ওমান থেকে নিঃস্ব হয়ে ফিরছেন ২০ বাংলাদেশী
জীবনকে নতুন করে সাজানোর স্বপ্ন নিয়ে ওমানে পাড়ি জমানো
কয়েকজন বাংলাদেশী দেশে ফিরছেন নিঃস্ব হয়ে। তাদের সংখ্যা প্রায় ২০। গত ৫
মাস তারা বেতনভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন। তারা দেশী
প্রবাসীদের কাছ থেকে, আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধার করে কোনমতে বেঁচে আছেন। এ
অবস্থায় দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় একটি রিপোর্ট প্রকাশ হয়। এরপরই ওমানে
অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করে। তাদের হস্তক্ষেপে
নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ওইসব বাংলাদেশীকে দেশে ফেরত পাঠাতে রাজি হয়। গতকাল
অনলাইন টাইমস অব ওমান এ খবর দিয়েছে। এতে বলা হয়, ওমানের আদম এলাকায় বিভিন্ন
বাণিজ্যিক ও নির্মাণ কোম্পানিতে কাজ করছিলেন। কিন্তু তাদের বেতনভাগা দেয়া
হচ্ছিল না। অন্য সুবিধা তো পরের কথা। ওমানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের এক
সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, আটকে পড়া ওইসব বাংলাদেশী সোমবার তাদের কাছে যান।
তারা জানান, ৫ মাস ধরে তারা বেতনভাতা পাচ্ছেন না। এতে তাদের সঙ্গে
নিয়োগকারীরা যে চুক্তি করেছিল তা লঙ্ঘিত হচ্ছে। তিনি বলেন, বারবার অনুরোধের
প্রেক্ষিতে আমরা তাদেরকে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করি। এরপরই
তারা ওই বাংলাদেশীদের ফেরত পাঠাতে রাজি হয়। ওদিকে বাংলাদেশী ওই শ্রমিকরা
বলেছেন, তাদেরকে চুক্তি অনুযায়ী কাজ দেয়া হয়নি। তাদেরকে ভাল খাবার দেয়া
হয়নি। থাকতে দেয়া হয়েছে নোংরা স্থানে। তাদেরই একজন ওমর মিয়া। তিনি বলেন,
আমরা দালালদের বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে ওমানে এসেছি। কিন্তু এখানে পৌঁছে
বুঝতে পারি, আমরা ফাঁদে পড়েছি। আমাদের জন্য কোন কাজ ছিল না। ঠিকমতো থাকতে,
খাবার দিতে পারতো না। তিনি আরও বলেন, দু’-এক মাস পরে আমাদের ২৭ জনের ভিতর
থেকে ৮ জনকে পেট্রোলিয়াম ডেভেলপমেন্ট ওমানে চাকরি দেয়া হয়েছে। আমাদের
নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে পেট্রোলিয়াম ডেভেলপমেন্ট ওমান আমাদের বেতন
পরিশোধ করলেও তারা তা পরিশোধ করতো না আমাদের কাছে। বাংলাদেশী দালাল আমাদের
থেকে সরে পড়ে। এতে আমাদের জীবন দুঃসহ হয়ে পড়ে। আমাদেরকে এখন দেশে ফেরত
পাঠানো হলে জীবন কঠিন সংগ্রামের মধ্যে পড়বে। আমরা তো দারিদ্র্য তাড়ানোর
জন্য অনেক স্বপ্ন বুকে ধরে দূরের দেশ ওমানে এসেছিলাম। কিন্তু তাতে আমাদের
দারিদ্র্য আরও গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে।
বাংলাদেশীর হাতে বাংলাদেশী খুন
ওমানের
মাস্কটে নিয়োগকারীকে খুন করেছে এক বাংলাদেশী দর্জি। দুজনই বাংলাদেশী
নাগরিক। গতকাল এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ওমান। এতে বলা হয়,
কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে নিয়োগকারীকে দেশটির শিনাস এলাকায় খুন করে ওই
অধীনস্ত দর্জি। মালিককে খুন করে ওই দর্জি পালিয়েছে। সোমবার এ ঘটনা ঘটে। এতে
আরও বলা হয়, দোকানের ভিতরেই ওই দর্জি তার মালিককে কাঁচি দিয়ে তিনবার আঘাত
করে। এতে তিনি মারাত্মক আহত হন। হাসপাতালে নেয়ার পথেই মারা যান তিনি। পুলিশ
বলেছে, মালিককে খুন করার পরই ওই বাংলাদেশী দর্জি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছে।
তবে তাকে ধরার জন্য পুলিশ স্থানীয় অন্য নিরাপত্তা সংস্থার সহায়তা নিয়ে
অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
No comments:
Post a Comment