ক্লার্ক বলেন, ‘আমার মা একজন ব্ল্যাক ছিলেন, তবে তার গায়ের রং কিছুটা শ্যামলা ছিল, হ্যাঁ, তিনি সাদা হওয়ার পরীক্ষায় পাস করতে চেয়েছিলেন, তিনি সাদা হতে চেয়েছিলেন, কারণ তিনি আমাকে, তার একমাত্র পুত্রকে একটি উন্নততর জীবন দিতে চেয়েছিলেন।’
উল্লেখ্য, কংগ্রেসম্যান হ্যানসেন হাশেম ক্লার্কের পিতা মোজাফ্ফর আলী বাংলাদেশের সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার থানার শ্রীধর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ১৯৩৪ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। হাশেম ক্লার্কের মায়ের নাম থ্যালমা ক্লার্ক যিনি একজন আফ্রিকান আমেরিকান। ক্লার্কের ৮ বছর বয়সে তার পিতা মারা গেলে তার মা তাকে অনেক কষ্টে বড় করে তুলেন এবং এক পর্যায়ে হাশেম ক্লার্ক উচ্চশিক্ষার সুযোগ পান। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারুকলায় এবং জর্জ টাউন বিশ্বিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক হ্যানসেন ক্লার্ক ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি সচেতন ছিলেন। তিনি ২০১০ সালে মিশিগানের ১৩তম ডিস্ট্রিক্ট থেকে কংগ্রেসম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে মিশিগান হাউসে একাধারে হাউস রিপ্রেজেন্টেটিভ ও স্টেট সিনেটর হিসেবে দুই যুগ ধরে নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১০ সালে কংগ্রেসম্যান পদে নির্বাচনের সময় মিশিগান ও নিউ ইয়র্কে বসবাসকারী বাংলাদেশী আমেরিকান ভোটারদের পক্ষ থেকে তার নির্বাচনী ফান্ড ও ক্যাম্পেইনে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে অংশ নেয়া হয়েছে। এর আগে ১৯৯৮ সালে প্রথমবার এবং বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এনআরবি সম্মেলনে অংশ নিতে দ্বিতীয়বার তিনি বাংলাদেশ সফর করেন। কংগ্রেসম্যান হাশেম ক্লার্ক মার্কিন কংগ্রেসে সর্বপ্রথম বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কংগ্রেসম্যান হলেও সামগ্রিক কংগ্রেসের ওয়েবসাইটে তার সরকারি বায়োগ্রাফিতে তাকে ভারতীয় আমেরিকান বলে উল্লেখ করা হয়েছে, কেননা যে সময়ে তার পিতা বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তখন বাংলাদেশও বৃটিশ ভারতের অংশ ছিল।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনী সীমানা পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত জটিলতায় এ পর্যন্ত ৫ জন ডেমোক্রেট দলীয় ও ৩ জন রিপাবলিকান দলীয় ক্ষমতাসীন কংগ্রেসম্যান নিজ নিজ দলের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠিত প্রাইমারিতে মনোনয়ন লাভে ব্যর্থ হয়েছেন। অন্যদিকে মিশিগানের ডেমোক্রেটিক প্রাইমারির নির্বাচনী ফলাফলের পরপরই কংগ্রেসে ডেমোক্রেটিক দলের নেতা ও প্রাক্তন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি কংগ্রেসম্যান ক্লার্কের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন। হাউসের সকল ডেমোক্রেটিক কংগ্রেসম্যানের পক্ষ থেকে প্রদত্ত এক বাণীতে পেলোসি বলেন, মিশিগানসহ সমগ্র আমেরিকার মানুষের জন্য বিশেষ করে শ্রমিক, বাড়ির মালিক, শিক্ষার্থী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পরিবারের স্বার্থে কাজ করার জন্য হ্যানসেন ক্লার্ক প্রথম দিন থেকেই একজন পুরোধা এবং শক্তিশালী কণ্ঠস্বর। আমি তার সঙ্গে কাজ করতে পেরে সম্মানিতবোধ করছি এবং আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতি, জতীয় নিরাপত্তা নীতি এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে তার গঠনমূলক ভূমিকার কথা আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি।
নির্বাচনে হ্যানসেন হাশেম ক্লার্কের হেরে যাওয়ার পেছনে পুনর্বিন্যাসকৃত নির্বাচনী ডিস্ট্রিক্টের সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অভিজ্ঞতা ও নির্বাচনী তহবিলের ঘাটতি এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভুল কৌশল, সর্বোপরি নির্বাচনী প্রচারণায় তুমুল বর্ণবাদী প্রচার কৌশলকে দায়ী করা হয়েছে। নতুন কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট ১৪ এর বৈশিষ্ট্য হলো এর ভোটারদের বেশিরভাগই নারী, এবং অর্থনৈতিক সক্ষমতার বিচারে এখানকার ভোটারদের অবস্থান ধনী-দরিদ্র কর্পোরেট মিলিয়ে বিপুল বৈচিত্র্যময়। এদের সবার কাছে গ্রহণযোগ্য কর্মসূচির কথা ক্লার্কের প্রচারণায় ছিল না। এছাড়া নির্বাচনে বিরোধী শিবির কর্তৃক ক্রমাগত বর্ণবাদী আক্রমণের প্রতিবাদে এক পর্যায়ে ক্লার্ক ঘোষণা করেন যে তিনি আর কোন নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নেবেন না। আবার শেষের দিকে আয়োজকদের না জানিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসম্যান গ্যারি পিটার্সের সঙ্গে এক নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নেয়ার জন্য মঞ্চে হাজির হন, কিন্তু সম্মতিপত্র পাঠানোর সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় তাকে আর বিতর্কে অংশ নিতে দেয়া হয়নি, পরে তিনি মঞ্চে দর্শক সারিতে বসেই বিতর্ক শুনেন। একপর্যায়ে ক্লার্কের ক্যাম্পেইন সাংবাদিকদের সামনে গ্যারি পিটার্সের সঙ্গে ক্লার্কের মুখোমুখি বিতর্কের প্রস্তাব দিলেও পিটার্সের ক্যাম্পেইন থেকে তা সরাসরি নাকচ করা হয়। এছাড়া ক্লার্কের তুলনায় পিটার্সের নির্বাচনী তহবিলের পরিমাণও ছিল তিন গুণ বেশি।
প্রচারণায় বর্ণবাদী আক্রমণের কৌশল তুঙ্গে ওঠে গত জুনে যখন একটি বিরোধী নির্বাচনী ক্যাম্পেইন থেকে বলা হয় যে, তারা ক্লার্কের মায়ের ডেথ সার্টিফিকেট গবেষণা করে দেখেছেন- তার মা আফ্রিকান আমেরিকান নন, তিনি একজন হোয়াইট আমেরিকান। এ বিষয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ম্যারি উয়াটার্স বলেন, ক্লার্ক একদিকে এশিয়ান আমেরিকান ও তার মুসলিম আমেরিকান উত্তরাধিকারের সুযোগ নিচ্ছেন, আবার মায়ের পরিচয়ে আফ্রিকান আমেরিকান উত্তরাধিকারের দাবি করে সংখ্যাগরিষ্ঠ ব্ল্যাক ভোটারদের প্রতারিত করছেন, কিন্তু তা আর হচ্ছে না। আজ এটা প্রমাণিত, তার মা আফ্রিকান আমেরিকান ছিলেন না, তিনি একজন সাদা আমেরিকান। এর প্রতিক্রিয়ায় ক্লার্কের মিডিয়া মুখপাত্র রন স্কট বলেন, ‘ক্লার্কের মা একজন ব্ল্যাক মহিলা ছিলেন, তিনি অনেক কষ্ট করে, অনেক নিচু বেতনের কাজ করে ক্লার্ককে মানুষ করেছেন, আজ এতদিন পর তার জাতপাত নিয়ে প্রশ্ন তোলা আর তার কবরে লাথি মারা সমান কথা। প্রতিক্রিয়ায় আবেগতাড়িত কণ্ঠে হ্যানসেন হাশেম ক্লার্ক বলেন, ‘আমার মা একজন ব্ল্যাক ছিলেন, তবে তার গায়ের রং কিছুটা শ্যামলা ছিল, হ্যাঁ, তিনি সাদা হওয়ার পরীক্ষায় পাস করতে চেয়েছিলেন, তিনি সাদা হতে চেয়েছিলেন, কারণ তিনি আমাকে, তার একমাত্র পুত্রকে একটি উন্নততর জীবন দিতে চেয়েছিলেন।’
উল্লেখ্য, কংগ্রেসম্যান হ্যানসেন হাশেম ক্লার্কের পিতা মোজাফ্ফর আলী বাংলাদেশের সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার থানার শ্রীধর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ১৯৩৪ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। হাশেম ক্লার্কের মায়ের নাম থ্যালমা ক্লার্ক যিনি একজন আফ্রিকান আমেরিকান। ক্লার্কের ৮ বছর বয়সে তার পিতা মারা গেলে তার মা তাকে অনেক কষ্টে বড় করে তুলেন এবং এক পর্যায়ে হাশেম ক্লার্ক উচ্চশিক্ষার সুযোগ পান। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারুকলায় এবং জর্জ টাউন বিশ্বিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক হ্যানসেন ক্লার্ক ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি সচেতন ছিলেন। তিনি ২০১০ সালে মিশিগানের ১৩তম ডিস্ট্রিক্ট থেকে কংগ্রেসম্যান নির্বাচিত হওয়ার আগে মিশিগান হাউসে একাধারে হাউস রিপ্রেজেন্টেটিভ ও স্টেট সিনেটর হিসেবে দুই যুগ ধরে নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১০ সালে কংগ্রেসম্যান পদে নির্বাচনের সময় মিশিগান ও নিউ ইয়র্কে বসবাসকারী বাংলাদেশী আমেরিকান ভোটারদের পক্ষ থেকে তার নির্বাচনী ফান্ড ও ক্যাম্পেইনে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে অংশ নেয়া হয়েছে। এর আগে ১৯৯৮ সালে প্রথমবার এবং বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এনআরবি সম্মেলনে অংশ নিতে দ্বিতীয়বার তিনি বাংলাদেশ সফর করেন। কংগ্রেসম্যান হাশেম ক্লার্ক মার্কিন কংগ্রেসে সর্বপ্রথম বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কংগ্রেসম্যান হলেও সামগ্রিক কংগ্রেসের ওয়েবসাইটে তার সরকারি বায়োগ্রাফিতে তাকে ভারতীয় আমেরিকান বলে উল্লেখ করা হয়েছে, কেননা যে সময়ে তার পিতা বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তখন বাংলাদেশও বৃটিশ ভারতের অংশ ছিল।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনী সীমানা পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত জটিলতায় এ পর্যন্ত ৫ জন ডেমোক্রেট দলীয় ও ৩ জন রিপাবলিকান দলীয় ক্ষমতাসীন কংগ্রেসম্যান নিজ নিজ দলের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠিত প্রাইমারিতে মনোনয়ন লাভে ব্যর্থ হয়েছেন। অন্যদিকে মিশিগানের ডেমোক্রেটিক প্রাইমারির নির্বাচনী ফলাফলের পরপরই কংগ্রেসে ডেমোক্রেটিক দলের নেতা ও প্রাক্তন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি কংগ্রেসম্যান ক্লার্কের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন। হাউসের সকল ডেমোক্রেটিক কংগ্রেসম্যানের পক্ষ থেকে প্রদত্ত এক বাণীতে পেলোসি বলেন, মিশিগানসহ সমগ্র আমেরিকার মানুষের জন্য বিশেষ করে শ্রমিক, বাড়ির মালিক, শিক্ষার্থী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পরিবারের স্বার্থে কাজ করার জন্য হ্যানসেন ক্লার্ক প্রথম দিন থেকেই একজন পুরোধা এবং শক্তিশালী কণ্ঠস্বর। আমি তার সঙ্গে কাজ করতে পেরে সম্মানিতবোধ করছি এবং আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতি, জতীয় নিরাপত্তা নীতি এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে তার গঠনমূলক ভূমিকার কথা আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি।
No comments:
Post a Comment