Sunday, June 17, 2012

এইচআইভি থেকে মুক্তি!

এইচআইভি বা এইডস এখনও বিশ্বের কাছে মরণব্যাধি হিসেবে পরিচিত। এখনও বিশ্বের শীর্ষ বিজ্ঞানীরা এ ভাইরাস বা রোগের প্রতিষেধক বা প্রতিরোধের উপায় নিয়ে নিরন্তর কাজ করছেন। কিন্তু কারও এইচআইভি বা এইডস সেরেছে বা কোন রোগী সুস্থ হয়েছেন এমন খবর সম্ভবত শোনা যায়নি। তবে টিমোথি রে ব্রাউন আস্তে আস্তে ভাল হয়ে উঠছেন। তিনি স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরে এসেছেন। এ নিয়ে চারদিকে কৌতূহলের অন্ত নেই। টিমোথির বাড়ি জার্মানির বার্লিনে। তিনি বার্লিন প্যাসেন্ট বা বার্লিনের রোগী হিসেবে এরই মধ্যে পরিচিতি পেয়েছেন। তিনি যে সুস্থ হয়ে উঠছেন- এ ঘটনা বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম। এর আগে কোনদিন এমনটা শোনা যায়নি। টিমোথির বয়স এখন ৪৫ বছর। লিউকেমিয়া চিকিৎসায় ২০০৭ ও ২০০৮ সালে বার্লিনে দু’বার তার অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা হয়। তবে অস্থিমজ্জার সঙ্গে এইচআইভি’র সংক্রমণের কোন সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হতো না। তার দেহে ওই প্রতিস্থাপনের সময় যে রক্তকোষ দেয়া হয়েছিল তা এসেছিল এক দাতার কাছ থেকে। ওই রক্তকোষই তার দেহে এইচআইভির বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে। এতে বলা হয়েছে, ওই যে অস্থিমজ্জার প্রতিস্থাপন করা হয়েছে এতে ব্যবহৃত প্রক্রিয়া এইচআইভি সংক্রমণকে দূরে হটিয়ে দিয়েছে। কিছুদিন পর তার পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তার দেহে এইচআইভি অদৃশ্য হয়ে গেছে। ফলে তিনি আর এইচআইভির জন্য ওষুধও সেবন করছেন না। কিন্তু গত সপ্তাহে স্পেন থেকে উত্থাপিত এক ডাটায় প্রশ্ন তোলা হয়েছে, কোন কোন টিস্যুতে এইচআইভির উপস্থিতি রয়ে গেছে কিনা তা নিয়ে। এসব গবেষণার জন্য টিমোথির রক্ত, দেহের বর্ণহীন রসবিশেষ, মেরুদণ্ডের তরল এবং অন্ত্র থেকে সংগৃহীত প্রায় ৯০০ কোটি কোষ নিয়ে বিশ্লেষণ করেন। এসব উপকরণ নিয়ে চারটি ল্যাবরেটরিতে গবেষণা হয়। কিন্তু কোথাও টিমোথি ব্রাউনের রক্তকোষে এইচআইভি’র উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। কিন্তু রক্তরস থেকে দুটি এবং অন্ত্রকোষ থেকে সংগৃহীত একটি নমুনা নিয়ে গবেষণা করে গবেষকরা বলছেন, তার দেহে এইচআইভির জিন রয়ে যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটা একটি ভুল পরীক্ষা হতে পারে। যে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়েছে সেখানেই আগে থেকে সংক্রমণ থেকে যেতে পারে। পরের পরীক্ষায় যে এইচআইভির উপস্থিতির কথা বলা হচ্ছে তা টিমোথির অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের আগের এইচআইভির অরিজিনের সঙ্গে মেলে না। ফলে যে ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছে সেখানেই ভিন্ন কোন ব্যক্তি থেকে সংক্রমণ থাকতে পারে। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে গবেষকরা লিখেছেন, কোন কোন ল্যাবরেটরিতে যে গবেষণা করা হয়েছে এবং বলা হচ্ছে এইচআইভি থাকার কথা তা অসম্ভাব্য বিষয়। টিমোথির দেহে আর এইচআইভি ভাইরাস নেই এমনটা দেখতে পান সান দিয়েগোতে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ড. ডগলাস রিচম্যান। তিনিও বলেন, যে ল্যাবরেটরির পরীক্ষায় টিমোথির দেহে এইচআইভি ভাইরাস থাকার কথা বলা হচ্ছে, সেই ল্যাবরেটরিতেই সংক্রমণ ছিল। তবে সান ফ্রান্সিসকোর ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার যেসব বিজ্ঞানী টিমোথির ওপর ঘনিষ্ঠ নজর রেখেছেন তারা প্রকাশ্যে কোন মন্তব্য করতে রাজি নন।

1 comment: