বাংলাদেশী বাদশা মিয়াকে নিয়ে প্রেম কাহিনী
বাংলাদেশী আবদুল কাদির বাদশা মিয়া শেখ (৩৭)-এর
বিরুদ্ধে মুম্বইয়ের মালাওয়ানি পুলিশের কাছে নালিশ জানানো হয়েছিল। বলা
হয়েছিল- তিনি অবৈধ অভিবাসী। তার রয়েছে ভারতের ভুয়া পাসপোর্ট। তিনি এ
পাসপোর্ট ব্যবহার করে মুম্বই থেকেজ মাস্কট যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তার সঙ্গে
সন্ত্রাসী সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে- এমন সন্দেহে পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে। তারা
তার সম্পর্কে তথ্য তালাশ করতে গিয়ে জানতে পায়- যে ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে
থানায় বাদশা মিয়া সম্পর্কে ওই তথ্য দিয়েছেন, তিনি রিয়া (পরিবর্তিত নাম)
নামে এক নারীর স্বামী। অনুসন্ধানে দেখা যায় বাদশা মিয়া কোন সন্ত্রাসী নন।
তার সঙ্গে আসলে রিয়ার প্রেম গড়ে উঠেছে। সেই প্রেমে ছেদ ঘটানোর জন্য রিয়ার
স্বামী পুলিশের কাছে অমন অভিযোগ করেন। গতকাল অনলাইন ডেইলি নিউজ অ্যান্ড
এলালাইসিস (ডিএনএ) এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়, রিয়ার স্বামীর অভিযোগ পেয়েই
মালওয়ানি পুলিশ তৎপর হয়ে দেখতে পায় রিয়ার স্বামী তার ও বাদশা মিয়ার প্রেমের
খবর জানতে পেরে আশাহত। তাই তিনি রিয়ার কাছ থেকে তার সন্তানকে আলাদা করার
জন্য বাদশা মিয়াকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ বলেছে,
বাদশা মিয়ার বয়স যখন ১০ বছর তখন তিনি ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন। প্রথমে তিনি
কলকাতায় বসবাস শুরু কনে। পরে ভুয়া কাগজপত্রের সাহায্যে তিনি পান ভারতীয়
একটি পাসপোর্ট। মালওয়ানি পুলিশ স্টেশনের এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, সেখান
থেকে বাদশা মিয়া চলে যান মাস্কট। সেখানে গিয়ে একটি হোটেলে কাজ করা শুরু
করেন। এখানেই রিয়ার সঙ্গে তার পরিচয়। রিয়া তখন বিবাহিতা। তার রয়েছে একটি
সন্তান। তিনি বাস করতেন মিরা রোডে। এরপর ২০০৮ সালে বাদশা মিয়ার পাসপোর্টের
মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষ তাকে ভারতে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। তিনি ভারতে ফিরে
বসবাস করতে থাকেন মুম্বইয়ে। তবে রিয়ার সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়ে যায়। এক
পর্যায়ে রিয়া বেড়াতে আসেন মুম্বই। এ পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেম জমে ওঠে। ওই
পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, এ সময় রিয়াকে তার স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে তার সঙ্গে
বসবাস করতে রাজি করান বাদশা মিয়া। রিয়া তার ছেলেকে নিয়ে বাদশা মিয়ার সঙ্গে
মালওয়ানির সাই কৃপা হাউজিং সোসাইটিতে গিয়ে সেখানে বসবাস করতে থাকেন। তবে
বাদশা মিয়া একেবারে বসে থাকেননি। তিনি পুরনো পাসপোর্ট ও ভ্রমণের কাগজপত্র
দিয়ে দ্বিতীয়বার মাস্কটের ভিসা পেয়ে যান। তিনি প্রণয়ী রিয়ার নেশায়
দ্বিতীয়বার মাস্কট যান। বাদশা মিয়া কোথা থেকে গিয়েছেন তা অনুসন্ধান করতে
গিয়ে পুলিশ দেখতে পায় তাদের কাছে বাদশা সম্পর্কে যে ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন
তিনি আর কেউ নন, তিনি রিয়ার স্বামী। তিনি বেকার। বাদশা মিয়াকে একটি শিক্ষা
দেয়ার জন্য তিনি এ কাহিনী ঘটিয়েছেন। ওদিকে ভারতের পাসপোর্ট আইন ও বিদেশী
বিষয়ক আইনে এরই মধ্যে বাদশা মিয়াকে বুক করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ
করা হয়েছে- তিনি অবৈধ উপায়ে ভারতে অবস্থান করছেন এবং ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার
করে ভারতীয় পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছেন। তাকে এখন পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment