Wednesday, September 19, 2012

কাহিনীকার নবরাজ হত্যা জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে কয়েকজন অভিনেত্রীকে

ভারতের মুম্বইতে হত্যা করা হয়েছে নবরাজ কাটরা নামে ৬৫ বছর বয়সী চলচ্চিত্রের কাহিনীকার ও ফটোগ্রাফারকে। কিন্তু কে তাকে খুন করেছে, কেন করেছে তা অনুসন্ধান করতে গিয়ে পুলিশের সন্দেহের তালিকায় উঠে আসছে কয়েকজন সুপরিচিত অভিনেত্রীর নাম। তাদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। তবে তাদের কারো নাম প্রকাশ করা হয়নি। ভারতের একটি অনলাইন ট্যাবলয়েড দৈনিক এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়, ওই অভিনেত্রী নবরাজকে হত্যা করতে দুজন ঘাতককে ভাড়া করে থাকতে পারেন। এর আগে তাকে যৌন হয়রানি করা হয়েছে। এর কারণ, পুলিশ নবরাজ কাতরাকে যেখানে হত্যা করা হয়েছে সেখান থেকে উদ্ধার করেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নমুনা। এর মধ্যে রয়েছে কনডম, ভায়াগ্রা, সেক্স টয়। নবরাজকে মুম্বইয়ের এলআইসি কলোনিতে তার নিজের ফ্ল্যাটে হত্যা করা হয় গত শুক্রবার। ওই ফ্ল্যাটটিকে তিনি অফিস হিসেবে ব্যবহার করতেন। ওইদিন দুপুরের দিকে দু’অজ্ঞাত ব্যক্তি তার কাছে যায়। ওই কলোনির বাসিন্দারা বলেছেন, তারা ওই দু’ব্যক্তিকে দৌড়ে বেরিয়ে যেতে দেখেছেন। এরপর তারা নবরাজের ফ্ল্যাটে যান। দেখতে পান তিনি ফ্লোরে নিথর হয়ে পড়ে আছেন। তার মুখে কাপড় গুঁজে দেয়া হয়েছে। দু’হাত পিঠমোড়া করে বাঁধা। খবর পেয়ে পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করে। তারা ঘটনাস্থলে পায় কিছু কনডম, ভায়াগ্রা, সেক্স টয়, ছবি ও আপত্তিকর কিছু ভিডিও। তাতে রয়েছে তার স্টুডিওতে যাওয়া অভিনেত্রী ও মডেল। সূত্র বলেছে, তাদের মাঝ থেকে সুপরিচিত কয়েকজন অভিনেত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ডাকতে পারে। পুলিশের সন্দেহ তাদের কেউ একজন নবরাজকে যৌন হয়রানি করেছেন এবং খুনিদের ভাড়া করেছিলেন। তবে পুলিশ এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কি কারণে বা কে নবরাজকে হত্যা করেছে। এরই মধ্যে তার স্ত্রী ও কন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। নবরাজের অফিস ফ্লোরে যেসব জিনিস পাওয়া গেছে সে বিষয়ে তারা অজ্ঞ বলে জানিয়েছে। তার স্ত্রী বলেছেন, গত ৫ই সেপ্টেম্বর তিনি দিল্লি যান। স্বামীকে হত্যার সময় তিনি সেই দিল্লিতেই ছিলেন। তিনি আরও বলেছেন, তিনি কখনও তার স্বামীর স্টুডিওতে যাননি। নবরাজের কন্যা বলেছেন, তিনি তার স্বামীর সঙ্গে কান্দিভলির চারকোপের বাসায় বসবাস করছেন। তিনিও তার পিতার অফিসে কোনদিন যাননি। বিভিন্ন সূত্র বলেছে, গোয়েন্দারা বেশকিছু পুরনো সিসিটিভির ফুটেজ ও ছবি নিয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। তাতে দেখা গেছে, একজন পুরুষ এক নারীর সঙ্গে বিবস্ত্র হয়ে নাচছে। এরই মধ্যে ক্রাইম ব্রাঞ্চ অনুসন্ধান শুরু করেছে।

ওমান থেকে নিঃস্ব হয়ে ফিরছেন ২০ বাংলাদেশী

জীবনকে নতুন করে সাজানোর স্বপ্ন নিয়ে ওমানে পাড়ি জমানো কয়েকজন বাংলাদেশী দেশে ফিরছেন নিঃস্ব হয়ে। তাদের সংখ্যা প্রায় ২০। গত ৫ মাস তারা বেতনভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন। তারা দেশী প্রবাসীদের কাছ থেকে, আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধার করে কোনমতে বেঁচে আছেন। এ অবস্থায় দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় একটি রিপোর্ট প্রকাশ হয়। এরপরই ওমানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করে। তাদের হস্তক্ষেপে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ওইসব বাংলাদেশীকে দেশে ফেরত পাঠাতে রাজি হয়। গতকাল অনলাইন টাইমস অব ওমান এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়, ওমানের আদম এলাকায় বিভিন্ন বাণিজ্যিক ও নির্মাণ কোম্পানিতে কাজ করছিলেন। কিন্তু তাদের বেতনভাগা দেয়া হচ্ছিল না। অন্য সুবিধা তো পরের কথা। ওমানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, আটকে পড়া ওইসব বাংলাদেশী সোমবার তাদের কাছে যান। তারা জানান, ৫ মাস ধরে তারা বেতনভাতা পাচ্ছেন না। এতে তাদের সঙ্গে নিয়োগকারীরা যে চুক্তি করেছিল তা লঙ্ঘিত হচ্ছে। তিনি বলেন, বারবার অনুরোধের প্রেক্ষিতে আমরা তাদেরকে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করি। এরপরই তারা ওই বাংলাদেশীদের ফেরত পাঠাতে রাজি হয়। ওদিকে বাংলাদেশী ওই শ্রমিকরা বলেছেন, তাদেরকে চুক্তি অনুযায়ী কাজ দেয়া হয়নি। তাদেরকে ভাল খাবার দেয়া হয়নি। থাকতে দেয়া হয়েছে নোংরা স্থানে। তাদেরই একজন ওমর মিয়া। তিনি বলেন, আমরা দালালদের বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে ওমানে এসেছি। কিন্তু এখানে পৌঁছে বুঝতে পারি, আমরা ফাঁদে পড়েছি। আমাদের জন্য কোন কাজ ছিল না। ঠিকমতো থাকতে, খাবার দিতে পারতো না। তিনি আরও বলেন, দু’-এক মাস পরে আমাদের ২৭ জনের ভিতর থেকে ৮ জনকে পেট্রোলিয়াম ডেভেলপমেন্ট ওমানে চাকরি দেয়া হয়েছে। আমাদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে পেট্রোলিয়াম ডেভেলপমেন্ট ওমান আমাদের বেতন পরিশোধ করলেও তারা তা পরিশোধ করতো না আমাদের কাছে। বাংলাদেশী দালাল আমাদের থেকে সরে পড়ে। এতে আমাদের জীবন দুঃসহ হয়ে পড়ে। আমাদেরকে এখন দেশে ফেরত পাঠানো হলে জীবন কঠিন সংগ্রামের মধ্যে পড়বে। আমরা তো দারিদ্র্য তাড়ানোর জন্য অনেক স্বপ্ন বুকে ধরে দূরের দেশ ওমানে এসেছিলাম। কিন্তু তাতে আমাদের দারিদ্র্য আরও গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে।

বাংলাদেশীর হাতে বাংলাদেশী খুন
ওমানের মাস্কটে নিয়োগকারীকে খুন করেছে এক বাংলাদেশী দর্জি। দুজনই বাংলাদেশী নাগরিক। গতকাল এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ওমান। এতে বলা হয়, কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে নিয়োগকারীকে দেশটির শিনাস এলাকায় খুন করে ওই অধীনস্ত দর্জি। মালিককে খুন করে ওই দর্জি পালিয়েছে। সোমবার এ ঘটনা ঘটে। এতে আরও বলা হয়, দোকানের ভিতরেই ওই দর্জি তার মালিককে কাঁচি দিয়ে তিনবার আঘাত করে। এতে তিনি মারাত্মক আহত হন। হাসপাতালে নেয়ার পথেই মারা যান তিনি। পুলিশ বলেছে, মালিককে খুন করার পরই ওই বাংলাদেশী দর্জি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছে। তবে তাকে ধরার জন্য পুলিশ স্থানীয় অন্য নিরাপত্তা সংস্থার সহায়তা নিয়ে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে ইউটিউব বন্ধ ,বিতর্কিত চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী বললেন, নির্মাতা প্রতারক

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)কে নিয়ে নির্মিত কটাক্ষমূলক চলচ্চিত্রের ট্রেলর ও অন্য সব ভিডিওচিত্র নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ। এ নিন্দনীয় ছবিটি গুগলের ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ সহ সারা মুসলিম জাহানে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরই প্রেক্ষিতে এগুলো যাতে এ দেশে দেখা না যায় সে জন্য গুগলকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে গুগলকে চিঠি দিয়েছে সরকার। রোববার রাতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ওই চিঠি লেখে। এ সংস্থার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ওই ভিডিও ফুটেজ সরিয়ে নিতে গুগলকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এর আগে এ ছবির তীব্র নিন্দা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া। যে ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’ ছবির জন্য সারা মুসলিম জাহান উত্তেজিত, সেই ছবির অভিনেত্রী সিন্ডি লি গারসিয়া (৫৫) বললেন, এই ছবি একটি প্রতারণা। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’। এর নির্মাতা তাকে বলেনি যে, এটি ইসলামবিদ্বেষী ছবি। নির্মাতার ফাঁদে ওই ছবিতে অভিনয় করায় তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। ফলে তিনি পরিবারসহ আত্মগোপন করে আছেন। গতকাল অনলাইন নিউ ইয়র্ক ডেইলি নিউজ এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়, সিন্ডি লি গারসিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাসকারী অভিনেত্রী। ইসলামবিদ্বেষী ওই ছবিটির কারণে লিবিয়া থেকে মিশর, পুরো মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়ার বেশির ভাগ দেশ, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে উত্তেজনা তুঙ্গে। সিন্ডি লি সোমবার বলেছেন, ইন্টারনেটে আমাকে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। লোকজন বলছে, তারা আমাকে কেটে টুকরো টুকরো করবে। আমার পরিবারেরও একই দশা হবে। তিনি বলেছেন, এ হুমকির বিষয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইকে জানিয়েছেন। সিন্ডি লি গারসিয়ার ফেসবুকেও হুমকি দেয়া হয়েছে। তার ফেসবুকের পেজ এমন হুমকিতে সয়লাব। এরই মধ্যে তিনি ছদ্মনাম ধারণ করে আত্মগোপন করেছেন। তিনি বলেন, এখন বেঁচে থাকার জন্য আমরা নতুন বাসস্থান খুঁজছি। আমার স্বামী ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছে। আমার পুরো পরিবার মূর্ছা অবস্থায় রয়েছে। তিনি বলেছেন, নাতিপুতিদের নিরাপত্তার জন্য তাদের কাছ থেকে চলে গেছেন তিনি। ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’-এ এক যুবতীর মায়ের চরিত্রে দেখা যায় সিন্ডিকে। সেখানে মহানবী (সা.)কে উদ্দেশ্য করে অবমাননাকর মন্তব্য করতে শোনা যায় তাকে। তিনি বলেছেন, তাকে এ ছবির যে পাণ্ডুলিপি দেয়া হয়েছিল তা ছিল অংশবিশেষ। তাতে মুসলমান বা ইসলামের কোন প্রসঙ্গ ছিল না। গারসিয়া বলেন, আমাকে পূর্ণাঙ্গ পাণ্ডুলিপি দেয়া হয় নি। আমি শুধু আমার ভূমিকার সংলাপগুলো হাতে পেয়েছি। আমি বুঝতে পারিনি যে নির্মাতা এর মাধ্যমে ইসলামকে বিদ্রূপ করে ছবি নির্মাণ করছে। এ অসম্মানজনক কাজে আমি জানলে কখনও জড়িত হতাম না। এসব কারণে নির্মাতা নাকৌলা বাসেলি নাকৌলাকে তাই গারসিয়া অপরাধী হিসেবে দায়ী করেন। বলেন, সে-ই দায়ী। আমি নির্দোষ। সে একজন প্রতারক। সে আমাকে পুরোপুরি ভুলপথে পরিচালিত করেছে। ওদিকে ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’-এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশ। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত সহ বিভিন্ন দেশে ইউটিউব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ওদিকে এ ছবির তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন লেবাননে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ। সোমবার তিনি জনসমক্ষে বেরিয়ে এসে হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশে রাজধানী বৈরুতে বক্তব্য রাখেন। এভাবে তার জনসমক্ষে বেরিয়ে আসা এক বিরল ঘটনা। ৬ বছরের মধ্যে এদিন তিনি ৫ম বারের মতো বেরিয়ে আসেন। এতে তিনি বলেন- হে নবী (সা.) আপনার জন্য আমরা মরতে পারি। আমার অস্তিত্ব, আমার রক্ত সবই আপনার জন্য। জনতার সমুদ্রে তিনি এ ভাষণ দিয়ে তার প্রতিধ্বনি তুলতে বলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাদের সমস্বরে উচ্চারণে বৈরুত যেন কেঁপে ওঠে। এতে তিনি বলেন, আমেরিকাকে অবশ্যই বুঝতে হবে এ ধরনের ছবি মুক্তি দেয়া কতটা ভয়াবহ, অত্যন্ত ভয়াবহ, সারা বিশ্বে এর রয়েছে সুদূরপ্রসারী প্রতিক্রিয়া। ওদিকে বৈরুতের মার্কিন দূতাবাসের কূটনীতিকরা গোপনীয় মার্কিন নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলতে শুরু করেছেন। মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশসহ লেবাননে মার্কিনবিরোধী বিক্ষোভের কারণে সতর্কতার অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে এপি জানিয়েছে, বৈরুত দূতাবাসের নিরাপত্তা প্রক্রিয়া পুনর্মূল্যায়ন করে সেখানকার গোপনীয় নথিপত্র ধ্বংস করার কাজ শুরু করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, ইসলামের জন্য আপত্তিকর একটি চলচ্চিত্র নিয়ে হিজবুল্লাহর বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে দূতাবাসে কর্মরত স্থানীয়দের আগেভাগেই ছুটি দেয়া হয়েছে। ওয়াশিংটন থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেছেন, কড়া নিরাপত্তাধীন বৈরুতের মার্কিন দূতাবাসে আশু কোন হুমকি নেই। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার থেকে বেশ কয়েকটি মার্কিন দূতাবাসে বিক্ষোভকারীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে।

Tuesday, September 18, 2012

সোয়াজিল্যান্ডের রাজার সম্মানে উন্মুক্তবক্ষ তরুণীদের নৃত্য


  সোয়াজিল্যান্ডের হাজার হাজার তরুণী খোলা বুকে রাজার সামনে প্যারেড করে নিজেদের সতীত্ব এবং ঐক্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। পূর্ণ নারী হিসেবে বিকশিত হওয়া এবং নিজেদের কুমারিত্বের বিষয়টি উদযাপনের লক্ষ্যে রোববার এবং সোমবার ঐতিহ্যবাহী উমলাঙ্গা রিড ড্যান্সের আয়োজন করা হয়। এর মাধ্যমে তারা নেচে গেয়ে রাজা এবং মহামান্য হস্তিনী বলে পরিচিত রাজমাতার প্রতি সম্মান জানিয়েছেন। আফ্রিকার সবচেয়ে দরিদ্র এবং রাজতন্ত্র শাসিত দেশে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমালোচনা থাকলেও এতে অংশ নেয়া তরুণীরা সে সব সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। এতে অংশগ্রহণকারী ১৮ বছর বয়সী সিবিনে ডলামিনি বলেছেন, আমি সোয়াজিল্যান্ডের একজন কুমারি হিসেবে এ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে গর্বিত। রাজা এবং অন্য সবার সঙ্গে নিজেদের একাত্মতা প্রকাশ করতেই আমরা এ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছি। প্রায় ডজন খানেক স্ত্রীর পতি এবং ২০০ মিলিয়ন ডলারের অধিপতি রাজা তৃতীয় মাসওয়াতির নিয়োগ করা প্রশাসন ২০০৯ সালের মন্দার পর দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পর রাজা তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিলেন। অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও রাজ পরিবারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার কোন ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। অতীতে রাজা এ ধরনের অনুষ্ঠান থেকেই নতুন স্ত্রী নির্বাচন করতেন। এবারের অনুষ্ঠানেও বেশ কয়েকজন তরুণী রাজার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন। রানী হওয়ার আশায় ৬০ কিলোমিটার দূরে থেকে এ অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণকারী ১৪ বছরের কিশোরী ফাকাজিলে ডলামিনি বলেছেন, আমি নির্বাচিত হলে খুব বিত্ত-বৈভবের মধ্য দিয়ে জীবন কাটাতে পারবো। নতুন রানীকে একটি বিএমডব্লিউ এবং প্রাসাদ দেয়া হয়। রাজ পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বহু বিবাহ সোয়াজিল্যান্ডের ঐতিহ্য। এটি জাতীয় ঐক্য জোরদার করতে সহায়ক বলে রাজ পরিবারের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে।  

রুশদিকে হত্যার পুরস্কার বাড়িয়েছে ইরান

কুখ্যাত লেখক সালমান রুশদিকে হত্যার  জন্য ঘোষিত পুরষ্কার আরও ৫ লাখ ডলার বাড়িয়েছে ইরান। এখন এই পুরস্কারের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৩৩ লাখ ডলার। একই সঙ্গে ইরান বলেছে, যদি ইতিপূর্বে বিতর্কিত এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত বৃটিশকে হত্যা করা যেত তবে নবী মুহাম্মদ (সা.) এর চরিত্র হনন করে ইনোসেন্স অব মুসলিমসের মতো চলচিত্র নির্মাণ করা হতো না। ১৯৯৮ সালে সালমান রুশদির লেখা বিতর্কিত উপন্যাস স্যাটানিক ভার্সেস প্রকাশ করার পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি রুশদিকে হত্যা করার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেন। যদিও পরে ইরানের কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দেন যে এমন ঘোষণা বাস্তবায়ন করা হবে না। দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, ইরানের দরিদ্রদের সহায়তায় শক্তিশালী ফাউন্ডেশনের প্রধান আয়াতুল্লাহ হাসান সানি বলেছেন, রুশদির বিষয়ে দেয়া ইমামের ফতোয়া বাস্তবায়ন হলে মিথ্যা ও বিতর্কিত এমন ফিল্ম তৈরি করা হতো না। ইসলাম বিরোধী কোন চলচিত্র, আর্টিকল ও ডকুমেন্ট প্রকাশ করা হতো না। হাসান সানি বলেন, বড় শয়তান আমেরিকা ও জাতি বিদ্বেষী ইহুদিদের আশ্রয়ে ইসলামের কুৎসা রটনায় লিপ্ত ধৃষ্ট শত্রুরা কেবল এই ইসলামী আদেশের কাছেই মাথানত করতো। তিনি বলেছেন, ওই সময়ের ঘোষণাটির উদ্দেশ্য ছিল ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রের মূল উৎপাটন করা। এখন এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা আরও বেশি প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। তারপরেই সানি বলেছেন, আগের অঙ্কের সঙ্গে আরও ৫ লাখ ডলার যোগ করছি আমি। যে কেউ এই আদেশ বাস্তবায়ন করবে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে এ পরিমাণ অর্থ পুরস্কার দেয়া হবে। টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, আগের ২৮ লাখের সঙ্গে এখন মোট পুরস্কারের পরিমাণ দাঁড়ালো ৩৩ লাখ ডলার। 

ওয়েবক্যামে ব্লাকমেইল

ওয়েবক্যামে ডেটিং নিয়ে নানা সমালোচনা। কেউ বলেন, এর মাধ্যমে অসৎ সম্পর্ক গড়ে উঠছে। সরাসরি অসামাজিক কর্মকাণ্ডে মেতে উঠছে যুব সমাজ। তবে অন্য একটি চিত্রও আছে, তা হলো- ওয়েবক্যাম ব্যবহার করে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হচ্ছে। এই ফাঁদে ফেলে হাসিল করা হচ্ছে অসৎ উদ্দেশ্য। অনেক সুন্দরী এমন প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছেন। আবার অনেক পুরুষ সুন্দরী বান্ধবীর ফাঁদে পড়েছেন। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে সুফলও মিলছে। ওয়েবক্যামে দেখাশোনার মাধ্যমে সাত সমুদ্র তের নদীর পাড়ের কোন সুন্দরীর সঙ্গে বিয়ে হয়ে যাচ্ছে তার পছন্দের পাত্রের। ইত্যকার গল্প আছে এ নিয়ে। তবে সমপ্রতি বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সুন্দরীরা প্রেমের ফাঁদ পাতছে ওয়েবক্যামে। তার ফাঁদে পা দেয়া পুরুষের কাছে দাবি করা হচ্ছে অর্থ। তা দিতে না পারলেই তাকে ফাঁসিয়ে দেয়া হচ্ছে। এমন ঘটনা ফ্রান্সে ঘটছে হরহামেশা। ফ্রান্সের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীরা বলেছেন, তাদের কাছে এমন ঘটনা প্রায়ই আসে। কিন্তু বাস্তবে এর হার অনেক বেশি। সমপ্রতি ২৮ বছর বয়সী এক যুবক এমন এক প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছিলেন। তিনি নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, অনলাইনে আমি ডেটিং করছিলাম। তখন একটি মেয়ে আমাকে একটি বার্তা পাঠায়। তার এ বার্তা পেয়ে আমার খুব ভাল লেগেছিল। সে আমাকে জানিয়েছিল তার বাড়ি ফ্রান্সের একটি বড় শহরে। তবে ওই সময়ে সে ফ্রান্সে ছিল না। ছুটি কাটাতে গিয়েছে আইভরি কোস্টে। চ্যাটিংয়েই আমাদের পরিচয় হয়। আমরা অনেকক্ষণ চ্যাট (আড্ডা) করি। সে আমাকে তার ভিডিও দেখায়। তাতে তাকে অদ্ভুত সুন্দরী দেখতে পাই। সে আসলেই খুব সুন্দরী ছিল। সে আমাকে প্রস্তাব দিল। জানতে চাইল আমি এ সম্পর্ককে আরও সামনে এগিয়ে নিতে চাই কিনা। আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি সে আমাকে বিবস্ত্র হয়ে শরীর দেখাতে বলছে। আমি কিছু বলার আগেই সে আমার সবকিছু দেখতে চায়। এ সময় সে দ্বিতীয় ভিডিওটি চালায়। সেখানে তাকে দেখা যায় অন্য চেহারায়। সে আস্তে আস্তে সব কাপড় খুলে ফেলতে থাকে। এতে আমি হতবাক হয়ে যাই। আসলে এটা যে আমাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলা তা আমি বুঝতেই পারিনি। আমি ধরে নিয়েছিলাম, সে বুঝি সত্যি সত্যি সম্পর্ক গড়তে চায় আমার সঙ্গে। এরপর ৫ মিনিট কেটে যায়। সে আমাকে আরেকটি বার্তা পাঠায়। তাতে লেখা- আমি তোমার ভিডিও ধারণ করেছি। তা একবার দেখ। যদি এই ভিডিও’র প্রচার আটকাতে চাও তাহলে এখনই আমার একাউন্টে ৫০০ ইউরো পাঠাও। সে আমাকে হুমকি দিতে থাকে। বলে শিগগিরই অর্থ না পাঠালে ভিডিওটি সে ইউটিউবে প্রচার করে দেবে। তিনি বলেন, ওই সুন্দরী আমার যে ভিডিও ধারণ করেছে তাতে আমাকে পরিষ্কার চেনা যাচ্ছে। আমাকে যে হুমকি দেয়া হয়েছে তাতে এরকম অনেক ভিডিও রয়েছে। তাতে দেখা যায়- সে প্রতারিত পুরুষের ব্যক্তিগত তথ্য জুড়ে দিয়ে তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনে। ফ্রান্সের সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞ ভিনসেন্ট লিমোইর জানিয়েছেন এ ধরনের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রেই মান সম্মানের ভয়ে প্রতারিত ব্যক্তি তা প্রকাশ করেন না। এরকম ওয়েবক্যামে ব্লাকমেইলের শিকার পুরুষরা তাই চোখমুখ বন্ধ করে সহ্য করেন সব। আবার কোন সময় অর্থ দিয়ে কোনমতে রক্ষা পান। প্রতারকরা নিজেদের বিভিন্ন নামে পরিচয় দেয়। তারা কখনও পুলিশ, কখনও ইন্টারপোলের সদস্য কখনও ফরাসি পুলিশ পরিচয় দেয়। এর পর অর্থ ছাড়ের হুমকি দিতে থাকে। পর্নোগ্রাফির অভিযোগ আনে। তাদেরকে ধরে নিয়ে বিচার করার ভয় দেখায়। শেষ পর্যন্ত অনেক প্রতারিত মানুষ আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। ফ্রান্সের ‘লা মন্ডের’ পত্রিকা লিখেছে, অনেকেই প্রতারণার এ বিষয়টি ধরতে পারেন না। শুরুতে তারা বিষয়টিকে হালকাভাবেই নেন। ‘লা মন্ডের’ সাংবাদিক লরি বেলট জানান, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের ওয়েবক্যামের সামনে কাপড় খোলার ঘটনা আমরা নির্বোধ লোকের কাজ বলে মনে করতে পারি। কিন্তু ভুললে চলবে না, আমাদের সমাজ একাকিত্বের সমাজ। অনেকেই রাতের বেলা তাদের ঘরে একা থাকেন। তার সঙ্গে থাকে ইন্টারনেটযুক্ত কম্পিউটার। আমাদের একাকিত্বের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অনলাইন ডেটিংয়ে এ ধরনের প্রতারণা বাড়ছেই। যে ব্যক্তি এ ধরনের প্রতারণার শিকার হন তার উচিত কাছের মানুষের কাছে তা খুলে বলা। কারণ একাকী এ ধরনের ঘটনায় বিষণ্নতা ও উদ্বেগ বাড়াতে পারে। এ ধরনের ঘটনা তরুণদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ঝুঁকির। তাই তাদের সচেতনতা জরুরি। কর্নেল ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন-ম্যাডিসনের গবেষকরা জানিয়েছেন, অনলাইন ডেটিং মানেই মিথ্যার বেসাতি। ডেটিং সাইটগুলোতে যে তথ্য দেয়া থাকে, তাতে প্রকৃত তথ্যের চেয়ে মিথ্যাই থাকে বেশি। গবেষকরা অনলাইনে ডেটিং সাইট ব্যবহার করেন এমন ৭৮ জনের প্রকৃত তথ্য এবং তাদের আলাদা চারটি অনলাইন ডেটিং সাইটে দেয়া বয়স, উচ্চতা ও অন্যান্য তথ্য তুলনা করে দেখেছেন, সেখানে মিথ্যার আশ্রয় নেয়া হয়েছে। বিস্তারিত লেখার বদলে সেখানে সংক্ষিপ্ত আকারে তথ্য দেয়া হয়েছে বা আসল তথ্য দেয়ার পরিবর্তে ঘোরানো-প্যাঁচানো কথা সাজানো হয়েছে। গবেষকরা দেখেছেন, ৬৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই মিথ্যার আশ্রয় নেয়া হয়েছে।

Monday, September 17, 2012

তেহরানে সামরিক হামলা চালালে ইসরাইলের অবশিষ্ট বলতে কিছু থাকবে না

  তেহরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিলে ইসরাইলের অবশেষ বলতে কিছু থাকবে না। এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ইরানের অভিজাত রেভ্যুলুশনারি গার্ডের শীর্ষ কমান্ডার জেনারেল মোহাম্মদ আলী জাফরি। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। এতে বলা হয়, ইসরাইল যদি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসমূহে সামরিক অভিযান শুরু করে তাহলে ইরান তার জবাবে ইসরাইলের সীমান্ত এলাকা থেকে প্রতিউত্তর দিতে শুরু করবে। এখানে উল্লেখ্য, ইসরাইলের সীমান্তের সঙ্গে লাগোয়া ফিলিস্তিন ও লেবাননের ইসলামপন্থিদের সঙ্গে ইরানের রয়েছে সুসম্পর্ক। এর আগেও ইসরাইলের ধ্বংসের কথা বলেছে। তারা বলেছে, ইসরাইলকে বিশ্বের মানচিত্র থেকে মুছে ফেলা হবে। তবে জেনারেল জাফরি  তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে যে সুরে কথা বলেন তা ছিল উত্তেজনাপূর্ণ। তিনি বলেছেন, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যদি যুদ্ধ বেধেই যায় তাহলে তেল সরবরাহের মূলপথ হরমুজ প্রণালীতে মারাত্মক বাধার সম্মুখীন হতে হবে। এর আগে ইরান ওই নৌপথ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছিল। এ রুট দিয়েই বিশ্বের মোট তেলের এক পঞ্চমাংশ সরবরাহ করা হয়। জেনারেল জাফরি রোববার ওই সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে তিনি বলেন, ইরান যদি আক্রান্ত হয় তাহলে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণবিষয়ক চুক্তি আর মানতে বাধ্য থাকবে না ইরান। তবে এর অর্থ এই নয় যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করবে। এই চুক্তির অধীনেই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকরা। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল দু’পক্ষই ইরানে হামলা চালানোর অপশনটি তাদের হাতে রেখেছে। যদি ইরান নিয়ে কূটনৈতিক উদ্যোগ ব্যর্থ হয় তাহলে তারা ওই হামলাকেই বেছে নিতে পারে। জেনারেল জাফরি বলেন, ইরান বিশ্বাস করে ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা চালানো হবে বিপজ্জনক। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব সামরিক ঘাঁটি রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে তার সবই ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লার মধ্যে। তাই যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালাবে না বলেই তিনি মনে করেন। তবে এক্ষেত্রে ইসরাইল এককভাবে ইরানে হামলা চালাবে বলেও তার মনে হয় না। এপি’র ওই রিপোর্টে বলা হয়, ইসরাইল বিশ্বাস করে- তারা ইরানে যেকোন ধরনের হামলা চালালে তার প্রতিশোধ নেয়া হবে। আর তাতে ব্যবহার করা হবে ক্ষেপণাস্ত্র। তাদেরকে তাতে সহায়তা করবে ফিলিস্তিনের গাজার যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাস ও লেবাননের হিজবুল্লাহ। তারাও ইসরাইলের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত দিয়ে আক্রমণ চালাবে। পারস্য উপসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে নৌ বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে জেনারেল জাফরি ওইসব মন্তব্য করেন।

অসাধারণ এক প্রেমের গল্প

বাঙালি মেয়ে জোসনা বাস্কার ও নেপালের জনপ্রিয় অন্ধ গায়ক ঈশ্বর অমর্ত্য দম্পতি রচনা করেছেন অসাধারণ এক প্রেমের গল্প। এ বছরই তাদের বিয়ের ২০ বছর পূর্তি হচ্ছে। স্কুল পড়ুয়া এক সন্তান নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্য ও সুখী পরিবার তাদের। তবে এ অবস্থানে আসার পেছনে অনেক ত্যাগ ও সংগ্রামের মুখোমুখি হতে হয়েছে । নিরন্তর সংগ্রাম করতে হয়েছে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে। তাদের এই সংগ্রামের কাহিনী উঠে এসেছে বিবিসির এক প্রতিবেদনে। জন্মগতভাবে অন্ধ ঈশ্বর টুকটাক গান গাইতেন। নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডু থেকে ২শ’ কিমি দূরের শহর পোখারায় গান শুনিয়ে আয়ের চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন ঈশ্বর। কিন্তু অন্ধ হওয়ায় খুব একটা পাত্তা পাচ্ছিলেন না কারও কাছে। সামান্য খাদ্যের বিনিময়ে একটি হোটেলে গান শোনাতেন। এমন সময় সেখানে আগমন ঘটে প্রবাসী বাঙালি কন্যা জোসনার। তিনিও গিয়েছেন কাজের খোঁজে একই রেস্টুরেন্টে। ওই সময় গান করছিলেন ঈশ্বর। তার ওপর চোখ পড়লো বাঙালি ললনার। প্রেম মানে না কোন বাধা। এই প্রবাদকে বাস্তবে পরিণত করে ঈশ্বরের প্রেমে পড়ে গেলেন জোসনা। এক্কেবারে লাভ ইন ফার্স্ট সাইট। দিনে দিনে ঈশ্বরের কঠিন ভক্তে পরিণত হলেন তিনি। মাত্র এক মাসের মাথায় ঈশ্বরের ব্যান্ড দলের এক সদস্যের মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন তিনি তাকে ভালোবাসেন। বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রস্তাব পেয়ে ঈশ্বর তো হতভম্ব। কিছুটা দ্বিধান্বিতও বটে। একে তো অন্ধ, তার ওপর দরিদ্র। জানিয়ে দিলেন তিনি শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। ভালোবাসার মানুষের জন্য আরাম সামগ্রী জোগাড় করাও তার পক্ষে সম্ভব নয়। জবাবে সত্যিকারের প্রেমের জয় হয়- প্রমাণ করলেন জোসনা। জানিয়ে দিলেন কোন বিলাসবহুল জীবন নয়- ঈশ্বরের সঙ্গী হয়েই থাকতে চান তিনি। হয়ে গেল বিয়ে। ঈশ্বর বিবিসিকে বলেছেন, অন্ধ হিসেবে রেডিও শুনেই গানের প্রতি তার অনুরাগ জন্মে। বিয়ের পর নববধূ জোসনাও হয়ে উঠলেন তার জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। হাতে হাত ধরে স্বামীকে নিয়ে গেছেন দেশব্যাপী বিভিন্ন গানের পালায়। উৎসবে ও নিজের গানের কনসার্টে। তবে বর্ণনার মতো এত সহজ ছিল না তাদের বিয়ে। দু’জন দুই ভিন্ন সমপ্রদায়ের হওয়ায় বিয়ে মেনে নেয়নি কোন পরিবার। তার ওপর মেয়ে পড়েছে অন্ধের প্রেমে। কিভাবে মেনে নেবেন জোসনার পরিবার। জোসনার বাবা কোনভাবেই মেনে নিতে পারেননি মেয়ের এই কাণ্ড। ফিরে আসতে বলেছেন বাড়িতে। কিন্তু না, রাজি হননি তিনি। বাকি জীবন ঈশ্বরের সঙ্গেই কাটিয়ে দেবেন বলে চলে গেছেন। এরপরই নতুন জীবন পেলেন ঈশ্বর। তাকে অন্য সব কিছু থেকে বিরত রেখে কেবল গানে মনোযোগ দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন জোসনা। ক্রমেই হয়ে উঠেছেন নেপালের জনপ্রিয় গায়ক। ৩শ’র বেশি গান রেকর্ড হয়েছে তার। গানের রয়্যালটি দিয়ে ভালই জীবন কাটান স্ত্রী ও নেপালের সবচেয়ে দামি স্কুলে পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে। এখনও জোসনার বাবা নিয়ে যেতে চান মেয়েকে। সঙ্গে নিয়ে যেতে চান জামাইকেও। কিন্তু যেতে রাজি নন জোসনা। তবে কি পছন্দের স্বামী পেয়ে জন্মদাতা বাবাকেও ভুলে গেছেন তিনি। না ব্যাপারটি এমন নয়। এখন তার ভয়, তিনি চলে গেলে কিভাবে চলবেন প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়া প্রাণপ্রিয় স্বামীর। কে তার দেখাশোনা করবে। তাই সব নেপালি নারী যেখানে উপোস করেন স্বামীর দীর্ঘ জীবনের প্রার্থনায়, সেখানে জোসনার চাওয়া স্বামী যেন তার আগেই মারা যান। তাতে অন্তত অন্যের করুণার ওপর নির্ভর করতে হবে না প্রিয় মানুষটিকে। ঈশ্বর খুবই ইতিবাচক ও স্ত্রী ভক্ত। নিজের গানের প্রতিভার সঙ্গে স্ত্রীকেও স্রষ্টার দানই মনে করেন তিনি। কোন অনুতাপ নেই জোসনার জীবনেও। তিনি বলেছেন, একজন নারী ভালবাসা ও সমঝদার স্বামী প্রত্যাশা করেন। দু’টিই পেয়ে সৌভাগ্যবান আমি।

মার্কিন ১৩ ওয়েবসাইট বিকল করেছে বাংলাদেশী হ্যাকাররা

হুমকি দেয়ার পরদিনই যুক্তরাষ্ট্রের ১৩টি ওয়েবসাইট বিকল করে দিয়েছে বাংলাদেশের হ্যাকাররা। বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকারস (বিজিএইচএইচ) নামের হ্যাকাররা যুক্তরাষ্ট্রের যেসব ওয়েবসাইট বিকল করে দিয়েছে তার মধ্যে কোন ধরনের ওয়েবসাইট আছে তা জানা যায়নি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সফটপিডিয়া। এতে বলা হয়, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে নিয়ে অবমাননাকর ছবি ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’ প্রচারিত হওয়ার পর এর তীব্র প্রতিবাদ জানায় বিজিএইচএইচ। তারা ফেসবুকে একটি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে। তাতে বলা হয়, কেন মহানবী (সাঃ)-কে কটাক্ষ করে ছবি নির্মাণ করছে যুক্তরাষ্ট্র? তারা তো সীমা লঙ্ঘন করেছে। তাদের জন্য কোন করুণা নেই। বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকাররা আসছে। আমাদের নাম তোমাদের ওয়েবসাইটে দেখার জন্য প্রস্তুত হও। তারা কোন ধরনের ওয়েবসাইট হ্যাক করবে তা-ও এখানে বলা হয়নি। এর পরই এক রিপোর্টে জানা গেছে, বিজিএইচএইচ এরই মধ্যে ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’-এর প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩টি ওয়েবসাইট বিকল করে দিয়েছে। ওই সব ওয়েবসাইট খুললেই সেখানে কালো একটি স্ক্রিন আসছে। তাতে লেখা বাংলাদেশ গ্রে হ্যাট হ্যাকারস। আরও লেখা রয়েছে- আমেরিকা, আমাদের নবী (সাঃ)-কে অবমাননা বন্ধ করো। ইতালি সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যা বন্ধ করো। মিয়ানমারে মুসলমানদের হত্যা বন্ধ করো। ফিলিস্তিনে মুসলমাদের হত্যা বন্ধ করো।

Sunday, September 16, 2012

বাংলাদেশী শাহিরা প্লেবয় ম্যাগাজিনে

বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত আইরিশ যুবতী শাহিরা বেরি। ২১ বসন্তের নজরকাড়া সুন্দরী। বসবাস আয়ারল্যান্ডের গ্যালওয়েতে। এরই মধ্যে তার রূপ-লাবণ্য পেয়েছে জগৎজোড়া খ্যাতি। এই সুবাদে হয়েছেন বিশ্বের বড় বড় কোম্পানির মডেল। অন্তর্বাস থেকে শুরু করে মেয়েলি বিভিন্ন পণ্যে তাকে দেখা যায় খোলামেলা মডেল হিসেবে। তার সেই রূপে চোখ আটকে গেছে বিশ্বখ্যাত প্লেবয় ম্যাগাজিনের হিউ হেফনারের। তিনি তাকে প্লেবয়ের মডেল হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্লেবয়ের মডেল হওয়া মানে ক্যামেরার সামনে কাপড় খুলে দাঁড়ানো। স্টিল ছবি ধারণ, ভিডিও ধারণ। তারপর সেই নগ্ন ছবি প্লেবয় ম্যাগাজিনে ছাপা হওয়া। তার সূত্র ধরে একের পর এক সাক্ষাৎকার দেয়া। আরও কত কি! যেমনটা করেছেন ভারতের এ সময়ের বহুল আলোচিত গায়িকা-নায়িকা শেরলিন চোপরা। তিনি প্লেবয়ের ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন একেবারে বিবস্ত্র হয়ে। প্লেবয়ে তা ছাপা হওয়ার আগেই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু শাহিরা স্বল্প বসনে মডেলিং করলেও প্লেবয়ের জন্য ক্যামেরার সামনে একেবারে বিবস্ত্র হতে রাজি ছিলেন না। তার চেয়ে বড় কথা তার পরিবার তাতে সায় দেয় নি। তাই হিউ হেফনারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন শাহিরা। কিন্তু কোন কোন মিডিয়া খবর দিয়েছে তিনি রাজি হয়ে গেছেন প্লেবয়ের প্রস্তাবে। সমপ্রতি তিনি সফর করেছেন প্লেবয় ম্যানসনে। পার্টি করেছেন। প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে কি হবে! তার মনে গেঁথে গেছে প্লেবয়ের ওই বুড়ো প্রেমিক হিউ হেফনারকে। তাই তো এ মাসের শুরুতে তিনি লস অ্যানজেলেস ঘুরতে যান। সেখানে গিয়েই প্লেবয় ম্যানসনে ঢুঁ মারতে ভুল করেন নি শাহিরা। হিউ হেফনারকে দেখার পর তার মন্তব্য- আমি এত লাভলি মানুষ কখনও দেখিনি। প্লেবয়ের পার্টি মানেই যে কেউ বুঝে নেন অন্যকিছু- রগরগে পার্টি। মদে সয়লাব। স্বল্পবসনা নারীর এলোমেলো চলাফেরা। উন্মাতাল নাচ। সুইমিং পুলে ভালবাসায় বিভোর থাকা। কিন্তু হিউ হেফনারের দেয়া নৈশভোজে তেমন রগরগে কোন ঘটনা ছিল না। ওই রাতে গার্লফেন্ডদের সঙ্গে মজা করতে হাজির ছিলেন তিনি নিজে। শাহিরা বেরি বলেন- আমার সঙ্গে পরিচয়ের পর তিনি আমাকে বার বার তার পার্টিতে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বলেছেন, তোমার জন্য সব সময়ই আমার দরজা খোলা। এসব খবরে পশ্চিমা মিডিয়া এখন সয়লাব। তবে শাহিরা বেরি’কে পরিচয় দেয়া হচ্ছে হাফ-বাংলাদেশী মডেল হিসেবে। হাফ বাংলাদেশী মডেল মানে হলো তার পিতা বাংলাদেশী, না হয় তার মা বাংলাদেশী। কিন্তু কোন রিপোর্টেই তাদের কারও নাম-ঠিকানা প্রকাশ করা হয় নি। বলা হয় নি শাহিরার পিতা নাকি মা বাংলাদেশী। এ বছরের ১৪ই মে আয়ারল্যান্ডের অনলাইন পত্রিকা দ্য কোন্যাচট্‌ সেন্টেনিয়াল তাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, শাহিরার বসবাস আয়ারল্যান্ডের গ্যালওয়েতে। তাকে প্লেবয়ের জন্য পোজ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কিন্তু তিনি সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে ছবির পোজ দিতে রাজি নন। বলেছেন, এমন পোজ দেয়াতে তার আগ্রহ নেই। হিউ হেফনারের প্লেবয় ম্যাগাজিনের জন্য মডেল যারা নির্বাচন করেন তাদের প্রধান স্যাম রিমা প্রস্তাব পাঠান শাহিরাকে। এর পরপরই আয়ারল্যান্ডের একটি ম্যাগাজিনে খবর প্রকাশিত হয় যে, তিনি প্লেবয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন। তবে তা প্রত্যাখ্যান করে তখন শাহিরা জানিয়ে দেন- আমার মায়ের চেয়ে বয়সে বুড়ো অথবা আমার নানা-নানীর চেয়ে বয়সে বড় এমন কোন লোকের প্রতি আমার কোন আগ্রহ নেই। প্লেবয় থেকে তাকে মে মাসে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আমন্ত্রণ জানায়। এর কিছুদিন পরই তার এ বছরের জন্য লস অ্যানজেলেসে সফরে যাওয়ার কথা। তাছাড়া, অন্যান্য মডেলিংয়ের কাজ নিয়ে তিনি ব্যস্ত। তিনি সম্ভব হলে তখন এক ঢিলে দুই পাখি শিকার করবেন। শাহিরা বাংলাদেশী বংশোদভূত টগবগে যুবতী। তাকে তার কাজের জন্য সমর্থন দেয় তার পরিবার। তার ক্যারিয়ারের সফলতার জন্য তার মা প্লেবয়কে প্রথম পছন্দ হিসেবে দেখেন না। তাই তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন শাহিরাকে। ফলে শাহিরাকে মিস করতে হয় প্লেবয়ের মতো বড় ইভেন্ট। শাহিরা বলেন, আমাকে পরিবার থেকে এ কথা জানিয়ে বলা হয়- তোমার সফলতা পাওয়ার জন্য রয়েছে আরও অনেক পথ। ওদিকে এ খবর পেয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি ওয়েবসাইট। তাতে শাহিরাকে তুলনা করা হয় এ সময়ের সেক্সসিম্বল, পুরুষখেকো কিম কারদাশিয়ানের সঙ্গে। এমন তুলনা করায় বেশ উৎসাহিত শাহিরা। এভাবে তাকে নিয়ে ইন্টারনেটে প্রচার দেখে শাহিরা প্লেবয়ের মডেল হোন বা না হোন স্বীকার করেছেন- এরই মধ্যে তিনি হিউ হেফনারের প্লেমেট অথবা মনের কাছের মেয়ে-বন্ধু হতে পেরেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি ছুটে গেছেন প্লেবয় ম্যানসনে। তবে না, সেখানে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে তাকে একের পর এক কাপড় খুলতে হয় নি। তিনি এ মাসের শুরুতে সেখানে গিয়েছিলেন এক সারপ্রাইজ ভিজিটে। সেখানে পুল পার্টিতে তার দেখা হয় হিউ হেফনারের সঙ্গে। এক দেখাতেই ৮৬ বছর বয়সী হেফনারের যেন প্রেমে পড়ে গিয়েছেন শাহিরা। তার চাহনি, তার অভিব্যক্তি, তার ব্যক্তিত্ব- সবই তাকে বিমোহিত করেছে। তাই এক বাক্যে হিউ হেফনার সম্পর্কে তার মন্তব্য- হি ইজ এ রিয়েল জেন্টেলম্যান। এ যাত্রায় শাহিরার সঙ্গে ছিলেন তার দীর্ঘদিনের বান্ধবী টিনা জানোন-হায়িস। তার সম্পর্কে শাহিরা বলেন, টিনাকে সঙ্গে নিয়ে আমি খুব উৎফুল্ল ছিলাম। তাকে ওই পার্টিতে নিয়ে যাওয়ার আগে তার একটি ছবি আয়োজকদের দিয়েছিলাম। তাতে বলে দেই- টিনা সত্যিকার অর্থেই এক হট মেয়ে। প্লেবয় ম্যানসনের স্টাফরা তার সেই ছবি অনুমোদন করে। এর পরই তাকে নিয়ে যাই ওই পার্টিতে। প্লেবয় ম্যানসনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে শাহিরা বলেন, সেখানে পুলে আমরা আনন্দ করেছি। অনুষ্ঠানে ছিল নাচ। নৈশভোজ করেছি হিউ হেফনারের সঙ্গে। তারপর ‘দ্য রাশ’ ছবির প্রিমিয়ার দেখেছি। তবে এ ছবিটি এখনও মুক্তি পায় নি। তবে সবকিছুর মধ্যে পুল পার্টি ছিল সবচেয়ে মজাদার। তাতে মাত্র ১৫ থেকে ২০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে বিভিন্ন ম্যাগাজিন বলছে, হিউ হেফনারের চোখে একবার যে সুন্দরী ধরা পড়ে তাকে এক গভীর মায়াজালে তিনি আটকে ফেলেন। তার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন খুব কম নারীই। তাহলে কি একদিন না একদিন হিউ হেফনারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাবেন শাহিরা! তাকে দেখা যাবে প্লেবয়ের প্রচ্ছদে! আয়ারল্যান্ডের অনলাইন হেরাল্ড এক প্রতিবেদনে লিখেছে- শাহিরা তার হৃদয় খুলে দিয়েছেন। মনকে প্রশস্ত করেছেন। তিনি স্বীকার করেন একদিন তিনি বিখ্যাত প্লেবয় ম্যাগাজিনের জন্য ছবির পোজ দেবেন। তিনি পূর্ণ জীবন চান। তিনি সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চান। তিনি বলেন- জীবন স্বল্প সময়ের জন্য। এর মধ্যে যা পারো লুফে নাও। এর মধ্য দিয়েই কি হিউ হেফনার তাকে দীর্ঘ জীবন দিয়ে যাবেন! কারণ, প্লেবয়ের প্রচ্ছদে একবার উঠে এলে তা দীর্ঘজীবন টিকে থাকে, থাকবে।
নিজের সব কর্মকাণ্ড বিশ্ববাসীকে জানাতে শাহিরা বেরি খুলেছেন একটি ওয়েবসাইট। তাতে রাখা হয়েছে বেশ কয়েকটি অপশন। এর মধ্যে রয়েছে- হোম, এবাউট মি, গ্যালারি, নিউজ, ব্লগ, ভিডিওস, বুকিং ও কণ্টাক্ট। এতে নিজের সম্পর্কে তিনি লিখেছেন- আমার ওয়েবসাইটে সবাইকে স্বাগত। নিজের একটি ওয়েবসাইট করতে পেরে আমি আনন্দিত। এতে আমি সবকিছু শেয়ার করতে পারবো। আমি আমার জীবন সম্পর্কে সবকিছু তোমাদের জানাতে পারছি। এটি মেয়েলি একটি সাইট। এতে রয়েছে ফটোশুট থেকে ফ্যাশন। আমি ব্লগ লেখারও পরিকল্পনা করছি। নিয়মিত ডায়েরি ফলো করে তা লিখছি। রাখছি ভিডিও ব্লগস, ফটো ও পোস্ট। যে কেউ আমাকে ফলো করতে পারো।
এতে তার দৈহিক বিবরণ রয়েছে। তার বর্ণনা মতে, তার চুলের রঙ কালো। চোখের রঙ নীল/সবুজ। উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। জুতার সাইজ ৫ (যুক্তরাজ্যের মাপ)। এরপর গ্যালারিতে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন পণ্যের জন্য তিনি যেসব ফটোশুট করেছেন তারই স্লাইডশো, ভিডিও। এর বেশির ভাগেই নারীদের অন্তর্বাস পরা অবস্থায় দেখা যায় তাকে। ডিজি ড্রিমগার্লের মডেল হিসেবে তাকে দেখা গেছে। দেখা গেছে, এফএম-১০৪ এর মডেল হিসেবে। ওপেন হাউজ গ্যালওয়ের মডেল হিসেবে। তিনি হয়েছেন ভিনটেজ ড্রিমসের মডেল। তবে তিনি নিজের সাইটে এখনও কোন নিউজ পোস্ট করেননি। ভিডিও সেকশনে পোস্ট করা হয়েছে ৬টি ভিডিও। এতে তার দক্ষ মডেলিং ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ক্যামেরার সামনে। কোনটিতে দেখা গেছে, শরীরের বেশির ভাগ কাপড় খুলে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে। তাকে দেখা গেছে, বিভিন্ন ফ্যাশন শোতে। কণ্টাক্টে দিয়েছেন নিজের ই-মেইল ঠিকানা। তাতেই সরাসরি যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়। তার রয়েছে টুইটার একাউন্ট। তাতেই তিনি গত ১২ই সেপ্টেম্বর জানিয়েছেন, লস অ্যানজেলেস ছেড়ে আসতে হচ্ছে তাকে। এতে তার মন খুব খারাপ। রয়েছে ফেসবুক একাউন্ট। তাতে যোগ করেছেন অনেক ছবি।

Thursday, September 13, 2012

সৌদি আরবে চারজনের মৃত্যুদণ্ড

সৌদি আরবে চারজনকে শিরশ্ছেদ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে বিভিন্ন অপরাধে মঙ্গলবার এ চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন সৌদি আরবের এবং একজন ফিলিস্তিনের অধিবাসী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে জিজান শহরের সশস্ত্র ডাকাতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত দুই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে মোহাম্মদ বিন আহমদ খারমি এবং মুসা বিন মহসিন খরমি এক ব্যক্তিকে এলোপাতাড়ি গুলি করেছিল। এতে ওই ব্যক্তি আহত হয়। ওই দুই ব্যক্তি পরে তার কাছে থাকা কোম্পানির টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। অপরাধের ভয়াবহতার কথা বিবেচনা করে দুজনকে বিচারের পর মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। আরেকটি বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে জেদ্দাতে ইয়েমেনের নাসের হাক্কাস নামের এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাতে হত্যার দায়ে ফিলিস্তিনের ওয়ায়েল আনবার নামের এক ব্যক্তিকে শিরশ্ছেদ করা হয়েছে। তৃতীয় আরেক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকালে বুরাইদা শহরে সা’দ আল মনসুরি নামের আরেক সৌদি নাগরিককে কথা কাটাকাটির জের ধরে আরেক ব্যক্তিকে মেশিনগান দিয়ে গুলি করে হত্যার দায়ে শিরশ্ছেদ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এ বছর সৌদি আরবে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭। গত বছর সৌদি আরবে ৭৯ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল বলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দাবি করেছে।

মুসলমানদের উপহাস করে মার্কিন চলচ্চিত্র-বেনগাজীর হামলায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ নিহত ৪

লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় বেনগাজী শহরে মার্কিন কনস্যুলেট অফিসে বিক্ষুব্ধ হামলা হয়েছে। এতে সেখানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টোফার স্টিভেন্স নিহত হয়েছেন। অনলাইন আল জাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে ওই হামলা হয়। এতে স্টিভেন্স ও তিন দূতাবাস কর্মীও নিহত হয়েছেন। আগুনের কারণে সৃষ্ট ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে ক্রিস্টোফার স্টিভেন্সসহ তার সঙ্গে থাকা দুই মার্কিন নিরাপত্তাকর্মী মারা গেছেন বলে লিবিয়ার নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এতে আরেকজন কনস্যুলেট কর্মকর্তাও নিহত হয়েছেন। তবে তার পরিচয় জানা যায়নি। এ ঘটনায় ঢাকার গুলশানে কূটনৈতিক পাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। একটি মার্কিন চলচ্চিত্রে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এবং ইসলাম ধর্মকে হেয় ও অবমাননা করার অভিযোগে এ বিক্ষোভ হয়। এ ঘটনায় মুসলিম বিশ্ব ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। দেশে দেশে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হচ্ছে। ফলে অনেক দেশেই মার্কিন দূতাবাসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কনস্যুলেট ভবনে হামলার সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত সেখানে সংক্ষিপ্ত সফরে ছিলেন বলে আল-জাজিরা উল্লেখ করেছে। নিহতদের মরদেহ ত্রিপোলি হয়ে জার্মানির মার্কিন ঘাঁটিতে পাঠানোর কথা। লিবিয়া সুপ্রিম সিকিউরিটি কমিটির মুখপাত্র আবদেল মোনেম আল হুর বলেছেন, পাশের একটি প্রতিষ্ঠান থেকেই কনস্যুলেট লক্ষ্য করে রকেটচালিত গ্রেনেড হামলা করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, মার্কিন কনস্যুলেটের বাইরে লিবিয়ার সেনাবাহিনী এবং সশস্ত্র মিলিশিয়াদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে। কনস্যুলেটের আশপাশের সড়ক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নিরাপত্তা কর্মীরা ভবনটি ঘিরে রেখেছে। তবে আক্রান্ত কনস্যুলেট ভবন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কর্মীদের সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে লিবিয়ার সহকারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ানিস আল শরিফ জানিয়েছেন। আল-জাজিরা জানিয়েছে, ‘ইসলামি আইনের সমর্থক’ বলে দাবি করে একটি সংগঠন ওই অবমাননাকর চলচ্চিত্রের প্রতিবাদে এ হামলা চালানোর কথা স্বীকার করেছে। এছাড়া, মঙ্গলবার মিশরের রাজধানী কায়রোতেও মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করে প্রতিবাদকারীরা। তারা এ সময় দূতাবাসের দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে পড়ে। সেখানে তারা মার্কিন পতাকা ছিঁড়ে ফেলে এবং একটি কালো ইসলামি পতাকা স্থাপন করে। যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী হামলা চালানোর বার্ষিকী পালনের দিনই এ দু’টি ঘটনা ঘটলো। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন কনস্যুলেট কর্মকর্তাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে এক বিবৃতিতে বলেছেন, এ ভয়ঙ্কর ঘটনায় আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে। তিনি বলেন, ইন্টারনেটে উস্কানিমূলক পোস্টের জবাবে কেউ কেউ এ ধরনের হামলার যৌক্তিকতা খোঁজার চেষ্টা করছেন। যুক্তরাষ্ট্র অন্য ধর্ম বা মতের অবমাননাকর যে কোন প্রচেষ্টারই নিন্দা জানাচ্ছে।
‘ইনোসেন্স অব মুসলিম’
যে চলচ্চিত্র নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত তার নির্মাতা ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাসকারী ৫৬ বছর বয়সী ইসরাইলি চলচ্চিত্র নির্মাতা স্যাম বাসিল। তিনি এখন পলাতক। এটি প্রযোজনা করেছে ক্যালিফোর্নিয়া প্রবাসী ইসলাম-বিদ্বেষী এক মিশরীয় কপটিক খ্রিস্টান মরিস সাদেক। অজ্ঞাত স্থান থেকে বার্তা সংস্থা এপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাসিল এখনও নিজের অবস্থানে অটল থেকে ইসলামকে ক্যান্সার বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এ ছবি নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক বক্তব্যকে আরও উস্কে দেয়া। তিনি স্বীকার করেন, তার নির্মিত ছবির জন্য এতটা ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে তিনি তা আশা করেননি। মার্কিন কনস্যুলেটের ঘটনায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। একই বিষয়ে তার ২০০ ঘণ্টার একটি সিরিজ পরিকল্পনা করছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ছবিটি তিনি ইংরেজি ভাষাতেই নির্মাণ করেছেন। কে বা কারা এতে সাবটাইটেল যুক্ত করেছে সেটা তার জানা নেই। তিনি দাবি করেন, ছবিটি এখনও কোথাও দেখানো হয়নি। আপাতত তিনি এর বিপণনের বিষয়টি স্থগিত রেখেছেন। ‘ইনোসেন্স অব মুসলিম’ নামের দুই ঘণ্টার  ছবিটিতে তীব্র ইসলামবিদ্বেষী প্রচারণা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিবাদকারীরা। ৫০ লাখ ডলারের বাজেটের এই ছবিটি আরবি অনুবাদসহ ইউটিউবে পাওয়া যাচ্ছে।

Wednesday, September 12, 2012

দেহ ব্যবসার ফাঁদ দুবাইয়ে বাংলাদেশীসহ ১৩ যুবতী উদ্ধার

এক খদ্দেরের সহানুভূতিতে বাংলাদেশী যুবতীসহ কয়েকটি দেশের ১৩ যুবতী রক্ষা পেয়েছেন। তাদেরকে দুবাইয়ের একটি ফ্লাটে আটকে রেখে দেহব্যবসায় বাধ্য করানো হচ্ছিল। অকস্মাৎ সেখানে খদ্দের হিসেবে উপস্থিত হন এক ভারতীয়। বাংলাদেশী যুবতী (১৮)’র খদ্দের ছিলেন তিনি। ওই বাংলাদেশী যুবতীকে দেখে তার মন নরম হয়ে যায়। তিনি তাকে উদ্ধারের পরিকল্পনা আঁটেন। তাই তিনি ওই বাংলাদেশী যুবতীর ফোন নম্বর নিয়ে যান। তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ হয়। এক পর্যায়ে তার আদ্যোপান্ত শুনে তিনি পুলিশে খবর দেন। পরের দিনই তিনি ছদ্মবেশধারী এক নিরাপত্তারক্ষীকে খদ্দের সাজিয়ে নিয়ে যান ওই যুবতীর কাছে। সেখানে তারা কিছুটা সময় কাটান। ততক্ষণে পুলিশ ওই এপার্টমেন্ট ঘেরাও করে ফেলে। তারা যুবতীদের আটকে রেখে দেহ ব্যবসা করানোর দায়ে রাজা ও সোহেল নামে দু’জনকে আটক করে। আর আটকে রাখা ১৩ যুবতীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় নিরাপত্তা হেফাজতে। গতকাল অনলাইন গালফ নিউজ এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশী ওই যুবতী দেশে একটি গার্মেন্ট কারখানায় চাকরি করতেন। সেই চাকরির টাকায় সংসার চালাতেন। তার সংসারে ছিল দুই ভাইবোন ও মা। তাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব ছিল তার ওপর। ওই যুবতীকে রহিম নামে এক ব্যক্তি সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার জন্য প্ররোচিত করে। তাকে প্রতিশ্রুতি দেয় যদি তিনি আরবি জানেন তাহলে তাকে সেখানে ভাল বেতনের চাকরি দেয়া হবে। দেশে ওই যুবতী মাসে মাত্র ২৫০০ টাকা আয় করতেন। ফলে এমন প্রস্তাব পেয়ে তিনি রাজি হয়ে যান। তাকে বলা হয়, তাকে প্রথমেই ৭ হাজার টাকা বেতন দেয়া হবে, যদি তিনি আরবিতে দক্ষতা দেখাতে পারেন। তার এ প্রস্তাব পেয়ে ওই যুবতী রাজি হয়ে যান। এ সময় রহিম তার কাছে ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ও টিকিট বাবদ তার কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। অনেক কষ্ট করে ওই যুবতী সেই টাকা যোগাড় করে দেন তার হাতে। ফলে তার স্বপ্নের দুয়ার খুলে যায়। তিনি দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পরই সেই স্বপ্ন পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে। সেখানে দুবাই ক্রিমিনাল কোর্টের সামনে তিনি সোহেল নামে একজনকে দেখতে পান। এই সোহেল তাকে বিমানবন্দর থেকে নিতে এসেছেন। তাকে নিয়ে দিয়েরা এলাকায় একটি ফাঁকা ফ্লাটে ওঠে সোহেল। ওই যুবতী যখন তার চাকরি ক্ষেত্র কোথায় জানতে চান তাকে বলা হয়- আপনিতো সবেমাত্র এলেন। তাকে সপ্তাহান্তে কাজে যোগ দেয়ানো হবে। ততদিনে তাকে ওই এপার্টমেন্টেই অবস্থান করতে হবে। এ অবস্থা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই যুবতী। তিনি দেশে রেখে যাওয়া মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চান। তাকে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। ফোনে কথা শেষ হতেই তার পাসপোর্ট কেড়ে নেয়া হয়। এ সময় সোহেল তাকে জানিয়ে দেয়- তাকে দেহব্যবসা চালাতে হবে। এতে ওই যুবতী অস্বীকৃতি জানালে তাকে সোহেল ধর্ষণ করে ও তার কোমরের বেল্ট দিয়ে প্রহার করে। বাংলাদেশী ওই যুবতী অভিযোগ করেন, সোহেল তাকে বেল্ট দিয়ে প্রহার করতে করতে বেহুঁশ করে ফেলে। তিনি বেহুঁশ হয়ে পড়ে যাওয়ার পর সোহেল তাকে ধর্ষণ করে। যখন তার চেতনা ফেরে তিনি দেখতে পান তার শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। এ সময় সামিরা নামে আরেক যুবতী তাকে খাবার এনে দেন এবং সোহেলের কথা মেনে নিতে বলেন। এরপর বাংলাদেশী ওই যুবতীকে আরেকটি এপার্টমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সশস্ত্র প্রহরায় রাখা হয়েছিল বাংলাদেশী, ভারতীয়, ইথিওপিয়ান ও ইন্দোনেশিয়ার আরও ১২ জন যুবতীকে। তাদের সবাইকে দিয়ে দেহ ব্যবসা করানো হয়। ভারতীয় ওই খদ্দেরের সহানুভূতিতে যখন তারা মুক্তি পান তখন বাকিদের জেলে নিয়ে যাওয়া হয়।

Monday, September 10, 2012

ইরাকি তরুণীর পরনে টাইট ফতুয়া, জিন্স

ইরাকে হাল আমলে নতুন এক ফ্যাশন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে। তরুণদের মধ্যে স্পাইকি চুলের ফ্যাশনের সঙ্গে টাইটফিট জিন্সের পশ্চিমা স্টাইল চালু হয়েছে। নারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে টাইট ফতুয়া ও স্কার্ফের সঙ্গে টাখনুর বেশ উপর পর্যন্ত ছোট স্কার্ট বা জিন্সের আঁটসাঁট প্যান্ট। তরুণীদের মধ্যে এ ধরনের পোশাক বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। রাস্তায় মার্কেটে এমন স্টাইল অহরহ চোখে পড়ছে। বাদ যাচ্ছে না বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও। বিভিন্ন মাজার ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এমন পোশাক পরে আসছেন নারীরা। মূলত রমজানের পর থেকে এমন পোশাকের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এই ফ্যাশন খুব বেশি দেখা যাচ্ছে শিয়া অধ্যুষিত কাদিমিয়্যাহ ও দিওয়ানিয়্যাহ এলাকায়। ফলে এতে বাদ সেধেছেন সেখানকার শিয়া ধর্মীয় নেতারা। ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষার কথা বলে এমন পোশাককে নিরুৎসাহিত করতে পুলিশেরও শরণাপন্ন হচ্ছেন তারা। এতে করে ইরাকের ঐতিহ্য ও স্বকীয়তাকে অপমান করা হচ্ছে বলে সরকারি হস্তক্ষেপ করার দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। ইদানীং এসব অঞ্চলে নারীদেরকে বোরকা পরে রাস্তায় ও মাজারে যাওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে পোস্টারিং করা হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যানারে প্যান্ট ও জিন্স পরা নারীদের ছবিতে লাল রঙের বড় ক্রস চিহ্ন এঁকে ঝুলানো হচ্ছে। ফতুয়া ও জিন্সের প্যান্ট পরা মায়িদা হামিদ (৩২) বলেছেন, আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। পুলিশ এমনভাবে তাকিয়ে ছিল যেন তারা আমার পোশাক পছন্দ করছে না। তবে তারা এর বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানা নেই। একজন শিয়া ধর্মীয় নেতা শেখ মিজান সাদি বলেছেন, সবার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা রয়েছে। তবে কিছু জায়গার আলাদা একটা মর্যাদা রয়েছে। কাদিমিয়্যাহ এলাকায় স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে হিজাব ছাড়া নারীদের চলাচল নিষিদ্ধ বলে জানান সাদি। তবে বাগদাদে সরকারি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এমন কোন আদেশ দেয়া হয়নি। বরং এমন অনেক পোস্টার ব্যানার তুলে ফেলা হয়েছে। ইরাকের নারীরা দেশের ঐতিহ্য অনুযায়ী হিজাব পরে বাইরে যান। আর মাজার জিয়ারত ও নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পুরো লম্বা বোরকা পরতে হয় তাদের। কিন্তু ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন হামলা ও সাদ্দামের পতনের পর থেকে দেশটিতে পশ্চিমা কালচার ছড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে ধর্মীয় পোশাকেও তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

Sunday, September 9, 2012

কুয়েতে বাংলাদেশীসহ ৮৬ হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা

বাংলাদেশীসহ কয়েকটি দেশের ৮৬ হাজার নাগরিকের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কুয়েত। এর মধ্যে কুয়েতি নাগরিকই ৪২ হাজার। এছাড়া বাকি ৪৪ হাজারের মধ্যে আছে বাংলাদেশ, ভারত, মিশর, সিরিয়া, লেবানন, পাকিস্তান, ফিলিপাইন ও ইথিওপিয়ার নাগরিক।  কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তাদের তালিকা করা হয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, এসব ব্যক্তির রয়েছে অশোধিত ঋণ অথবা ৫০ কুয়েতি দিনার বা তারও কম অশোধিত জরিমানা। ওই ঋণ বা জরিমানা পরিশোধ না করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে ওই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। গতকাল অনলাইন কুয়েতি টাইমস এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা এসব ব্যক্তির তালিকা দিয়েছে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র। তবে, যারা ওই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছেন তারা যদি বিমানবন্দর বা স্থলবন্দরে অশোধিত ঋণ বা জরিমানা শোধ করে দেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা সহজেই তুলে নেয়া যাবে। গত জুনে এমন নিষেধাজ্ঞার অধীনে ছিলেন ৮৮ হাজার মানুষ।

তসলিমার দেহ ও মুখ রঙে রাঙানো

তসলিমা নাসরিনের যৌন হয়রানির অভিযোগ আমাকে খুব পীড়া দেয়। আমি বিস্মিত ও হতবাক। এ কথাগুলো বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতনামা সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। অনলাইন আউটলুক ইন্ডিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, আমি তসলিমাকে সব সময় পথ দেখাতে চেয়েছি। কিন্তু তিনি আমার কথায় কান দেন নি। বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন সামাজিক মাইক্রো ব্লগিং সাইট টুইটারে পশ্চিমবঙ্গের শীর্ষস্থানীয় সাহিত্যিক, সাহিত্য অকাদমি’র সভাপতি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেছেন, একবার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তার গায়ে হাত দিয়েছিলেন। তিনি তাকে যৌন হয়রানি করেছেন। সাহিত্যে তিনি শক্তিশালী অবস্থানে থাকার জন্য অন্য নারীদের কাছ থেকেও সুবিধা নিয়েছেন। এ নিয়ে এ অঞ্চলে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। এরই প্রেক্ষিতে আউটলুক ইন্ডিয়ার পক্ষে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি সাক্ষাৎকার নেন দোলা মিত্র। এখানে তার অনুবাদ তুলে দেয়া হলো:
প্রশ্ন: তসলিমা নাসরিন আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে, আপনি তাকে ও অন্য নারীদের যৌন হয়রানি করেছেন।
সুনীল: আমি মনে করি তার মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া দেয়ার মাধ্যমে তাকে অহেতুক গুরুত্ব দেয়া হবে। আমি প্রশ্ন করতে চাই যৌন হয়রানির এই অভিযোগ এখন কেন? যখন এটা ঘটেছিল তিনি তখন কেন অভিযোগ করেননি? কেন তিনি হঠাৎ করে এখন এসব প্রসঙ্গ তুলছেন?
প্রশ্ন: তসলিমা বলছেন, এ অভিযোগ তিনি যখন ইচ্ছা করবেন- এটা পুরোপুরি নারীর অধিকারের বিষয়।
সুনীল: এখন ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে চিৎকার করা তার জন্য খুবই সহজ। কিন্তু তসলিমা আমার খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। আমরা একত্রে অনেক সময় কাটিয়েছি। তিনি মাঝেমধ্যেই আমার বাসায় আসতেন। আমরা সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করতাম। একসঙ্গে খাবার খেয়েছি আমরা। হোলি উৎসবের সময় একবার আমরা শান্তিনিকেতনে ছিলাম। ঠিক সেই দিনই তার একটি রূপ দেখতে পেলাম। তার সারা দেহ ও মুখ রঙে রাঙানো। তিনি বসে আছেন আমার পায়ের কাছে।
প্রশ্ন: তাহলে তসলিমা নাসরিন কেন এমন অভিযোগ আনছেন?
সুনীল: তসলিমা এমন এক নারী যিনি সব সময় মনোযোগের কেন্দ্রীয় অবস্থানে থাকতে চান। তিনি বিতর্ক সৃষ্টি করতে খুব পছন্দ করেন। অনেকটা পরে, তিনি এখন বুঝতে পারছেন যে তিনি প্রত্যাখ্যাত হচ্ছেন। তিনি ভারতে ফিরে এখানে অবস্থান করতে বেপরোয়া হয়ে পড়েছেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। কেউ আর তাকে নিয়ে তেমন আলোচনা করে বলে মনে হয় না। তাই যে কোন মূল্যে হোক তিনি নিজেকে ফোকাসে আনার চেষ্টা করছেন। এরকম স্পর্শকাতর অভিযোগ আনতে পারলে তার সেই উদ্দেশ্য সফল হবে।
প্রশ্ন: তসলিমা আপনাকে ‘ভণ্ড’ও বলেছেন। তার বই ‘দ্বিখণ্ডিত’ পশ্চিমবঙ্গে যখন নিষিদ্ধ হয় তিনি দাবি করছেন তখন তার পিছনে আপনার হাত ছিল। এখন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের লেখা ‘মুসলমানদের করণীয়’ বইটি সমপ্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু আপনি এখন তাতে আপত্তি তুলেছেন।
সুনীল: যে কোন রকম সেন্সরশিপের বিরোধী আমি। তসলিমার বই নিষিদ্ধ হওয়ার পিছনে আমার কোন হাত ছিল না। আমি তাকে শুধু পরামর্শ দিয়েছি যে, মুসলমানদের ধর্মকে আক্রমণ করো না। (তার বইয়ে) এমন কিছু অংশ ছিল যা ইসলাম ধর্মের মহানবীকে মারাত্মকভাবে অবমাননা করে। যারা তার ভাল চায় এমন একজন হিসেবে আমি তাকে বুঝিয়েছি যে, এই অংশগুলো অপ্রয়োজনীয়। এতে অসন্তোষ বাড়বে। এতে সামপ্রদায়িক সহিংসতারও সৃষ্টি হতে পারে।
প্রশ্ন: তসলিমার মতে, গণতান্ত্রিক একটি দেশে তিনি লেখক হিসেবে বসবাস করছেন। তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকা উচিত।
সুনীল: সব কিছুর জন্য স্থান ও সময় দু’টিই দরকার। আমি তাকে সতর্ক করেছিলাম যে, তিনি যে স্বাধীনতার কথা বলছেন সে রকম মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য ভারত এখনও প্রস্তুত নয়। অধিক উদার সমাজে, যখন সেখানে কারও দৃষ্টিভঙ্গিতে অন্যদের আপত্তি থাকে সেখানে মতপার্থক্যকে যুক্তি দিয়ে দেখা হয়। কিন্তু এটা ভারত। যেখানে আবেগ খুব সস্তা। সামান্য একটু প্ররোচনা এখানে ভয়ঙ্কর সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। তসলিমা কলকাতা ছেড়ে যাওয়ার ঠিক আগে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি ছিল লেজেগোবরে। তার খুন দাবি করে তীব্র বিক্ষোভ হয়েছে। এটা তার জন্য বিপজ্জনক। কিন্তু তিনি আমার পরামর্শে কানই দিলেন না।
প্রশ্ন: অভিযোগ আছে যে, আপনি ও পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্যিক, বোদ্ধারা তার জন্য যথেষ্ট করেন নি।
সুনীল: এটা ঠিক নয়। যখন তার বিরুদ্ধে একটি ফতোয়া দেয়া হলো, তার জীবন হুমকির মধ্যে পড়েছিল। তখন কবি শঙ্খ ঘোষ ও আমি ব্যক্তিগতভাবে কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি এবং তাকে অনুরোধ করি তসলিমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য সব কিছু করতে। তসলিমা ২০০৭ সালে কলকাতা ছেড়ে যাওয়ার ঠিক আগে তার হয়ে টিপু সুলতান মসজিদের ইমামের কাছে দুঃখ প্রকাশ করি এবং তসলিমাকে তার ভুলের জন্য ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখার আহ্বান জানাই। কিন্তু তিনি আমার কথা শুনলেন না।
প্রশ্ন: এখন কি আপনি ক্ষোভ অনুভব করছেন? আপনি কি আঘাত পেয়েছেন?
সুনীল: তসলিমার জন্য আমার অনেক সহমর্মিতা আছে। আমি সবসময় তাকে পথ দেখাতে চেয়েছি। যখন তিনি ‘লজ্জা’ লেখেন আমি তাকে বলেছিলাম- দেখুন আপনাকে ব্যালান্স করতে হবে। সব হিন্দুই ভাল নন। আবার সব মুসলমানই খারাপ নন। কিন্তু তিনি বিতর্ক সৃষ্টি করলেন। তিনি আমার সঙ্গে একমত না হলেও আমি তা মেনে নিই। কিন্তু এই যৌন হয়রানির অভিযোগ আমাকে খুব পীড়া দেয়। আমি বিস্মিত ও হতবাক।

Thursday, September 6, 2012

কোরিয়ায় এক বাংলাদেশীর স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্ন

বাংলাদেশের মোশাররফ হোসেন। তার দু’চোখে স্বপ্ন জ্বলজ্বল। সেই স্বপ্নকে সঙ্গী করে তিনি ২০০৯ সালের ৩রা নভেম্বর কোরিয়া পাড়ি জমিয়েছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল কিছু টাকা উপার্জন করে দেশে ফিরে সুখের সংসার পাতবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন ধূলিসাৎ। এখন তার জীবনই তার কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঋণের ওপর নির্ভর করে চলছে তার দিন। এর কারণ, তার দু’পায়ে হাড়ে মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়ায় তা প্রতিস্থাপন করতে হয়েছে। নিতম্বেও একই অপারেশন করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তিনি ঠিকমতো আর কখনও হাঁটতে পারবেন না। তাই তার সময় কাটে এখন অনাগত ভবিষ্যৎকে সামনে রেখে এক দুশ্চিন্তার মহাসমুদ্রে ডুবে থেকে। যখনই ভাবেন আর কোনদিন কাজ করতে পারবেন না তখনই ঋণের কথা মাথায় আসে। বাড়িতে রেখে যাওয়া স্বজনের কথা মাথায় আসে। আর তখনই মোশাররফ হোসেন অস্থির হয়ে পড়েন। ই-৯ ভিসা নিয়ে তিনি দক্ষিণ কোরিয়াতে গিয়েছিলেন। তার বাড়ি চট্টগ্রামে। চিকিৎসকরা তাকে বলেছেন, তাকে এখন পায়ে ও নিতম্বে যে হাড় প্রতিস্থাপন করা হয়েছে তা ১০ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ফের প্রতিস্থাপন করাতে হবে। সিউল মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স সেন্টারে এখন দিন কাটে তার। এই এনজিওতে তিনি ঠাঁই পেয়েছেন। তারাই এখন মোশাররফ হোসেনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও ব্যক্তির কাছে ধরনা দিচ্ছে। এ খবর প্রকাশিত হয়েছে কোরিয়া টাইমসে। এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন মোশাররফ হোসেন। তারপর তিনি বইয়ের একটি ছোট্ট দোকান চালাতেন। তাতে মাসে ৩০০ ডলারের মতো আয় হতো। তা দিয়ে তিনি পরিবারের খরচ নির্বাহ করতে পারতেন মোটামুটি। তিনি বলেছেন, আমিই সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। আমার মেয়ে আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। ফলে আমার সামনে অনেক সমস্যা এসে ভর করতে থাকে। মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার চিকিৎসার দায় এসে পড়ে আমার কাঁধে। এরপরই তিনি যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার বন্ধুদের পরামর্শে কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ পেয়ে যান। মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাকে বলা হলো, যুক্তরাষ্ট্রে অনেকটা আয়েশে থাকতে পারবো। কিন্তু কোরিয়াতে বেতন বেশি। কারণ, সেখানে প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন। সিউল বাংলাদেশীদের কাছে একটি প্রিয় জায়গা। আমাকে কোরিয়া আসতে আমার স্ত্রীও উৎসাহিত করে। ওই রিপোর্টে বলা হয়, বর্তমানে ই-৯ ভিসায় কোরিয়াতে প্রায় ৩০০০ বাংলাদেশী শ্রমিক রয়েছেন। এই কোরিয়াতে পা রাখার পর মোশাররফ হোসেন উজেংবু এলাকায় একটি টেক্সটাইল কারখানায় কাজ পান। তীব্র খাটুনিতে ক্লান্ত শরীরকে একটু ফুরসত নিতে সেখানে সারা দিনে মাত্র আধা ঘণ্টা বিরতি দেয়া হতো। মোশাররফ বলেন, কোন বিরতিহীন আমাকে ভারি ভারি বক্স তুলতে হতো। কিন্তু আমি তো অর্থ উপার্জনের জন্য এসেছি। তাই মুখ বুজে সহ্য করেছি সব। কোরিয়াতে প্রায় এক বছর অবস্থান করার পর তিনি পায়ে ব্যথা অনুভব করতে থাকেন। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি একজন চিকিৎসকের কাছে যান। কারণ, তখন তিনি আর দাঁড়াতে পারছিলেন না। রাফায়েল ক্লিনিকের সহায়তায় তাকে ফ্রি চিকিৎসা দেয়া হয়। এখন তার অবস্থা খুবই শোচনীয়। তিনি বাড়ি ফিরতে চান। যদি কোন ব্যক্তি তাকে সহায়তা করতে চান তাহলে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে বাবো নানুম (ফুলস শেয়ারিং) ফাউন্ডেশনের সঙ্গে (০২) ৭২৭-২৫০৩ থেকে ৮ পর্যন্ত নম্বরে অথবা ওই ফাউন্ডেশনের ব্যাংক একাউন্ট নম্বর - ১০০৫-১০২-১০৬৪৩৪,  Woori Bank তে।

মিশরে ভয়াবহ যৌন নিপীড়ন

মিশরে এখন নারীদেরকে যৌন হয়রানি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। মিশরের নারীরা এখন একাকী বা নারীসহযোগীদের সঙ্গে বাড়ির বাইরে বের হতেও ভয় পাচ্ছেন। মিশরের নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারীরা বলছেন যৌন হয়রানির সমস্যাটা এখন মহামারী আকারই ধারণ করেছে। গত তিন মাসে সেখানে এ ধরনের  সমস্যা বেড়ে গেছে বলে তারা দাবি করছেন।  মিশরের অনেক নারীর মতেই যৌন হয়রানির বিষয়টি মিশরে এখন নিত্য নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ধরনের হয়রানির ঘটনা কখনও কখনও চরম আকার ধারণ করে সহিংস হামলার রূপ ধারণ করে। বিবিসি জানিয়েছে গত শীতে মিশরের আলেকজান্দ্রিয়াতে একজন নারী একদল পুরুষের হাতে নিপীড়নের শিকার হয়েছিল। ওই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে ওই নারীকে কয়েকজন পুরুষ টেনে কাঁধে তুলে নিচ্ছে এবং অন্যরা তাকে টেনেহিঁচড়ে নামাচ্ছে। জনতার হৈচৈয়ের মধ্যে হামলার শিকার ওই নারীর চিৎকার চাপা পড়ে যাচ্ছে। অবস্থা দেখে কোন ভাবেই বোঝার উপায় নেই যে, কে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে আর কে তার ওপর হামলে পড়ছে। এটি নারীদের ওপর যৌন নিপীড়নের চরম অবস্থা হলেও সমীক্ষায় দেখা গেছে, মিশরের প্রত্যেক নারীই প্রতিদিন কোন না কোন ভাবে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। মারওয়া নামের এক তরুণী বলেছেন, বাড়ির বাইরে গেলে তিনি শারীরিক বা মৌখিক ভাবে নিপীড়নের শিকার হন। তিনি বলেছেন, এ কারণে সব সময় তিনি ভীতসন্ত্রস্ত থাকেন। মারওয়া বলেন, একজন নারী হিসেবে সব সময়ই এ বিষয়টি আমাকে আতঙ্কে রাখে। যখনই আমি বাড়ির বাইরে যাই, রাস্তায় হাঁটি তখনই কেউ না কেউ আমাকে নিপীড়ন বা বিরক্ত করবে। এ কারণে সব সময়ই আমি ভয়ে থাকি। এ কারণ আমি বাড়ির বাইরে বের হওয়া কমিয়ে দিয়েছি। পোশাক পরার ক্ষেত্রে আমি এখন অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করি। মানুষকে আকর্ষিত করতে পারে এমন ধরনের কাপড় পরা আমি এড়িয়ে চলি। বাড়ির বাইরে ছেলেদের হয়রানি এড়াতে মিশরের নারীরা ঢিলেঢালা পোশাকের পাশাপাশি মাথায় স্কার্ফ ব্যবহার করছেন। কিন্তু মিশরের নারী অধিকার রক্ষাকারী সংগঠন ইজিপ্ট’স গার্লস আর এ রেড লাইন-এর দীনা ফরিদ বলেছেন এ ধরনের রক্ষণশীল পোশাকও তাদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। তিনি বলেছেন চেহারা আড়াল করতে যারা হিজাব ব্যবহার করছেন তারাও যৌন হয়রানির টার্গেটে পরিণত হচ্ছেন। আসলে রক্ষণশীল পোশাক যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কোন ভূমিকাই রাখছে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। কারণ মিশরের বেশির ভাগ নারীই পর্দা ব্যবহার করেন। অথচ তারা প্রতিনিয়তই যৌন হযরানির শিকার হচ্ছেন। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যেসব নারী বা তরুণী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন তাদের বেশির ভাগই নিকাব দিয়ে নিজেদেরকে আড়াল করে রেখেছিলেন। ২০০৮ সালে ইজিপ্টশিয়ান সেন্টার ফর উইমেন’স রাইট পরিচালিত এক সমীক্ষাতে দেখা গেছে ৮০ ভাগ নারীই কোন না কোন ভাবে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আর এ ধরনের হয়রানির শিকার অধিকাংশ নারীই ইসলামিক অনুশাসন মেনে হিজাব পরিধান করছেন। কায়রোর আমেরিকান ইউনিভার্সির একজন সমাজবিজ্ঞানি সাঈদ সাদেক বলেছেন মিশরের সমাজের গভীরেই এ সমস্যার মূল গ্রোথিত রয়েছে। তিনি বলেছেন, এর মূলে রয়েছে ইসলামিক রক্ষণশীলতার মনোভাব এবং পিতৃতান্ত্রিক আচরণের সংমিশ্রণ। তিনি বলেন, ইসলামী মৌলবাদের উত্তান ঘটছে আর তারা এখন নারীদেরকেই তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছেন। তারা চাইছেন নারীরা ঘরেই বসে থাক। বাইরে কাজ করার জন্য তারা যেন বের না হন। তিনি বলেন পিতৃতান্ত্রিক সংস্কৃতি নারীদেরকে পুরুষদের চেয়ে উঁচু স্থানে থাকার বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না। কারণ, কিছু কিছু নারী নিজেদের শিক্ষা-কর্মদক্ষতা আর যোগ্যতার বলে পুরুষদের চেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই এক্ষেত্রে নারীদের দমিয়ে রাখার উপায় হচ্ছে যে কোন ভাবে তাদের ওপর যৌন হয়রানি করা। সাদেক বলেন এটা ফারাওদের সংস্কৃতি নয়। এটা বেদুঈনদের সংস্কৃতি। সাঈদ সাদেক এবং নারী অধিকার সংগঠনগুলো এ ধরনের প্রবণতা বৃদ্ধির পেছনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দুর্বলতাকেও দায়ী করেছেন। তারা বলছেন, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশকে আরও জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে নারীদের পোশাকের জন্য তাদেরকে নিপীড়নের শিকার হতে হচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে। আর এ নিপীড়নকারীদের মধ্যে টিনেজারদের সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারীদের নিপীড়নের ব্যাপারে কায়রোর একদল টিনেজার জানিয়েছেন নারীরাই তাদেরকে নিপীড়ন করতে ছেলেদেরকে প্রলুব্ধ করে। তারা বলেছে মেয়েরা যদি সম্মানজনক ভাবে পোশাক পরে তাহলে কেউই তাদেরকে বিরক্ত করবে না। নারীরাই চাইছে তাদেরকে বিরক্ত করা হোক। এমনকি নিকাব পরা মেয়েরাও নিজেদের পেছনে ছেলেদের ঘোরাতে পছন্দ করে। এজন্য অবশ্য ছেলেদেরকে পুরোপুরি দোষারোপ করা যায় না। কারণ, টাইট জিন্স পরে নেকাব ব্যবহারকারী নারী আর শালীন পোশাকের সঙ্গে হিজাব ব্যবহারকারী নারীদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যে নারীরা টাইট জিন্স পরে আবার নেকাব ব্যবহার করে তাদের তো হয়রানি প্রাপ্যই বলা চলে। মিশর সরকার অবশ্য এ বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার কথা জানিয়েছে। তবে নারী অধিকার রক্ষাকারী সংগঠনগুলো দাবি করেছে সরকার বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করছে না। তবে সচেতন নারীদের অনেকেই এ বিষয়টিকে তাদের স্বাধীনতার পরিপন্থি বলে উল্লেখ করেছেন। মিশরের একজন নারী যেমন বলছিলেন আমি নিরাপদে একজন মানুষ হিসেবে রাস্তায় হাঁটতে চাই। আমাকে যেন কেউ বিব্রত বা হয়রানি করতে না পারে। এটাই হচ্ছে আমার স্বাধীনতা।

Tuesday, September 4, 2012

‘এক রাতে সুনীল আমার গায়ে হাত দিয়েছিল’

পরিতোষ পাল, কলকাতা থেকে : বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন তার টুইটারে সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সম্পর্কে কুৎসিত মন্তব্য করে থেমে থাকেন নি। তিনি এবার জানিয়েছেন, সুনীল এক রাতে তার বন্ধুদের সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে তার হোটেলের ঘর থেকে ফিরে যাবার সময় তার গায়ে অশ্লীলভাবে হাত দিয়েছিল। ঘটনার আকস্মিকতায় তসলিমা নাকি এতটাই হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন যে কি করবেন ভেবে পান নি। পরে এই ঘটনা নিয়ে তসলিমা নাকি ’রাস্তার ছেলে এবং কবি’ নামে একটি কবিতা লিখেছিলেন। তসলিমা দাবি করেছেন, কবিতাটি সুনীলকে নিয়েই লেখা। তবে তসলিমার এইসব অভিযোগ সম্পূর্ণভাবেই উড়িয়ে দিয়েছেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, এতদিন তসলিমা এ ব্যাপারটি নিয়ে চুপ ছিল কেন? সাহস থাকে তো আইনের সাহায্য নিক। সুনীল মনে করেন, এসবই তসলিমার হতাশার বহিঃপ্রকাশ। আর তাই এসব তাকে মোটেই বিচলিত করে না। দুই বাংলার বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক নিয়ে একসময় বই লিখে তসলিমা সাড়া ফেলেছিলেন। এজন্য বাংলাদেশের বিশিষ্ট লেখক সৈয়দ শামসুল হক তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলাও করেছিলেন। কলকাতাতেও এক কবি তসলিমার বিরুদ্ধে কোটি রুপির মানহানির মামলা করেছিলেন তার সম্পর্কে বইয়ে আপত্তিকর কিছু লেখার জন্য। তবে সেই সময় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সম্পর্কে কোনও কথাই লেখেননি তসলিমা। এতদিন পরে সুনীল সম্পর্কে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনার কারণ সম্পর্কে জানা গেছে, তসলিমার ’দ্বিখন্ডিত’ বইটি বাম সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ করার জন্য সুনীলই নাকি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্যকে বলেছিলেন। তসলিমা এটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন। সুনীল অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি কখনই ’দ্বিখন্ডিত’ নিষিদ্ধ করার কথা বলেননি। বরং শঙ্খ ঘোষ সহ অন্যান্যদের সঙ্গে মিলে তিনি সেই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধেই বলেছিলেন। এমনকি মিছিলও করেছিলেন। কিন্তু তসলিমা কেন বইটি নিষিদ্ধ করার পেছনে তিনিই প্রধান মাথা বলছেন তার কোনও কারণ তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না। সুনীল জানিয়েছেন, তসলিমার কলকাতায় ফেরার ব্যাপারে তিনি কখনও কোন উদ্যোগ নেননি ঠিকই,তবে তিনি এমন কোনও বড় মাপের ব্যক্তি নন যে, তার কথাতেই তসলিমার কলকাতায় আসা আটকে যাবে। সুনীল ও তসলিমার এই সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে বুদ্ধিজীবীদের পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলেও। তবে ঘটনার সুত্রপাত, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের লেখা ‘মুসলমানদের করণীয়’ নামের একটি বই সম্পর্কে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনের কঠোর মনোভাবের বিরুদ্ধে সুনীলের মতামত থেকে। সুনীল যে কোনও বই নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে তার মত প্রকাশ করার পরই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন তসলিমা। গত ২রা সেপ্টেম্ব^র তিনি তার টুইটারে লিখেছেন, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বই নিষিদ্ধ করার পক্ষে। তিনি আমাকে এবং অন্যান্য মহিলাদের যৌন হয়রাণি করেছেন। তিনি সাহিত্য আকাদেমির সভাপতি। শেম! শেম!। তসলিমা আরও লিখেছেন , তার ’দ্বিখন্ডিত’ বইটি নিষিদ্ধ করার জন্য সুনীলই বাম সরকারকে বলেছিল। আর এখন তিনি বই নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে মতামত দিচ্ছেন। একজন ভন্ড। কোনও বাঙালির সাহস নেই ভন্ড ও মহিলাদের ব্যবহারকারি লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখোশটা ছিড়ে ফেলার।এই ট্যুইটার বোমার পর সাংবাদিকদের প্রকাশ্যে তসলিমা বলেছেন, এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মহিলারা সবসময়ই যৌন হয়রাণির শিকার হন। আমি শুনেছি সুনীল অনেক মেয়েকেই যৌন হয়রানি করেছে। পুরুষদের সমাজে এটা খুবই সাধারণ। কিন্তু মহিলার এর বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারেন না চাকুরি হারাবার ভয়ে। আর লেকার দুনিয়ায় তো অনেক উঠতি তরুণ মেয়েরা বাঘা বাঘা লেখকদের শারিরীক যৌন সম্পর্কের শিকার হয়েছে। তসলিমার মতে, তাদের ক্যারিয়ার নষ্ট হয়ে যাবার ভয়ে তারা কেউ এদের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন না। এরপরই তসলিমা জানিয়েছেন, অনেকদিন আগের একটি ঘটনার কথা। সেই সময় ফ্রান্স থেকে এসে তিনি কলকাতার একটি হোটেলে থাকছিলেন। সেই সময় এক রাতে সুনীল বন্ধুদের নিয়ে তার ঘরে ডিনার করতে এসেছিলেন। কিন্তু যাবার সময় সুনীল নাকি বিদায় দেবার সময় তার গায়ে এমনভাবে হাত দিয়েছিলেন যে, তসলিমা হতভম্ব হয়ে পড়েছিলেন। এই ঘটনায় তসলিমা প্রচন্ড মানসিক আঘাত পেয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন। তসলিমার দাবি, আমার মত প্রতিষ্ঠিত লেখিকার সঙ্গে যেখানে সুনীল এই ধরণের কাজ করেছে সেখানে অন্য মেয়েদের সঙ্গে যে সে এই ধরণের কাজ করেছে এটাই স্বাভাবিক। তসলিমা আরও জানিয়েছেন, আমি জানি সুনীলের সেই ক্ষমতা আছে যে আমাকে ভারত থেকে বিতাড়িত করার ক্ষেত্রে প্রভাব ঘাটাতে পারে। তবু তিনি সত্যি বলে যাবেন বলে জানিয়েছেন। তসলিমা দাবি করেছেন, তার আত্মজীবনীর তৃতীয় খন্ড ’দ্বিখন্ডিত’তে অনেকের মুখোশ খুলে দেয়ার পর সুনীল নাকি তাকে বলেছিল, ব্যক্তিগত সম্পর্ক প্রকাশ্যে না আনতে। তবে তসলিমা জানিয়েছেন, সুনীলের মত ’অর্ধেক জীবন’ তিনি লিখবেন না। তার কাছে কোনও কিছুই গোপনীয় নয়। আর সত্যি বলার জন্য অনেক কিছু সহ্য করতে হয়েছে। তবু সত্যি বলে যাবেন বলে তিনি গোষণা দিয়েছেন। তসলিমা বর্তমানে দিল্লির এক অজ্ঞাত স্থানে ভারত সরকারের নিরাপত্তা সুরক্ষায় অবস্থান করছেন। ২০০৭ সালে কলকাতায় মুসলমানদের একাংশের হিংসাত্মক বিক্ষোভের পরই তসলিমাকে কলকাতা ছেড়ে যেতে হয়। তার পর থেকে তার আর কলকাতায় ফেরা হয়নি। অথচ তসলিমা কলকাতায় ফিরতে চান। তিনি মনে করেন, কলকাতা তার দ্বিতীয় ঘর। কিন্তু তাকে ফিরিয়ে এনে মুসলমানদের চক্ষুশূল হতে চায় না কোনও রাজনৈতিক দলই। ফলে কলকাতায় ফেরার জন্য তার কোন আবেদনে কোন সরকারই কর্ণপাত করছে না।
Source: The daily Manabzamin

কুয়েতে বাজিমাত করলেন সিলেটের আবদুল হক

১৬ হাজারের বেশি প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে কুয়েতে বাজিমাত করেছেন সিলেটের আলী রেজা আবদুল হক (৩০)। সেখানে কুয়েত টাইমস রমজান কুইজ ড্রতে তিনি জিতে নিয়েছেন প্রথম পুরস্কার। আর তা হলো- দু’জনের লন্ডন সফর। শুধু তাই নয়। তিনি আরও পেয়েছেন খ্যাতনামাদের অটোগ্রাফযুক্ত দু’টি ঘড়ি, ক্রাউন প্লাজা হোটেলে দু’রাত অবস্থানের সুযোগ, একটি মোবাইল ফোন ও ক্রাউন প্লাজা হোটেলের একটি গিফট ভাউচার। কুয়েত চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ক্লিনার বা পরিচ্ছন্নকর্মী আবদুল হক এ পুরস্কার জিতে আনন্দে আত্মহারা। গতকাল কুয়েত টাইমসের প্রথম পৃষ্ঠায় তার ছবিসহ এ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়, আবদুল হক ১২ বছর ধরে কুয়েতে অবস্থান করছেন। পুরস্কার জিতে আবদুল হক বলেন, প্রথম পুরস্কার জিতবো ভাবতেই পারিনি। তা যখন পেয়েই গিয়েছি আনন্দ আর রাখতে পারছি না। কুয়েত টাইমস রমজান কুইজ নামে একটি কুইজ চালু করেছিল। তাতে দ্বিতীয়বারের মতো অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এর আগে গত বছরও তিনি এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু সফলতা আসেনি। বৃহস্পতিবার রাতে কুয়েতের সুইমিংপুল কমপ্লেক্সে দর্শক শ্রোতাদের উপস্থিতিতে ওই কুইজের র‌্যাফেল ড্র হয়। এতে প্রথম তিনজনকে দেয়া হয় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরষ্কার। এছাড়া ৫০ জনকে দেয়া হয় সান্ত্বনা সূচক মূল্যবান পুরস্কার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্তকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন ইতিহাদ এয়ারওয়েজের জেনারেল ম্যানেজার নাবিল মাতারওয়ে। কুয়েত টাইমস জানায়, আলী রেজা আবদুল হক বিবাহিত। রোববার তিনি পুরস্কার হাতে পেয়ে বললেন, আমি এবার অনেক পুরস্কার পেয়েছি। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অপেক্ষা করছি সংসারটাকে সুন্দর করে সাজানোর জন্য। সংসার একটি গুরুদায়িত্ব। তাই আমি লন্ডন সফরের জন্য যে বিমান টিকিট পেয়েছি তা বিক্রি করে দিয়ে সংসারটাকে ভালভাবে চালাতে পারবো। রিপোর্টে বলা হয়, আবদুল হকের অফিসে রাখা হতো কুয়েত টাইমস পত্রিকা। সেখানে যে পৃষ্ঠায় কুইজ দেয়া হতো তিনি তা কেটে নিয়ে যেতেন বাসায়। তারপর তা পূরণ করে পাঠিয়ে দিতেন সংশ্লিষ্ট ঠিকানায়। কিন্তু তাতে প্রশ্নগুলো খুব সহজ ছিল না। তিনি বলেন, প্রশ্নগুলো ছিল কনফিউজ করে দেয়ার মতো। আমি সবগুলোর উত্তর দিয়েছি অনেক ভেবেচিন্তু।  এ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন আবদুল্লাহ ইসা (৫৩) নামে এক ব্যক্তি। তিনি পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন একটি নাইকন ক্যামেরা, একটি এলজি চকোলেট মোবাইল ফোন, একটি এলিসি ঘড়ি, ক্রাউন প্লাজা হোটেলে দু’রাত অবস্থানের সুযোগ, একটি স্মার্ট টেলিভিশন, আরডেকো মডেলের একটি মেকআপ সেট ও রুবিতে লাঞ্চ-ডিনারের ভাউচার। তিনি পাঁচ বছর আগে খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। পুরস্কার পাওয়ার পর তার প্রতিক্রিয়া- আমি সত্যের পথে এসেছি। তাই আল্লাহ আমাকে পুরস্কৃত করেছেন। আগে আমি বাইবেল পড়ে যে তৃপ্তি পেতাম এখন পবিত্র কোরান তেলাওয়াত করে তার চেয়ে বেশি প্রশান্তি পাই। সম্ভবত এটাই আমার জন্য বড় উপহার। এখন আমি আমার পরিবার ও বন্ধুদের কাছে এই দাওয়াত পৌঁছে দিতে চাই। আবদুল্লাহ ইসার বাড়ি ভারতের চেন্নাইয়ে। তিনি কুয়েতে টয়োটা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করেন। তৃতীয় পুরস্কার জিতেছেন মিশরের সামি নাদি আল সায়েদ (২৪)। তিনি একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে ব্রোকারের চাকরি করেন। তিনি পেয়েছেন একটি এলজি চকোলেট মোবাইল ফোন, কারলো কারদিনি মডেলের ঘড়ি, ক্রাউন প্লাজা হোটেলে দু’রাত অবস্থানের সুযোগ, একটি ডিই ১০০০ ডিকশনারি, একটি নাইকন ক্যামেরা, একটি স্মার্ট টিভি, একটি ডেক্সন ডিভিডি প্লেয়ার।

Sunday, September 2, 2012

অর্থের বিনিময়ে শরীর বিলিয়েছেন শেরলিন চোপড়া



ভারতের হার্টথ্রব প্লেবয় গার্ল শেরলিন চোপড়া স্বীকার করলেন। বললেন, তিনি অর্থেও বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। শুক্রবার তিনি তার টুইটারে এ কথা ফাঁস করেছেন। গতকাল এ খবর দিয়েছে অনলাইন জি-নিউজ। এর আগে তিনি অভিযোগ করেছিলেন শয্যাসঙ্গী হিসেবে তাকে সঙ্গে পেতে অনেক মানুষ প্রস্তাব দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত তিনি নিজেই স্বীকার করলেন, ওই কাজটি তিনি টাকার বিনিময়ে শেষ করেছেন। অনেক লোকের সঙ্গে তিনি শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। কিন্তু তা অনেকটা আগে। এখন তিনি ‘ফ্রেশ’। ওই কাজে তার মনোনিবেশ করার পরিকল্পনা আর নেই। ওই টুইটারে তিনি লিখেছেন, যারা এতদিন তাকে শয্যাসঙ্গী হতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তারা যেন নীরব থাকেন। তিনি টুইটারে লিখেছেন, আমার টুইটারের অনেক নম্বর থেকে প্রস্তাব পেয়েছি    এই ঠিকানায়। তারা আমার কাছে অর্থের বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক চায়। অতীতে অনেক সময় আমি অর্থের জন্য এ কাজ করেছি। এমন কোন ঘটনার কথা স্মরণ করতে পারি না যেখানে আমি স্বেচ্ছায় রাজি হয়েছি। তবে এ বছর জুলাইয়ে লস অ্যানজেলেস থেকে দেশে ফেরার পর আমার চেতনায় পরিবর্তন এসেছে। আমি বুঝতে পেরেছি, আর মুক্তমনে এমন কাজ করব না। এছাড়া আরও অনেক রগরগে কথা লিখেছেন তিনি।