Tuesday, July 24, 2012

প্রণব-শুভ্রার ভিন্ন রকম ভালবাসা

আমার প্রতি তার ভালবাসা ভিন্ন রকম। প্রতিদিন তিনি গোসল সেরেই আমার কাছে আসেন। আমার কপাল স্পর্শ করেন। কিছু মন্ত্র পড়েন। এই কাজটি তিনি বছরের প্রতিটি দিন করেন। ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত ভারতের প্রথম বাঙালি প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী সুভ্রা মুখোপাধ্যায় স্বামীর মূল্যায়ন করলেন এভাবে। তার স্বামী রাজনীতিতে এখন সবচেয়ে শীর্ষ আসনে পৌঁছে গেছেন। তাকে যখন লোকজন শুভেচ্ছা জানাতে ছুটছেন তার বাড়িতে শুভ্রা মুখোপাধ্যায়ের হৃদয়ে আনন্দ লুটোপুটি খাচ্ছে। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার দাম্পত্য জীবন ৫৫ বছরের। এই দীর্ঘ সময়ে তাদের কোন দাম্পত্য কলহ হয়নি। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেছেন ভারতের নতুন ফার্স্ট লেডি হতে যাওয়া শুভ্রা। তার কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিলÑ আপনি ফার্স্টলেডি হতে চলেছেন, কেমন লাগছে? জবাবে শুভ্রা বলেনÑ ভাল লাগছে। আমার মেয়ে আমাদের সঙ্গেই আছে। ছেলে এসে যোগ দেবে। আমরা অভিভূত।
প্রশ্ন: প্রণব মুখোপাধ্যায় ভারতের প্রথম বাঙালি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। আপনি কি তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন?
শুভ্রা: না না। আমরা আজকালকার দম্পতির মতো নই। আমাদের সম্পর্ক লোক দেখানো নয়। আমাদের আবেগ প্রকাশ্যে আমরা প্রকাশ করি না। এটা আমাদের মনন আর হৃদয়ের সঙ্গে মিশে আছে। আমরা হাল্কা ভালবাসার কথায় তৃপ্ত হই না। আমাদের সময়ে, এটা নির্ভর করে একে অন্যকে কতটুকু হৃদয় দিয়ে অনুভব করি তার ওপর। আমাদের ভালবাসা আলাদা ধরনের। প্রতিদিন তিনি গোসল সেরে আমার কাছে আসেন। আমার কপাল স্পর্শ করে মন্ত্র জঁপেন। বছরের প্রতিদিনই তিনি এই কাজটি করেন। এর কোন ব্যত্যয় হয় না। এভাবেই তিনি তার ভালবাসার প্রকাশ ঘটান। আমাদের বিয়ে হয়েছে ৫৫ বছর। এ সময়ের মধ্যে আমাদের কোন ঝগড়া হয় নি।
প্রশ্ন: সাফল্যের দিনে তিনি আপনাকে বিশেষ কি ধরনের উপহার দেন?
শুভ্রা: ভালবাসা ছাড়া আর কি!
প্রশ্ন: তার দেয়া কোন নতুন শাড়ি পরেছেন কি?
শুভ্রা: কেন আমি নতুন শাড়ি পরবো? সারা বছর যে রকম কাপড় পরি সে রকমই পরবো। এর মধ্যে কোন বিশেষত্ব নেই। আর তিনি তো কখনও আমাকে শাড়ি কিনে দেন নি। অন্যদের চেয়ে তিনি আলাদা। তিনি কর্মমুখী। কর্মই তার জীবন। কাজের বাইরে তিনি সর্বাশী পাঠক। সারাক্ষণ বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকেন।
প্রশ্ন: তার জন্য কি বিশেষ কোন খাবার রান্না করেছেন?
শুভ্রা: আমিই তার পছন্দের খাবার রান্না করি। কিন্তু আমার স্বাস্থ্য আর আমাকে সেই সুযোগ দিচ্ছে না। তিনি পছন্দ করেন আলু পোস্ত এবং ঝিঙ্গা পোস্ত। আমার রেসিপি অনুযায়ী তা রান্না হয়েছিল সোমবার।
প্রশ্ন: রাষ্ট্রপতি ভবনে আপনি তার সঙ্গে কেমনভাবে কাটাবেন তা নিয়ে তার সঙ্গে কি কোন আলোচনা হয়েছে?
শুভ্রা: না। তিনি এসব দুনিয়া থেকে অনেক দূরে। আমি শুধু বাসার বিষয়আশয়ে সিদ্ধান্ত নেব। আমরা যখন দিল্লি এসেছিলাম তখন আমাদের কাছে তেমন কিছু ছিল না। কিন্তু এখান আমাদের কাছে অনেক কিছু। দেখুন, আগে তো সেখানে যাই। আমার তানপুরা-হারমোনিয়াম আমার অমূল্য সম্পদ। আমি আশা করি যথাযথ যতেœর সঙ্গে তা সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। রাষ্ট্রপতি ভবনে কোন রুমটি আমরা মন্দির হিসেবে ব্যবহার করব তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
প্রশ্ন: সোমবারের দিনটিতে আপনি কাকে সবচেয়ে বেশি মিস করছিলেন?
শুভ্রা: জন্মের পরই আমি একটি ছেলেকে হারিয়েছি। আজ তাকে খুব বেশি মনে পড়ছে। আমার শ্বশুর পক্ষের লোকজন ও আমার মা এখন আমার স্বামীকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে পেয়ে খুব খুশি। কিন্তু আমি জানি, তাদের আশীর্বাদ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। আমার মা আমাকে বলতেনÑ আমি নিশ্চিত একদিন আমার জামাই মন্ত্রী হবে। সে হবে অত্যন্ত ব্যতিক্রমী এক ব্যক্তি। আমি মাকে এমন সব কথা না বলতে অনুরোধ করতাম। আমার মায়ের যুক্তি ছিলÑ তোমার মধ্যে যতক্ষণ প্রয়োজনীয় সক্ষমতা ও ক্ষমতা না থাকবে ততক্ষণ তুমি দেশের জন্য কিছু করতে পারবে না। সত্যি, আজ তার জামাই ভারতের প্রেসিডেন্ট। মা যদি আজ বেঁচে থাকতেন তাহলে তার জামাইকে এ অবস্থায় দেখে আনন্দে চাঁদের দেশে চলে যেতেন। তার জন্য ইন্দিরা গান্ধীও আনন্দিত হতেন।
প্রশ্ন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম দিকে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন দেননি। এ বিষয়ে কি বলবেন?
শুভ্রা: আমি অরাজনৈতিক। রাজনীতি থেকে আমি ১০ লাখ ফুট দূরত্ব বজায় রাখি।

Saturday, July 21, 2012

উটপাখি পাখি নয়!

উটপাখি পাখি নয়। এটা হলো পশু। বুধবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের আইনসভা উটপাখিকে পশু নির্দেশ করে একটি আইন পাস করেছে। তবে এতে আপত্তি তুলে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করেন পাঞ্জাবের গভর্নর। তার দাবি এক্সোটিক প্রজাতির সংজ্ঞা অনুযায়ী এটি পাখি। যদিও পাকিস্তানের নিজস্ব জাতভুক্ত নয় উটপাখি। এদিন এনিমেল স্লোটার কন্ট্রোল আইন (পশু জবাই আইন) ২০১২ বিরোধী দল ও গভর্নরের বিরোধিতা সত্ত্বেও পাস করা হয়। আইনে বলা হয়, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, গরু, উট, দুম্বা ও উটপাখি ও যেসব প্রাণীকে গৃহস্থালিতে পালা হয় সেগুলো পশু। এর আগেও একবার পাঞ্জাব আইনসভায় উটপাখিকে অফিসিয়ালি পশু বলে সংখ্যাগরিষ্ঠ আইন পাস করা হয়েছিল।

জিন্স পরায় বোনকে গুলি করে হত্যা

পাকিস্তানের এক পুলিশ সদস্য জিন্স পরার অপরাধে নিজের বোনকে গুলি করে হত্যা করেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কনস্টেবল আসাদ আলি জিন্সকে পুরুষদের পোশাক বলেই মনে করেন। তাই তার ২২ বছর বয়সী বোন নাজমা বিবি জিন্স পরায় তিনি বেশ ক্ষুব্ধ ছিলেন। এ নিয়ে দুই ভাইবোনের মধ্যে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হতো। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে শুক্রবার আসাদ আলি তার বোনকে গুলি করে হত্যা করে। আসাদ আলি বলেছেন, কিছু দিন আগে তিনি বোনকে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন জিন্স পরা বন্ধ না করলে তিনি তাকে গুলি করে হত্যা করবেন। এর ফলশ্রুতিতে নাজমা স্থানীয় থানায় ভাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ওই অভিযোগের পর অবশ্য পুলিশ আসাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। হত্যাকাণ্ডের পর দায়ের করা এফআইআর-এ বলা হয়েছে, শুক্রবার বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর আসাদ নাজমাকে অনুসরণ করে। এরপর একটি স্থানে তাকে গুলি করলে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এরপর থেকে আসাদ পালিয়ে আছেন। পুলিশ তাকে ধরার জন্য তল্লাশি অব্যাহত রেখেছেন।

রমজানের পবিত্রতা ভঙ্গকারীদের সৌদি থেকে বের করে দেয়া হবে

পবিত্র সিয়াম সাধনার রমজান শুরু হওয়ার পর সৌদি কর্তৃপক্ষ সেখানে উন্মুক্ত স্থানে খাওয়া-দাওয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিয়ম জারি করেছেন। সেখানে সফরকারী বিদেশীদের জন্যও এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে। যেসব বিদেশীরা সৌদি আরবে রমজান মাসে জনসম্মুখে পানাহার করবে তাদের সৌদি নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়া হয়েছে। শুক্রবার থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার প্রেক্ষিতে সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক ঘোষণায় বলেছে, শ্রম চুক্তিতে ইসলামের পবিত্রতা রক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে রমজানের পবিত্র রক্ষার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত। যারা এ নিয়ম ভঙ্গ করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাদের শ্রম চুক্তি বাতিল করে সৌদি আরবে থেকে বের করে দেয়ার বিষয়টিও এ শাস্তির অন্তর্ভুক্ত বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে। বিভিন্ন কোম্পানিকে তাদের অমুসলিম কর্মচারীদের এ ব্যাপারে সচেতন করে দেয়ার জন্যও মন্ত্রণালয় নির্দেশ জারি করেছে।

মিশরে নারীদের ভিন্নধর্মী টিভি চ্যানেল

গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিশরে হোসনি মুবারকের পতনের পর সেখানে সর্বত্রই পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। মুবারক পরবর্তী মিশরে পা থেকে মাথা পর্যন্ত কালো বোরকা আবৃত নারী সমাজই যেন সেখানকার সংস্কৃতিক অভ্যুত্থানের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এখন তারা নতুন চালু হওয়া একটি টেলিভিশনে সংবাদ পাঠ এবং উপস্থাপনেরও দায়িত্ব নিচ্ছেন। সমপ্রতি প্রচারে আসা মারিয়া টেলিভিশনের জন্য ইসলামিক মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত বোরকা পরা নারীদেরই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নতুন এই চ্যানেলটি যেন পুরুষদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। সেখানকার ফোন অপারেটর থেকে শুরু করে ক্যামেরার সামনে, নেপথ্যে দায়িত্ব পালনকারী সবাই আপাদমস্তক বোরকা পরিহিত নারী। সমপ্রচারে আসা এ চ্যানেলটিকেই মিশরে মুবারক পরবর্তী সামাজিক পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। মুবারক পরবর্তী বর্তমান মিশর ইসলামিক মূল্যবোধের প্রশ্নে আগের চেয়ে অনেক বেশি কট্টরপন্থি। ঐতিহ্যগতভাবে মিশরের সমাজ ব্যবস্থা রক্ষণশীল এবং মুসলমান অধ্যুষিত হলেও এর আগে শিক্ষাসহ চাকরির ক্ষেত্রে বিশেষ করে টেলিভিশনে কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে হিজাব পরিহিত নারীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে হিজাব ব্যবহারকারীকে ইউনিভার্সিটিতে পরীক্ষা দেয়ারও অনুমতি দেয়া হতো না বলেও অভিযোগ রয়েছে। মারিয়া টেলিভিশনের প্রধান এল-শেখা সাফা রেফাই দাবি করেছেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে হোসনি মুবারকের পতনের পর দেশ কতটা এগিয়েছে সেটার প্রমাণ হচ্ছে এই চ্যানেলটির অস্তিত্ব। সংবাদ পরিবেশনের সময় নেকাব ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, শারীরিক ভাষায় ভাব বিনিময়ের জন্য এ পদ্ধতি খুব একটা কার্যকর হবে না বলে আমাকে বলা হয়েছিল। তবে সংবাদ পরিবেশনকারীর গলার আওয়াজের মাধ্যমে তিনি তার আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করতে পারেন। তিনি বলেছেন, পূর্ণাঙ্গভাবে ইসলামিক পোশাক পরে টেলিভিশনে উপস্থিত হয়ে তিনি দেখাতে চান যে, নেকাব পরা অবস্থাতেও নারীরা সফল হচ্ছেন। কায়রোর প্রখ্যাত আমেরিকান ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর কেবল নেকাব ব্যবহার করার কারণে আবীর শাহীন উপযুক্ত কোন চাকরি পাচ্ছিলেন না। কিন্তু এখন তিনি মারিয়া টিভিতে চাকরি পেয়েছেন। তিনি আশা করছেন, এবার মিশরের জনগণের মধ্যে নেকাব ব্যবহার নিয়ে যে বিভ্রান্তি রয়েছে, সেটা চিরতরে দূর হয়ে যাবে। শাহীন বলেছেন, নেকাব পরা নারীরা যে কেবল ধর্মপরায়ণ গৃহবধূই হতে পারে, সেটা মনে করা ঠিক নয়। তিনি একজন ডাক্তার, একজন অধ্যাপিকা বা একজন প্রকৌশলীও হতে পারেন। টেলিভিশনে উপস্থাপনার ক্ষেত্রে শারীরিক ভাবভঙ্গি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু গলার আওয়াজের মাধ্যমেই আমরা আমাদের আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করতে পারি বলে তিনি মন্তব্য করেন। মুবারক পরবর্তী নতুন স্বাধীন মিশর সমাজে এত দিন ধরে নিষ্পেষিত নারীরা এখন সমাজে নতুন করে স্থান করে নেয়ার স্বপ্ন দেখছেন।

কি গোপন কথা লিখতে চেয়েছিলেন হুমায়ূন


নিজের উপন্যাসের চরিত্রগুলোর মতোই রহস্য রেখে গেলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক, নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদ। মৃত্যুর আগে বিবিসিকে দেয়া শেষ সাক্ষাৎকারে তিনি একটি গোপন কথা, একটি লাইন বাংলা লিখতে চেয়েছিলেন। বলেছিলেন- কি লিখবেন তা তার মাথায় আছে। কিন্তু তিনি বলবেন না। সেই গোপন কথাটি গোপনই রয়ে গেল। কেউ কি জানতে পেরেছেন তার মনের গভীরে লুকানো ছিল কি গোপন কথা! তিনি কি লিখে যেতে পেরেছেন তা! মৃত্যুর মধ্য দিয়েও তাই যেন আরেক রহস্যের জন্ম দিয়ে গেলেন কোটি হৃদয়ের ভালবাসায় সিক্ত হুমায়ূন আহমেদ। কয়েক মাস আগে তার ওই সাক্ষাৎকারটি নেন বিবিসি’র অর্চি অতন্দ্রিলা। শুক্রবার রাতে তা পুনঃপ্রচার করে বিবিসি। এতে তিনি মৃত্যু, পাঠকের ভালবাসা, লেখালেখিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আবেগঘন মত তুলে ধরেন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল- আপনি গত প্রায় চার দশক ধরে লেখালেখি করছেন। এই লেখালেখির শুরুটা কিভাবে হলো?জবাবে তিনি বলেন- বাংলাদেশের আর দশটা মানুষ যেভাবে লেখালেখি শুরু করে আমিও একইভাবে শুরু করেছি। আলাদা কিছু নাই এর মধ্যে। এরা কিভাবে শুরু করে? প্রথমে একটা স্কুল ম্যাগাজিনে লেখালেখি। তারপর কবিতা লিখে। তারপর পত্রপত্রিকায় পাঠাবার চেষ্টা করে। ওরা যেভাবে করেছে আমিও সেভাবে লিখেছি।
প্রশ্ন: আচ্ছা আপনার পড়াশোনা এবং গবেষণার বিষয় ছিল রসায়ন। সাধারণত মনে করা হয়, এটা সাহিত্যের বিপরীতে। কিন্তু অধ্যাপনা ছেড়ে লেখার আগ্রহটা কিভাবে তৈরি হলো?
হুমায়ূন আহমেদ: সাধারণত মনে করা হয় এটা সাহিত্যের বিপরীতে। আসলে কি তাই? যদি সাহিত্যের পক্ষের, মানে সাহিত্যের স্রোতে যে সাবজেক্টগুলো আছে সেগুলো তাহলে কি- বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্য? যদি সেটা হয়ে থাকে তাহলে আমার প্রশ্ন থাকবে- প্রতি বছর হাজার হাজার ছেলেমেয়ে বাংলা অনুষদ থেকে পাস করে বের হচ্ছে। এর মধ্যে কয়জন লেখালেখি করছে? কে কি পড়ছে এটার সঙ্গে লেখালেখির সম্পর্ক আছে বলে আমি মনে করি না।
প্রশ্ন: সাহিত্যের সঙ্গে সঙ্গে নাটক এবং সিনেমা পরিচালনায় আপনি কিভাবে এলেন?
হুমায়ূন আহমেদ: বলা যায় হঠাৎ করে চলে আসছি। আমি দেখলাম যে আমার কিছু গল্প নিয়ে ওরা, বাংলাদেশ টেলিভিশন নাটক তৈরি করেছে। নাটকগুলো দেখতাম আমি। মনে হতো- আমি নিজে যদি ওটা তৈরি করতে পারতাম। সেটা কি রকম হতো। ওদের চেয়ে ভাল হতো নাকি ওদের চেয়ে মন্দ হতো। ওই আগ্রহ থেকেই মনে হয় আমি নাটক বানানো শুরু করি। আর সিনেমাটা তৈরি করার পিছনে মূল কারণটা হচ্ছে- এত বড় একটা মুক্তিযুদ্ধ হয়ে গিয়েছে আমাদের দেশে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তেমন ভাল ছবি হয়নি। আমার কাছে সব সময় মনে হয়েছে যে, একটা ভাল ছবি হওয়া দরকার। এর থেকেই ‘আগুনের পরশমণি’ ছবিটা বানিয়েছি। এটা যে বিরাট কিছু হয়ে গেছে তা নট নেসেসারি। কিন্তু চেষ্টাটা ছিল আর কি।
প্রশ্ন: শিল্পের কোন মাধ্যম আপনি সবচেয়ে বেশি উপভোগ করেন?
হুমায়ূন আহমেদ:  লেখালেখিটাই বেশি উপভোগ করি।
প্রশ্ন: আচ্ছা আপনার লেখা অনেক চরিত্র মানুষকে কাঁদিয়েছে, হাসিয়েছে। আপনি নিজে কেঁদেছেন কোন চরিত্রের জন্য?
হুমায়ূন আহমেদ: আমি যখন লেখালেখি করি কোন একটা চরিত্র খুবই ভয়াবহ এবং কষ্টের মধ্যে পড়ে যায়। নিজের অজান্তেই তখন আমার চোখে পানি আসে। কাজেই কোন বিশেষ চরিত্রের জন্য নয়, সব চরিত্রের জন্যই চোখে আমার পানি আসে। আর আমি তো অনেক হিউমার পছন্দ করি। যেমন হিউমারগুলো লিখি তখন আমি সিওর যে, যদি আমার আশপাশে কেউ থাকে তারা দেখবে- আমার ঠোঁটের কোণায় মিষ্টি হাসি। কাজেই সব চরিত্রই আমাকে কোন না কোনভাবে হাসিয়েছে। কোন না কোনভাবে কাঁদিয়েছে।
প্রশ্ন: আপনার নাটক ‘কোথাও কেউ নেই’তে বাকের ভাইয়ের মৃত্যুটা ঠেকাতে মানুষ যখন প্রতিবাদ শুরু করলো, মানুষের আবেগের দিকে তাকিয়ে একবারও কি বাকের ভাইকে বাঁচিয়ে রাখতে ইচ্ছা হয়েছিল?
হুমায়ূন আহমেদ: ওই নাটকের দুটি ভার্সন ছিল। একটাতে বাকের ভাইয়ের ফাঁসি হয়েছে। আরেকটাতে বাকের ভাইয়ের ফাঁসি হয়নি। বাকের ভাইয়ের ফাঁসি হয়নি- এই ভার্সনটি আমার খুব প্রিয় ছিল। কিন্তু বিটিভি শেষ পর্যন্ত ঠিক করলো, যেটাতে ফাঁসি হয়েছে, সেটা প্রচার করার।
প্রশ্ন: কাল্পনিক চরিত্র বাকের ভাইয়ের সঙ্গে মানুষের এমন একাত্মতা- এ নিয়ে আপনি কি ভাবছিলেন?
হুমায়ূন আহমেদ: আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম। কত রকম মানুষের ফাঁসি হয়ে যায়। মানুষ মারা যায়। রাস্তার পাশে নির্দোষকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়। এটা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। অথচ একটা চরিত্র, এটা কাল্পনিক চরিত্র- তার ফাঁসি হচ্ছে, এ নিয়ে মাতামাতিটা আমাকে একেবারে বড় রকমের একটি ধাক্কা দিয়েছিল। এটুকু বলতে পারি। শুধু তাই না। মৃত্যুতেই শেষ হয়ে যায়নি। মৃত্যুর পরে শুরু হলো কুলখানি। আজকে অমুক জায়গায় বাকের ভাইয়ের কুলখানি। কালকে অমুক জায়গায় বাকের ভাইয়ের কুলখানি। পরশু দিন বাকের ভাইয়ের জন্য মিলাদ মাহফিল। আমি এ রকম বিস্ময়কর ঘটনা ভবিষ্যতে দেখবো তা মনে হয় না।
প্রশ্ন: আপনার কোন কাল্পনিক চরিত্র নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হলে- যেমন ‘বহুব্রীহি’ নাটকে কাজের ছেলে সৈয়দ বংশ হওয়া বা একজন ডাক্তারের চরিত্র বোকা ধরনের হওয়া নিয়ে- আপনার পাঠকের রসবোধ সম্পর্কে আপনার কি বিশেষ কিছু মনে হয়?
হুমায়ূন আহমেদ: তখন মনে হয় যে, আমরা জাতি হিসেবে খুব সিরিয়াস। প্রতিটি ঘটনার যে একটা ফানি পার্ট আছে তা আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়। আমরা সিরিয়াস পার্টের দিকে তাকাই। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের মানুষ তো খুবই রসিক বলে আমি জানি। ওরা এই রসটা ধরতে পারে না কেন- এ কারণে, আমি খুব আপসেট হই। তবে বেশি পাত্তা দেই না।
প্রশ্ন: আপনার উপন্যাসের একটি জনপ্রিয় চরিত্র হিমু। এটা কি নিছক কাল্পনিক নাকি এর ভিতর আপনি পরিচিত কাউকে তুলে ধরেছেন?
হুমায়ূন আহমেদ: না, হিমুতে আমি পরিচিত কাউকে আসলে তুলে ধরিনি। যে হিমু আমি লিখি, ওই হিমু হওয়া খুবই একটা জটিল ব্যাপার তো বটেই। অনেক মানুষের ইচ্ছাপূরণের ব্যাপার আছে। কিছু করতে চায়। কিন্তু করতে পারে না। মানুষের যে সমস্ত ইচ্ছার বিষয়গুলো আছে এগুলো আমি হিমুর মাধ্যমে ওই ইচ্ছাপূরণটি ঘটাই। যে কারণেই আমার ধারণা পাঠকরা এত পছন্দ করেন। এরা হতে চান। এরা করতে চান। এরা প্রত্যেকেই চান যে আমার আধ্যাত্মিক ক্ষমতা থাকবে। আমি মানুষের ভূত-ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারবো। এটা সবার মনের ভিতরের গোপন বাসনা। ওদের গোপন বাসনা থাকে- আমি পথেঘাটে হেঁটে বেড়াবো। কেউ আমাকে কিছু বলবে না। আমার কোন চাকরি করতে হবে না। কোন কিছুই করতে হবে না। আমার জীবন চলবে জীবনের মতো। কোন বাড়ির সামনে গিয়ে যদি দাঁড়াই- ওরা আমাকে খাবার দেবে। এই যে গোপন ইচ্ছাগুলো, যেগুলো থাকে ওই ইচ্ছাগুলো আমি পূরণ করি হিমু উপন্যাসে। কাজেই কারও সঙ্গে যে মিল আছে এটা মনে হয় না।
প্রশ্ন: আচ্ছা এই হিমু তো আপনার পাঠকদের কাছে প্রায় অনুকরণীয় একটি চরিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই হিমুকে নিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাস সম্পর্কে বিশেষ কোন ঘটনা আছে কি, যা আপনাকে নাড়া দিয়েছে?
হুমায়ূন আহমেদ: হ্যাঁ। একটা (ঘটনার কথা) বলা যেতে পারে। আমি হঠাৎ করে রাশিয়ার এম্বেসি থেকে একটা ম্যাগাজিন পেলাম। ওই ম্যাগাজিনে দেখি কি ওদের রাশিয়াতে একটা হিমু ক্লাব আছে। ওই হিমু ক্লাবের ছেলেপেলেরা কিন্তু সব রাশিয়ান। বাঙালি ছেলেপেলে না। এরা একটা অনুষ্ঠান করেছে। সেই অনুষ্ঠানে সব এম্বাসেডরকে ডেকেছে। এম্বাসেডরদের হলুদ পোশাক পরতে হবে। তারা জানে এম্বাসেডররা হলুদ পোশাক পরবেন না। কাজেই ওই ক্লাবের তরফ থেকে প্রতিজন এম্বাসেডরকে একটি করে হলুদ নেক-টাই দেয়া হয়েছে। তারা এই হলুদ নেক-টাই পরে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। এটা শুনে বা লেখাতে পড়ে আমি খুবই একটা ধাক্কার মতো খেয়েছিলাম। আরেকবার ধাক্কা খেয়েছি জার্মানিতে। সেখানে ফ্রাংকফুর্ট বইমেলায় গিয়েছিলাম। সেখানে একটা বাসায় একটা অনুষ্ঠান হচ্ছে। এক ছেলে এসে আমাকে বলল- স্যার, আমি কিন্তু হিমু। সে হলুদ একটি কোট গায়ে দিয়ে এসেছে। আমি বললাম- তুমি হিমু! হিমু’র তো খালি পায়ে থাকার কথা। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা জার্মানিতে। তোমার কি খালি পা। সে বললো- স্যার, দেখেন। তাকিয়ে দেখি তার খালি পা। সেই আরেকবার ধাক্কা খেয়েছিলাম।
প্রশ্ন: বাংলাদেশে সাধারণত দেখা যায়- যারা নতুন লেখালেখি শুরু করেন তাদের বই প্রকাশ করতে অনেক কষ্ট করতে হয়। আপনি যখন প্রথম উপন্যাস লিখেছিলেন তখন সেটি প্রকাশ করতে আপনার কি ধরনের প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল?
হুমায়ূন আহমেদ: খুবই আশ্চর্যের ব্যাপার যে, আমাকে তেমন কোন প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয় নি। আমার প্রথম উপন্যাসের নাম ‘নন্দিত নরকে’। এটি প্রকাশ করতে খুব একটা সমস্যা হয়েছে বলে আমি মনে করি না। কারণ, আহমেদ ছফা ছিলেন আমাদের দেশের খুবই স্পিরিটেড একজন মানুষ। আমার ওই উপন্যাসটি একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। যে কোন কারণেই হোক উপন্যাসটি তার মনে ধরে গিয়েছিল। তিনি জান দিয়ে ফেললেন এটি প্রকাশ করার জন্য। এই উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি নিয়ে তিনি প্রতিটি প্রকাশকের ঘরে ঘরে গেলেন। কিন্তু তখনও আমি ব্যাপারটা জানিই না। শুধু ছফা ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়। ছফা ভাই আজকে অমুকের কাছে গিয়েছি। কালকে অমুকের কাছে গিয়েছি- এভাবে বলে বলে তিনি একজন প্রকাশককে মোটামুটি কনভিন্স করে ফেললেন যে, উপন্যাসটি প্রকাশ করতে হবে। কাজেই উপন্যাস প্রকাশিত হয়ে গেল। তো উপন্যাস প্রকাশিত হওয়ার আগে কিন্তু ওই প্রকাশকের সঙ্গে আমার পরিচয়ও হয়নি। লাজুক টাইপের তো, যাই-ই না। লজ্জা লাগতো। যেদিন (উপন্যাস) প্রকাশিত হলো সেদিন গেলাম। গিয়ে কিছু বইপত্র নিয়ে এলাম উনার কাছ থেকে।
প্রশ্ন: আহমেদ সাহিত্যিক হিসেবে গত কয়েক দশক ধরে আপনার জনপ্রিয়তা শীর্ষে। তুমুল জনপ্রিয়তা অনেক সময় বিড়ম্বনার কারণ হয় বলে শোনা যায়। আপনার ক্ষেত্রেও কি তাই হয়?
হুমায়ূন আহমেদ: যে অর্থে বিড়ম্বনার কথা বলা হচ্ছে সেই অর্থে আমি যে বিশেষ বিড়ম্বনার ফাঁদে পড়ি তা না। বইমেলাতে যদি যাই- তখন পাঠকদের হুড়াহুড়িটা দেখে একটু সামান্য ভয় ভয় লাগে। এছাড়া তো আমি নরমালি ঘোরাফেরা করি। আমি দোকানে যাই। বাজারে যাই। বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরি। কোন সমস্যা তো আমি দেখি না।
প্রশ্ন: বইমেলায় সাধারণত...
হুমায়ূন আহমেদ: যেটা হয় সেটা বইমেলাতেই হয়। বাইমেলার বাইরে, ধরো গেলাম বাজার করতে সেখানে দু’একজনকে পাওয়া যায়। তারা আমার সঙ্গে একটা ছবি তুলতে চায়। এটা তো খুবই স্বাভাবিক। এটাকে বিড়ম্বনা ধরার তো কিছুই নাই। তাই না?
প্রশ্ন: আচ্ছা আপনি লেখালেখি থেকে অবসর নেয়ার কথা কখনও কি ভেবেছেন?
হুমায়ূন আহমেদ: যখন খুব লেখালেখির চাপ যায়, যেমন ধরো বইমেলার সামনে বা ঈদ সংখ্যার সামনে। খুবই যখন চাপের ভিতর থাকি তখন দেখা যায় (লেখাটা যখন) শেষ হয় সেদিন মনে হয় এখন থেকে আমি অবসরে। আর লেখালেখি নাই। বাকি সময়টা আরামে থাকবো। সিনেমা দেখবো। গল্পের বই পড়বো। সেদিন মনে হয় এটা। তারপরের দিন মনে হয় না। দ্বিতীয় দিন থেকে আমার মনে হয় আমার যেন কিছুই করার নেই। আমি মারা যাচ্ছি। এক্ষুণি কিছু একটা লেখা শুরু করতে হবে। লেখা শুরু করি। তখন একটা স্বস্তি ফিরে আসে। হ্যাঁ, আমি অবসর নেবো। ঠিক করেছি আমি অবসর নেবো। মৃত্যুর ঘণ্টাখানেক আগে আমি অবসর নেবো। তার আগে নেবো না। আমি চাই মৃত্যুর এক ঘণ্টা বা দু’ঘণ্টা আগেও আমি যেন এক লাইন বাংলা গদ্য লিখে যেতে পারি।
প্রশ্ন: এটা যে মৃত্যুর সময় এটা আপনি কিভাবে বুঝতে পারবেন?
হুমায়ূন আহমেদ: বোঝা যায় তো, বোঝা যায় না! অনেকে তো বলে দেয়। টের পায়- আমি মারা যাচ্ছি। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। শেষ নিঃশ্বাস ফেলার জন্য শারীরিক প্রস্তুতি। মৃত্যু তো শুধু হার্ট বন্ধ হয়ে যায় তা না। প্রতিটি কোষই মারা যায়। সেই প্রতিটি কোষের মৃত্যু একটা ভয়াবহ ব্যাপার। এটা বুঝতে পারার তো কথা।
প্রশ্ন: তো আপনি শেষ পর্যন্ত লেখালেখি চালিয়ে যেতে চান?
হুমায়ূন আহমেদ: আমি পারবো কিনা জানি না। আমার গোপন ইচ্ছা এবং প্রগাঢ় ইচ্ছা হচ্ছে- মৃত্যুর এক-দু’ঘণ্টা আগেও যেন এক লাইন বাংলা গদ্য লিখতে পারি, যেন হা-হুতাশ করে আমি না মরি। এই মরে গেলাম রে। বাঁচাও রে। এই আল্লাহকে ডাকাডাকি করতেছি। এটায় না গিয়ে আমি এক লাইন প্লেন অ্যান্ড সিম্পল, একটা লাস্ট, একটা ওয়ান লাইন আমি লিখতে চাই। এখন তুমি যদি বলো- কি লাইন সেটা? ওটা আমার মাথায় আছে। আমি বলবো না।

Wednesday, July 18, 2012

আসছে এলিয়েন আমরা কি প্রস্তুত!

এলিয়েন বা মহাজাগতিক প্রাণীর সঙ্গে মানুষের যুদ্ধ হবে! সে যুদ্ধে মানুষ কি টিকতে পারবে! হলিউডের ছবিতে এমন কাহিনীতে ভরপুর। কিন্তু হলিউড নয়। এবার বাস্তবে এক বিজ্ঞানী পূর্বাভাস দিয়েছেন- আগামী ১০০ বছরের কম সময়ের মধ্যে এলিয়েনরা আসবে পৃথিবীতে। সে জন্য তিনি বিভিন্ন দেশের সরকারগুলোকে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এই বিজ্ঞানীর নাম জোসেলিন বেল বার্নেল। তিনি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর। তিনি ডাবলিনে ইউরো সায়েন্স ওপেন ফোরাম সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে এ কথা বলেন। গতকাল এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল। বেল বার্নেল বলেছেন, আমার মনে হয় আমরা কোথাও জীবনের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে যাচ্ছি। হতে পারে তা মহাজাগতিক প্রাণী। তারা ধরা দেবে আগামী একশ’ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে। তারা যদি পৃথিবীকে আক্রমণ করে তাহলে সেই আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য আমরা কতটা সক্ষম? আমরা কি কখনও চিন্তাও করেছি কিভাবে আমরা তাদের মোকাবিলা করব? আমরা কি তাদের আটক করে চিড়িয়াখানায় ঢোকাবো? নাকি তাদের খেয়ে ফেলবো। নাকি তাদের গণতন্ত্র শেখাবো? এমন সব প্রশ্ন যখন তিনি ছুড়ে দিচ্ছিলেন তখন শ্রোতাদের মধ্যে নীরবতা নেমে আসে। তিনি বলেন, যেসব গ্রহ পাথরময়, আছে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং ওজোন স্তর, সেখানেই এলিয়েনদের খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে করা হয়। আমরা যদি মনে করি, বহির্জগতে এলিয়েন আছে তাহলে আমরা কি তাদের সঙ্গে আমাদের পরিচিত করতে চেষ্টা করছি নাকি করছি না? যদি তাদের সঙ্গে আমাদের কথা বলতে হয়, ভাব বিনিময় করতে হয় তাহলে আমরা সেক্ষেত্রে প্রথম সামনে পাঠাবো কাকে- মিডিয়া, প্রধানমন্ত্রী, নাকি পোপকে? তা আমাদের এখনই চিন্তা করে বের করতে হবে। বেল বার্নেল বলেন, আমরা যদি কোথাও এলিয়েন বা মহাজাগতিক প্রাণীর সন্ধান পাই তাহলে তাদের সঙ্গে পৃথিবী থেকে রেডিও বা লেজারের মাধ্যমে কথা বলতে লেগে যাবে কয়েক দশক। তিনি বলেন, আলোর গতির চেয়ে দ্রুত কোন কিছুই ছুটতে পারে না। ফলে আমরা এমন একটি বিষয়ে কথা বলছি- যেখানে আমাদের কথা বলা বা আলোচনাগুলো পৌঁছাতে ৫০ থেকে ১০০ বছর সময় লেগে যেতে পারে। এর আগের গবেষণার ওপর ভিত্তি করে অর্ধেকের বেশি বৃটিশ বিশ্বাস করতেন এলিয়েন বলে কিছু নেই। রয়েল সোসাইটি এ বিষয়ে ২০০০ পুরুষ ও নারীর ওপর জরিপ চালিয়ে দেখেছে তাদের মধ্যে শতকরা ৪৪ ভাগ বিশ্বাস করেন মহাজাগতিক প্রাণীর অস্তিত্বে। এক-তৃতীয়াংশ বলেছে- এলিয়েন বা মহাজাগতিক প্রাণী বা ইটির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে আমাদের আরও চেষ্টা করা উচিত। এর আগে বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং বলেছিলেন, এলিয়েনরা পৃথিবীতে আক্রমণ চালাতে পারে। কেউ কেউ বলেছেন, আমরা যদি আমাদের শত্রু এলিয়েনদের আমাদের অস্তিত্বের কথা জানান দিয়ে দিই তাহলে তাতে যে সংঘাত সৃষ্টি হবে তার ফলে পৃথিবীতে জীবনের সমাপ্তি ঘটতে পারে।

নিরাপত্তারক্ষীরা হতবাক

সান ফ্রান্সিসকো বিমানবন্দরের নিরাপত্তারক্ষীরা হতবাক। কিছুক্ষণ তারা যেন কিছুই বুঝতে পারলেন না। থ’ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। কারণ কি? কারণ  হলো- জোনা ফলকন নামের এক ব্যক্তি। তার পুরুষাঙ্গ বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ। তিনি গত ৯ই জুলাই যখন বিমানবন্দরে যান তখন নিরাপত্তারক্ষীরা ভুল করে ভেবে বসেন তার প্যান্টের নিচে লুকানো রয়েছে অস্ত্র। এমন সন্দেহে তাকে ঘিরে ধরে নিরাপত্তারক্ষীরা। তাদের মধ্যে টানটান উত্তেজনা। কোন ধরনের অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছেন জোনা ফলকন। সেটা কি বিস্ফোরক নাকি কোন মারণাস্ত্র! এমন সব ধারণা তাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। আর সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তা নিয়েও গলদঘর্ম হন তারা। এ অবস্থায় তাকে ঘিরে রেখে নেয়া হয় বডি স্ক্যানারে। কিন্তু কিছুই ধরা পড়েনি। এবার তাকে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। তাতেও ফল নেই। শেষ পর্যন্ত তাকে প্যান্ট খুলতে বাধ্য করা হয়। জোনা ফলকন যখন প্যান্ট খোলেন তখন সবার চক্ষু চড়কগাছ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য হাফিংটন পোস্ট।

অদ্ভুত নিরাপত্তা!

এতদিন নানা কারণে নিরাপত্তা দেয়ার কথা শোনা গেছে। কিন্তু একেবারে অভাবনীয় একটি কারণে নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ করতে হয়েছে আটলান্টার অ্যানি হকিন্স টার্নারকে। তিনি এরই মধ্যে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছেন। সেটা নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগের জন্য নয়, যে কারণে নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ দিয়েছেন সেজন্য। অ্যানির স্তনের সাইজ ১০২ জেড জেড জেড। এজন্য তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক স্তনের জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ঠাঁই পেয়েছেন। কিন্তু এত বিশাল আকারের স্তন নিয়ে তার চলাফেরা ঝুঁকিপূর্ণ। তাকে দেখেই পাণিপ্রার্থী হয় অনেকে। এতে তিনি নিজেকে সামাল দিতে হিমশিম খান। তাই তাকে যাতে কেউ বিরক্ত করতে না পারে এজন্য তিনি নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ করেছেন। সমপ্রতি তিনি একটি রিয়েলিটি টিভি শোতে বলেছেন, ছোটবেলা থেকেই তার শরীরের ঊর্ধ্বাঙ্গের বৃদ্ধি ছিল অস্বাভাবিক। কোন ওষুধ বা ইমপ্ল্যান্ট না করানোর পরও তার এ বৃদ্ধি দেখে অনেকে অবাক। শৈশব থেকেই তাই তার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে অনেকে। অনেকে তার পিছু পিছু ছুটতে থাকে। তাদের উদ্দেশ্য তার পাণি প্রার্থনা করা। ভালবাসা নিবেদন করা। তিনি ওই পত্রিকাকে বলেছেন, এখনও যখন বাসা থেকে বের হই তখন ভাবতে হয় আমার দিনটি কিভাবে যাবে। আমাকে কে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধাক্কা দিতে পারে। আমাকে চেনেন না এমন অনেক মানুষ আমাকে প্রতিদিনই টিজ করেন। তারা আমাকে নিয়ে মজা করেন। এর কোন কারণ নেই। কারণ একটাই। তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমিও তো অন্যদের মতো একজন মানুষ। কতক্ষণ ওই টিজ সহ্য করা যায়। তারপর আমি আমার শরীর নিয়ে গর্বিত। কারণ, আমার মতো আর কেউ নন। আমি লাখের মধ্যে একজন। তারপরও আমি নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ করতে বাধ্য হয়েছি। বর্তমানে অ্যানির বয়স ৫৩ বছর। দু’সন্তানের মা তিনি। তিনি বলেছেন, এত ঝক্কিঝামেলা হলেও কখনও তিনি শরীরের ওই বিশেষ অঙ্গটি অপারেশনের মাধ্যমে ছোট করার কথা চিন্তা করেননি। তিনি বলেন, আমার শরীরে ডাক্তাররা ছুরি চালাবেন এমনটা আমি কখনও ভাবিনি। যখন আমার শরীরে কোন অঙ্গ ভেঙে বা অসুস্থ হয়ে যায়নি ততক্ষণ কেন আমি সেখানে অপারেশন করাতে যাবো?

Tuesday, July 17, 2012

স্বামী-স্ত্রী যখন আলাদা রুমে ঘুমান

 বিয়ের পর যদি স্বামী-স্ত্রী আলাদা ঘরে ঘুমান তাহলে ব্যাপারটা কেমন চোখে লাগার মতো। আর তাই করেন শতকরা ২৫ ভাগ দম্পতি। তারা বিয়ের পরে এক বিছানা শেয়ার করেন না। এর ফলে তাদের মধ্যকার স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক আস্তে আস্তে নষ্ট হতে থাকে। এক সময় দেখা দেয় দাম্পত্য কলহ। বিয়ের আগে একজন নারী বা পুরুষে তার সঙ্গী পাওয়ার ঝোঁক থাকে দুর্নিবার। কিন্তু বিয়ের পরে কি সেই আকুতি কমে আসে! যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্পির ফাউন্ডেশন এক গবেষণায় প্রমাণ পেয়েছে শতকরা ২৫ ভাগ দম্পতি এক বিছানায় এমনকি এক রুমে ঘুমান না। এর অর্থ হলো প্রতি চারটি দম্পতির মধ্যে একটি দম্পতি আলাদা আলাদা রুমে রাত্রি যাপন করেন। তারা হয়তো নিরিবিলি ঘুমাতে চান অথবা থাকতে পারে তাদের অন্য কোন শারীরিক সমস্যা। কিন্তু ম্যানহ্যাটানের ডাক্তার জোসেফ সিলোনা বলেন, দম্পতিদের এই প্রবণতা কাটিয়ে উঠা উচিত। তা না হলে দাম্পত্যে সঙ্কট দেখা দিতে পারে। এজন্য তাদের এক বিছানায় ঘুমানো উচিত। একে অন্যের খুব সান্নিধ্যে চলে আসা উচিত। এক্ষেত্রে তারা নিচের পন্থাগুলো অবলম্বন করতে পারেন।
১. কাছাকাছি থাকুন। একজন অন্যজনকে স্পর্শ করুন। যখন আপনার ঘুম এসে যাচ্ছে তার আগে আপনার জীবনসঙ্গীকে কাছে পাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে হরমোনের উৎপাদন বেড়ে যায়। আপনার মানবিক বন্ধন দৃঢ় হয়। ঘুমাতে যাওয়ার আগে যখন টিভি দেখছেন তখন আপনারা একে অন্যের হাত দুটো মুঠো করে ধরুন। তাতে মানসিক পরিবর্তন আসবে। এ জন্য বেভারলি হিলসের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ক্যারোল লিবারম্যান বলেন, দম্পতিদের উচিত ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটু আলাদা চেষ্টা করা। তাদের মধ্যে স্পর্শ নামের অনুভূতি কাজ করলে তাদের প্রেমময় ও শারীরিক স্বাস্থ্য ভাল থাকবে।
২. বালিতে মাথা রেখে গল্প করুন। যখন সব বাধা পেরিয়ে স্বামী-স্ত্রী একই বিছানায় ঘুমাতে যান তখন তাদের উচিত বালিতে মাথা রেখে গল্পে মেতে ওঠা। সেই গল্প হতে পারে কিভাবে আপনার বাচ্চা স্কুলে যাবে, আপনার গাড়ি কাল কেমন সার্ভিস দেবে, কর্মক্ষেত্রে আপনাকে কি কাজ করতে হবে। এভাবে গল্প করতে করতে দেখবেন আপনাদের মধ্যকার জড়তা কেটে যাবে। ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে এই কথা চিন্তা করে কেউ যদি তারপরও আলাদা ঘরে ঘুমান তাহলে উচিত হবে যিনি ঘুম থেকে আগে উঠবেন তিনি যেন তার জীবনসঙ্গীর খোঁজে অন্য ঘরে ঢুঁ মারেন।
৩. কোন দম্পতি যদি এভাবে একত্রে না ঘুমিয়ে আলাদা আলাদা ঘুমান তাহলে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক আস্তে আস্তে লোপ পাবে। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে মনোবিজ্ঞানীরা দেখেছেনÑ আলাদা ঘরে ঘুমালেও দম্পতিদের শারীরিক সম্পর্ক ঠিক থাকে। এক্ষেত্রে তাদের মানসিক প্রস্তুতি বড় হয়ে দেখা দেয়।

৪. আবেগ প্রকাশের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে বন্ধনকে আরও শক্ত করুন। এ কাজটি দম্পতিদের জন্য খুব সোজা। যদি কোন দম্পতি এক বিছানায় না ঘুমান তাহলে তারা একে অন্যের আবেগ অনুভূতিকে স্পর্শ করতে পারবেন না। ফলে তাদের বন্ধন শিথিল হতে থাকে।

আসছে এলিয়েন, আমরা কি প্রস্তুত!

এলিয়েন বা মহাজাগতিক প্রাণীর সঙ্গে মানুষের যুদ্ধ হবে! সে যুদ্ধে মানুষ কি টিকতে পারবে! হলিউডের ছবি এমন কাহিনীতে ভরপুর। কিন্তু হলিউড নয়। এবার বাস্তবে এক বিজ্ঞানী পূর্বাভাষ দিয়েছেন- আগামী ১০০ বছরের কম সময়ের মধ্যে এলিয়েনরা আসবে পৃথিবীতে। সে জন্য তিনি বিভিন্ন দেশের সরকারগুলোকে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন। এই বিজ্ঞানীর নাম জোসেলিন বেল বার্নেল। তিনি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর। তিনি ডাবলিনে ইউরো সায়েন্স ওপেন ফোরাম সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে এ কথা বলেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল। বেল বার্নেল বলেছেন, আমার মনে হয় আমরা কোথাও জীবনের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে যাচ্ছি। হতে পারে তা মহাজাগতিক প্রাণী। তারা ধরা দেবে আগামী একশ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে। তারা যদি পৃথিবীকে আক্রমণ করে তাহলে সেই আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য আমরা কতটা সক্ষম? আমরা কি কখনো চিন্তাও করেছি কিভাবে আমরা তাদের মোকাবিলা করব? আমরা কি তাদেরকে আটক করে চিড়িয়াখানায় ঢোকাবো? নাকি তাদের খেয়ে ফেলবো। নাকি তাদের গণতন্ত্র শেখাবো? এমন সব প্রশ্ন যখন তিনি ছুড়ে দিচ্ছিলেন তখন শ্রোতাদের মধ্যে নীরবতা নেমে আসে। তিনি বলেন, যেসব গ্রহ পাথরময়, আছে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং ওজোন স্তর, সেখানেই এলিয়েনদের খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে করা হয়। আমরা যদি মনে করি বহির্জগতে এলিয়েন আছে তাহলে আমরা কি তাদের সঙ্গে আমাদের পরিচিত করতে চেষ্টা করছি নাকি করছি না? যদি তাদের সঙ্গে আমাদের কথা বলতে হয়, ভাব বিনিময় করতে হয় তাহলে আমরা সেক্ষেত্রে প্রথম সামনে পাঠাবো কাকে- মিডিয়া, প্রধানমন্ত্রী, নাকি পোপকে? তা আমাদের এখনই চিন্তা করে বের করতে হবে। বেল বার্নেল বলেন, আমরা যদি কোথাও এলিয়েন বা মহাজাগতিক প্রাণীর সন্ধান পাই তাহলে তাদের সঙ্গে পৃথিবী থেকে রেডিও বা লেসারের মাধ্যমে কথা বলতে লেগে যাবে কয়েক দশক। তিনি বলেন, আলোর গতির চেয়ে দ্রুত কোন কিছুই ছুটতে পারে না। ফলে আমরা এমন একটি বিষয়ে কথা বলছি- যেখানে আমাদের কথা বলা বা আলোচনাগুলো পৌঁছাতে ৫০ থেকে ১০০ বছর সময় লেগে যেতে পারে। এর আগের গবেষণার উপর ভিত্তি করে অর্ধেকের বেশি বৃটিশ বিশ্বাস করতেন এলিয়েন বলে কিছু নেই। রয়েল সোসাইটি এ বিষয়ে ২০০০ পুরুষ ও নারীর ওপর জরিপ চালিয়ে দেখেছে তাদের মধ্যে শতকরা ৪৪ ভাগ বিশ্বাস করেন মহাজাগতিক প্রাণীর অস্তিত্বে। এক-তৃতীয়াংশ বলেছে- এলিয়েন বা মহাজাগতিক প্রাণী বা ইটির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে আমাদের আরও চেষ্টা করা উচিত। এর আগে বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং বলেছিলেন, এলিয়েনরা পৃথিবীতে আক্রমণ চালাতে পারে। কেউ কেউ বলেছেন, আমরা যদি আমাদের শত্র“ এলিয়েনদের আমাদের অস্তিত্বের কথা জানান দিয়ে দিই তাহলে তাতে যে সংঘাত সৃষ্টি হবে তার ফলে পৃথিবীতে জীবনের সমাপ্তি ঘটতে পারে।

দুবাইয়ে ধর্ষণ চেষ্টার দায়ে এক বাংলাদেশীর জেল

দুবাইতে এক নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ২৬ বছর বয়সী এক বাংলাদেশী যুবককে ৩ বছরের জেল দেয়া হয়েছে। শাস্তি ভোগের পর তাকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়ার কথা রয়েছে। ইংরেজি নামের প্রথম অক্ষর হিসেবে ওই বাংলাদেশীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে ডি. বি হিসেবে। সে দুবাইতে ট্যাক্সি চালাতো। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গালফ নিউজ। এতে বলা হয়েছে, ডি. বি তার ট্যাক্সিতে করে ২৬ বছর বয়সী এক কিরগিজ যুবতীকে বহন করছিল। কিছুদূর যাওয়ার পর সে ট্যাক্সির জানালা, দরজা বন্ধ করে দেয়। এতে ওই যুবতী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার বমি করার উপক্রম হয়। এ সময় বাংলাদেশী ওই যুবক সামনের আসন থেকে লাফিয়ে ট্যাক্সির পিছনের আসনে চলে যায়। সেখানেই তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। দুবাই কোর্ট অব ফার্স্ট ইন্সট্যান্স এ বিষয়টি নিয়ে শুনানি শেষে ডি. বি’কে তিন বছরের জেল দিয়েছেন। বলা হয়েছে, ওই সময় কিরগিজ ওই যুবতী ছিলেন কিছুটা মদ্যপ। ডি. বি সেই সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করেছিল। প্রসিকিউটররা বলেছেন, বাংলাদেশী ওই যুবক ওই যুবতীকে তার ট্যাক্সিতে তুলে নেয়ার পর তাকে তার বোনের বাসায় নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে সে চতুরতার আশ্রয় নেয়। কারণ, যুবতী ছিল মদ্যপ। তাই তাকে নিয়ে যায় সমুদ্রসৈকতের পাশে। সেখানে উন্মুক্ত একটি এলাকায় গিয়ে সে গাড়ি থামায়। ওই স্থানটি কম আলোকিত ও মরুময়। সেখানে গিয়ে সে সেন্ট্রাল লক সিস্টেম বন্ধ করে দেয়। তারপরই লাফিয়ে ট্যাক্সির পিছনের আসনে চলে যায়। সেখানে কিরগিজ ওই যুবতীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। কিন্তু ওই যুবতী তার উদ্দেশ্য বানচাল করে দেয়। যখন বাংলাদেশী ওই যুবক উন্মত্ত হয়ে ওঠে তখন ওই যুবতী ভীষণ বমির ভান করেন। তিনি বমি করতে উদ্যত হন। এভাবেই তিনি রক্ষা পান।

Sunday, July 15, 2012

শারজায় পর্নো সিডি বিক্রিকালে ৩ বাংলাদেশী গ্রেপ্তার

পর্নো সিডি কপি করে এশিয়ান শ্রমিকদের কাছে বিক্রির দায়ে শারজাহ পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশের ৩ যুবককে। অভিযোগ আছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে শারজার শিল্প এলাকা ও আবাসিক এলাকাগুলোতে এভাবে পর্নো সিডি বিক্রি করছিল। এ খবর দিয়ে অনলাইন খালিজ টাইমস জানায়, গ্রেপ্তার করা বাংলাদেশী যুবকদের পরিচয় প্রকাশ করা হয় নি। তাদেরক গ্রেপ্তার করা হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) কর্মকর্তাদের বলেছেন, তাদের কাছে এমন মেশিন আছে যা দিয়ে তারা প্রতি ঘণ্টায় ১০০০ সিডি কপি করতে পারেন। তারপর তার প্রতিটি সিডি বিক্রি করেন ১০ দিরহামে। গ্রেপ্তার করার পর তাদেরকে তুলে দেয়া হয়েছে পাবলিক প্রসিকিউশনে। এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, নকল পণ্য ও সিডি উদ্ধার অভিযানে এ বিষয়টি ধরা পড়ে। এ সময় বাংলাদেশী ওই ৩ যুবকের কাছে বেশ কিছু পর্নো সিডি পাওয়া যায়। ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, এ রকম অপরাধ কমিয়ে আনতে তারা আরও অভিযান পরিচালনা করবেন। তারা মানুষের নিরাপত্তা ও সম্মান রক্ষা করতে চান। এ সময় তিনি তাদের এ অভিযানে জনগণের সমর্থন প্রত্যাশা করেন। এরকম কোন পণ্য কাউকে বিক্রি করতে দেখলে তা সিআইডি’কে জানানোর অনুরোধ করেন। খালিজ টাইমস আরও জানায়, পুলিশ এর আগের দিন অভিযানে এক ইলেক্ট্রনিক দোকানের মালিককেও গ্রেপ্তার করেছে। কারণ, তিনি ইলেক্ট্রনিক কার্ড বিক্রি করেন। এই কার্ড দিয়ে পর্নো ওয়েবসাইট খোলা যায়। এই দোকানিকে গ্রেপ্তার করা হয় বুধবার আল ঘুওয়াইর এলাকা থেকে। এ সময় তার দোকান থেকে উদ্ধার করা হয় ২২টি ইলেক্ট্রনিক কার্ড। তিনি পুলিশকে বলেছেন, তিনি যুবকদের কাছে এসব কার্ড বিক্রি করতেন। তিনি ওই কার্ডগুলো কিনেছেন প্রতিটি ৯০ দিরহামে। আর বিক্রি করেন ৩৩০ দিরহামে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, পুলিশ শারজাহ সহ বিভিন্ন এলাকার অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেÑ তারা যেন তাদের সন্তানদের এই আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে তাদের নিকে নজরদারি করেন। তাদের কাছে এ ধরনের ইলেক্ট্রনিক কার্ড আছে কিনা তা পরখ করেন। কারণ, এই কার্ড দিয়ে নিষিদ্ধ ওয়েবসাইটগুলোতে যেকেউ ঢুকে পড়তে পারে।

Saturday, July 14, 2012

পাকিস্তান এক শিশুকে জীবন্ত কবর দিল পিতা

দুই বছর বয়সী এক শিশুকে জীবন্ত কবর দিয়েছে তারই পিতা। এর কারণ জন্ম নেয়ার সময় ওই কন্যা শিশুটির মুখ ছিল বিকৃত। তারপর থেকে তা একই আকারের ছিল। এতে বিরক্ত হয়ে তারই পিতা চান্দ খান তাকে জীবন্ত পুঁতে দিয়েছে। এ ঘটনা ঘটেছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে। এতে শুধু পাকিস্তান নয়। সারাবিশ্বের আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল। এর দায়ে চান্দ খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শিশুটিকে যখন জীবন্ত কবর দেয় চান্দ মিয়া তখন সেখানে তার ভাই ও এক ছেলে উপস্থিত ছিল। রিপোর্টে বলাবলি হচ্ছে, শিশুটিকে জীবন্ত কবর দেয়ার আগে অনুষ্ঠিত হয় জানাজা। চান্দ মিয়া তার সন্তান মারা গেছেÑ এমন দাবি করে ওই জানাজা আয়োজন করে। এতে হাজির হন এক ইমাম। তিনিই বাধিয়েছেন যত্ত বিপত্তি। কারণ, জানাজার সময় তিনি নাকি কান্নার শব্দ শুনতে পেয়েছেন। এসব যখন ঘটে তখন শিশুটির মা ছিলেন হাসপাতালে। শিশুটি জন্ম নেয়ার সময় লেবার রুমে উপস্থিত ছিলেন ডাক্তার ওমর ফারুক। তিনি মিডিয়াকে বলেছেন, শিশুটি জন্মের সময় বেশ স্বাস্থ্যবান ছিল। কিন্তু তার মুখ ছিল বিশাল। তাকে দেখে স্বাভাবিক কোন মানুষের মতো মনে হতো না। তবে চান্দ খানের দাবি, তার সন্তান জন্মের সময় মারা গিয়েছে। কিন্তু ইমাম মনে করেছেন, তিনি জানাজার সময় তার কান্নার শব্দ শুনতে পেয়েছেন। চান্দ খানের এছাড়া রয়েছে ৫টি সন্তান। এর মধ্যে তিনজন ছেলে এবং দু’জন মেয়ে। ওদিকে চান্দ খানের ছেলে শেহবাজ মনে করে তার পিতা তার বোনকে জীবন্ত কবর দিয়ে ঠিক কাজই করেছেন।

বান্ধবীকে বশে আনবেন কি করে

আপনার বান্ধবী কি আপনাকে এড়িয়ে চলছে? আপনাকে পাত্তাই দিতে চায় না? তাকে এখন বশে আনতে চান? তাহলে আপনার কাছেই আছে এর সমাধান। নিজেই তাকে বশে আনতে পারেন। কোন জাদুবিদের কাছে যাওয়ার দরকার নেই। কোন পাথর হাতে নেয়ার দরকার নেই। দরকার নেই কবুতর দিয়ে ভাগ্য পরীক্ষার। এক্ষেত্রে আপনি যা করতে পারেন তা হলো আপনার সাবেক প্রেমিকার সঙ্গে ছলে বলে কৌশলে কোথাও একটি নৈশভোজের আয়োজন করা। খেয়াল রাখতে হবে যাতে সেই দৃশ্য আপনার প্রেমিকা দেখতে পায়। যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটির কেভিন কিফিনের নেতৃত্বে একদল গবেষক গবেষণা শেষে এই দাওয়াই দিয়েছেন। তারা গবেষণার সময় আন্ডারগ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন- তাদের জীবনসঙ্গী বা প্রেমিক প্রেমিকা যদি তার সাবেক প্রেমিক প্রেমিকার সঙ্গে ই-মেইল, ফোন, কফি শপে বা কোথাও খাওয়ার সময় সাবেক প্রেমিক প্রেমিকাকে দেখতে পায় তাহলে তাদের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে। এর উত্তরে বেশির ভাগই বলেছে- তারা তা সহ্য করতে পারবেন না। এতে প্রেমিকের প্রতি তাদের টান বা আকর্ষণ বাড়বে। এক্ষেত্রে গবেষকরা পুরুষ বা নারীর মধ্যে কোন পার্থক্য খুঁজে পান নি।

Friday, July 13, 2012

২০ নরপিশাচের কবলে এক যুবতী

ভারতের আসামে একাদশ শ্রেণীতে পড়–য়া এক ছাত্রীকে প্রকাশে যৌন নির্যাতন চালিয়েছে কমপক্ষে ২০ জনের একটি দল। ওই ছাত্রী সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের। ওই নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিওতে ধারণ করে আবার অনলাইনে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তা ভারতের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল প্রচার করছে। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন ভারতের সেলিব্রিটিরা। তারা ফেসবুক ও টুইটারে এ নিয়ে মুখিয়ে উঠেছেন। এর মধ্যে আছেন হালের বহুল আলোচিত পুনম পাণ্ডে, অরবিন্দ স্বামী, কায়নাজ মতিবালা, চলচ্চিত্র রঞ্জিতা নন্দী প্রমুখ। আলোচিত ওই ঘটনাটি ঘটেছে আসামের গোয়াহাটিতে। আজকের দিনটি ভারতবাসীর কাছে বিশেষ করে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কাছে এ রকম একটি দু:সংবাদ নিয়ে এসেছে। তারা টিভি বা কম্পিউটার খুলে বসলেই দেখতে পেয়েছেন ওই যুবতীকে যৌন হয়রানির দৃশ্য। যারা ফেসবুক বা টুইটার ব্যবহার করেন তারা সঙ্গে সঙ্গে ওই ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে এর নিন্দা জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। ফলে পুনম পাণ্ডে এই নিন্দা জানানোর মিছিলে শরিক হয়েছেন। তিনি টুইটারে লিখেছেন- মানবতার চলমান পথে এটি আরেকটি বড় ধরনের আঘাত। গোয়াহাটিতে সংঘটিত ওই ঘটনা ভিডিওতে দেখে আমি লজ্জিত। ভারতে নারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি আরও গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। ‘রোজা’ অভিনেতা অরবিন্দ স্বামী লিখেছেন- গোয়াহাটির ঘটনা আমাদের কাছে লজ্জার। যখন ওই ঘটনা ঘটছিল তখন ক্যামেরাম্যানরা কোথায় ছিলেন? কাইনাজ মোতিবালা লিখেছেন- এ ঘটনার পর কি করে মাত্র ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়! যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তারা তো ক্যামেরায় চেনামুখ। তারা হাসছে। তাদের শাস্তি দিন। চলচ্চিত্র প্রযোজক রঞ্জিতা নন্দী তার পোস্টে লিখেছেন, গোয়াহাটির নির্যাতিত মেয়ে কেউ বুঝবে না তোমার কি হবেছে, তোমার কি ক্ষতি হয়েছে, তোমার মানসিক অবস্থা কি। তুমি শক্ত হও। প্রার্থনা করো যেন সুবিচার পাও। পার্লামেন্ট সদস্যডেরেক ও’ব্রাইন বলেছেন- গোয়াহাটি, ব্যাঙ্গালোর বা পার্ক স্ট্রিটের জন্য এগুলো কোন একটি ঘটনা নয়। এটি আমাদের সবার জন্য লজ্জার।

৩০০ মানুষের সামনে কাপড় খুললেন এশা গুপ্তা

লাজ শরমের বালাই দু’পায়ে পিষে ৩০০ মানুষের সামনে কাপড়চোপড় খুলে ফেললেন বলিউডের অভিনেত্রী এশা গুপ্তা। এমন কাণ্ড তাকে করতে হয়েছে ‘রাজ-৩’ ছবির শুটিং করতে গিয়ে। একবার চিন্তা করুন তো ৩০০ মানুষের সামনে আপনি সব কাপড় খুলছেন অভিনয়ের জন্য! কিন্তু বিক্রম ভাটের হরর ছবি ‘রাজ-৩’ এ অভিনয়ের জন্য এই কাজটি করতে হয়েছে মডেল থেকে অভিনেত্রী হওয়া এশা গুপ্তাকে। তবে তাকে এই দৃশে অভিনয়টা বাতিল করতে এশাকে অনুরোধ করেছিলেন ছবির পরিচালক। কিন্তু তাতে পাত্তা দিলেন না তিনি। ঠিকই ওই সিকুয়েন্স শেষ করলেন। এ বিষয়ে এশা গুপ্তা বলেন, আমার চরিত্রটি হলো একটি পার্টি হলে সেক্সি গাউন পরে প্রবেশ করা। সেখানে তার দিকে ভুতরা এগিয়ে আসছে হাউলো মাউলো করে। তারা তার শরীরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। এশা বলেন, তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে আমাকে আর্তনাদ করতে হয়েছে এবং এক পর্যায়ে আমার কাপড় ফেলে আসতে হয়েছে। এশা গুপ্তা বলেন, এটা তার জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং মুহূর্ত ছিল। কারণ তখন ওই দৃশ্যে অভিনয়ের সময় তার সামনে উপস্থিত ছিলের কমপক্ষে ৩০০ লোক। তিনি বলেন, বিক্রম ভাটের আমার প্রতি আস্থা ছিল যে আমি এই ভূমিকায় সঠিকভাবে অভিনয় করতে পারব। আমার বন্ধুরা আমাকে উৎসাহ দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবে দৃশ্যটিকে নিতে বলেছে। তাই আমি পেরেছি।

Thursday, July 12, 2012

উইলিয়াম দম্পতির মধুচন্দ্রিমার ছবি প্রকাশ, ক্ষুব্ধ রাজপরিবার

বৃটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়াম এবং কেট মিডলটনের মধুচন্দ্রিমার ঘনিষ্ঠ ছবি অস্ট্রেলিয়ার একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে রাজ পরিবার। গত বছর যখন ক্যামব্রিজের ডিউক এবং ডাচেস ১০ দিনের মধুচন্দ্রিমার উদ্দেশে বের হয়েছিলেন, তখন সংবাদ মাধ্যমগুলোর সঙ্গে এক ধরনের অনানুষ্ঠানিক চুক্তি করা হয়েছিল যে, তারা নবদম্পতির অবকাশ যাপনের কোন ছবি প্রকাশ করবেন না। কিন্তু এখন প্রায় এক বছর পর অস্ট্রেলিয়ার নারী বিষয়ক ম্যাগাজিন ওম্যান’স ডে-এর ১৬ই জুলাই সংস্করণে দু’জনের অননুমোদিত ছবি প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে সাগর সৈকতে রাজদম্পতি হাতে হাত ধরে হেঁটে বেড়াচ্ছেন। ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ম্যাগাজিনের ভেতরে আরও ১৫টি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে ভারত মহাসাগরের নর্থ আইল্যান্ডে সময় কাটানোর সময় পানিতে নেমে আছেন। প্রথম পাতায় শিরোনামে লেখা হয়েছে ‘আওয়ার আইল্যান্ড প্যারাডাইজ’। এতে মনে হচ্ছে রাজ দম্পতির অনুমোদন সাপেক্ষেই এ ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে। একটি ছবিতে বিকিনি পরা অবস্থায় কেটের শরীর স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আর ইউলিয়ামকে শর্টস পরা অবস্থায় দেখা গেছে। কোস্টগার্ডদের তীক্ষ প্রহরা এড়িয়ে অজ্ঞাত ফটোগ্রাফার শক্তিশালী লেন্স ব্যবহার করেই ছবিগুলো তুলেছেন। এসব ছবি প্রকাশিত হওয়ায় ডিউক এবং ডাচেস দু’জনেই বেশ হতাশ হয়েছেন। আর রাজ পরিবারের পক্ষ থেকে পত্রপত্রিকাগুলো এ ধরনের ছবি প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে। রাজ পরিবারের পক্ষ থেকে জোর দিয়ে বলা হয়েছে গত বছর যেমনটা ছিল, এখনও ডিউক এবং ডাচেসের মনোবল একই রকম রয়েছে। তারা মনে করছেন তাদের ব্যক্তিগত জীবনে এটি এক ধরনের অযাচিত অনুপ্রবেশ।
Source: http://mzamin.com/details.php?nid=MTMyMTM=&ty=MA==&s=MjE=&c=MQ==

সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশীসহ শতাধিক শ্রমিকের মানবেতর জীবন

ব্যবসায়ে অংশীদারিত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উম্ম আল কুওয়াইনের একটি ফার্নিচার কারখানায় নিয়োজিত বাংলাদেশীসহ ১২০ শ্রমিক মাসের পর মাস কোন বেতন পাচ্ছেন না। সেখানে তারা বেঁচে আছেন খুব কষ্টে। তাদের দিন চলছে অন্যের সাহায্যে। ধার-দেনা করে এরই মধ্যে তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইমিরেটস ২৪৭। এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের এক ব্যবসায়ী নারী ও মিশরীয় এক নারী যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে চালু করেছিলেন ফার্নিচার ও ইন্টেরিয়র সাজসজ্জার একটি কোম্পানি। সেখানে কাজ নিয়োজিত বাংলাদেশ, ভারত, ফিলিপাইন, পাকিস্তান ও মিশরের ১২০ শ্রমিক। তারা বেশ কয়েক মাস বেতন পান না। ফলে কমিউনিটি থেকে সহায়তা ও এক দোকান মালিকের সহায়তায় তারা কোনমতে বেঁচে আছেন। ওই দোকান মালিক তাদেরকে লোনে খাদ্য সরবরাহ দিয়ে যাচ্ছেন। রিপোর্টে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার খ্যাতনামা এক ডিজাইনার, যার রয়েছে হলিউডে একই ব্যবসায় সফলতা- তিনি ও মিশরীয় এক নারী মিলে প্রতিষ্ঠা করেন দ্য পার্ল ফর হোম এন্ড অফিস ফার্নিচার ম্যানুফ্যাকচারিং নামের প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু কোম্পানির লাইসেন্স নবায়ন না করায় কোম্পানিটি বন্ধ করে দিয়েছে উম্ম আল কুওয়াইন কর্তৃপক্ষ। মালিকানা নিয়ে স্থানীয় আদালতে রয়েছে মামলা। ফলে শ্রমিকরা রয়েছেন অসহায় অবস্থায়। যে বাড়ি ভাড়া নিয়ে তারা ছিলেন সে চুক্তি পাড় হয়ে যাওয়ার ফলে তাদের অবস্থা আরও সঙ্গীন। ওই শ্রমিকদের একচন বলেন, আমাদের বেতন দেয়া হয় না চার মাস ধরে। দুই বছর ভাল ব্যবসা করেছে কোম্পানিটি। কিন্তু সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে সমপ্রতি। এখন ওই কোম্পানির ওয়েবসাইটে ক্লিক করলে তা অন্য একটি ওয়েবসাইটে চলে যাচ্ছে। তাতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অভিজাত প্রকল্প ও শোরুমের নানা রকম তালিকা সরবরাহ করছে। এমিরেটস ২৪৭ ওই কোম্পানির দুই অংশীদারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। ওই ওয়েবসাইটে দেয়া মোবাইল ফোন ও ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে এমিরেটস। কিন্তু কোন সাড়া মেলেনি তাতে। কোন কোন ফোন নম্বর অকেজো। ভারতের রাজস্থানের সুতার মেহবুব বলেছেন, এ ঘটনায় ভারতীয় শ্রমিকদের একটি দল ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে মামলা করে দিয়েছেন। বাকিরা তাদের ক্যাম্পে এখনও অপেক্ষায় আছেন। তারা যে ক্যাম্পে থাকেন সেখানকার বিদ্যুত সংযোগ গত এক সপ্তাহ ধরে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু সচেতন লোকজনের কারণে ফের সংযোগ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, এরই মধ্যে আমরা যে দোকান থেকে খাবার কিনে খাচ্ছি সেখানে দেনা হয়ে গিয়েছি ১৭০০ দিরহাম। এখন ওই দোকানের মালিক আর বাকিতে মাল দিতে চাইছেন না। তিনি বলেন, ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশন উম্ম আল কুওয়াইন ও দু’একটি সংস্থা আমাদেরকে কিছু খাদ্য ও সহায়তা দিয়েছে। কিন্তু এভাবে তো অনির্দিষ্টকাল চলতে পারে না। তবে মিশরীয় একদল শ্রমিক তাদের বেতন চেয়ে আবেদন করেছেন আদালতে।

রাহুলকে যৌতুক প্রস্তাব

 যে কোন মূল্যে নিজের মেয়েকে কংগ্রেস সেক্রেটারি, সোনিয়া গান্ধীর পুত্র রাহুল গান্ধীর কাছে বিয়ে দিতে চান ওম শান্তি শর্মা নামের এক নারী। এজন্য দিল্লির যন্তর মন্তরে অনশন পালন করে যাচ্ছেন রাজস্থানের ওম শান্তি। সেখানে একটি প্ল্যাকার্ড হাতে ৯ই জুলাই থেকে অনশন করে আসছেন তিনি। প্ল্যাকার্ডে লেখা-‘রাহুল গান্ধী সে আপনি বেটি কি রোড়া মাঙ্গ’ (রাহুল গান্ধীর সঙ্গে আমার মেয়ের আত্মীয়তা চাই)। এছাড়া কারো সঙ্গে কোন কথাই বলছেন না শর্মা। কেবল ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে যাচ্ছেন নিজ মেয়ের উপযুক্ত জীবনসঙ্গীর জন্য। আর এই উপযুক্ত পাত্র কেবলই রাহুল। হলুদ শাড়ি পরা ওম শান্তি গভীর বৃষ্টির মধ্যেও সেখান থেকে সরছেন না। যদি রাহুল তার মেয়েকে বিয়ে করতে রাজি হন তবে যৌতুক হিসেবে ১৫ কোটি রুপি দিতে প্রস্তুত তিনি। আর এজন্য চুপ থাকা ও কিছু না খেয়ে থাকার প্রতিজ্ঞা করেছেন ওম শান্তি। ফলে কারো সঙ্গে কথা বলা বা লিখে কোন যোগাযোগ রক্ষা করছেন না তিনি। সারাদিন যন্তর মন্তরে বসে থাকছেন আর প্রার্থনা করছেন। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ওম শান্তি সম্ভবত মানসিক রোগী হবেন। তার সেখানে অনশন করার ও কোন প্রতিবাদে অংশ নেয়ার অনুমতি নেই। তবে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি পুলিশ কর্মকর্তা।
Source: http://mzamin.com/details.php?nid=MTMxOTg=&ty=MA==&s=MTk=&c=MQ==

Wednesday, July 11, 2012

ক্ষুধার তাড়নায় কুকুরের দুধ পান!

 ক্ষুধার তাড়নায় নিজেকে ঠিক রাখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে ছোট্ট শিশু ছটু কুমারের (৬) পক্ষে। ঘরে খাওয়ার মতো কিছু নেই। তাই অবুঝ ছটু ক্ষুধা মেটাতে খুঁজে নিয়েছে রাস্তার কুকুরের দুধ। আনন্দের সঙ্গে সে পান করছে কুকুরের স্তন্য। এজন্য যেন কোন কষ্ট না হয় তাই কৌশল করে হাঁটু গেঁড়ে বসে সে। আশ্চর্যের বিষয় হলো-কুকুরের মতো প্রাণী বঞ্চিত করেনি মানব সন্তানকে। তাকে সুযোগ দিচ্ছে ক্ষুধা মেটানোর। ছটু বলেছে, আমরা খুবই দরিদ্র। মাঝে মাঝে প্রচুর ক্ষুধা পেলে ঘরে যখন খাবার থাকে না তখন আমি তার দুধ পান করি। কুকুরটি আমাকে কামড়ায় না। আমি তাকে ভালবাসি। সেও আমাকে ভালবাসে। সে (কুকুর) আমার সঙ্গে তার একটি বাচ্চার মতোই ব্যবহার করে। কভার এশিয়া প্রেসকে বলেছে ছটু কুমার। সে আরও বলেছে, আমি কুকুরদের সঙ্গে খেলতে ভালবাসি। তারা আমার বন্ধু। পূর্ব ভারতের ঝাড়খণ্ডের শিশু ছটু কুমার তার মা শনিচ্চরি দেবী, দাদি অমীয় দেবী ও দুই ভাই ভোলা (১৪), মহেশ (৩)’র সঙ্গে থাকে। চার বছর আগে তার বাবা মারা যাওয়ার পর পরিবারটি কঠোর দারিদ্র্যতার মধ্যে পড়ে। তার ভাই ভোলা বাধ্য হয়েই পাশের একটি হোটেলে কাজ করে। তবে সে মাত্র ১২শ’ রুপি বেতন পায়। ছটুর মা ও দাদি বনে কাঠ ও প্রাকৃতিক খাবার খুঁজতে যায়। কিন্তু তাদের নিয়মিত খাবার কোন রকমে রুটি-সবজি জোগাড় করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ছটুর পেট দেখেই বোঝা যায়, কেমন ক্ষুধার্ত থাকে সে। ইউনিসেফের মতে ভারতের ঝাড়খণ্ডে তিন বছরের কম বয়সী শিশুদের ৯০ ভাগই মারাত্মক অপুষ্টির শিকার। প্রতি বছর সেখানে ২৫ হাজার শিশু মারা যায়। দুই বছর আগে থেকে কুকুরের দলের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে ছটুর। সে স্কুলে যায় না। ফলে তার কোন বন্ধুও নেই। ছটুর মা শনিচ্চরি বলেন, ছেলেকে প্রথমবার কুকুরের দুধ পান করতে দেখার আগে কয়েকদিন তাদের ঘরে কোন নরম খবার বা দুধ খাওয়া হয়নি। তিনি বলেন, আমি তাকে প্রথমবার দেখে তাড়িয়ে দিয়েছি। কিন্তু তারপর থেকে তার যখন ক্ষুধা পায় তখন সে এটি করে। তাকে আমি ছেড়ে দিয়েছি। কারণ আমি জানি সে কেমন ক্ষুধার্ত থাকে। স্থানীয় মানুষ আশঙ্কা করছেন, তাকে দেখে অন্য ছেলেরাও এমনটি করতে পারে। তাকে বোঝানো হয়েছে এর ফলে সে অসুস্থ হয়ে মারা যাবে। কিন্তু এসবে কোন কাজ হয়নি। ফলে তাকে স্থানীয় স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে যেখানে সে ফ্রি খাবার পায়। একই সঙ্গে তার পরিবারকেও ফুডকার্ড দেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন কুকুরটি ছটুর সঙ্গে খেলতে আসে তাদের বাড়িতে। এবং দুধ পান করাও তার নেশায় পরিণত হয়ে গেছে।

Tuesday, July 10, 2012

The Himalayan Times : Prakash Dahal's alleged mistress suspended after they "eloped" - Detail News : Nepal News Portal

The Himalayan Times : Prakash Dahal's alleged mistress suspended after they "eloped" - Detail News : Nepal News Portal

সৌদি প্রিন্সেসের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা

 সৌদি আরবের এক প্রিন্সেস নিজের দেশে নিরাপত্তার হুমকির প্রেক্ষিতে বৃটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। ডেইলি মেইল এক রিপোর্টে জানিয়েছে, সৌদি শাসকের ভাতিজি প্রিন্সেস সারা বিনতে তালাল বিন আবদুল আজিজ আল সউদ এখন বৃটেনেই অবস্থান করছেন। তিনি দাবি করেছেন, সৌদি কর্তৃপক্ষ এবং তার নিজের পরিবারের সদস্যরা তাকে নানাভাবে হয়রানি করছে। তিনি বলেছেন, সৌদি শাসকদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে সহযোগিতা করছেন বলে ভিত্তিহীন অভিযোগে সৌদি কর্মকর্তারা তাকে অপহরণ করে রিয়াদে ফেরত নেয়ার পরিকল্পনা করছেন। প্রিন্সেস সারা এখন চার সন্তান এবং দুটি কুকর নিয়ে লন্ডনের একটি পাঁচতারকা হোটেলে অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, বৃটেনে সন্তানসহ তার থাকার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বলে তিনি এখন সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইছেন। বৃটিশ কর্তৃপক্ষ এখন তার দাবির সত্যতা যাচাই করে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবেন। ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ৮০ বছর বয়সী বাবা প্রিন্স তালাল বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের সঙ্গে মনোমালিন্যের পর ২০০৭ সাল থেকেই সারা বৃটেনে অবস্থান করছেন। এছাড়া মৃত মায়ের ৩২ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ডের সম্পত্তি নিয়েও তার ভাইয়ের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

কর ফাঁকি দেয়ায় পতিতার কারাদণ্ড

বৃটেনে উচ্চশ্রেণীর এক পতিতাকে ১২০০০০ পাউন্ডের কর ফাঁকি দেয়ার অপরাধে ১৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ২৯ বছর বয়সী ডোনা আসুসটেইট তিন বছর ধরে পতিতাবৃত্তি করে ৩০০০০০ পাউন্ড আয় করলেও কর আদায় কারীদেরকে তিনি একটি পয়সাও দেননি। ডেইলি সান এক রিপোর্টে জানিয়েছে, ২০০৫ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত পতিতা হিসেবে কাজ করে তিনি লন্ডনে একটি ফ্ল্যাট কেনার জন্যও অর্থ জমা দিয়েছেন। পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৭৩০০০ পাউন্ড নগদ এবং বেশ কিছু দামী জুয়েলারি উদ্ধার করেছে। এসবই তার গ্রাহকদের দেয়া বলে দাবি করা হয়েছে। সাউথ ওয়ার্ক ক্রাউন আদালতকে ডোনা জানিয়েছেন, ওয়েস্টমিনস্টার ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার ডিগ্রিতে অধ্যয়নের সময় পড়ার খরচ জোগাতেই তিনি এ পেশায় নেমেছিলেন। তবে আইনজীবী জোনাথান পলনে বলেছেন, ডোনা তার পেশার দায়িত্ব পালনের সময় একবারও আয়কর রিটার্ন জমা দেননি। ডোনা নিজেও এ ধরনের অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। আইনজীবী বলেছেন, অভিযুক্ত ডোনা কয়েক বছর ধরেই একজন পতিতা হিসেবে কাজ করেছেন এবং এ কাজের মাধ্যমে তিনি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অর্থ আয় করেছেন। ওই অর্থ দিয়ে তিনি একটি ফ্ল্যাটও কেনার উদ্যোগ নিয়েছেন। এতে মনে হচ্ছে তার কাছে যথেষ্ট পরিমাণে অর্থ রয়েছে। এর জবাবে ডোনার আইনজীবী আদালতে বলেছেন, এ মামলার কারণে ডোনার পরিবার বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে। তিনি বলেন, কর ফাঁকির জন্য মামলা হচ্ছে সেটা কোন বিষয় নয়। ডোনা যে পতিতাবৃত্তির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করছেন সেটা তার পরিবারের কেউ জানতেন না। তবে বিচারের রায়ে আদালত বলেছেন, ডোনা যেহেতু ইচ্ছে করে দীর্ঘ সময় ধরে কর ফাঁকি দিয়েছেন, তাই বিচারে তাকে কারাদণ্ড দেয়া হলো।

অভিনেত্রী লায়লা খান হত্যার তদন্ত শুরু

অভিনেত্রী লায়লা খান ও তার পরিবারকে হত্যা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চ। তারা ওই ঘটনায় পারভেজ আহমেদ তাক নামে প্রধান অভিযুক্তকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়ার পরই শুরু করেছে তদন্ত। ইউনিট-৯ এবং ইউনিট-১২ এর সমন্বয়ে গঠিত ৭ সদস্যের একটি টিম এরই মধ্যে আইগপুরির বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। সম্প্রতি অভিনেত্রী লায়লা খান নিখোঁজ হয়ে যান। তখন মিডিয়ায় অনেক কথাই ছড়িয়ে পড়ে। বলাবলি হয়, তার সঙ্গে ভারতের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আন্ডারওয়াল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমের সম্পর্ক আছে। তিনি কাউকে কিছু না বলে একটি ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহার করে দুবাই চলে গেছেন দাউদ ইব্রাহিমের কাছে। কিন্তু এ ঘটনায় সন্দেহজনকভাবে গ্রেপ্তার করা হয় পারভেজ আহমেদ তাককে। সে স্বীকার করে লায়লা ও তার পরিবারের সদস্যদের খুনের কথা। তার দেয়া তথ্যে ভিত্তিতে কোথায় খুন করা হয়েছে এবং মৃতদেহ কোথায় রাখা হয়েছে তার সন্ধানে হন্যে হয়ে ঘুরছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ পারভেজের গাড়ির চালক জোলি গিল্ডার ও মেহবুবকে আটক করেছে। তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কিস্টওয়ারে।

স্তন ক্যান্সারের সহজ অপারেশন

স্তান ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীরা বড় ধরনের অপারেশনের হাত থেকে রক্ষা পাবেন। এর জন্য বিজ্ঞানীরা মাত্র ১০ মিনিটের একটি অপারেশন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। ভারতের একটি অনলাইন ট্যাবলয়েড পত্রিকা এ খবর দিয়ে আরও জানায়, রোগিরা যখন লোকাল এনেস্থেসিয়া বা অঙ্গবিশেষ অবস অবস্থায় অবস্থায় থাকবেন তখন পেন্সিল আকৃতির একটি একটি যন্ত্র টিউমারের ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়ে তাতে তরল নাইট্রোজেন ঢেলে দেয়া হবে। এর ফলে টিউমারটি একটি গলিত বলের মতো আকৃতি ধারণ করবে এবং তা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বের করে আনা হবে। ফলে রোগিরা বাড়ি চলে যেতে পারবেন। বর্তমানে এক্ষেত্রে অপারেশনের যে পদ্ধতি আছে তাতে স্তন ক্যান্সারের বিশেষ করে টিউমারের অপারেশনে ৩ ইঞ্চি পরিমাণ ত্বক কাটা হয়। তাতে স্থায়ী একটি দাগ পড়ে। কিন্তু নতুন পদ্ধতিতে স্তনের টিউমার যখন নাইট্রোজেন দিয়ে গলিয়ে ফেলা হবে তখন সেখানকার মৃত কোষগুলোকে শরীরের অন্যান্য অংশ টেনে নিয়ে স্বাভাবিক উপায়ে দেহ থেকে বের করে দেবে। এতে স্তন থাকবে সুগঠিত। এমন চিকিৎসা করেছেন এমন এক চিকিৎসক বলেছেন, নতুন এ প্রযুক্তিতে অপারেশনের পর রোগিরা বাড়ি চলে যান। তবে তাদের স্তনে কমই দাগ দেখা যায়। এ চিকিৎসা এ বছরের শেষের দিকে শুরু হবে বৃটেনে। যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটে ব্রিজপোর্ট হাসপাতালের ডা. অ্যানড্রু কেনলার বলেছেন, একবার কোন রোগি এ চিকিৎসা করালে তিনি স্বীকার করবেন এটা একটি চমৎকার পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে আমরা টিউমারের বায়োপসি করে কয়েক মিনিটের মধ্যেই তার চিকিৎসা দিই। কয়েক দিন পরে আর বোঝাই যায় না কোথায় অপারেশন করা হয়েছে।

সাবধান! ডিএনএস চেঞ্জার!!

সারাবিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা আতঙ্কে। সক্রিয় হতে পারে ভয়াবহ একটি ভাইরাস ‘ডিএনএস চেঞ্জার’। এর আক্রমণে নষ্ট হয়ে যেতে পারে লাখ লাখ কম্পিউটার। এর ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেট সংযোগ হারাতে পারেন। ফলে তারা তাদের কম্পিউটারকে আজ এই ভয়াবহ হামলার মুখ থেকে বাঁচাতে পারবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কাছে আজকের দিনটিকে ‘কম্পিউটারের কিয়ামত’ দিবস হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের পরামর্শ দিয়েছে তাদের নিরাপত্তা বিষয়ক সাইট যঃঃঢ়://িি.িফপমি.ড়ৎম ব্রাউজ করতে। এই সাইটে গিয়ে জানা যাবে, কারও কোন কম্পিউটার আক্রান্ত হয়েছে কিনা এবং এ সমস্যা সমাধানের পথ কি। এতে বলা হয়েছে, যেসব কম্পিউটার আক্রান্ত হবে তাতে আজকের পর থেকে কোন ইন্টারনেট সংযোগ কাজ করবে না। তবে গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন কম্পিউটার আক্রান্ত হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের হাফিংটন পোস্ট রিপোর্ট করেছিল, এরই মধ্যে সমস্যা শুরু হয়ে গেছে। কারণ আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কম্পিউটার হ্যাকাররা অনলাইনে তখনই বিজ্ঞাপন দিয়েছিল আক্রান্ত কম্পিউটার তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার। ওই বিজ্ঞাপনের পর এফবিআই একটি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়। তারা দেখতে পান হ্যাকাররা যে ভাইরাস দিয়ে কম্পিউটারে এই হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে তা একবার যথাযথভাবেও বন্ধ করা হলে পরে তাতে আর ইন্টারনেট সংযোগ কাজ করবে না। আজ এই ঝুঁকির মুখে রয়েছেন বিশ্বের প্রায় ৩ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। ‘ডিএনএস চেঞ্জার’ নামে একটি ভাইরাস সক্রিয় হতে পারে আজ। এরই মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৭০ হাজার ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ঝুঁকিতে রয়েছেন। ২০০৭ সালে প্রথম এ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয় বেশ কিছু কম্পিউটার। প্রথম পর্যায়ে এটি কম্পিউটারের ডিএনএস সেটিংসকে পরিবর্তন করে দেয়। ফলে ব্যবহারকারীরা নিজেদের অজান্তেই ঢুকে পড়েন ক্ষতিকর ওয়েবসাইটগুলোতে। কারণ, ম্যালওয়্যারটি কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করে ও ব্যবহারকারীকে ভুল নির্দেশনা দেয়। এমনকি অ্যান্টিভাইরাস বা অপারেটিং সিস্টেমের সিকিউরিটি আপডেটের ওয়েবসাইটগুলোতে ঢুকতে বাধা দেয় ডিএনএস চেঞ্জার ম্যালওয়্যারটি। একটি চক্র এ ম্যালওয়্যারকে নিজেদের অসাধু উদ্দেশ্যে কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নেয় বহু টাকা। ২০১১ সালে এ চক্রের ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। যাদের কম্পিউটারে এখনও ম্যালওয়্যারটি রয়ে গেছে, আজই তা ফের সক্রিয় হবে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইটে ডিএনএস চেঞ্জার ম্যালওয়্যার শনাক্ত ও তা অপসারণের পথ বাতলে দেয়া হয়েছে। গুগল-ও গত মে মাস থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সতর্ক করছে। জুনে ফেসবুকও একই পথ অনুসরণ করে।

নৃশংস এক হত্যাকাণ্ড

গায়ে একটি শাল জড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ফাঁকা একটি স্থানে সেই শাল গায়ে পিছন ফিরে নিচের দিকে মাথা রেখে বসে আছেন এক নারী। তাকে লক্ষ্য করে রাইফেল তাক করছে এক তালেবান সদস্য। রাইফেলের ট্রিগারে হাত রেখে ধীর পায়ে সে এগিয়ে যাচ্ছে ওই নারীর দিকে। তার কাছাকাছি গিয়ে তার ট্রিগার নড়ে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে ৫টি গুলি গিয়ে বিদ্ধ হয় ওই নারীর শরীরে। তিনি আর্তনাদ করে কাত হয়ে পড়ে গেলেন মাটিতে। সেখানেই সমাপ্তি ঘটলো তার জীবনের। এ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করতে সমবেত হয়েছিল ১৫০ জনের মতো মানুষ। এসব দৃশ্য ধারণ করে ৩ মিনিটের একটি ভিডিও ছেড়ে দেয়া হয়েছে ইন্টারনেটে। ঘটনা আফগানিস্তানের পারওয়ান প্রদেশের। ওই প্রদেশের এক নারী কাবুলে প্রকাশ্যে ব্যভিচারিতার দায়ে অভিযুক্ত। এ অভিযোগে শাস্তি হিসেবে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা হয়েছে তাকে। পারওয়ান প্রদেশে ওই ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়েছে তালেবানদের। ওই ভিডিওটি সেন্সর করে ফের অনলাইনে প্রকাশ করেছে অনলাইন আল জাজিরা। তাতে দেখা গেছে, মাথায় পাগড়ি পরা এক ব্যক্তি হাঁটু গেঁড়ে বসা ওই নারীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। একটি ফাঁকা স্থানে ওই নারীকে বসিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি বসে আছেন পিছন ফিরে। অস্ত্র হাতে তার কাছে এগিয়ে গিয়ে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল থেকে ওই নারীর দিকে ৫টি গুলি ছোড়ে। এ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করতে সমবেত হয়েছিল ১৫০ মানুষ। গুলির দৃশ্য দেখে তারা উল্লাস করেছে। অস্ত্র হাতে ওই নারীর কাছে যখন ওই ব্যক্তি এগিয়ে যাচ্ছিল তখন সমবেতদের একজন বলে ওঠে- ব্যভিচারিতা অন্যায়। তাই এ থেকে আমাদের দূরে থাকার জন্য সতর্ক করেছেন আল্লাহ। তার নির্দেশ মেনেই এই নারীকে হত্যা করা হচ্ছে। পারওয়ান প্রদেশের গভর্নর বছির সালাঙ্গি বলেছেন, ওই ভিডিওটি শিনওয়ারি জেলার কিমচোক গ্রামে এক সপ্তাহ আগে ধারণ করা হয়েছিল। গ্রামটি কাবুল থেকে কয়েক ঘণ্টার পথ। প্রকাশ্যে এমন শাস্তির ঘটনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল সময়কালের আফগান সরকারের প্রকাশ্য নৃশংস শাস্তির কথা মনে করিয়ে দেয়। তালেবান বিরোধী ন্যাটোর ১১ বছরের অভিযানে তাহলে আফগানিস্তান কি অর্জন করেছে তা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। গভর্নর বছির সালাঙ্গি বলেছেন, যখন আমি এই ভিডিওটি দেখতে গিয়েছি তখনই চোখ বন্ধ করতে হয়েছে। এত ভয়ঙ্কর দৃশ্য কি করে দেখা যায়! তবে ওই নারীকে আমার কাছে দোষী মনে হয়নি। আমার মনে হয়েছে, দোষী হলো ওই তালেবান।

পুরুষে-পুরুষে বিয়ে, প্রথম সমকামী মার্কিন কংগ্রেস সদস্য বারনি

 দীর্ঘদিন আগে তাদের দেখাশোনা। তারপর থেকে চলছে চুটিয়ে প্রেম। কোন রাখঢাক নেই। একেবারে প্রকাশ্যে। নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের এক অনুষ্ঠানে তাদের দেখা হয়েছিল ২০০৫ সালে। তারপর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেট দলের রিপ্রেজেন্টেটিভ বারনি ফ্রাঙ্ক ও কার্পেন্টার জিম রেডির প্রেম। কিন্তু এবার তারা সেই প্রেমকে বাস্তবে রূপ দিলেন। তারা বিয়ে করে ফেললেন। কেউ ভাবতে পারেন- প্রেম, তারপর বিয়ে। এতো স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু বারনি ফ্রাঙ্ক ও জিম রেডির বিয়ে ব্যতিক্রম। তারা দু’জনেই পুরুষ। তাদের মধ্যে ২০০৫ সাল থেকে চলছে সমকামিতা। সমকামী সেই দুই পুরুষ বিয়ে করেছেন বলে বিশ্বমিডিয়ায় চলছে তোলপাড়। তাও তারা যে-সে নন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ বলে পরিচিত প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য। এজন্যই আলোচনাটা এত বেশি। ওই সমকামী দম্পতির মধ্যে বারনি ফ্রাঙ্ককে বিয়ে করেছেন জিম রেডি। অর্থাৎ জিম রেডি হলেন স্বামী। বারনি ফ্রাঙ্ক স্ত্রী। জিমের বয়স ৪২ বছর। ফ্রাঙ্কের বয়স ৭২ বছর। তারা শনিবার ম্যাসাচুসেটসটের নিউটনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন। চার্লস নদীর পাড়ে ওই বিয়েতে তেমন জাঁকজমক ছিল না। এতে উপস্থিত ছিলেন ম্যাসাচুসেটসের গভর্নর ডেভাল এল. প্যাট্রিক। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি, সিনেটর জন কেরি এবং প্রতিনিধি ডেনিস জে. কুচিনিচ ও স্টেনি এইচ. হোয়ার। সমকামী দম্পতীর মধ্যে বারনি ফ্রাঙ্ক ১৯৮৭ সালে ম্যাসাচুসেটসের ডেমোক্রেট নেতা নির্বাচিত হন। কংগ্রেসে তিনিই প্রথম সমকামী নেতা। তিনি বিয়ে করতে পেরে তো খুশিতে আটখানা। তারা ২০০৫ সালের সেই অর্থ সংগ্রহের অনুষ্ঠানের সময় সাক্ষাতের কথা স্মরণ করে অভিভূত হন- যেমনটা হন প্রেমিক-প্রেমিকা। তাদের দেখা হয়েছিল ৫ মিনিটেরও কম সময়। এরই মধ্যে তারা একে অন্যকে ভালবেসে ফেলেছিলেন। তবে শনিবার বিয়ের পরও তারা বলেছেন, তারা একে অন্যকে ভালবেসে যাবেন।

Sunday, July 8, 2012

যৌন বাণিজ্য প্রতিরোধে নিউ ইয়র্কে ট্যাক্সি চালকদের জন্য নতুন আইন

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো নিউ ইয়র্কে বাড়ছে যৌন বাণিজ্য। এতে যারা জড়িত তারা ট্যাক্সিক্যাব চালকদের নিয়ে গড়ে তুলেছে একটি চক্র। এই ব্যবসা প্রতিরোধে নিউ ইয়র্ক কর্তৃপক্ষ একটি আইন করছে। এই আইনের অধীনে কোন ট্যাক্সিক্যাব চালক যদি তার ট্যাক্সির আরোহীকে সন্দেহজনক কোন নারী হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেন অথবা বুঝতে পারেন ওই নারী যৌন বাণিজ্যে লিপ্ত তাহলে কর্তৃপক্ষকে একটি সংকেতের মাধ্যমে জানাতে বলা হচ্ছে। যদি কোন ট্যাক্সি চালককে এ ব্যবসায় জড়িত পাওয়া যায় তাহলে তার লাইসেন্স বাতিল করা হবে। পাশাপাশি তাকে ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। আগামী তিন মাসের কম সময়ের মধ্যে এই আইন কার্যকর করা হবে। নগর পরিকল্পনা অনুসারে যেসব ট্যাক্সিক্যাব ভাড়ায় চলে তার চালকদের এ বিষয়ে দেয়া হবে প্রশিক্ষণ। যারা যৌন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তাদের কিভাবে ধরতে হবে তা ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে শেখানো হবে। নিউ ইয়র্কের ট্যাক্সিক্যাব চালকরা জানান, যৌন ব্যবসা সংক্রান্ত আইন প্রয়োগ অবশ্যই দরকার। কিন্তু তা বাস্তবায়ন পদ্ধতি প্রশ্নবিদ্ধ। মাইকেল ডিক নামের এক ট্যাক্সিচালক বলেন, বুঝতে পারছি না এই আইন কিভাবে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এর চেয়ে ভাল পদ্ধতি ছিল হর্ন বাজানো পদ্ধতি। এতে সহজেই পুলিশ কিংবা কর্তৃপক্ষকে ঘটনা সম্পর্কে বোঝানো যেত। নিউ ইয়র্ক শহরের ট্যাক্সিক্যাব চালকরা যে যৌন ব্যবসায় জড়িত তার খুব কম ঘটনাই নজরে এসেছে। যৌন ব্যবসা বিরোধী সংগঠন ‘স্যাংচুয়ারি ফর ফ্যামিলিস’-এর কর্মকর্তা ডর্চেন লেইডহোল্ট বলেন, যৌন ব্যবসার সঙ্গে নিউ ইয়র্ক শহরের ট্যাক্সিক্যাব চালকদের সংশ্লিষ্টতা দিন দিন বাড়ছে। এর কারণ, আগে বাড়ি বাড়ি নারী ও যুবতীদের জোর করে আটকে রেখে তাদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করানো হতো। কিন্তু সমপ্রতি পুলিশ এসব আস্তানায় অভিযান বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে দেহ ব্যবসায় জড়িত চক্র ব্যবসার নতুন কৌশল অবলম্বন করছে। তারা এক্ষেত্রে ব্যবহার করছে ট্যাক্সিক্যাব চালকদের। এ ব্যবসা যারা নিয়ন্ত্রণ করে তাদের সঙ্গে কোন কোন ক্ষেত্রে ট্যাক্সি ক্যাব চালকদের রয়েছে সংশ্লিষ্টতা। ওই চালকরা নারী বা যুবতীদের হোটেল থেকে হোটেলে, এক রাস্তা থেকে আরেক রাস্তায়, এক আস্তানা থেকে আরেক আস্তানায় স্থানান্তর করে। ফলে নিউ ইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি এখন ওই ট্যাক্সিক্যাব চালকদের দিকে। তাই নতুন আইনে তাদেরকেই টার্গেট করা হয়েছে। ডর্চেন লেইডহোল্ট বলেছেন- যৌন হয়রানির শিকার নারীরা বারবার বলছেন, যৌন ব্যবসায়ী চক্রের কাছে তারা জিম্মি। ট্যাক্সিক্যাব চালকরা তাদের অনবরত নিরাপত্তাহীন অবস্থায় এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়, এক রাস্তা থেকে আরেক রাস্তায়, এমনকি পতিতালয়ে পৌঁছে দিচ্ছে। এই চালকরা সব সময়ই ব্যবসায়ীদের ঘনিষ্ঠতায় থাকে। যেটি শুধু নিউ ইয়র্ক শহর কিংবা নিউ ইয়র্ক প্রদেশে নয় সারা বিশ্বের একটি বড় সমস্যা। ট্যাক্সিক্যাব চালকরা যৌন ব্যবসার নেটওয়ার্কের একটি বড় অংশ বলে জানাচ্ছে যৌন হয়রানির শিকার নারীরা। ডর্চেন লেইডহোল্ট আরও বলেন, চালকরা যৌন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত পুরো নেটওয়ার্ক সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে জানাতে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। এ বাণিজ্য প্রতিরোধ করতে নিউ ইয়র্ক কর্তৃপক্ষ নতুন ওই আইনটি করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে সমালোচনা আছে বিস্তর। বিরোধীরা বলছেন, এক্ষেত্রে ভাষা একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। কারণ, ট্যাক্সিক্যাবে কোন নারী বা যুবতী আরোহণ করলে তার ভাষা সবক্ষেত্রে বুঝতে পারবে না ট্যাক্সিক্যাব চালক। ফলে তার দণ্ডিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থেকে যায়।

সেনা অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা নাকচ দ্রুত নির্বাচনী চুক্তি প্রয়োজন


Source: The daily Manabzamin, 08-07-12
 ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনার একটি ভাষণ ওয়াশিংটন শুধু নয়, ওয়েব বার্তার কারণে বিশ্বব্যাপী আলোচিত হচ্ছে। স্থান: ওয়াশিংটনের প্রভাবশালী থিংক ট্যাঙ্ক হেরিটেজ ফাউন্ডেশন। তারিখ ২১শে জুন ২০১২। ৪৫ মিনিটের দীর্ঘ ভাষণে ড্যান ডব্লিউ মজিনা বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র  সম্পর্ক, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক, ভবিষ্যৎ নির্বাচন, হিলারি ক্লিনটনের সামপ্রতিক ঢাকা সফর, সিভিল সোসাইটির ভূমিকা, ইলিয়াস আলী গুম, শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডসহ নানা বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন। গ্রামীণব্যাংক প্রসঙ্গ তো ছিলই। মজিনা বলেন, তার ধারণা, বাংলাদেশে আর সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করবে না। ঢাকা সফরকালে হিলারি ক্লিনটন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনটি শব্দ একাধিকবার উচ্চারণ করেন। শব্দ তিনটি হচ্ছে- প্ল্যান, গ্রাউন্ড রুলস এবং মেকানিজম। পুরো বক্তৃতাটি আমাদের কাছে এসেছে। পরখ করে দেখা যেতে পারে কি ছিল তার ওই আলোচিত বক্তৃতায়।


আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। বাংলাদেশ সম্পর্কে আমার দৃষ্টিভঙ্গি আপনাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করছি। আমি বাংলাদেশে মাঝেমধ্যেই বাইসাইকেল চালাই। এখানকার আকাশ খোলা। উদাস করে কাছে ডাকে। এটাই হয়তো ঠিক। তাই যে কোন ভাবেই হোক বাইসাইকেল চালাই আমি। কয়েক সপ্তাহ আগে আমি বাইসাইকেল চালিয়েছি প্যারিসে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন কয়েক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ সফর করেছেন। তিনি এসেছিলেন মে মাসের শুরুর দিকে। তখন আমার এক বন্ধু জানতে চেয়েছিলেন হিলারি কেন বাংলাদেশে এসেছেন। তখন আমি কৌতুক করেছিলাম। শুধু হেসেছি। কোন উত্তর দিইনি। কিন্তু আমার বন্ধু খুব সিরিয়াস ছিলেন। পরে আমি তাকে তার প্রশ্নের জবাব দিয়েছি।


হিলারি বাংলাদেশে এসেছিলেন। কারণ, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমান, কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ। কেন? তা ব্যাখ্যা করছি। বাংলাদেশ বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম দেশ। বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ বৃহত্তম মুসলিম দেশ। এটা একটি ধর্মনিরপেক্ষ, আধুনিক, গণতান্ত্রিক, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। নেপাল, ভারত, চীন, মিয়ানমার, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্পর্কের উন্নতি ঘটিয়েছে। এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতার উন্নতির জন্য তা খুবই জরুরি। এটাই আমেরিকার কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ সবচেয়ে বেশি। যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন অ্যাঙ্গোলা গিয়েছিলেন, তখন আমি সেখানে রাষ্ট্রদূত ছিলাম। তখন আমাদের মধ্যে অনেক বিষয়ে কথা হয়েছিল। আমরা আলাপ করেছিলাম- আমাদের জীবনেই বিশ্বের জনসংখ্যা ৯০০ কোটি দাঁড়াবে। আমার মনে পড়ে, গত সেপ্টেম্বরেই তা হয়তো ৭০০ কোটি ছিল। তখন হিলারি বলেছিলেন- ওই সব বর্ধিত মানুষের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ভাবতে হবে। তাই বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম দেশ বাংলাদেশকে তার বাড়তি মানুষের খাদ্য যোগানের ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশে যে পরিমাণ মানুষ বাড়বে তাদের খাদ্যের নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতেই হবে। গড়ে তুলতে হবে বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা। যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের আগ্রহ। গত বছর আমরা প্রায় ১০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছি বাংলাদেশে। আগের বছরের তুলনায় এ পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ৮ থেকে ১০ হাজার চাকরি সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে। এটাই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্বের বিষয়। তৈরী পোশাকের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে দুই নম্বর দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশে আমরা সবচেয়ে বেশি অর্থের বিনিয়োগকারী। এদেশে আমাদের মূল্যবান বেশ কিছু এজেন্ডা আছে। তার মধ্যে রয়েছে মানবাধিকারের প্রতি সমর্থন, গণতন্ত্রের প্রতি সমর্থন। রয়েছে মানবতা বিষয়ক এজেন্ডা। আমরা ৫৪৭টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণ করেছি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়ে জীবন রক্ষা করতে পারেন। আরও বেশ কিছু একই রকম প্রকল্পে আমরা সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড় ও বন্যাপ্রবণ দেশ। বিপর্যয়- ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা এখনও আঘাত হানে এদেশে। কিন্তু তাতে হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন এমন ঘটনা এখন আর ঘটে না। হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশীদের সঙ্গে কাজ করছি তাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সহায়তা দিতে। তারপরও কেন বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ? এর জবাব হলো- এখানে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, বৈশ্বিক শান্তি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, মানবতা বিষয়ক এজেন্ডা- এ সবই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ। আমরা এমন একটি বাংলাদেশকে সমর্থন করি, যে বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ, উন্নত, গণতান্ত্রিক। শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ, সমৃদ্ধ, সুস্থ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের পক্ষেই আমরা। কেন আমরা এমনটা করছি? এটা যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের বিষয়। যে বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ, সমৃদ্ধ, সুস্থ সবল গণতন্ত্রের- তার অর্জনে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দেয়। এটা বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি বিজয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন কেন বাংলাদেশে এসেছিলেন তার উত্তর হতে পারে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশ একটি বন্ধু রাষ্ট্র। তারা যুক্তরাষ্ট্রের খুব ভাল বন্ধু। যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্য দক্ষিণ এশিয়ায় এমন একজন বন্ধুর গুরুত্ব অনেক। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এই বন্ধুত্বের কথা জানেন। তিনি জানেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অংশীদারিত্বের বিষয়টি। তিনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অগ্রগতি জানতে এসেছিলেন। এক সময় বাংলাদেশকে বলা হতো ‘পরবর্তী আফগানিস্তান’। আপনাদের অনেকেই সে কথা স্মরণ করতে পারেন। বলা হতো- বাংলাদেশ হতে চলেছে পরবর্তী আফগানিস্তান। এটাই আমাদের কাছে প্রশ্ন। এ প্রশ্নের পরিষ্কার জবাব হচ্ছে- না। কারণ, বাংলাদেশ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আমার দৃষ্টিতে বাংলাদেশ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে উন্নতি করেছে, এটাই বন্ধুত্বের সূত্র। বাংলাদেশ নৌবাহিনী তাদের সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত। বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের হাত থেকে রক্ষা করতে সেনাবাহিনী থেকে সেনাবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে হবে। আমরা বাংলাদেশের সমুদ্রসীমাকে নিরাপদ দেখতে চাই। আমরা কাজ করছি গভীরভাবে। বাংলাদেশকে সন্ত্রাস থেকে রক্ষা করতে চাই। এতে শুধু বাংলাদেশীরাই লাভবান হবেন না। আমরাও লাভবান হবো সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। আমরা শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশের পক্ষে। এদেশে কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে মাতৃমৃত্যুর হার। এক্ষেত্রে আমরা তাদের সহযোগী। বাংলাদেশ সহস্রাব্দের লক্ষ্যমাত্র পূরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমরা বাংলাদেশের সহযোগী। বাংলাদেশের প্রজনন হার ৬.৩ থেকে ২.৩ ভাগে কমিয়ে আনা হয়েছে গত ৪০ বছরে। আমাদের সহযোগিতার এগুলোই হলো বড় অর্জন। আপনারা এই অর্জন দেখে গর্বিত হবেন। আমিও এতে গর্বিত। হিলারি ক্লিনটন অংশীদারিত্বকে সেলিব্রেট করতে ঢাকায় এসেছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এসব বিষয়ে বলেছেন। তাই তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে সই করেছেন পার্টনারশিপ ডায়ালগ এগ্রিমেন্ট। এর মাধ্যমে আমাদের অংশীদারিত্বকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হয়েছে। এর অধীনে প্রতি বছর উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে আমাদের অংশীদারিত্বের পর্যালোচনা হবে। এর প্রথম দফা অনুষ্ঠিত হবে সেপ্টেম্বরে ওয়াশিংটনে। এতে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তিনজন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি। এর মধ্যে রয়েছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি। এটা আমাদের বড় অর্জন। বন্ধুরা তো একে অন্যের সঙ্গে মুক্তমনে কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি গার্মেন্ট শ্রমিক আমিনুল ইসলামের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছিলেন। এটা হয়তো যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক পরিচিত নাম নয়। তিনি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকারের আন্দোলন করতেন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। এফএসিআইও সমর্থিত যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মদতপুষ্ট গার্মেন্ট শ্রমিক সংগঠনের আন্দোলন করতেন তিনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে এপ্রিলের প্রথম দিকে। বাংলাদেশে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর এই সহিংসতা অপ্রত্যাশিত। হিলারি ক্লিনটন এই ইস্যুটি উত্থাপন করেছিলেন। তিনি মানবাধিকারের এই ইস্যুটি তুলেছিলেন। তিনি বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াস আলীর নাম উল্লেখ করেছিলেন। সিলেট বিভাগের এই নেতা নিখোঁজ হয়েছেন প্রায় তিন মাস হতে চলেছে। নাগরিকদের নিরাপত্তা দেয়া সরকারের দায়িত্ব। ঢাকা সফরে হিলারি বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক আলোচনার গুরুত্বের কথা তুলে ধরেছিলেন। বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে, না হয় ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে। কিন্তু কিভাবে ওই নির্বাচন করা যাবে এ নিয়ে এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোন সংলাপ হয়নি। এই নির্বাচনের জন্য পরিকল্পনা করে বিভিন্ন নেতার মধ্যে গ্রাউন্ডওয়ার্ক ও কৌশল প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছিলেন হিলারি ক্লিনটন। তিনি টিকফা’র আহ্বান জানিয়েছেন। কি সুন্দর শুনতে লাগে এই শব্দটি। এর পুরো নাম ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম এগ্রিমেন্ট। এটা খুব সাধারণ একটি চুক্তি। এ নিয়ে চার বছর ধরে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। কিন্তু এখনও তা আলোর মুখ দেখতে পায়নি। এ চুক্তির মধ্য দিয়ে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যের বাধা নিরূপণের কথা রয়েছে। পরামর্শের কথা রয়েছে। বাধা চিহ্নিত করার কথা রয়েছে। চার বছরেও কেন এ চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি? আমার বা আমেরিকার ধারণা, বাংলাদেশ কোন না কোনভাবে আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক প্রতিশ্রুতি থেকে পিছনে সরে আসার চেষ্টা করছে। এটা খুব ভাল খবর নয়। হিলারি এই ইস্যুটি তুলে ধরেছিলেন। তিনি সুশীল সমাজ সম্পর্কে কথা বলেছেন। সুশীল সমাজের দিক দিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিচ্ছে। হিলারি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন। এ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। হিলারি এই ব্যাংকের অখণ্ডতার বিষয়েও কথা বলেছেন। কথা বলেছেন, এর সহযোগী কোম্পানিগুলোর বিষয়েও। এগুলোর মধ্যে ৫৪টি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মধ্য দিয়ে চলছে। তাই হিলারির এই সফর খুব অর্থবহ। বাংলাদেশ তৈরী পোশাক, জুতা, চামড়াজাত পণ্য, মার্কিন বাজারে শুল্কের বিষয়টি তুলে ধরেছে। তারা এ খাতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে। হিলারি বলেছেন, এমন সব বিষয় আলোচনার জন্য টিকফা হতে পারে ভাল জায়গা। বাংলাদেশ মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জে অংশীদার হতে চায়। এটা শুরু হয়েছিল বিগত সরকারের সময়ে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে এ কাজগুলো করা হয়। এক্ষেত্রে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বা কোন মার্কিনি নির্ধারণ করেন না- বাংলাদেশের জন্য কিসে ভাল হবে। এক্ষেত্রে এ লক্ষ্য পূরণের জন্য বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে কাজ করতে পারে। তারা এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছে। ১৯৭৫ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দেশে ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ। তাই হিলারির সফর নানা দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ওই সফরের ওপর ভিত্তি করে আমরা এখন গঠনমূলক কাজ করছি। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার জন্য আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তা করা হবে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ বজায় রেখে। আমি আগামী নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেছি। বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছে। এ ধারণাটাই তারা এতদিন ব্যবহার করেছে। এই ব্যবস্থায় ক্ষমতাসীন সরকারের ক্ষমতা থাকে না। তারা ক্ষমতা দিয়ে দেয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে। সেই ব্যবস্থার নাম তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয় সুপ্রিম কোর্টের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে নিয়ে। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারই নির্বাচন পরিচালনা করে। তারা থাকে নিরপেক্ষ। কিন্তু এই ব্যবস্থাকে বাতিল করে দিয়েছে বর্তমান সরকার। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো তারাও বলছে, তাদের অধীনেই নির্বাচন পরিচালনা করবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। জবাবে বিরোধী দল বলছে- না। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার অবাধ, মুক্ত ও স্বাধীন নির্বাচন করবে এমনটা বিশ্বাস করে না তারা। এক্ষেত্রে হিলারি এবং আমি বলেছি- তাদেরকে এমন একটি পন্থা বের করতেই হবে যার অধীনে ওই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়। এখনকার দিনে এটাই সবচেয়ে বড় ইস্যু। এ ইস্যুকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে হরতাল, সংঘর্ষ। এতে বাংলাদেশের জনগণের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং বিনিয়োগ আকর্ষণেও তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশকে অবশ্যই গণতান্ত্রিক হতে হবে। বাংলাদেশের সংস্কৃতির রয়েছে ভীষণ গভীরতা এবং তা ভীষণ সমৃদ্ধ। এখন প্রশ্ন হলো- কখন ওই নির্বাচন হতে যাচ্ছে? গণতন্ত্রের ভাষায়- সময়মতো সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অবাধ নির্বাচন হতে হবে। তা করতে বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্ধারণ করতে হবে কিভাবে তারা ওই নির্বাচন অনুষ্ঠান করবেন। তাই এ বিষয়ে তাদেরকে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে। এখন প্রশ্ন হলো- তা কি ২০১২ সালে, ১০১৩ সালে, ২০২০ সালে? তা যদি হয় ২০১৭ সালে বা ২০২০ সালে তাহলে সেখানে সহিংসতা দেখা দেবে। অনিশ্চয়তা দেখা দেবে। বাংলাদেশ নিয়ে আমার একটি দৃষ্টিভঙ্গি আছে। বাংলাদেশকে আমি দেখি পরবর্তী এশিয়ান টাইগার হিসেবে। আমি একে বলি বাংলার বাঘ (বেঙ্গল টাইগার)। তৈরী পোশাকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক। এক্ষেত্রে তারা চীনকে হটিয়ে দিয়েছে। ন্যাপকিন, কাপড়, তোয়ালে রপ্তানিতে চীনকে পিছনে ফেলে সবার সামনে চলে এসেছে। ফার্মাসিউটিক্যালস, পাট, আইটি সবক্ষেত্রেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। মধ্য আয়ের বাংলাদেশ, গোল্ডেন বাংলাদেশ, বাংলার বাঘ তা বুঝতে পারছে না। তারা বুঝতে পারছে না বাংলাদেশ অনিশ্চয়তায় কুঁচকে যাচ্ছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে রয়েছে অস্থিতিশীলতা। এ সবই হচ্ছে ওই নির্বাচনকে সামনে রেখে উদ্বেগের কারণ। আরও একটি হুমকি বাংলাদেশের সামনে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তৈরী পোশাকের বাজার আমেরিকা। এরই মধ্যে আমি আমিনুল ইসলামের বিষয় বলেছি। তাকে এপ্রিলে হত্যা করা হয়েছে। আমিনুল হত্যার এই বিষয়টি হিলারি আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। ৬ বছর আগে এফএসিআইও আবেদন করেছিল জিএসপি বাতিল করতে। এটি হলো জেনারেল সিস্টেম অব প্রিফেন্সেস। আমি টিকফা’র কথা বলেছি। বাংলাদেশ শ্রমিকদের নিরাপত্তা দেয়ার আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এখন থেকে ৩ সপ্তাহ আগে এক রাতে আমি একটি ফোন পাই। ওই ফোনটি করেছিলেন বাংলাদেশী তৈরী পোশাকের আমেরিকান বায়ারের এক নির্বাহী অফিসার। তিনি তার কোম্পানির সুনাম নিয়ে ছিলেন হতাশ। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, আগুন, শ্রমিকের সঙ্কট এসব নিয়ে তার মাঝে উদ্বেগ। তিন দিন পরে আমি একটি পার্টিতে গিয়েছিলাম। এর আয়োজন করেছিলেন বাংলাদেশ চেম্বারস অ্যান্ড কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট। এটি বিভিন্ন রকম ৩৬টি সংগঠনের একটি সমন্বিত সংগঠন। সেখানে তিনি আমাকে বললেন, আপনার সঙ্গে কিছু লোক কথা বলতে চান। তিনি আমাকে এক পাশে নিয়ে গেলেন। সেখানে ৬ জন লোক এগিয়ে এলেন। তারা প্রত্যেকে যুক্তরাষ্ট্রের বায়ার কোম্পানির প্রতিনিধি। তারাও একই বার্তা দিলেন। তারাও কোম্পানির সুনাম নিয়ে উদ্বেগে। আমরা ক্লিন পোশাক পরতে চাই। আমরা ময়লা পোশাক পরতে চাই না। ময়লা পোশাক হলো সেগুলো, যেগুলো তৈরি করেন ওইসব শ্রমিক, যাদেরকে টার্গেট করা হয়েছে। এক্ষেত্রে হিলারি সামনে এগিয়ে যাওয়ার একটি পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রীকে। কম্বোডিয়ার উদাহরণের দিকে তাকান। কলম্বিয়ার উদাহরণের দিকে তাকান। দক্ষিণ আমেরিকায় সবচেয়ে দ্রুত উন্নতি অর্জন করা দেশ কলম্বিয়া। ৩ বা ৪ বছর আগেও এ দেশটি ছিল এর বিপরীতমুখী। কম্বোডিয়া তার তৈরী পোশাক নিয়ে সামনে এগিয়ে এসেছে। কিভাবে? তারা আইএলও’র অধীনে কাজ করে। সেখানে সরকার, মালিক, শ্রমিক সবাই একে অন্যের বিরুদ্ধে কাজ না করে একত্রিত হয়ে কাজ করে। তারা একটি সুষ্ঠু বাণিজ্যের প্লাটফর্ম বানাতে এভাবে একত্রে কাজ করছে। বাংলাদেশকে এই আদর্শ গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছেন হিলারি। তবে এক্ষেত্রে আইএলও’ও তাদের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে খুব ধীর গতিতে।


টেকনোলজি খাতে বিনিয়োগ করা সরকারের কাজ নয়। এক্ষেত্রে বিনিয়োগ করবেন বিনিয়োগকারীরা, ব্যবসায়ীরা। আমাকে বলা হয় আপনি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশের রাষ্ট্রদূত। আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশে টেকনোলজি আনতে হবে। আমি জবাবে বলি- না। বিনিয়োগকারীরা টেকনোলজি আনবেন। আমাকে বলা হয়, আপনাকে বিনিয়োগকারী আনতেই হবে। আমি বলি- না। আমি বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশী বন্ধুদের বলবো- সেখানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা খুবই প্রয়োজন। তা নিশ্চিত করতে পারলেই বাংলাদেশে অধিক সংখ্যক বিনিয়োগকারী আসবেন। বেঙ্গল টারগারদের কর্মক্ষমতা অনেক বেশি। সেখানে বিনিয়োগ না হলে এই কর্মক্ষমতা বোঝা কষ্ট। সেই বিনিয়োগের জন্য সেখানে রাজনৈতিক পরিবেশ, স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। প্রয়োজন বন্দর, সড়ক, বিমানপথ, বিদ্যুৎ, দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ, আইনের শাসন- তাহলেই বিনিয়োগ বাড়বে। এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব। যখন এসব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে, তখনই বাংলাদেশ বিদেশী বিনিয়োগ প্রবল বেগে ধাবমান হবে। এর সঙ্গে আসবে টেকনোলজি। বাংলাদেশে রয়েছে অভিন্ন সংস্কৃতি, ভাষা আর মানুষগুলো উদ্যমী, সৃষ্টিশীল, গতিময়। এটাই হলো বাংলাদেশের শক্তি। এসব সমস্যা মোকাবিলা করতে পারলে আমার বিশ্বাস বাংলাদেশ শিগগিরই হতে পারবে এশিয়ান টাইগার। বাংলাদেশের যুব সমাজের অনেকে বিদেশে পড়াশোনা করে দেশে ফিরছে। তারা দেশে কাজ করছেন।


ভারত প্রসঙ্গ
ভারত প্রসঙ্গ একটি মিশ্র বিষয়। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অম্লমধুর। এই সরকার ভারতের কাছে পৌঁছতে পেরেছে। সন্ত্রাস দমনের মাধ্যমে তা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ ভারতকে কট্টরপন্থি সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে। এক্ষেত্রে সফলতা আসছেই। এটা একটি বড় অর্জন। এশিয়ার সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোলে যাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। ৫ বা ৬ মাস আগে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হওয়ার পর বাণিজ্য দ্বিগুণ হয়েছে। দিনে ২০০ থেকে ৪০০ ট্রাক যাতায়াত করে এ বন্দর দিয়ে। এটা একটা বাস্তব পরিবর্তন। পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার চুক্তি অনুমোদন করেছে। কিন্তু তাতে প্রভাব পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজ্য সরকার বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দ্বিমত। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুমোদন না মিললে এ চুক্তি বাস্তবায়ন করা যাবে না। অনেকেই আশা করেন এ চুক্তির জটিলতা কেটে যাবে। ভারত তার সেভেন সিস্টারের কাছে মালামাল সহজে পৌঁছাতে চায়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে তারা ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছে। আমি আশা করি এ বিষয়টিও সহসাই নিষ্পত্তি হবে। এ ট্রানজিট চালু হলে সবাই উপকৃত হবেন। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নত হয়েছে। নৌ-সীমা নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি হয়েছে। এর ফলে সম্পর্ক আরও উন্নত হবে। তবে রোহিঙ্গারা বাংলাভাষী। তাদেরকে মিয়ামনারের নাগরিকরা বার্মিজ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। তাদের কয়েক হাজার এর আগেই শরণার্থী হয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। সেই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ দেখা দিয়েছে। ফলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসতে চেষ্টা করে। এটা একটি বড় সমস্যা। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা মেনে নেয়া উচিত।


সেনাবাহিনী প্রসঙ্গ
গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ক্ষমতার নেপথ্যে ছিল সেনাবাহিনী। তারা সফল হয়েছে। দেশের জন্য ভাল হয়েছে। সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের আর কোন সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না। আমি সেনাবাহিনীর প্রায় সব শাখার কর্মকর্তাদের চিনি। আমি দেখি না সেনাবাহিনী, সেনাবাহিনী হিসেবে ক্ষমতা দখল করছে। কিন্তু বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ খুব জরুরি। তারা একে অন্যকে চেনেন। তারা একে অন্যের আত্মীয়। একের মোবাইলে আরেকজনের ফোন যায়। তারা আলোচনায় বসবেন বলে আমি আশাবাদী। আলামত দেখতে পাচ্ছি। আমি আশাবাদী, তারাই কৌশল বের করবেন কিভাবে সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা যায়। আজ হোক কাল হোক এ বিষয়ে একটি সমঝোতা হবে বলে আমি আশাবাদী। আমি মনে করি তারা এরই মধ্যে আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন।

Tuesday, July 3, 2012

অন্য রকম ভালবাসা

শাশুড়ির আদর পেতে এক ব্যক্তি তার ভায়রাকে হত্যা করেছে। এ ঘটনা ঘটেছে মুম্বইয়ে। তার সন্দেহ হয়েছিল, ওই ভায়রা শাশুড়িকে বেশি শ্রদ্ধা করেন এবং তার শাশুড়িও ওই জামাইকে বেশি আদর করেন। তাই তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয় বিনোদ সোনাভান। বিনোদ ও তার ভায়রা মনিশ শিন্ধে দু’জনেই অনেকটা বেশি এগিয়ে শাশুড়ি বিমলা যাদব (৪৮)কে ভালবেসে ফেলে। কিন্তু তাতে বিনোদ সোনাভান শান্তিতে থাকতে পারে না। সে মনে করে তার শাশুড়ি তাকে নয়, ভায়রা মনিশ শিন্ধেকে বেশি ভালবাসেন। এক পর্যায়ে উমারমালা রেলস্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয় মনিশের মৃতদেহ। এ ঘটনায় প্রধান আসামি করা হয় বিনোদ সোনাভানকে। সে বিয়ে করেছে মনিশের শ্যালিকাকে। এ ঘটনায় পুলিশ ইন্সপেক্টর অরুণ জাগতাপ একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করেন। তারা মনিশ সিন্ধের মোবাইল ফোন থেকে ডাটা সংগ্রহ করেন। সেই সূত্র ধরে পুলিশ বিনোদ সোনাভানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় সে কান্নায় ভেঙে পড়ে এবং হত্যার ঘটনা স্বীকার করে পুলিশের কাছে বিবৃতি দেয়। সে বলে, তার শাশুড়ি তার চেয়ে মনিশ সিন্ধেকে বেশি ভালবাসেন বলে তার সন্দেহ হয়। এতে তার মাঝে হিংসা জেগে ওঠে। এ থেকেই এক পর্যায়ে সে মনিশকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৩ই জুন সে মনিশ সিন্ধেকে ডেকে নেয় উমারমালা রেল স্টেশনে। সেখানে দু’বন্ধুর সহযোগিতায় সে হত্যা করে মনিশকে।

মশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় গ্রেপ্তার ৫৩

 মশার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ায় শ্রীলঙ্কায় ৫৩ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সমপ্রতি সেখানে ডেঙ্গুবিরোধী অভিযান শুরু হয়েছে। তাতে সেনা সদস্য, পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়োজিত করা হয়েছে। তাদের কাজ হলো যেখানে মশা প্রজনন ঘটায় সেসব স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রজনন বন্ধ করে দেয়া। আর এভাবে ক্রমবর্ধমান ডেঙ্গুজ্বরের প্রাদুর্ভাব কমিয়ে আনা যেতে পারে। রোববার রাজধানী কলম্বোতে ওইসব কর্মকর্তা-কর্মচারী, সেনা, পুলিশ সদস্যরা ১১ হাজার ৫০০ বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। এ সময় যেসব বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার পাওয়া যায়নি সেসব বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫৩ ব্যক্তিকে। শাস্তি হিসেবে তাদেরকে জরিমানা ও ৬ মাসের জেল দেয়া হতে পারে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। এতে বলা হয়েছে, শ্রীলঙ্কায় এ বছর ভয়াবহ আকারে ডেঙ্গুজ্বর ছড়িয়ে পড়েছে। এতে এরই মধ্যে মারা গেছেন কমপক্ষে ৭৪ ব্যক্তি। আক্রান্ত হয়েছে ১৫০০০। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, যেসব মানুষের বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার নয় সেখানে ডেঙ্গুজ্বরের প্রাদুর্ভাব বেশি। কারণ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ডেঙ্গুবাহী মশার প্রজনন হয়।

Sunday, July 1, 2012

বিধবা মানে অভিশাপ

‘বিধবা’ মানেই যন্ত্রণা। মনের মধ্যে একাকিত্বের দহন। একথা পৃথিবীর যে কোন দেশের নারীর জন্যই চিরন্তন সত্য। তবে যুগের কল্যাণে আজ বিশ্ব অনেকটা কুসংস্কারমুক্ত। বিধবারাও বিয়ে করে নতুন সংসার গোছানোর স্বপ্ন দেখতে পারেন। কিন্তু এখনও ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে বিধবা হওয়ার অর্থই যেন অভিশাপ বয়ে বেড়ানো। আজও কুসংস্কারে ছেয়ে রয়েছে ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ভারতে বিধবারা বরাবরই অবহেলিত। যদিও এখন ‘সহমরণ’ প্রথা প্রচলিত নেই। কিন্তু যে অভিশাপের জীবন বিধবারা আজও সেখানে বয়ে বেড়াচ্ছেন, তা সহমরণের তুলনায় কোন অংশে কম নয়। স্বামী মারা গেলে পুনরায় বিয়ে সেখানে প্রথাগতভাবে নিষিদ্ধ। সারা জীবন দারিদ্র্যের নিদারুণ কষাঘাতে জর্জরিত হতে হয় তাদের। সমাজ ও পরিবার-পরিজনদের কাছ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। কখনও অনাহারে, কখনওবা অর্ধাহারে জীবন কাটাতে হয়। ‘সিটি অব উইডোস’ বা বিধবাদের শহর বৃন্দাবন। উত্তরপ্রদেশের ‘পবিত্র শহর’ বলে পরিচিত বৃন্দাবন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও ওড়িশা থেকে ৩শ’ বছরেরও বেশি সময় ধরে পরিবার ও সমাজ থেকে বিতাড়িত ও পরিত্যক্ত বিধবারা জড়ো হচ্ছেন বৃন্দাবনে। প্রতি মুহূর্তে তাদের সইতে হয় অপমান, লাঞ্ছনা আর গঞ্জনা। তারা সেখানে বিভিন্ন মন্দিরে জোটবদ্ধ হয়ে বাস করেন। প্রথা অনুযায়ী, চরম উদাসীনতার শিকার এ নারীদের মোটা কাপড় ও সাদা থানের শাড়ি পরতে হয়। বৃন্দাবনে সাদা শাড়িতে বিধবাদের দেখতে পাওয়াটা অতি সাধারণ ব্যাপার। মন্দিরে পুজো করে তাদের সময় কাটে। একমুঠো খাবারের জন্য হাত পাততে হয়। বৃন্দাবনে উচ্চ-বর্ণের হিন্দুদের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। কোন কাজ না করেই তাদের সময় কাটে। পশ্চিমবঙ্গে এখনও বেশ কিছু পরিবার রয়েছে, যারা সনাতন প্রথা মেনে চলেন। বিধবাদের ‘অস্পৃশ্য’ হিসেবে গণ্য করা হয় সেখানে। স্বামী মারা গেলেই তাদের পরিত্যাগ করা হয়। বাকি জীবনটা পূজা-অর্চনা করে কাটাতে বাধ্য করা হয় তাদের। সৃষ্টিকর্তার আরাধনা ও সন্তুষ্টি লাভ তাদের জীবনের প্রধান উপলক্ষ হয়ে দাঁড়ায়। কখনও কখনও মাথা ন্যাড়া করে দেয়া হয় তাদের। বিধবা নারীদের বাহ্যিক সৌন্দর্য যাতে অন্য কোন পুরুষকে আকৃষ্ট করতে না পারে সেভাবেই থাকতে হয়। অল্প বয়সে স্বামী হারালেও প্রথামতে পুনরায় বিয়ে করা নিষিদ্ধ। কোন কোন স্থানে ভরণ-পোষণের দায় এড়াতে শ্বশুর বাড়ি থেকে স্বামীর মৃত্যুর পর তার বিধবা স্ত্রীকে পাঠিয়ে দেয়া হয় পিতা-মাতার বাড়িতে। ভারতে প্রায় ৪ কোটি বিধবা রয়েছেন, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। একই ভারতে রয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। কারণ, সেখানে নারীরা এগিয়ে
চলেছেন আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। সেই একই ভারতে গৃহকোণে বন্দি বিধবারা। সেখানে একাকিত্বই তাদের নিত্যসঙ্গী। যে কোন অলঙ্কার বা সাজ-সজ্জা তাদের জন্য নিষিদ্ধ। ধর্মীয় কোন অনুষ্ঠান ও বিয়েতে বিধবাদের উপস্থিতি এখনও অমঙ্গলসূচক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। মৃত্যুই একমাত্র নিষ্কৃতি পথ। প্রতিমুহূর্তে মৃত্যু কামনা করেন তারা।

শালীন পোশাক পরুন

নারীদের নানামুখী হয়রানি থেকে বাঁচতে তাদেরকে শালীন পোশাক পরার আহ্বান জানিয়েছে চীনের শাংহাই মেট্রো। কিন্তু তাদের এ আহ্বানের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে নারীরা। তারা বলেছে, ইচ্ছেমতো সেজে বাইরে বের হওয়ার অধিকার তাদেরও রয়েছে। মিউনিসিপ্যাল সাবওয়ে কর্তৃপক্ষ নারীদের প্রতি শালীন পোশাক পরার আহ্বান জানিয়ে বলেছিল, আঁটসাঁট পোশাক নিপীড়নকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তাই এ ধরনের পোশাক পরিহার করা উচিত। এর জবাবে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন নারীরা। তারা বিভিন্ন স্থানে ব্যানারও টানিয়ে দিয়েছেন। একটি ব্যানারে বলা হয়েছে, আমি যেমন খুশি তেমন পোশাক পরবো। কিন্তু তাই বলে কেউ আমাকে হয়রানি করতে পারবে না। কেউ কেউ আবার বলেছেন, ভারি কাপড় পরলেও নিপীড়নকারীদেরকে নিবৃত করা যাবে না। সাবওয়ে কর্তৃপক্ষের পরামর্শের প্রতিবাদে রোববার নারীরা নিজেদের মাথা ও মুখে কালো কাপড় বেঁধে মেট্রোর কম্পার্টমেন্ট এবং প্লাটফর্মে বিক্ষোভ করেছে। তবে মেট্রো কোম্পানির পক্ষে অনেকেই বলেছেন, নারীদের মঙ্গলের জন্যই এ ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়েছিল।

যৌন হয়রানির শিকার বৃটিশ সাংবাদিক

রোববার রাতে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত মিশরের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসির সমর্থকদের বিজয় উদযাপনের সময় ঐতিহাসিক তাহরির স্কোয়ারে ঘটে গেছে এক নিপীড়নের ঘটনা। আনন্দে আত্মহারা একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবকের লালসার শিকার হয়েছেন বৃটিশ নারী সাংবাদিক নাতাশা স্মিথ (২২)। ঐতিহাসিক এই বিজয়ের মুহূর্তে নাতাশা গিয়েছিলেন সেখানে উপস্থিত নারীদের অধিকার নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করতে। আর সেই সময় উচ্ছৃঙ্খল একদল যুবকের হাতে চরম যৌন নিপীড়নের শিকার হন উদ্যমী বৃটিশ সাংবাদিক নাতাশা। যুবকেরা তার সমস্ত কাপড় খুলে নেয়। ক্ষতবিক্ষত করে দেয় তার শরীর। এমনকি নাতাশার শরীরের আঙুল দিয়ে আঘাত করে তারা। আর এমন সঙ্কটময় মুহূর্তে দু’জন পুরুষের বদান্যতায় তাদের পোশাক পরে নিজেকে রক্ষা করেন আন্তর্জাতিক সাংবাদিকতায় মাস্টার্স করা নাতাশা। নিজের ব্লগে নাতাশা লিখেছেন, অনেকগুলো ব্যঙ্গ-বিদ্রূপকারী, কটাক্ষকারী ও অবিশ্বাসী মুখের সামনে পড়ে আমার অবস্থা ছিল- অনেকগুলো ক্ষুধার্ত সিংহের সামনে এক টুকরো তাজা মাংসের মতো। নাতাশা বলেছেন, হঠাৎ করে যেন আনন্দ উৎসবমুখর পরিবেশ আমার বিপক্ষে চলে গেল। তিনি আরও লিখেছেন, আমি অনুধাবন করতে পারছিলাম যেন আমি ব্রিজের শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি। জনতার মিছিল দীর্ঘায়িত হচ্ছিল। সবাই তাহরির স্কোয়ার থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছে। আমি এবং আমার বন্ধুরা ওই জায়গা ত্যাগ করার অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। হঠাৎ অনুভব করলাম বন্ধুদের হাত থেকে তারা আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। তারা শক্তি ও আগ্রাসন বৃদ্ধি করছে। আমি এমন একটা পরিস্থিতিতে পড়েছি ভাবতেই পারি না। মনে হচ্ছিল খুব শিগগিরই আমি মারা যেতে পারি। নাতাশা লিখেছেন, আমার মনে হয়েছিল সব মানুষ রক্তের জন্য পিপাসিত হয়েছিল। যারা রক্ত পান করে তৃষ্ণা মেটাতে চায়। পরে এক বন্ধু তাকে কোন মতে রক্ষা করতে সমর্থ হন। এবং সেখান থেকে অপরিচিত এক লোকের স্ত্রী হিসেবে তার সঙ্গে বেরিয়ে আসেন নাতাশা স্মিথ। পরে অন্য মহিলাদের কাছ থেকে তিনি জেনেছেন যে সেখানে গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল  নাতাশা বিদেশী গোয়েন্দা। তবে তার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় এমন একজন বিদেশী তরুণীর বিরুদ্ধে এভাবে হামলে পড়তে পারে ভিনদেশী যুবকের দল। তবে এই পরিস্থিতি তাকে দমাতে পারবে না বলে জানান উদ্যমী এই বৃটিশ। তিনি এর থেকে ভালো শিক্ষা নিয়ে আবারও ডকুমেন্টারি তৈরি করতে আসবেন বলে জানিয়েছেন ডেইলি মেইলকে। কেননা, আরব ও ওয়েস্টার্ন সব নারীরাই ভুক্তভোগী। এসব বিষয় বন্ধ করতে হবে।