আমার প্রতি তার ভালবাসা ভিন্ন রকম। প্রতিদিন তিনি গোসল সেরেই আমার কাছে আসেন। আমার কপাল স্পর্শ করেন। কিছু মন্ত্র পড়েন। এই কাজটি তিনি বছরের প্রতিটি দিন করেন। ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত ভারতের প্রথম বাঙালি প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী সুভ্রা মুখোপাধ্যায় স্বামীর মূল্যায়ন করলেন এভাবে। তার স্বামী রাজনীতিতে এখন সবচেয়ে শীর্ষ আসনে পৌঁছে গেছেন। তাকে যখন লোকজন শুভেচ্ছা জানাতে ছুটছেন তার বাড়িতে শুভ্রা মুখোপাধ্যায়ের হৃদয়ে আনন্দ লুটোপুটি খাচ্ছে। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার দাম্পত্য জীবন ৫৫ বছরের। এই দীর্ঘ সময়ে তাদের কোন দাম্পত্য কলহ হয়নি। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেছেন ভারতের নতুন ফার্স্ট লেডি হতে যাওয়া শুভ্রা। তার কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিলÑ আপনি ফার্স্টলেডি হতে চলেছেন, কেমন লাগছে? জবাবে শুভ্রা বলেনÑ ভাল লাগছে। আমার মেয়ে আমাদের সঙ্গেই আছে। ছেলে এসে যোগ দেবে। আমরা অভিভূত।
প্রশ্ন: প্রণব মুখোপাধ্যায় ভারতের প্রথম বাঙালি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। আপনি কি তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন?
শুভ্রা: না না। আমরা আজকালকার দম্পতির মতো নই। আমাদের সম্পর্ক লোক দেখানো নয়। আমাদের আবেগ প্রকাশ্যে আমরা প্রকাশ করি না। এটা আমাদের মনন আর হৃদয়ের সঙ্গে মিশে আছে। আমরা হাল্কা ভালবাসার কথায় তৃপ্ত হই না। আমাদের সময়ে, এটা নির্ভর করে একে অন্যকে কতটুকু হৃদয় দিয়ে অনুভব করি তার ওপর। আমাদের ভালবাসা আলাদা ধরনের। প্রতিদিন তিনি গোসল সেরে আমার কাছে আসেন। আমার কপাল স্পর্শ করে মন্ত্র জঁপেন। বছরের প্রতিদিনই তিনি এই কাজটি করেন। এর কোন ব্যত্যয় হয় না। এভাবেই তিনি তার ভালবাসার প্রকাশ ঘটান। আমাদের বিয়ে হয়েছে ৫৫ বছর। এ সময়ের মধ্যে আমাদের কোন ঝগড়া হয় নি।
প্রশ্ন: সাফল্যের দিনে তিনি আপনাকে বিশেষ কি ধরনের উপহার দেন?
শুভ্রা: ভালবাসা ছাড়া আর কি!
প্রশ্ন: তার দেয়া কোন নতুন শাড়ি পরেছেন কি?
শুভ্রা: কেন আমি নতুন শাড়ি পরবো? সারা বছর যে রকম কাপড় পরি সে রকমই পরবো। এর মধ্যে কোন বিশেষত্ব নেই। আর তিনি তো কখনও আমাকে শাড়ি কিনে দেন নি। অন্যদের চেয়ে তিনি আলাদা। তিনি কর্মমুখী। কর্মই তার জীবন। কাজের বাইরে তিনি সর্বাশী পাঠক। সারাক্ষণ বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকেন।
প্রশ্ন: তার জন্য কি বিশেষ কোন খাবার রান্না করেছেন?
শুভ্রা: আমিই তার পছন্দের খাবার রান্না করি। কিন্তু আমার স্বাস্থ্য আর আমাকে সেই সুযোগ দিচ্ছে না। তিনি পছন্দ করেন আলু পোস্ত এবং ঝিঙ্গা পোস্ত। আমার রেসিপি অনুযায়ী তা রান্না হয়েছিল সোমবার।
প্রশ্ন: রাষ্ট্রপতি ভবনে আপনি তার সঙ্গে কেমনভাবে কাটাবেন তা নিয়ে তার সঙ্গে কি কোন আলোচনা হয়েছে?
শুভ্রা: না। তিনি এসব দুনিয়া থেকে অনেক দূরে। আমি শুধু বাসার বিষয়আশয়ে সিদ্ধান্ত নেব। আমরা যখন দিল্লি এসেছিলাম তখন আমাদের কাছে তেমন কিছু ছিল না। কিন্তু এখান আমাদের কাছে অনেক কিছু। দেখুন, আগে তো সেখানে যাই। আমার তানপুরা-হারমোনিয়াম আমার অমূল্য সম্পদ। আমি আশা করি যথাযথ যতেœর সঙ্গে তা সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। রাষ্ট্রপতি ভবনে কোন রুমটি আমরা মন্দির হিসেবে ব্যবহার করব তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
প্রশ্ন: সোমবারের দিনটিতে আপনি কাকে সবচেয়ে বেশি মিস করছিলেন?
শুভ্রা: জন্মের পরই আমি একটি ছেলেকে হারিয়েছি। আজ তাকে খুব বেশি মনে পড়ছে। আমার শ্বশুর পক্ষের লোকজন ও আমার মা এখন আমার স্বামীকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে পেয়ে খুব খুশি। কিন্তু আমি জানি, তাদের আশীর্বাদ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। আমার মা আমাকে বলতেনÑ আমি নিশ্চিত একদিন আমার জামাই মন্ত্রী হবে। সে হবে অত্যন্ত ব্যতিক্রমী এক ব্যক্তি। আমি মাকে এমন সব কথা না বলতে অনুরোধ করতাম। আমার মায়ের যুক্তি ছিলÑ তোমার মধ্যে যতক্ষণ প্রয়োজনীয় সক্ষমতা ও ক্ষমতা না থাকবে ততক্ষণ তুমি দেশের জন্য কিছু করতে পারবে না। সত্যি, আজ তার জামাই ভারতের প্রেসিডেন্ট। মা যদি আজ বেঁচে থাকতেন তাহলে তার জামাইকে এ অবস্থায় দেখে আনন্দে চাঁদের দেশে চলে যেতেন। তার জন্য ইন্দিরা গান্ধীও আনন্দিত হতেন।
প্রশ্ন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম দিকে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন দেননি। এ বিষয়ে কি বলবেন?
শুভ্রা: আমি অরাজনৈতিক। রাজনীতি থেকে আমি ১০ লাখ ফুট দূরত্ব বজায় রাখি।
প্রশ্ন: প্রণব মুখোপাধ্যায় ভারতের প্রথম বাঙালি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। আপনি কি তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন?
শুভ্রা: না না। আমরা আজকালকার দম্পতির মতো নই। আমাদের সম্পর্ক লোক দেখানো নয়। আমাদের আবেগ প্রকাশ্যে আমরা প্রকাশ করি না। এটা আমাদের মনন আর হৃদয়ের সঙ্গে মিশে আছে। আমরা হাল্কা ভালবাসার কথায় তৃপ্ত হই না। আমাদের সময়ে, এটা নির্ভর করে একে অন্যকে কতটুকু হৃদয় দিয়ে অনুভব করি তার ওপর। আমাদের ভালবাসা আলাদা ধরনের। প্রতিদিন তিনি গোসল সেরে আমার কাছে আসেন। আমার কপাল স্পর্শ করে মন্ত্র জঁপেন। বছরের প্রতিদিনই তিনি এই কাজটি করেন। এর কোন ব্যত্যয় হয় না। এভাবেই তিনি তার ভালবাসার প্রকাশ ঘটান। আমাদের বিয়ে হয়েছে ৫৫ বছর। এ সময়ের মধ্যে আমাদের কোন ঝগড়া হয় নি।
প্রশ্ন: সাফল্যের দিনে তিনি আপনাকে বিশেষ কি ধরনের উপহার দেন?
শুভ্রা: ভালবাসা ছাড়া আর কি!
প্রশ্ন: তার দেয়া কোন নতুন শাড়ি পরেছেন কি?
শুভ্রা: কেন আমি নতুন শাড়ি পরবো? সারা বছর যে রকম কাপড় পরি সে রকমই পরবো। এর মধ্যে কোন বিশেষত্ব নেই। আর তিনি তো কখনও আমাকে শাড়ি কিনে দেন নি। অন্যদের চেয়ে তিনি আলাদা। তিনি কর্মমুখী। কর্মই তার জীবন। কাজের বাইরে তিনি সর্বাশী পাঠক। সারাক্ষণ বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকেন।
প্রশ্ন: তার জন্য কি বিশেষ কোন খাবার রান্না করেছেন?
শুভ্রা: আমিই তার পছন্দের খাবার রান্না করি। কিন্তু আমার স্বাস্থ্য আর আমাকে সেই সুযোগ দিচ্ছে না। তিনি পছন্দ করেন আলু পোস্ত এবং ঝিঙ্গা পোস্ত। আমার রেসিপি অনুযায়ী তা রান্না হয়েছিল সোমবার।
প্রশ্ন: রাষ্ট্রপতি ভবনে আপনি তার সঙ্গে কেমনভাবে কাটাবেন তা নিয়ে তার সঙ্গে কি কোন আলোচনা হয়েছে?
শুভ্রা: না। তিনি এসব দুনিয়া থেকে অনেক দূরে। আমি শুধু বাসার বিষয়আশয়ে সিদ্ধান্ত নেব। আমরা যখন দিল্লি এসেছিলাম তখন আমাদের কাছে তেমন কিছু ছিল না। কিন্তু এখান আমাদের কাছে অনেক কিছু। দেখুন, আগে তো সেখানে যাই। আমার তানপুরা-হারমোনিয়াম আমার অমূল্য সম্পদ। আমি আশা করি যথাযথ যতেœর সঙ্গে তা সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। রাষ্ট্রপতি ভবনে কোন রুমটি আমরা মন্দির হিসেবে ব্যবহার করব তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
প্রশ্ন: সোমবারের দিনটিতে আপনি কাকে সবচেয়ে বেশি মিস করছিলেন?
শুভ্রা: জন্মের পরই আমি একটি ছেলেকে হারিয়েছি। আজ তাকে খুব বেশি মনে পড়ছে। আমার শ্বশুর পক্ষের লোকজন ও আমার মা এখন আমার স্বামীকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে পেয়ে খুব খুশি। কিন্তু আমি জানি, তাদের আশীর্বাদ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। আমার মা আমাকে বলতেনÑ আমি নিশ্চিত একদিন আমার জামাই মন্ত্রী হবে। সে হবে অত্যন্ত ব্যতিক্রমী এক ব্যক্তি। আমি মাকে এমন সব কথা না বলতে অনুরোধ করতাম। আমার মায়ের যুক্তি ছিলÑ তোমার মধ্যে যতক্ষণ প্রয়োজনীয় সক্ষমতা ও ক্ষমতা না থাকবে ততক্ষণ তুমি দেশের জন্য কিছু করতে পারবে না। সত্যি, আজ তার জামাই ভারতের প্রেসিডেন্ট। মা যদি আজ বেঁচে থাকতেন তাহলে তার জামাইকে এ অবস্থায় দেখে আনন্দে চাঁদের দেশে চলে যেতেন। তার জন্য ইন্দিরা গান্ধীও আনন্দিত হতেন।
প্রশ্ন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম দিকে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন দেননি। এ বিষয়ে কি বলবেন?
শুভ্রা: আমি অরাজনৈতিক। রাজনীতি থেকে আমি ১০ লাখ ফুট দূরত্ব বজায় রাখি।