Thursday, November 29, 2012

সাতক্ষীরার নূরবানু পশ্চিমা মিডিয়ায়


সাতক্ষীরায় এসিডে পুড়িয়ে দেয়া নূরবানুর কষ্টকথা এখন বিদেশের মিডিয়ায়। তার ওপর তার স্বামী ও তার পরিবার থেকে যে নির্যাতন চালানো হয়েছে তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নূরবানু যে স্বামীর সঙ্গে ১৮ বছর ধরে সংসার করেছেন সেই স্বামীকেই একদিন অন্য নারীর প্রেমে মত্ত অবস্থায় দেখতে পান। এরপরই তিনি তার ওই স্বামীকে তালাক দেন। এর ৮ দিন পরেই তার ওই স্বামী তার মুখে, শরীরে এসিড নিক্ষেপ করে তার চেহারা বিকৃত করে দেয়। নূরবানুর দু’টি চোখই অন্ধ হয়ে যায়। তিনি বেঁচে যান কোনমতে। এ ঘটনায় তার ওই স্বামীর ১ বছরের জেল হয়। কিন্তু শাশুড়ি তার ছেলেকে দিয়ে তাকে বাধ্য করে ওই মামলা তুলে নিতে। তার স্বামীকে মুক্ত করাতে বাধ্য করেন তার শাশুড়ি। এরপর জোর করে তাদেরকে ফের ঘর-সংসার করতে বাধ্য করানো হয়। নূরবানু ভেবেছিলেন এবার তার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির সবার বোধোদয় হবে। কিন্তু না। নূরবানুর কপালে সুখ জোটেনি। এখন তিনি একেবারে অন্ধ হওয়ায় নিজে এক গ্লাস পানিও ঢেলে পান করতে পারেন না। এ নিয়ে হাফিংটন পোস্ট, লন্ডনের ডেইলি মেইল রিপোর্ট করেছে।

সচিত্র ওই রিপোর্টের সঙ্গে নূরবানুর বর্তমান সময়কার একটি ভিডিও জুড়ে দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নূরবানু ১৮ বছর ঘর-সংসার করেছেন তার স্বামীর সঙ্গে। তারপর হঠাৎ একদিন তিনি তার স্বামীকে দেখতে পান অন্য নারীর সঙ্গে। এ ঘটনায় স্বামীর ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন নূরবানু। তিনি তার স্বামীকে তালাক দেন। এর ৮ দিন পর মোটরসাইকেলে চেপে তার বাড়ি যায় তার স্বামী। তখন নূরবানু রান্না করছিলেন। তার স্বামী এ সময় তার ওপর এসিড নিক্ষেপ করে। এতে নূরবানু অন্ধ হয়ে যান। তার চেহারা বিকৃত হয়ে যায়। নূরবানুর এখন বয়স ৩৬ বছর। তাকে ফের তার স্বামীর ঘরে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তার শাশুড়ি তাকে বাধ্য করেছে স্বামীকে মুক্ত করতে। এজন্য তাকে এফিডেভিট দিতে বাধ্য করা হয়েছে। তার ওপর ভিত্তি করে তার স্বামীকে জেল থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। নূরবানুর ওপর এসিড নিক্ষেপ করে তার এই স্বামী পালিয়ে ছিল। ঘটনার ১০ মাস পর তাকে আটক করা হয়। তাকে ১ বছরের জেল দেয়া হয়। জেল থেকে তাকে বের করে আনেন নূরবানু। তিনি বলেন, লোকজন হয়তো ভাববে স্বামী হয়তো আমাকে অন্ধ বলে অনেক আদর করেন। অনেক ভালবাসেন। কিন্তু তা আর আমার কপালে জোটেনি। এখনও আমার স্বামী আমাকে প্রহার করে। মারে। এভাবেই আমার দিন কাটছে। বাংলাদেশে নারীদের ওপর এসিড নিক্ষেপের ফলে যে হাজার হাজার নারী অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হন তাদেরই একজন প্রতিনিধি নূরবানু। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে এমন এসিড নিক্ষেপের ঘটনা অনেক। অপরাধী চক্র বেশির ভাগই নাইট্রিক এসিড অথবা সালফিউরিক এসিড নিক্ষেপ করে থাকে। এ বছর এমন ৫৯টি ঘটনা ঘটেছে। ২০১১ সালে এসিড নিক্ষেপের শিকার হয়েছেন ১১৮ জন। এর মধ্যে ৭৫ জনই নারী। আবার ১৩ জনের বয়স ১৮ বছরের নিচে।

Thursday, November 15, 2012

সন্তান প্রসবের পূর্বমুহূর্তে বিয়ে...


এ ধরনের ঘটনা বাস্তবে সচরাচর ঘটে না। তবে সিনেমা বা নাটকের মূল উপজীব্য হয়ে উঠেছে কালে-ভদ্রে। যুক্তরাষ্ট্রের ওহিয়ো অঙ্গরাজ্যের একটি হাসপাতালই সাজলো বিয়ে-বাড়ির সাজে। হাসপাতালের নার্সরাই বিয়ের সব তদারকি সারলেন। ওই হাসপাতালের অন্য রোগীরা বিয়ের সরঞ্জামের ব্যবস্থা করলেন। এর সঙ্গে আরও এক মাত্রা যোগ করে গিফট-সামগ্রীর একটি দোকান সবাইকে বিয়ের ভোজ করালো। বাস্তবে সিন্ডারেলার কল্প-কাহিনী মঞ্চস্থ হওয়ার চেয়ে কোন অংশে কম নয়। গত সপ্তাহের ঘটনা। অন্তঃসত্ত্বা এক নারী ও তার প্রেমিকের জীবনের বিশেষ দিন ছিল এটি। সন্তান প্রসবের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই তিনি সাজলেন বিয়ের কনে। বর মাইকেল বোফ ও কনে সিনথিয়া রিজ। হাসপাতালে বিয়ে করবেন এমন কথা হয়তো কোন কনে স্বপ্নেও ভাববেন না। কিন্তু সিনথিয়ার কাছে এটাই ছিল সবচেয়ে উপযুক্ত ভেন্যু। ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বিয়ে। তারপর সন্তান জন্মদান। এতো ধকলের পর বেশ ক্লান্ত ২৭ বছরের সিনথিয়া রসিকতায় ভরা উচ্ছ্বাসের সঙ্গে বললেন,  বিয়েতে সবকিছু বেশ ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে। শিশুটিও যেন পৃথিবীতে এমনই একটি অভ্যর্থনা পেতে চেয়েছিল। খবর অনলাইন ইয়াহু নিউজের। ঘর মুছতে গিয়ে একটি ছোট দুর্ঘটনার কারণে সিনথিয়া নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সন্তান জন্ম দেন। সিনথিয়া ও তার স্বামী বফ চেয়েছিলেন বিয়েটা আগেই সেরে ফেলতে। কিন্তু দুর্ঘটনার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। কিন্তু শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। বফ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সব ঠিক করলেন। কর্তৃপক্ষও সানন্দে রাজি হয়ে যায়। বিছানার চাদর কেটে তৈরি করা গাউনেই কনে সাজলেন সিনথিয়া। নার্সরা সবাই সাহায্য করলেন। একটা পয়সাও খরচ করতে হয়নি বর-কনেকে। পুরোটাই বহন করলো একটি গিফটের দোকানের মালিক। সবচেয়ে আবেগঘন মুহূর্ত এলো যখন ফুটফুটে সন্তানটি ভূমিষ্ঠ হলো। নবজাতকটির ওজন ৪ পাউন্ড ১২ আউন্স। সিনথিয়া ও বোফ এখন তাদের সন্তানকে নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন।

Wednesday, November 14, 2012

ভারতে বাংলাদেশী কিশোরী গণধর্ষিত

সীমান্তের কাছে ভারতের উত্তর ২৪ পরগণায় গণধর্ষিত হয়েছে বাংলাদেশের এক কিশোরী। তার বয়স ১৫ বছর। তার নাম বা ঠিকানা জানা যায় নি। এ ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাছে বসিরহাটের স্বরূপনগর এলাকায়। এর প্রতিবাদে সেখানে সমাবেশ করেছে পশ্চিমবঙ্গ মহিলা গণতান্ত্রিক সমিতি। পুলিশ বলেছে, এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অপরাধীদের কাউকে আটক করা হয়নি। ধর্ষিত কিশোরী বসিরহাটের মাটিয়া এলাকায় তার বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। শনিবার রাতে সে তার বড় বোন ও কয়েকজন আত্মীয়ের সঙ্গে একটি গাড়িতে করে নিজ বাড়িতে ফিরছিল। সীমান্ত এলাকায় পৌঁছানোর পর নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণে গাড়ি থামাতে বাধ্য হন তারা। তখন হঠাৎ করেই চারপাশ থেকে ৫ যুবক গাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। তারা টেনেহিঁচড়ে ওই কিশোরীকে গাড়ি থেকে বের করে নেয়। তার সঙ্গে থাকা আত্মীয়রা চেষ্টা করেও দুর্বৃত্তদের থামাতে ব্যর্থ হন। তারা কিশোরীকে গাড়িতে উঠিয়ে সেখান থেকে দ্রুত চলে যায় কাছেরই একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে। সেখানে তারা পালাক্রমে তার ওপর নৃশংস নির্যাতন চালায়। এরপর সেখানেই তাকে ফেলে পালিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে বসিরহাটের উপ-বিভাগীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তার মেডিকেল টেস্ট করানো হয়েছে। স্বরূপনগর থানায় গণধর্ষণের একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

সিআইএ’র যৌন কেলেঙ্কারি নাটকীয় মোড় নিয়েছে



সিআইএ’র যৌন কেলেংকারি নাটকীয় মোড় নিয়েছে। সিআইএ’র সাবেক প্রধান জেনারেল (অব.) ডেভিড পেট্রাউসের যৌন কেলেঙ্কারি এখন নানা মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ছে। এতে জড়িয়ে গেছে, আফগানিস্তানে নিয়োজিত মার্কিন কমান্ডার জেনারেল জন অ্যালেনের নাম। বলা হচ্ছে, তিনিও কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকতে পারেন। ডেভিড পেট্রাউসের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন পলা ব্রডওয়েল নামে এক নারী। এখন বলাবলি হচ্ছে, তাদের এই প্রেমের কথা ফাঁস হওয়ার নেপথ্যে রয়েছেন জিল কেলি নামের আরেক নারী। তিনি ডেভিড পেট্রাউসের ঘনিষ্ঠ আরেক নারী বন্ধু। ওদিকে এই জিল কেলির সঙ্গে অনৈতিক যোগাযোগের অভিযোগ আছে জেনারেল জন অ্যালেনের। ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে তাদের দু’জনের মধ্যে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট বিনিময় হয়েছে। এ জন্য তার বিরুদ্ধে এফবিআই তদন্ত করেছে। ফলে এই কেলেঙ্কারিতে এখন জড়িয়ে পড়লেন চার জন। তারা হলেন- ডেভিড পেট্রাউস, পলা ব্রডওয়েল, জিল কেলি ও জন অ্যালেন। যুক্তরাষ্ট্রের অভিজাত গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএতে এমন ভয়াবহ কেলেঙ্কারিতে চারদিকে শোরগোল চলছে। মার্কিন প্রশাসন, সাধারণ জনগণ, রাজনীতিবিদ সবাই এ নিয়ে সমালোচনায় সোচ্চার। এমনই এক প্রেক্ষাপটে এফবিআই এজেন্টরা নর্থ ক্যারোলিনায় অবস্থিত পলা ব্রডওয়েলের বাড়িতে সোমবার তল্লাশি চালিয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এপি। এতে বলা হয়, নর্থ ক্যারোলিনার চার্লটে’তে পলা ব্রডওয়েলের বাড়িতে স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে প্রবেশ করে এফবিআই এজেন্টরা। সেখানে তারা প্রায় ২ ঘণ্টা অবস্থান করে। তবে এ সময় পলা ব্রডওয়েল বা তার পরিবারের কোন সদস্য বাড়িতে ছিলেন কিনা তা জানা যায় নি। এফবিআই’র মুখপাত্র শেলি লিঞ্চ এ অভিযানের বিষয়ে নিশ্চিত করলেও কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নি। সমপ্রতি ডেভিড পেট্রাউসের বান্ধবী জিল কেলি অভিযোগ করেন যে, তাকে ই-মেইলে হুমকি দিচ্ছেন পলা ব্রডওয়েল। জেনারেল ডেভিড পেট্রাউসের সঙ্গে রমরমা সম্পর্ক থাকার পরেও কেন জিল কেলিকে পলা ব্রডওয়েল হুমকি দিতে গেলেন! এ অনুসন্ধানে ধারণা করা হয়, পলা ব্রডওয়েল ভেবে থাকতে পারেন যে, পেট্রাউসের সঙ্গে তার মতো জিল কেলিরও সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে বা আছে। এমনতরো নানা রিপোর্টে এখন ভরপুর যুক্তরাষ্ট্র সহ সারাবিশ্বের মিডিয়া। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন পানেটা হনলুলু থেকে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে যাওয়ার সময় বিমানে সফরসঙ্গী সাংবাদিকদের লিখিতভাবে জানিয়েছেন, এসব বিষয় পেন্টাগনকে গত রোববার এফবিআই অবহিত করেছে। তিনি বলেন, ঘটনা জানার পর তিনি সোমবার আফগানিস্তানে নিয়োজিত মার্কিন কমান্ডার জেনারেল জন অ্যালেনের বিষয়ে তদন্ত করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দিয়েছেন। ফ্লোরিডায় ম্যাকডিল এয়ারফোর্সের ঘাঁটিতে স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন জিল কেলি। তিনি ডেভিড পেট্রাউসের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। ধারণা করা হয়, সিআইএ থেকে এর প্রধান জেনারেল ডেভিড পেট্রাউসকে সরানোর নেপথ্যে তার ভূমিকা বড়। কারণ, তিনি অভিযোগ করেছিলেন পলা ব্রডওয়েল তাকে হয়রানিমূলক ই-মেইল পাঠাচ্ছে। এ ঘটনায় এফবিআই তদন্তে নামে। এরপরেই বেরিয়ে আসে পেট্রাউসের সঙ্গে পলার গোপন প্রেমের কথা। ওদিকে পেট্রাউসের ঘনিষ্ঠজনরা জানতেন কেলি হলেন তার পারিবারিক বন্ধুর মতো। তাদের মধ্যে কোন প্রেম ছিল না। তবে কেন ব্রডওয়েল তাকে হুমকি দিতে গেলেন! কারণ, তার ধারণা হয়েছিল পেট্রাউসের সঙ্গে তার মতো শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন জিল কেলি। কিন্তু এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে সম্মানের পাত্র একজন জেনারেলের সুনাম একেবারে ধুলায় মিশে গেছে। প্রশ্ন উঠেছে, এফবিআই কিভাবে এ ঘটনা নাড়াচাড়া করেছে, কখন হোয়াইট হাউস তাদের গোপন প্রেমের কথা জানতে পেরেছে, কেন তা ৬ই নভেম্বর যুুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরে প্রকাশ পেল! বলা হচ্ছে, এফবিআই তাদের ওই গোপন প্রেমের কথা কয়েক মাস আগেই জানতো। কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার প্রভাব পড়তে পারে এমন সন্দেহে তা প্রকাশ করা হয় নি। এখন তা প্রকাশ পাওয়ায় ঘটনা কোথায় গিয়ে শেষ হয় তা এখন সময়ই বলে দেবে।

Monday, November 5, 2012

স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে প্রতারণা যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী ডাক্তারের জেল



গোপনে বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে এবং জমানো সব অর্থ তুলে নিয়েছেন বাংলাদেশের ডা. রায়হান চৌধুরী (৫১)। এর পর স্ত্রী ও সন্তানদের অসহায় অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে ফেলে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। দেশে ফিরে তিনি বাস করতে থাকেন বিলাসবহুল এপার্টমেন্টে। ওদিকে তার স্ত্রী ও সন্তানদের বাড়ি থেকে বের করে দেয় ক্রেতা। বাধ্য হয়ে স্ত্রী শারমিন ৩ সন্তানকে নিয়ে ওঠেন একটি আশ্রয়কেন্দ্রে। এ নিয়ে মামলা হয়। তদন্তকারীরা চোখ রাখেন ড. রায়হান চৌধুরীর ওপর। দীর্ঘদিন পর তিনি অক্টোবরের মাঝামাঝি পৌঁছেন যুক্তরাষ্ট্রে। অমনি বিমানবন্দরে ধরা পড়েন। তাকে আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে ৬ বছরের জেল দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একটি কারাগারে বন্দি। গতকাল এ খবর দিয়েছে অনলাইন নিউ ইয়র্ক পোস্ট।  এতে আরও বলা হয়, এ ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রুকলিনে। ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে ড. রায়হান তার স্ত্রী শারমিন ও তিন সন্তানকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেলে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। তখন তার তিন সন্তানের বয়স ৮, ৬ ও ২ বছর। কিন্তু তাদের কথা একবারও চিন্তা না করে তারা যে বাড়িতে অবস্থান করতো গোপনে রায়হান সেই বাড়ি ৯ লাখ ৭৫ হাজার ডলারে বিক্রি করে দেন। জমানো সব অর্থ তুলে নেন ২০০৫ সালের শেষের দিকে। এর পরই পালিয়ে পাড়ি দেন বাংলাদেশে। দেশে ফিরে তিনি রাজধানী ঢাকায় একটি বিলাসবহুল বাসায় অবস্থান করতে থাকেন। অন্যদিকে তিনি ব্রুকলিনের বাড়ি বিক্রি করে দেয়ায় ক্রেতার লোকজন সেই বাসা থেকে শারমিনের মেডিকেল ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট ও গহনাসহ যা পেয়েছে তার সবই নিয়ে যায়। তারা শারমিনকে তার সন্তানদের সহ বাসা থেকে বের করে দেয়। এ অবস্থায় শারমিন গৃহহীনের জন্য নির্ধারিত একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই পান। তিনি ছেলেমেয়েদের নিয়ে পড়েন কষ্টের সমুদ্রে। আইনি সহায়তা চান রাষ্ট্রের কাছে। এ খবর আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নজরে যায়। তারা গত ১২ই অক্টোবর কাতার থেকে ডা. রায়হান চৌধুরী ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের এক বিমানবন্দরে অবতরণ করামাত্র আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের লোকজন তার হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও জনসেবা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের টমাস ও’ডোনেল জানান, আমরা আগেই খবর পেয়েছিলাম ড. রায়হান আসছেন। ফলে তিনি বিমান থেকে নামার পরই আমরা তাকে আটক করি। এ সময় তিনি ছিলেন শান্ত। ভাবখানা এমন যে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে নতুন এসেছেন। ড. রায়হান চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে ফেলে আসার পর শারমিন অনন্যোপায় হয়ে বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেন। এ আবেদনের শুনানিসহ কার্যক্রম এগিয়ে চলতে থাকে। এমন সময় রায়হান জানিয়ে দেন এরই মধ্যে তিনি শারমিনকে তালাক দিয়েছেন এবং নতুন বিয়ে করেছেন। শারমিনের আইনজীবী লরেন্স গ্রিনবার্গ বলেন, এমন দাবি করে রায়হান ঢাকার একটি  বিলাসবহুল এপার্টমেন্টে বাস করতে থাকেন তার নতুন স্ত্রীকে নিয়ে। ওদিকে শারমিন একজন চিকিৎসকের সহকারী হিসেবে কাজ পেয়ে যান। বিয়ের আগে তিনি ছিলেন গাইনি বিশেষজ্ঞ। বিয়ে করে সেই ক্যারিয়ারে ইতি ঘটান। ততদিনে তিনি একটি এপার্টমেন্টের মালিক হন। এখন তার সন্তানরা পড়াশোনা করছে। তাদের ভরণপোষণের জন্য মাসে ৯৬৮০ ডলার দিতে অস্বীকৃতি জানান রায়হান, যদিও তার বছরে আয় ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার। তিনি ব্রুকলিনে মেইমোনাইডস মেডিকেল সেন্টারে এনেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ক্লিনিক ও ফোন কার্ড কোম্পানির ব্যবসা ছিল তার। গত বছর বিচারক শারমিনের তালাকের আবেদন গ্রহণ করেন। এ সময় বিচারক তাদের সম্পত্তি অর্ধেক-অর্ধেক ভাগাভাগি করে নিতে রায় দেন। এ রায় কার্যকর হলে শারমিনের পাওয়ার কথা ১০ লাখ ডলার। গত ১৫ই অক্টোবর রায়হানের বিরুদ্ধে শুনানি হয়। তখন বিচারক ৫ লাখ ডলারে তাকে জামিনে মুক্তি দেন। কিন্তু তিনি ওই পরিমাণ অর্থ নিয়ে যেতে পারেননি বলে তাকে আলেকজান্দ্রিয়ায় কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।

Sunday, November 4, 2012

আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হতে চান ফৌজিয়া কোফি




আফগানিস্তানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে ইচ্ছুক ফৌজিয়া কোফি। কিন্তু তার ইচ্ছে আফগানিস্তানের প্রেক্ষাপটে অনেকটাই অগ্রহণযোগ্য। কারণ, তিনি হচ্ছেন একজন নারী। তবে দেশের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি প্রায় অসম্ভব হলেও তিনি ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছেন। সমপ্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি দেশের রাজনীতির ব্যাপারে তার মতামত তুলে ধরার পাশাপাশি দেশের নানা সমস্যার ব্যাপারে কথা বলেছেন। কট্টরপন্থি তালেবানরা স্পষ্টভাষী ফৌজিয়াকে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করেছে। আফগান পার্লামেন্টের সদস্য হিসেবে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় প্রতিবারই তিনি দুই কন্যার কাছ থেকে শেষবারের মতো বিদায় নিয়ে আসেন। প্রতিবারই তার মনে হয়, আর হয়তো তিনি মেয়েদের কাছে ফিরে আসতে পারবেন না। সিএনএনের ক্রিস্টিন আমানপুরের সঙ্গে দেয়া সাক্ষাৎকারে ফৌজিয়া বলেছেন, আমাদের মানসিক কাঠামো পরিবর্তনের ব্যাপারে এবার আমাদেরকে চিন্তা-ভাবনা শুরু করা উচিত। এখনও আমাদের সমাজে সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য নিয়ে ভুল ধারণা বহাল রয়েছে। তবে এ নিয়ে লড়াই করতে হবে। কোন একজনকে ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, আফগান নারীদের মধ্যে প্রতি ১০ জনের মধ্যে মাত্র একজন অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন। অবশ্য ২০০১ সালের পর এ সাক্ষরতার হার তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। জোট বাহিনীর সেনাদের আফগানিস্তানে ১১ বছর অবস্থানের পরও কেবল অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার সন্দেহে তালেবানরা একজন নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে পারে। এছাড়া ধারণা করা হচ্ছে, ২০১৪ সালের শেষ নাগাদ প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের দ্বিতীয় মেয়াদে পাঁচ বছরের ক্ষমতা শেষ হওয়ার পরেও তিনি ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার চেষ্টা করবেন। অবশ্য আমানপুরের সঙ্গে গত এপ্রিলে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হামিদ কারজাই এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছিলেন, এ ধরনের প্রশ্ন শুনলেই তার বিস্ময় জাগে। 


কারজাইয়ের পক্ষ থেকে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার যে ঝুঁকি রয়েছে সে বিষয়টি স্পষ্ট করে ৩৭ বছর বয়সী ফৌজিয়া বলেছেন, তিনি (কারজাই) হয়তো তার ঘনিষ্ঠ কাউকেই ক্ষমতায় বসানোর ব্যাপারে সমর্থন করবেন। কারণ ক্ষমতায় আসার সব উপকরণই তাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক বাহিনীর আফগানিস্তান ছাড়ার ব্যাপারে ফৌজিয়া বলেন, এর ফলে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। আর এক্ষেত্রে আফগানিস্তানে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। তবে ফৌজিয়ার মতে, কারজাই ক্ষমতা আঁকড়ে থাকবেন এর চেয়েও আফগানদের জন্য বড় আশঙ্কা হচ্ছে পরিস্থিতি আবার সেই গৃহযুদ্ধ আর তালেবানদের আধিপত্যের অন্ধকার ইতিহাসের দিকে ফিরে না যায়। একজন নারী হিসেবে ফৌজিয়া চান না সেখানকার রক্ত এবং সম্পদ বৃথা যাক। তিনি বলেছেন, এ দেশের নারীরাই সবচেয়ে বেশি শান্তির দাবিদার। তবে সেই শান্তি হতে হবে সমন্বিত। যাতে গত ১০ বছরে আমাদের যে অর্জন সেটা যেন কোনভাবেই হারাবার আশঙ্কা না থাকে। যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে শান্তির পক্ষপাতী। তবে এ পর্যন্ত এ ধরনের  আলোচনা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ফৌজিয়া বলেন, আমরা সবাই মনে করি সহিংসতা নয়, কেবল আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই এ বিষয়টি সুরাহা করা সম্ভব। তবে তালেবানরা যদি রাজনৈতিক অংশীদার হতে চায় তাহলে তাদের অবশ্যই অস্ত্র পরিহার করতে হবে। আফগানিস্তানের সংবিধানকে তাদের সম্মান করতে হবে। 

আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্যই কেবল ফৌজিয়া আফগান নারীদের দুর্দশা পরিবর্তনের ব্যাপারে মরিয়া নন। শিশু অবস্থায় তার বাবা-মা তাকে তপ্ত সূর্যের নিচে তাকে ফেলে গিয়েছিল। পরে তাদের মন পরিবর্তন হওয়ায় তারা হয়তো তাকে আবার তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। ফৌজিয়া বলেন, আফগানিস্তানে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি ঘটে সেটি হচ্ছে ঐতিহ্যগতভাবেই তারা সবকিছু করে থাকেন। তারা ভুলভাবে ধর্মকে বুঝছেন। হয়তো আমার মা একজন নারী হিসেবে যথেষ্ট ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। তিনি হয়তো চাননি তার মতো আরেকটি মেয়ে পৃথিবীতে একই রকম ভোগান্তির শিকার হোক। ফৌজিয়া আফগানিস্তানের এই বাস্তবতারই পরিবর্তন চান।

ড. ইউনূসের ধারণা ব্যবহার করে প্রবাসী স্বজনের সঙ্গে সেতুবন্ধন গড়ছেন ইনফো লেডিস



শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বাংলাদেশী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ধারণা নিয়ে গ্রামের অনগ্রসর নারীদের মাঝে জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে প্রযুক্তির আলো। এর মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত স্বামী বা সন্তানের সঙ্গে স্কাইপ ব্যবহার করে তারা সরাসরি কথা বলতে পারছেন স্বজনের সঙ্গে, যেন পাশে বসে গল্প করছেন তারা। কয়েক বছর আগেও আমিনা বেগম কম্পিউটার দেখেন নি। কিন্তু এখন তিনি সেই কম্পিউটার ব্যবহার করে সৌদি আরবে অবস্থানরত তার স্বামীর সঙ্গে ভিডিও চ্যাট বা সরাসরি কথা বলেন। এ সময় কম্পিউটারের স্ক্রিনে তার স্বামীর মুখ ভেসে উঠতেই আমিনা বেগমের মুখে অমূল্য এক হাসি খেলা করে। তার সঙ্গে মনের সব গোপন কথা খুলে বলেন। শুধু আমিনা বেগমই নন। তার শাশুড়িও এসে যোগ দেন তার সঙ্গে। ছেলের সঙ্গে গল্প করেন যেন মুখোমুখি বসে। 

তাদের এ স্বপ্ন সত্যি করেছে ‘ইনফো লেডিস’ নামের একদল নারী। এরা বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে ল্যাপটপ আর ইন্টারনেট মডেম নিয়ে ঘোরেন। গ্রামের পিছিয়ে পড়া নারী ও অন্যদের তারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেবা দেন। স্কাইপ ব্যবহার করে তারা বিদেশে অবস্থানরত স্বজনের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। বিনিময়ে এক ঘণ্টার জন্য তারা নেন ২০০ টাকা। গতকাল বার্তা সংস্থা এপি এমন খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়, ইনফো লেডিস প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৮ সালে। স্থানীয় উন্নয়নমূলক গ্রুপ ডি ডট নেট (উ.হবঃ ) নামের একটি সংস্থা ও অন্যান্য কয়েকটি সংগঠন মিলে চালু করে এ প্রকল্প। এর অধীনে বেকার নারীদের সংগ্রহ করে তাদেরকে তিন মাসের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তাদেরকে শিখানো হয় ইন্টারনেট, প্রিন্টার ও ক্যামেরা চালানো। এরপর ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তাদেরকে বাইসাইকেল ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনতে সহায়তা দেয়া হয়। ডি ডট নেটের নির্বাহী পরিচালক অনন্য রায়হান বলেছেন, এ পদ্ধতিতে আমরা বেকার নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। একই সঙ্গে গ্রামকে ক্ষমতায়নে এগিয়ে নিচ্ছি। এ প্রকল্পে যেসব নারীকে নেয়া হয় তারা সাধারণত গ্রামের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর আন্ডারগ্রাজুয়েট। এ রকমই এক ইনফো লেডি যখন আমিনা বেগমের উঠোনে উপস্থিত হন, ল্যাপটপে মডেম যোগ করে স্কাইপ চালু করে দেন। প্রক্রিয়া শেষ করা মাত্র ল্যাপটপে ভেসে ওঠেন আমিনার স্বামী। আমিনা তাকে দেখে খানিকটা লাজুক হয়ে যান। কতদিনের দেখা নেই! তারপর আবার ছবি নয়, জীবন্ত স্বামী তাকে দেখছে, তিনি স্বামীকে দেখছেন তার পাশে বসে যেমন কথা বলতেন ঠিক তেমনি কথা বলতে পারছেন- এমনটা ভেবেই আমিনা বেগম শিহরিত হয়ে উঠেন। গাইবান্ধা জেলার একটি ছোট্ট গ্রামে আমিনার বাড়ি। পাশের গ্রাম সাঘাটার ১৬ বছর বয়সী তামান্না ইসলাম দীপা তার স্বামীর সঙ্গে এই সম্পর্কের সেতুবন্ধন তৈরি করে দিয়েছেন। আমিনা বলেন, আমার কোন কম্পিউটার নেই। যখন ইনফো লেডি সাইকেল চালিয়ে আমাদের বাড়ি আসে, আমি তার ল্যাপটপ ব্যবহার করি। আমার ফেসবুক বন্ধুদের সঙ্গেও আড্ডা দেই। আমরা শৈশবকালের বিয়ে, যৌতুক ও নারীদের যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে তাতে কথা বলি। ইনফো লেডিরা মাঝে মধ্যেই সামাজিক দায়িত্ব পালন করে। কখনও তারা ফি নেয়। কখনও নেয় না। তারা টিনেজ মেয়েদের সঙ্গে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা, বয়ঃসন্ধিক্ষণের বিভিন্ন বিষয়, জন্মবিরতিকরণ ও এইচআইভি নিয়ে কথা বলে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে সরকারি সেবার বিষয়ে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা করে দেয়। তারা  ক্ষেতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের সঠিক ব্যবস্থা সম্পর্কে কৃষকদের সহায়তা করে। তারা ১০ টাকার বিনিময়ে ছাত্রছাত্রীদের কলেজের ফরম অনলাইনে পূরণের সুবিধা করে দেয়। এমনকি এসব ইনফো লেডি রক্তচাপ ও রক্তে চিনির মাত্রা পরিমাপ করতেও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। ডি ডট নেটের নির্বাহী পরিচালক অনন্য রায়হান বলেন, তাকে এই প্রকল্পের ধারণা দিয়েছেন বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই মুহাম্মদ ইউনূসই ২০০৪ সালে গ্রামীণ নারীদের জন্য প্রথম মোবাইল ফোন চালু করেন। বর্তমানে সেই ধারা অনুসরণ করে দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯ কোটি ২০ লাখ। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ১৯টিতে প্রায় ১৬ জন ইনফো লেডি এখন দায়িত্ব পালন করছে। অনন্য রায়হান আশা করেন, ২০১৬ সালের মধ্যে তারা ১৫০০০ নারীকে প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন। গত জুলাইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ইনফো লেডিদের বিনা সুদে ঋণ দিতে রাজি হয়। প্রথম দফায় ঋণ বিতরণ শুরু হবে আগামী মাসে। এ অর্থের পরিমাণ ১০ কোটি টাকা। প্রবাসীদের কাছে অনন্য রায়হান এসব ইনফো লেডিকে সহায়তা করতে অর্থ পাঠানোর আহ্বান জানান দেশে। বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তিবিদ ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী এ পদক্ষেপকে অত্যন্ত গঠনমূলক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এ প্রকল্পে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ উপকৃত হবে। সাথী আকতার নামে এক ইনফো লেডি বলেন, তিনি যদি একজন স্কুলশিক্ষক হতেন তাহলে যে অর্থ আয় করতেন তার চেয়ে এ কাজ করে বেশি অর্থ আয় করতে পারছেন। তিনি বলেন, ল্যাপটপ ও সরঞ্জামাদি কিনতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। সেই ঋণ শোধ করার পর এখন তিনি গড়ে মাসে ১০ হাজার টাকা উপার্জন করছেন। তিনি বলেন, আমরা শুধু অর্থই উপার্জন করছি না। আমরা একই সঙ্গে তথ্যের দিক দিয়ে নারীদের ক্ষমতায়নে সহায়তা করছি।

Thursday, November 1, 2012

দুবাইয়ে সপরিবারে ইসলাম গ্রহণ


দুবাইয়ে ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড চ্যারিটেবল এক্টিভিটিজে এসে প্রতিদিনই লোকজন ইসলাম গ্রহণ করে থাকেন। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে একটি পরিবারের সবাই এক সঙ্গে সেখানে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। খালিজ টাইমস এক রিপোর্টে জানিয়েছে একই পরিবারের পাঁচ সদস্য মঙ্গলবার সকালে দুবাইয়ের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড চ্যারিটেবল এক্টিভিটিজে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। এ বিভাগের নিউ মুসলিমস শাখার প্রধান হুদা আল কাবি বলেছেন একটি পরিবারের- বাবা, মা, কন্যা, পুত্র এবং পুত্রবধূ- সবাই এক সঙ্গে এসে স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। হুদা বলেন, ইসলামের ব্যাপারে তাদের সঙ্গে কেউ কোন কথাই বলেননি। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, তারা ইসলামের সহনশীলতা এবং যৌক্তিক নীতিতে মুগ্ধ হয়ে বেশ অনুপ্রাণিত হয়েছেন। হুদা বলেছেন, ওই পরিবারের সবাই এখন ইসলাম শিক্ষা এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর ঘনিষ্ঠ হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এর সূচনা হিসেবে কারও সঙ্গে পরামর্শ না করেই নিজেদের নাম পরিবর্তন করে আরবিতে রেখেছেন। ওই পরিবারের পিতা নিজের নাম পরিবর্তন করে মোহাম্মদ, মা মরিয়ম, কন্যা আয়েশা, পুত্র ইশা এবং পুত্রবধূ সারা নাম রেখেছেন। ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড চ্যারিটেবল এক্টিভিটিজে আসার পর নব মুসলমান হিসেবে তাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে এক ব্রিফকেস ভর্তি বই পুস্তক, বুকলেট, সিডি দেয়া হয়েছে। পিতাসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ইসলাম গ্রহণকারী ইশা বলেছেন, দুবাই একটি শান্তিপূর্ণ শহর। এখানে সারা বিশ্বের মানুষ এক সঙ্গে সুখে শান্তিতে রয়েছেন। ইশা খালিজ টাইমসের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, তিনিসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা ব্যক্তিগত ভাবে মনে করেছেন আল্লাহ কখনও দুইজন বা তিনজন হতে পারেন না। সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ কেবল একজনই হতে পারেন। সঠিক পথের সন্ধান পেয়েছেন বলে আনন্দিত সাবেক প্রটেস্ট্যান্ট ক্রিস্ট্রিয়ান জেমস বর্তমানে ইশা নাম ধারণকারী বলেছেন, ইসলামকে দুই বছর ধরে গভীরভাবে পড়ার পরই তিনি সপরিবারে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। এই দুই বছরে তারা পবিত্র কোরানের ইংরেজি অনুবাদসহ অন্যান্য ইসলামিক গ্রন্থ পড়েছেন। ইশা বলেছেন, ইসলাম গ্রহণে তার কোন ধরনের সমস্যাই হয়নি। তিনি বলেন, দেশে আমার আত্মীয়স্বজন আমাদের এ উদ্যোগের ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেননি। তবে তিনি দেশে ফিরে তার আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে ইসলামের মহানুভবতা এবং জীবনে সুখী হওয়ার জন্য সঠিক পথে আসার কথা বলবেন। ভারতের হায়দরাবাদের বাসিন্দা ইশা দুবাইকে খুব ভালবাসেন। তিনি দুবাইকে নিজের দ্বিতীয় আবাস ভূমি হিসেবে বিবেচনা করেন। তিনি বলেছেন, এখানে সবাই শান্তিপূর্ণভাবে বাস করছেন। এ শহরই আমাকে সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছে।

সুনন্দা পুস্করকে নিয়ে তোলপাড়

আবার ভারতে বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এসেছেন সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শশী ঠারুরের স্ত্রী সুনন্দা পুস্কর। তার দিকে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী আপত্তিকর মন্তব্য ছুড়ে মেরেছেন। বলেছেন, সুনন্দা পুস্কর হলেন শশী ঠারুরের ৫০ কোটি রুপির প্রেমিকা। এমন মন্তব্যে শুধু শশী ঠাকুর একাই নন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিন্দা জানিয়েছেন। জবাবে শশী ঠারুর বলেছেন, আমার স্ত্রী ৫০ কোটি রুপি মূল্যের চেয়েও অনেক বেশি কিছু। সে অমূল্য সম্পদ। এর মূল্য বুঝতে হলে আপনাকে ভালবাসতে হবে কাউকে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজ দল কংগ্রেসের এক কর্মী থিরুবানান্দাপুরাম বিমানবন্দরে সুনন্দা পুস্করের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এ সময় সেখানে তিনি ওই কর্মীর গালে কয়েকবার চড় বসিয়ে দেন। ক্রিকেট কেলেঙ্কারিতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদ ত্যাগ করলেও শশী ঠারুরকে নতুন করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী পদে। ক্রিকেট কেলেঙ্কারির সঙ্গে সঙ্গে তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল সুনন্দা পুস্করের নাম। এ সব মিলে এক জটিল পরিস্থিতিতে তিনি তখন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদ ত্যাগ করেছিলেন। তার পরপরই তিনি সুনন্দা পুস্করকে বিয়ে করেন। তা নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ায় ফলাও করে রিপোর্ট ছাপা হয়। কিন্তু সমপ্রতি তার সেই প্রেয়সী, স্ত্রী সুনন্দা পুস্করকে ‘৫০ কোটি রুপির প্রেমিকা’ বলে মন্তব্য করেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এতে শশী ঠারুরই নন, ক্ষেপে গিয়েছে কংগ্রেসও। তারা নরেন্দ্র মোদিকে এমন মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বলেছে, এমন মন্তব্য করার  জন্য তার মতো ব্যক্তির পদত্যাগ করা উচিত। অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির সেক্রেটারি সুধাকর রেড্ডি বলেছেন, নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে ‘মাউনমোহন সিং’ আখ্যায়িত করে তাকেও অবমাননা করেছেন। এর জন্য তার লজ্জাবোধ থাকা উচিত। তিনি শশী ঠারুর ও তার স্ত্রীকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা প্রত্যাহার করা উচিত। তার কোন বাজে কথা বলা সাজে না। কারণ, এটা তাকে মানায় না। গুজরাট কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট অর্জুন মোধবাদিয়া অভিযোগ করেন, নিজের এমন মন্তব্যের মাধ্যমে নরেন্দ্র মোদি দেশের সব নারীকে অবমাননা করেছেন। নরেন্দ্র মোদির এ কার্যকলাপের নিন্দা জানিয়েছে বাম ফ্রন্টও। সিপিএম নেতা বৃন্দা কারাত বলেছেন, এমন মন্তব্য আসতে পারে কেবল মাত্র কলুষিত মানসিকতার কোন ব্যক্তির মুখ দিয়ে। এমন মন্তব্য করতে পারে শুধু একজন বিপথগামী। এটাই কি তাদের শিক্ষা, আদর্শ? তাদের এই আদর্শের কথা এখন সারাবিশ্ব জানতে পারছে। তাদের এই আদর্শ হলো নারী বিদ্রোহী, জনগণ বিরোধী ও গণতন্ত্র বিরোধী। যার আদর্শ এমন তাকে কেন তার দল এমন অবস্থানে রেখেছে? নরেন্দ্র মোদির ওই মন্তব্যকে বিপর্যয়কর বলে অভিহিত করেছেন সমাজকর্মী কিরণ বেদী। তিনি বলেন, আমাদের জনগণের উচিত হবে এ ধরনের প্রবণতাকে প্রত্যাখ্যান করা। এক সময় কেরালাভিত্তিক আইপিএল দল কোটি তাস্কারসের শতকরা ১৯ ভাগ শেয়ারের মালিক ছিলেন সুনন্দা পুস্কর। এর অর্থমূল্য ৫০ কোটি রুপি। এ নিয়ে যখন তীব্র বিতর্ক শুরু হয় তখন সুনন্দা আত্মসমর্পণ করেন। স্বীকার করেন তিনি ওই বিতর্কে জড়িত। তিনি এ সময় ৫০ কোটি রুপির ইকুইটি ফেরত দেন। এ বিতর্কে প্রেমিকা সুনন্দাকে সুবিধা দেয়ার ঘটনায় ফেঁসে যান শশী ঠারুর। ফলে তাতে মন্ত্রিত্ব হারাতে হয়।

Bicycling ‘Info Ladies’ bring Internet to remote Bangladesh villages where connections rare





Source: The Washington Post
JHARABARSHA, Bangladesh — Amina Begum had never seen a computer until a few years ago, but now she’s on Skype regularly with her husband. A woman on a bicycle brings the Internet to her.
Dozens of “Info Ladies” bike into remote Bangladeshi villages with laptops and Internet connections, helping tens of thousands of people — especially women — get everything from government services to chats with distant loved ones. It’s a vital service in a country where only 5 million of 152 million people have Internet access.
The Info Ladies project, created in 2008 by local development group D.Net and other community organizations, is modeled after a program that helped make cellphones widespread in Bangladesh. It intends to enlist thousands more workers in the next few years with startup funds from the South Asian country’s central bank and expatriates working around the world.
D.Net recruits the women and trains them for three months to use a computer, the Internet, a printer and a camera. It arranges bank loans for the women to buy bicycles and equipment.
“This way we are providing jobs to jobless women and at the same time empowering villagers with critical information,” said Ananya Raihan, D.Net’s executive director.
The women — usually undergraduates from middle-class rural families — aren’t doling out charity. Begum pays 200 takas ($2.40) for an hour of Skype time with her husband, who works in Saudi Arabia.
Begum smiles shyly when her husband’s cheerful face pops up. With earphones in place, she excitedly tells him she received the money he sent last month. He asks her to buy farm land.
Even Begum’s elderly mother-in-law now uses Skype to talk with her son.
“We prefer using Skype to mobile phones because this way we can see him on the screen,” Begum said, beaming happily from her tiny farming village in Gaibandha district, 120 miles (192 kilometers) north of the capital, Dhaka.
In the neighboring village of Saghata, an Info Lady is 16-year-old Tamanna Islam Dipa’s connection to social media.
“I don’t have any computer, but when the Info Lady comes I use her laptop to chat with my Facebook friends,” she said. “We exchange our class notes and sometimes discuss social issues, such as bad effects of child marriage, dowry and sexual abuse of girls.”
The Info Ladies also provide a slew of social services — some for a fee and others for free.
They sit with teenage girls where they talk about primary health care and taboo subjects like menstrual hygiene, contraception and HIV. They help villagers seeking government services write complaints to authorities under the country’s newly-enacted Right to Information Act.
They talk to farmers about the correct use of fertilizer and insecticides. For 10 takas (12 cents) they help students fill college application forms online. They’re even trained to test blood pressure and blood sugar levels.
“The Info Ladies are both entrepreneurs and public service providers,” Raihan said.
Raihan borrowed the idea from Bangladeshi Nobel laureate Muhammad Yunus, who in 2004 introduced mobile phones to rural women who had no access to telephones of any kind, by training and sending out scores of “Mobile Ladies” into the countryside.
That hugely successful experiment drew in commercial mobile phone operators. Now more than 92 million people in Bangladesh have cellphone access.
Nearly 60 Info Ladies are working in 19 of Bangladesh’s 64 districts. By 2016, Raihan hopes to train 15,000 women.
In July, Bangladesh’s central bank agreed to offer interest-free loans to Info Ladies. Distribution of the first phase of loans, totaling 100 million takas ($1.23 million), will begin in December. Raihan said D.Net is also encouraging the large population of Bangladeshi expatriates to send money home to help Info Ladies get started.
“It’s very innovative,” says Jamilur Reza Chaudhury, a pioneer of information technology education in Bangladesh. “The project is really having an impact on the people at grass-root level.”
Info Lady Sathi Akhtar, who works in Begum’s and Dipa’s villages, said she makes more at the job than she would as a school teacher. She said that after making payments on her 120,000 taka ($1,480) loan and covering other costs, she takes home an average of 10,000 takas ($123) a month.
“We are not only earning money, we are also contributing in empowering our women with information.” ‘’That makes us happy.”