Monday, October 22, 2018

খাসোগি হত্যা কে এই কাহতানি



সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম স্কাইপে সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার নির্দেশনা দিয়েছিলেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠজন সাউদ আল কাহতানি। এখানেই শেষ না। তার বিভিন্ন অপকর্মের বর্ণনা তুলে ধরেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। 
বিস্তারিত এখানে ক্লিক করুন-

http://mzamin.com/article.php?mzamin=141588



Wednesday, November 29, 2017

বসনিয়ার মুসলিমদের বিরুদ্ধে কেন গণহত্যা চালিয়েছিল রাতকো ম্লাদিচ!

মোহাম্মদ আবুল হোসেন: হেগে আন্তর্জাতিক যুদ্ধ অপরাধ আদালত। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিরস্কারের হাসি হাসছে বসনিয়ার কসাইখ্যাত রাতকো ম্লাদিচ। সার্বিয়ার সেনাবাহিনীর সাবেক কমান্ডার। এখন বয়স ৭৫ বছর। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে। বসনিয়ায় নির্বিচারে হাজার হাজার মুসলিমকে হত্যা করেছে সে। গত সপ্তাহে তার এ অপরাধের বিচার চলছিল। তিন বিচারকের প্যানেল তার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করবেন। এর কয়েক মিনিট আগে সে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য, মস্করা করছিল বিচারকদের নিয়ে। তার বিরুদ্ধে রায় দেয়ার মাঝামাঝি সময় বসনিয়ার এই কসাই তিন বিচারকদের উদ্দেশে চিৎকার করছিল। বলছিল, ‘আপনারা যা বলেছেন তার সবটাই মিথ্যা। আপনাদের লজ্জা করা উচিত।’ এ অবস্থায় তাকে কোর্টরুম থেকে বের করে দেয়া হলো। তারপর বিচারকরা আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করলেন। গণহত্যার অভিযোগ। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ। দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধের পর ইউরোপে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে দানবীয় এসব নৃশংসতায় তার ভূমিকা ছিল। তিন বিচারকের প্যানেলে ছিলেন নেদারল্যান্ডস, দক্ষিণ আফ্রিকা ও জার্মানির জুরিরা। তারা রায় দিলেন। বললেন, রাতকো ম্লাদিচ মুসলিম ও ক্রোয়েটদের ক্ষেপিয়ে তুলেছিল। তারা স্বঘোষিত মিনি রাজ্য সার্ব-এ বসবাস করতে থাকে। রাতকো ম্লাদিচের সেনাবাহিনী নিয়মিতভাবে দলবদ্ধ নারী ও বালিকাদের, যাদের বয়স ১২ বছর এমন মেয়েদের ধর্ষণ করতে থাকে। নৃশংস ছিল সেই ধর্ষণযজ্ঞ। রাতকো ম্লাদিচের নির্দেশে তার অধীনে, তার কমান্ডে কিভাবে সেনারা নিরস্ত্র মুসলিম ও ক্রোয়েট বন্দিদের হত্যা করেছে, নৃশংসতা চালিয়েছে, অনাহারে রেখেছে, তার বিস্তারিত বর্ণনা করছিলেন বিচারকরা। তারা বর্ণনা করছিলেন ২৪ জন বন্দিকে শ^াসরোধ করে হত্যা করা হয়। তারা একটি পরিবহন ট্রাসের ভিতর দম বন্ধ হয়ে মারা যান। একটি ক্যাম্পে সেনারা মেশিন গান থেকে একটানা গোলা ছুড়ে হত্যা করে একশত ৯০ জন বন্দিকে। একটি ঘটনায় বন্দিদের জোর করে ধর্ষণ করা হয়। এক বন্দির সঙ্গে আরেক বন্দি ন্যক্কারজনক যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে বাধ্য করে। সারাজেভোতে বেসামরিক মানুষের ওপর খেয়ালখুশিমতো গোলা ফেলতে থাকে তার বাহিনী। ছাদ থেকে গুলি করতে থাকে। যখন শহরটির অধিবাসীরা তাদের সন্তানদের নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিলেন, পানি তুলছিলেন, খড়কুটো জড়ো করছিলেন অথবা বাজারে ছিলেন, ঠিক সেই সময় এভাবে গোলা নিক্ষেপ করা হয় তাদের ওপর। ন্যাটো বাহিনীর প্রতিশোধমুলক বিমান হামলা থামিয়ে দিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের জিম্মি করে ম্লাদিচের বাহিনী। এরপর তারা কয়েক মাসের লড়াইয়ের চূড়ান্ত পর্বে সেব্রেনিৎসা শহর দখল করে। এরপরই সেখানে ধারাবাহিকভাবে বসনিয়ার কয়েক হাজার পুরুষ ও বালককে হত্যা করে তার বাহিনী। মানব সভ্যতার জানা ইতিহাসে সবচেয়ে নিকৃষ্ট হায়েনার মতো সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা সংঘটিত হয়। রাতকো ম্লাদিচকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়া হয়। বিচারক প্যানেলে সভাপতিত্ব করেন বিচারক আলফোনস ওরি। তিনিই তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের খড়গ সামনে আনেন। ম্লাদিচ এই অপরাধ ঘটিয়েছিল ২০ বছরেরও বেশি সময় আগে। তখন বসনিয়ায় যুদ্ধ চলছিল। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে একটি শান্তিচুক্তি হওয়ার পর যুদ্ধের ইতি ঘটে। তার আগেই শত শত হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়। চুক্তির পরেই রাতকো ম্লাদিচ আত্মগোপনে চলে যায়। গ্রেপ্তারি এড়িয়ে পালিয়ে ছিল ১৪ বছর। ২৪ বছর আগে গঠিত হয়েছিল জাতিসংঘের অধীনে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। সেখানেই সাবেক যুগোস্লাভিয়ার এই বিচার প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হয়। এটা ছিল সর্বশেষ বিচার। এতে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে এক শত ৬১ জন। এর মধ্যে ৬৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দ্য হেগে কৃতকর্মের ফল ভোগ করতে। বিচারকরা যে লিখিত রায় দিয়েছেন তার বিস্তার দুই হাজার ৫ শত ২৬ পৃষ্ঠা। ৫ বছর বিচার কার্যক্রমের ফল এটা। এতে ৫ শত ৯১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। প্রায় ১০ হাজারের মতো বিভিন্ন সামগ্রি প্রমাণ হিসেবে সামনে আনা হয়েছে। তবে যারা ম্লাদিচের পক্ষ নিয়েছে তারা এ অভিযোগ, রায়কে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তার আইনজীবীরা বলেছেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবেন। ম্লাদিচের ছেলে ডারকো বলেছেন, ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর তার পিতা তাকে বলেছে, এই ট্রাইব্যুনাল হলো একটি ন্যাটো কমিশন। গৃহযুদ্ধের সময় আগ্রাসন থেকে সার্বিয়ার মানুষদের রক্ষার জন্য যারা আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিয়েছে, তারা তাদেরকেই ক্রিমিনালাইজ বানানোর চেষ্টা করছে। ওদিকে রাশিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত টেলিভিশন আরটি বার বার খবর প্রকাশ করতে থাকে যে, আসলেই কি সেব্রেনিৎসায় হাজার হাজার মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছিল কিনা। যেসব কূটনীতিক যুদ্ধ বন্ধে চেষ্টা করেছেন তারা এবং ওইসব সাংবাদিক যারা সেই খবর প্রকাশ করেছিলেন, তারা প্রত্যাশা করেছিলেন, অনিষ্পন্ন বেশ কিছু প্রশ্নের চূড়ান্ত উত্তর এনে দেবে ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে রয়েছে, কেন ম্লাদিচ এত বেশি মানুষকে, এত খোলামেলাভাবে কসাইয়ের মতো হত্যা করছিল? আদালত তার রায়ে বলেছে, ১২ই জুলাই সেব্রেনিৎসার পতন হয়। এর একদিন পরেই বাতকোভিচ শহরে বন্দিশিবিরে আটক রাখা হাজার হাজার মুসলিম পুরুষ ও বালকদের গৃহায়নের আগের যে পরিকল্পনা ছিল তা ত্যাগ করে বসনিয়ার সার্বরা। এর পরিবর্তে তারা পূর্ব বসনিয়াজুড়ে অর্ধ ডজন স্থানে সামারি এক্সিকিউশন চালায়। বিপুল সংখ্যক বাসে করে মুসলিম পুরুষ ও বালকদের ভরাট করে নিয়ে যাওয়া হয় মৃত্যুদ- কার্যকরের স্থানগুলোতে। এত মানুষ হত্যা করতে অনেক দজ্জাল নিয়োগ করার প্রয়োজন দেখা দিল। তারা নিরস্ত্র এসব বন্দিকে গুলি করে স্বেচ্ছায় হত্যা করবে। হত্যাকা-ের স্থান হিসেবে বেছে নেয়া হলো প্রত্যান্ত মাঠ, কমিউনিটি সেন্টার ও খামার বাড়ি। খনন করা হলো বিশাল বিশাল গণকবর। তাতে পচা মাল নামানোর মতো করে নামিয়ে দেয়া হলো মৃতদেহ। এরপর মাটিচাপা দিয়ে ইতি ঘটানো হলো। উল্লেখ্য, বসনিয়ার ওই গৃহযুদ্ধের সময় রাতকো ম্লাদিচের সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলেন ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ শান্তির দূত কার্ল বিল্ডট। তিনি সেব্রেনিৎসার বন্দিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। রায় ঘোষণার পর সেই কার্ল বিল্ডট বলেছেন, ম্লাদিচের সিদ্ধান্ত এখনও তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। ম্লাদিচের বিরুদ্ধে কিছু সার্ব কর্মকর্তা স্বাক্ষ্য দিলেও তার হত্যার নির্দেশের নেপথ্যে কারণ কি এ বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। কেন? এ প্রশ্ন এখনও আমার কাছে রহস্য হয়ে আছে। এক ইমেইল মারফত বলেছেন দ্য নিউ ইয়র্কারের সাংবাদিক ডেভিড রোডিকে। তিনি বলেছেন, হাজার হাজার বন্দির পরিণতি সম্পর্কে তাকে হয়তো তার পরামর্শকরা অতিরিক্ত বুঝিয়ে থাকতে পারে। অথবা তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তারা ক্ষোভ/প্রতিশোধ ও ঘৃণার প্রকাশ ঘটাতে হত্যাকা-কে তখনকার মতো সবচেয়ে সহজ ভেবে থাকতে পারে। হয়তো হতে পারে এমনটা। তবে আমি এখনও এর কারণ উদ্ধারের চেষ্টা করছি। বসনিয়ায় জাতিসংঘের সাবেক সিনিয়র একজন কূটনীতিক ছিলেন ডেভিড হারল্যান্ড। তিনি বলেছেন, গণহারে মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়তো ম্লাদিচের কৌশলগত মারাত্মক ভুল ছিল। কারণ, এই পরিমাণের হত্যাকা-ের ফলে পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো। হারল্যান্ড বলেন, তবু কেন ওই হত্যাযজ্ঞ ঘটানো হয়েছিল তা রহস্যাবৃতই রয়ে গেছে। এটা কেন এত নিষ্ঠুর বিষয়টি তা নয়, এটা হলো এটা এতটা স্টুপিডের মতো ছিল কেন? সেব্রেনিৎসা গণহত্যায় বেঁচে যাওয়া একজন হলেন হাসান নুহানোভিচ। তিনি বলেছেন, জেনারেল ম্লাদিচের উদ্দেশ্য তার কাছে গুরুত্বহীন। তার ভাষায়, ম্লাদিচ কেন এসব করেছিল আমি বাস্তবেই তার পরোয়া করি না। তার যদি কোনো উদ্দেশ্য থাকে তাতেও আমার কিছু যায় আসে না। একটি বিষয়েই আমি মনোযোগ দিই। তা হলো, সে এই নৃশংসতা ঘটিয়েছে। নাহানোভিচের পিতা, মাতা, এক ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। ডাচ শান্তিরক্ষীরা তাদেরকে তুলে দিয়েছিল ম্লাদিচের বাহিনীর হাতে। এরপর তাদেরকে হত্যা করা হয়। সেই নুহানোভিচ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান বেসামরিক জনগণকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি আরো গুরুত্বের সঙ্গে পালন করার। জাতিসংঘ আশপাশের সব শহরকে নিরাপদ এলাকা ঘোষণা করেছিল। বসনিয়ার মুসলিমরা তাদের আত্মরক্ষার জন্য যেসব ভারি অস্ত্র ব্যবহার করতো তা তাদের কাছ থেকে কেড়ে নিল জাতিসংঘ। এরপর ম্লাদিচের বাহিনী যখন তাদের ওপর আক্রমণ করলো তখন তাদেরকে রক্ষার জন্য কোনো প্রচেষ্টাই নেয় নি জাতিসংঘ। সাধারণ জনগণকে সুরক্ষা দেয়ার পরিবর্তে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা তাদেরকে হত্যাকা-ে পৃষ্ঠপোষকতা করে। নুহানোভিচ বলেন, আমি মনে করি বিষয়গুলোকে অতি সাধারণ দৃষ্টিতে দেখা উচিত। ওটা ছিল জাতিসংঘের নিরাপদ এলাকা। এটাকে ধরা হতো গণহত্যা প্রতিরোধের একটি উপায় হিসেবে। দেখা হতো না গণহত্যা অব্যাহত থাকা হিসেবে। রায়ে বিচারকরা ম্লাদিচের হত্যাকা-ের অংশ হিসেবে সে যে বিবৃতি দিয়েছে তাই বর্ণনা করেন। ম্লাদিচ বলে, যুদ্ধ শুরুর পরপরই সেব্রেনিৎসার মুসলিম যোদ্ধারা হত্যা করেছে সার্ব বেমাসরিক লোকজনকে। ( বসনিয়ার মুসলিমরা কয়েক শত সার্ব বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছিল। কিনউ ১৯৯৫ সালে ম্লাদিচের বাহিনী হত্যা করে ১৭ হাজার সাধারণ মানুষকে। এ তুলনায় সে সংখ্যা অনেক অনেক কম। যুদ্ধ চলাকালীন রাতকো ম্লাদিচ অটোম্যান সা¤্রাজ্যের মতো বার বার সার্বদের ওপর নির্যাতন ডেকে এনেছে। সাবেক যুগোস্লাভিয়াকে কয়েক শতাব্দী ধরে দখল করে রেখেছিল অটোম্যান সা¤্রাজ্য। ম্লাদিচের গোয়ার্তুমির দিকে দৃষ্টি দিতে বিচারকরা ১৯৯৪ সালের সার্ব টেলিভিশনের একটি ভিডিওর দিকে দৃষ্টি দেন। তাতে দেখা যায়, উল্লসিত ম্লাদিচ একটি সার্ব গ্রাম পরিদর্শন করছে। ওই গ্রামটি মুসলিম শূন্য হয়ে গেছে। এসব মুসলিমদেরকে সে ‘তুর্ক’ বলে অভিহিত করতো। টেলিভিশন ফুটেজে তাকে বলতে দেখা যায়, এই উপত্যকায় এটা হলো একটি গ্রাম। এটা ব্যবহার করতো তুর্কিরা। এখন আমরা এর ভিতর দিকে প্রবেশ করবো। একজন অচেনা ক্যামরাম্যানের দিকে তাকিয়ে এসব কথা বলতে থাকে সে। আরো বলতে থাকে, আসুন দেখি আমাদের সার্বরা তাদের জন্য কি করেছে। তারা কিভাবে তুর্কিদের সেবাযতœ করেছে। আমরা তুর্কিদের নিষ্পেষিত করেছি। যদি সেব্রেনিৎসায় মার্কিনি, ইংলিশ, ইউক্রেনিয়ান অথবা কানাডিয়ানরা থাকেন, ডাচরাও থাকেন তারা তাদেরকে (সার্ব মুসলিম) রক্ষা করতে পারবে না। অনেক আগেই তারা এই এলাকা থেকে লাপাত্তা হয়ে গেছে। দেখুন তাদের দখলে থাকা একটি গ্রাম। দেখুন দেখুন। এ সময়ে ক্যামেরা ধ্বংস করে দেয়া বাড়িঘরের দিকে ঘোরানো হয়। অমনি ম্লাদিচ বলতে থাকে, আমি কি একটু আস্তে আস্তে অগ্রসর হবো যাতে আপনি এসব বিষয় ভালভাবে ক্যামেরাবন্দি করতে পারেন? এসব দৃশ্য ক্যামেরায় বন্দি করুন। দেখুন এইসব ‘মাদারফাকার’ তুর্কিদের একটি বাড়ি। কেমন ছিল তা। এটা তুর্কিদের একটি বাড়ি। এটা ছিল তুর্কিদের একটি বাড়ি। এ থেকে দৃশ্যত স্পষ্ট হয় যে, শুধু গোঁড়ামি বা অহমিকা বশত নৃশংসতা চালিয়েছিল ম্লাদিচ। রায় দেয়ার সময় বিচারকরা এক ডাচ শান্তিরক্ষীর সাক্ষ্যও নিয়েছেন। ওই সাক্ষী বলেছেন, মুসলিম ও অন্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে বসবাস করা কতটা বিপদের সে বিষয়ে তাকে সতর্ক করেছিল জেনারেল রাতকো ম্লাদিচ। কালো চামড়ার একজন ডাচ অফিসারকে ম্লাদিচ বলেছিল, নেদারল্যান্ডসের একটি সমস্যা হলো বহুধর্মীয় সমাজ ব্যবস্থা। তাই ১০ বছরের মধ্যে সে তার সেনাবাহিনীকে নিয়ে পৌঁছে যাবে নেদারল্যান্ডসে। সেখানে গিয়ে মুসলিম ও অন্য সম্প্রদায়দের থেকে ডাচ নাগরিকদের রক্ষা করবে সে। কিন্তু সব দিক দিয়ে ভুল ছিল রাতকো ম্লাদিচ। যে নেদারল্যান্ডসকে সে মুসলিম ও অন্য ধর্মের মানুষ থেকে মুক্ত করার হুমকি দিয়েছিল এখন সেখানকার একটি জেলেই তাকে মৃত্যুর প্রহর গুনতে হচ্ছে। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত সেখানেই তাকে নিঃসঙ্গ একাকী অতীতের নৃশংসতাকে স্মরণ করে কাঁদতে হবে। ইতিহাস ফিরে এসেছে তার সামনে। তার অপরাধের শাস্তি তাকে ভোগ করতেই হচ্ছে। মুসলিম ও ক্রোয়েটদের নিশ্চিহ্ন করে রাতকো ম্লাদিচ সৃষ্টি করেছিল শায়ত্তশাসিত সার্ব অঞ্চল। সেখানকার প্রেসিডেন্ট মিলোরাড ডোডিক। তিনি বলেছেন, হেগের আদালতের ওই রায় সত্ত্বেও সাবেক জেনারেল ম্লাদিচ এখনও সার্ব জনগোষ্ঠীর কাছে একজন কিংবদন্তি। সার্বিয়ায় এক সময় জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকে অবজ্ঞার চোখে দেখা হতো। কিন্তু এখন সেই ধারাই সেখানে জনপ্রিয় হচ্ছে। ইউরোপজুড়ে জাতীয়তাবাদী অনুভূতির উত্থান ঘটছে। বিদেশীদের বিরুদ্ধে অহেতুক ভীতি নির্বাচনে জয় পাচ্ছে। গত মাসে হাঙ্গেরি ও পোল্যান্ডকে অনুসরণ করে অস্ট্রিয়া। তারা অগ্রসর হয় ডানপন্থার দিকে। কেউ কেউ যুক্তি দেখান যে, একই রাজনৈতিক গতিধারা কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রেও। সুবিধাবাদী নেতারা সব সময় সংখ্যালঘুদের ওপর দোষারোপ করে। তারপর তা সরাসরি অস্বীকার করে। এভাবেই চলছে জীবন।

Tuesday, February 2, 2016

ফাগুন লেগেছে আজ মনে

এর মাঝে কেটে গেল কয়েক দিন। অনিকের কাছে খবর এলো তপতী বিয়ে করছে। তার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। ফাল্গুন মাসের ১০ তারিখে। প্রথমে এ কথা বিশ্বাস করতে চায় নি অনিক। কিন্তু সিরাজ বলল, সব সত্যি। সত্যিই তপতীর বিয়ে ঠিক হয়েছে। বিয়েতে তার সায়ও আছে।
Details here;  http://golpokobita.com/golpokobita/article/11561/10691

Sunday, January 31, 2016

ফাগুন লেগেছে আজ মনে

লেখক : মোহাম্মদ আবুল হোসেন
কোন কাজেই মন বসছে না অনিকের। সন্ধ্যায় ল্যাপটপ নিয়ে বসেছিল `টাইটানিক’ দেখার জন্য। বরফের চাঁইয়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগে যখন পানি ঢোকা শুরু হলো জাহাজে তখন হঠাৎ করেই উঠে পড়ে সে। আজ কিচ্ছুতেই ভাল লাগছে না তার। কতক্ষণ ঘরের ভিতর দিয়ে পায়চারি করে রান্নাঘরে গেল। চুলায় বসিয়ে দিল এককাপ চা হয় এতটুকু পানি। তাতে চা পাতি ছেড়ে দিয়ে মনে হলো, আজ তার হাতের চা খুব ভাল হবে। মাঝে মাঝে এমন হয়। অনিক নিজে নিজে চা বানায়। তা গলির মোড়ের ল্যাংড়া রহিমের চেয়ে অনেক স্বাদের হয়। একটা মাতা মাতা ঘ্রাণ তাকে আবিষ্ট করে রাখে।

Details here;
http://golpokobita.com/golpokobita/article/11561/10691 

Sunday, January 17, 2016

একই পরিবারে ৫ লাশ নারায়ণগঞ্জে নৃশংস হত্যাকাণ্ড

Source: The Daily Manabzamin
http://www.mzamin.com/details.php?mzamin=MTExMjI0&s=Mg==


নৃশংস হত্যাকাণ্ড। গলাকেটে ও মাথা থেতলে ৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জে। আলোচিত সাতখুনের পর এবার একই পরিবারের ফাইভ মার্ডার নিয়ে আতঙ্কিত নারায়ণগঞ্জবাসী। এক ঘর থেকেই তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ৩ জনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। দুই শিশুকে মাথা থেথলে মারা হয়েছে। হত্যার পর ঘাতকরা ঘরের বাইরে থেকে দরজায় তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। হত্যাকা-ের শিকাররা হলো- ওই পরিবারের তাসলিমা বেগম (৩৫), তার শিশু পুত্র শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫), ছোট ভাই মোশারফ ওরফে মোর্শেদুল (২২) ও ঝা লামিয়া বেগম (২৫)। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে শহরের ২নং বাবুরাইল খানকা শরিফ সংলগ্ন ১৩২/১১ আমেরিকা প্রবাসী ইসমাইল হোসেনের বাড়ির নীচতলার ফ্লাটে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এমন হত্যাকান্ডের কিংকর্তব্যবিমুঢ় এলাকাবাসী। পুরো নারায়ণগঞ্জে আতঙ্ক ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে কেন, কি কারণে এ হত্যাকা-- তা পুলিশ এবং নিহতদের স্বজনরা কেউই নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি। তবে পুলিশের ধারণা খুনিরা পরিচিত এবং পারিবারিক কোন কারণে এ হত্যাকা- ঘটে থাকতে পারে। খুনিরা পেশাদার নয় বলেও পুলিশের ধারণা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান জেলা প্রশাসক মো: আনিসুর রহমান মিঞা, ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আলী, জেলা পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন, র‌্যাব-১১ এর সিও আনোয়ার লতিফ খান, সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মালেক, ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামান, ডিবি পুলিশের ওসি মামুনুর রশিদ ম-লসহ পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা।
নিহত তাসলিমার খালাতো বোন নয়নতারা বলেন, ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার ভেলাবাড়ি গ্রামে তাছলিমাদের বাড়ি। তার বাবার নাম বারেক মিয়া।
নিহত তাছলিমা ও মোশারফের মা মোর্শেদা বেগম বলেন, এক মাস আগে তারা এ বাড়িতে ভাড়া এসেছে। এর আগে তারা ঢাকার কলাবাগানে থাকতো। তাছলিমার স্বামী শফিকুল ইসলাম ঢাকায় প্রাইভেট কার চালক। সে প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে বাসায় আসে এবং শনিবার সকালে চলে যায়। কিন্তু ছুটি না পাওয়ায় তিনি গত বৃহস্পতিবার বাসায় আসেননি। তিনি আরো জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টায়ও তিনি তার ছেলে মোশারফের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।
শনিবার সকালে  মোর্শদা বেগম নারায়ণগঞ্জে থাকা তাদের বিভিন্ন আত্মীয়কে ফোন করে জানায় যে মোরশেদুল ও তাছলিমা ফোন ধরছে না। তিনি বাসায় গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। দুপুরের পরে আত্মীয়দের কয়েকজন ওই বাসায় গিয়ে দরজায় তালা দেখে ফিরে আসেন। রাত আটটায় নিহত তাছলিমার দেবর এবং লামিয়ার স্বামী শরিফুল ইসলাম গ্রামের বাড়ি থেকে এসে দেখেন দরজা বন্ধ। মোবাইল ফোনও বন্ধ। পরে তিনি রাত সাড়ে ৮টার দিকে আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে তালা ভেঙ্গে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে ঘরের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করেন।
এক তলার পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা রহিমা খাতুন জানান, আগের রাত দশটা পর্যন্ত তারা তছলিমাদের ফ্ল্যাটে মানুষের আসা যাওয়ার শব্দ, কথাবার্তার শব্দ শুনেছেন।
নিহত তাছলিমার খালাতো বোন নয়নতারার স্বামী মোহাম্মদ মিলন জানান, নিহত মোর্শেদুল ইসলামের সঙ্গে সুদের টাকা নিয়ে ঢাকার একটি পক্ষের বিরোধ ছিলো। সে বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
নিহত তাছলিমা ও মোর্শেদুলের মা মুর্শিদা বেগম বলেন, ঢাকার একটি পক্ষের সঙ্গে  মোর্শেদের বিরোধ ছিলো। তবে কি নিয়ে বিরোধ ছিলো তা তিনি বলতে পারছেন না। এ নিয়ে হত্যাকান্ড ঘটে থাকতে পারে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলর ওবায়েদ উল্লাহ জানান, এক কক্ষে দুইটি অন্য কক্ষে তিনটি লাশ দেখতে পেয়েছি। প্রতিটি লাশ রক্তে লাল হয়ে রয়েছে। গলা কেটে, মাথায় আঘাত করে তাদের হত্যা করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন রাত ১২টার দিকে সাংবাদিকদের জানান, আমরা ঘরের ভিতরে গিয়ে ৫টি লাশ দেখিছি ফ্লোরে পড়ে আছে। ৩ জনকে গলা কেটে ও শিশু দুটিকে মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয়। পুরো মেঝে রক্তাক্ত। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে পারিবারিক কোন ঘটনার সুত্রধরে ৫জনকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও আরো কিছু ক্লু আমরা পেয়েছি। ২জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরো তথ্য পাওয়া যাবে। সিআইডির একটি বিশেষজ্ঞ টিম এসেছে। তারা হত্যাকান্ডের নমুনা সংগ্রহ করছে। বিকেল থেকে সন্ধ্যারাতের মধ্যে হত্যাকান্ডটি ঘটেছে। রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে কেউ তালা খুলতেও এসেছিল। ধারনা করা হচ্ছে ঘাতকরা নিহতদের পুর্ব পরিচিত। কারণ দুই রুমের ছোট একটি ঘরে একজন পুরুষ লোক থাকার পরও ৫জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। ঘাতকরা ৪ থেকে ৫ জন হতে পারে। খুনের আলামত দেখে মনে হচ্ছে খুনিরা পেশাদার নয়। এছাড়া ঘরের কোন মালামালও খোয়া যায়নি। সবকিছু ঠিক ঠাক আছে।

খালেদার সঙ্গে সম্পর্কের বরফ গললেও ভারত পরে আওয়ামী লীগকে বেছে নেয়

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের পরবর্তী পরিস্থিতিতে সেই ইতিবাচক পদক্ষেপ হাওয়ায় উড়ে যায়। একদিকে সরকারের সমর্থন অন্যদিকে জাতীয়তাবাদী যুব শক্তি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘাত শুরু হয় রাজপথে। এতে ভারত আওয়ামী লীগ শিবিরের দিকে মনোনিবেশ করে। আত্মজীবনী ‘দ্য আদার সাইড অব মাউন্টেইন’-এ এসব কথা লিখেছেন ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ। উল্লেখ্য, ভারতে কংগ্রেস সরকারের সময়ে ২০১২ সালের অক্টোবর থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ১৮ মাস বা দেড় বছর ক্ষমতায় ছিলেন সালমান খুরশিদ। এ সময় তিনি ও ইউপিএ সরকার কিভাবে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করেছিলেন তার একটি চিত্র ওই বইয়ে তুলে ধরেছেন। তখনকার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং তাকে প্রথম যে কাজটি দিয়েছিলেন তা হলো নিকট প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের বিষয়ে নজর দেয়া। খুরশিদ তার বইয়ে পরিষ্কার করে বলেছেন যে, তাকে পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কাজ করার জন্য বেশ বড় সুযোগ দেয়া হয়েছিল, বিশেষ করে যখন তা বাংলাদেশের মতো অতিনিকট প্রতিবেশীর বিষয় আসে। সালমান খুরশিদ লিখেছেন, একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আমার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছিল স্বাধীনতা। প্রতিবেশী, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ, চীনের সঙ্গে সহস্রাব্দের সংলাপ, জাপানের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে আগ্রহী ছিলেন।
ভারতে সাধারণ একটি ধারণা আছে যে, প্রথাগতভাবে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের কংগ্রেস পার্টির রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় থাকে তখন দিল্লি ও ঢাকার মধ্যে সম্পর্ক সব সময়ই ঊর্ধ্বমুখী থাকে। বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ইন্দিরা গান্ধী যে ভূমিকা পালন করেছিলেন তার ফলেই বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সঙ্গে কংগ্রেস ফার্স্ট ফ্যামিলি গান্ধীদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠতা পেয়েছে। এর অর্থ এই নয় যে, যখন আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে ক্ষমতার বাইরে থাকলে থাকলে, অর্থাৎ অন্য দল বাংলাদেশে ক্ষমতায় থাকলে ভারত তাদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখেনি।
সালমান খুরশিদ তার বইয়ে তুলে ধরেছেন, দু’দেশের নেতৃত্বের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রেখেছে ব্যক্তিগত যোগাযোগ। তবে ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দের চেয়ে কূটনীতিতে বড় হয়ে উঠেছে জাতীয় স্বার্থ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সালমান খুরশিদ যখন তার দায়িত্ব শুরু করেন তখন প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টিতে তিনি মনোনিবেশ করেছিলেন। তবে তার কাছে প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল ২০১২ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)র চেয়ারপারসন বেগম কালেধা জিয়ার দিল্লি সফর। ওই বইয়ে তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে তিক্ত রাজনৈতিক সম্পর্ক থাকায় কিভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার বিষয়ে কতটা সুক্ষè ভাবে কাজ করেছিল। ওই বইয়ে তিনি লিখেছেন, আমি দেখতে পেলাম বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে কিভাবে কার্যত দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করেছিল। আমি আমার পূর্বসূরি এসএম কৃষ্ণার কাছ থেকে ক্ষমতা বুঝে নেয়ার মাত্র ২৪ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে খালেদা জিয়া ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অতিথি হিসেবে ভারত সফর করছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমার উষ্ণ ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি হয়। আজমীর শরীফ জিয়ারতের পর নয়া দিল্লিতে প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জীর সঙ্গে তার সাক্ষাতের ব্যবস্থা করতে সমর্থ হয়েছিলাম। বেগম জিয়া এই সাক্ষাত পেতে খুব উদগ্রিব ছিলেন। তবে এ সাক্ষাতের ফলে তার প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ হাসিনার সঙ্গে চমৎকার সম্পর্কে কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কিনা তা আমাদেরকে সতর্কতার সঙ্গে হিসাব করতে হয়েছে।
দিল্লিতে সাধারণভাবে রাজনৈতিক বলয়ে একটি ধারণা আছে যে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জীর।  সালমান খুরশিদ তার বইয়ে লিখেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুঝতে পারে যে, আমরা একটি বড় সাফল্য আনতে পেরেছি এবং খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের বরফ গলাতে পেরেছি। আগের দিনগুলোতে তার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা ছিল হিম ঠা-া। নতুন সম্পর্কের বিষয়টি নিশ্চিত হই যখন আমি কয়েক মাস পরে বাংলাদেশ সফরে যাই এবং বেগম খালেদা জিয়া আমাকে উষ্ণ আতিথেয়তায় অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন করেন। তিনি আমাকে নৈশকালীন খাবারের আগে পেস্ট্রি ও অন্যান্য উপাদেয় খাবারে আপ্যায়িত করেন। এমনকি খালেদা জিয়া বিরলভাবে আমাকে বিদায় জানিয়েছিলেন এবং তার ড্রইং রুমের বাইরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু এসব ইতিবাচক উদ্যোগ উদ্যোগ হাওয়ায় মিলিয়ে যায়, যখন বাংলাদেশ সরকার সমর্থক ও উচ্চাকাঙ্খী জাতীয়তাবাদী সমর্থক ও জামায়াতে ইসলামীর কট্টরপন্থিরা ঢাকার রাজপথে ভয়াবহ সংঘাতে লিপ্ত হয়। এ সময় আমরা কার্যত আওয়ামী লীগ শিবিরের দিকে ঝুঁকতে হয়। এ সময় ভারতকে একটি সিদ্ধান্তে যেতে হয়। এক্ষেত্রে অবস্থান নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হওয়া ও সেজন্য সুযোগ হারানোটা সত্যিই বিপজ্জনক ছিল। ২০১৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ জরুরি ভিত্তিতে চাইছিল তিস্তার পানি বন্টন ও ছিটমহল বিনিময় । তবে এক বছর পরে জুনে ছিটমহল বিনিময় হয়। তখন কংগ্রেস ক্ষমতার বাইরে। আর তিস্তার পানি বন্টন চুক্তিটি এখনও ঝুলে রয়েছে, যদিও ভারতের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে এ বিষয়ে ঐকমত্য রয়েছে।

নিলামে যুবতী বিক্রি!

ভারতের উত্তর প্রদেশে এক যুবতীকে নিলামে বিক্রি করা হয়েছিল। ৭০ হাজার রুপির নিলামে তাকে বিক্রি করে দেয় প্রেমিকরূপী তার বয়ফ্রেন্ড। কিন্তু স্থানীয় পুলিশের তৎপরতায় রক্ষা পান তিনি। স্থানীয়রা পুলিশকে এ খবর জানান। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ অভিযান শুরু করে। উদ্ধার হন ওই যুবতী। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া। এতে বলা হয়, ওই যুবতী একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। এ ঘটনা উত্তর প্রদেশের রামপুর জেলার। সেখানকার পাতওয়াই পুলিশ স্টেশনের কর্মকর্তা মহেশ প্রসাদ বলেছেন, চারদিন আগে প্রেমিকরূপী একজন ওই যুবতীকে অপহরণ করে। এ সময় তার সঙ্গে ছিল আরও দুজন। তারা সবাই বাদাউন জেলার অধিবাসী। তারা মিলে ওই যুবতীকে অপহরণ করে চার দিন আটকে রাখে একটি গ্রামে। এরপর তাকে নিলামে ৭০ হাজার রুপিতে। এ ঘটনা জানতে পারেন স্থানীয় অধিবাসীরা। তারা খবর জানালে পুলিশ গিয়ে ওই গ্রামের একজন সাবেক গ্রামপ্রধানের বাড়ি ঘেরাও করে। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় ওই যুবতীকে। এসপি অতুল সাক্সেনা বলেছেন, আমরা নিলামের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই গ্রামে পুলিশ ফোর্স পাঠাই। তাতে উদ্ধার হন ওই যুবতী। তবে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। রামপুরের অতিরিক্ত এসপি তারিক মোহাম্মদ বলেছেন, আমরা অভিযুক্ত সব আসামীকে যত দ্রুত সম্ভব আটক করার নির্দেশ দিয়েছি। তাদের বাড়ি ঘেরাও করেছে পুলিশ। তবে সেখানে তাদের পাওয়া যায় নি। উদ্ধার করা যুবতীকে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হবে স্বীকারোক্তি রেকর্ড করার জন্য।