Tuesday, September 4, 2012

কুয়েতে বাজিমাত করলেন সিলেটের আবদুল হক

১৬ হাজারের বেশি প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে কুয়েতে বাজিমাত করেছেন সিলেটের আলী রেজা আবদুল হক (৩০)। সেখানে কুয়েত টাইমস রমজান কুইজ ড্রতে তিনি জিতে নিয়েছেন প্রথম পুরস্কার। আর তা হলো- দু’জনের লন্ডন সফর। শুধু তাই নয়। তিনি আরও পেয়েছেন খ্যাতনামাদের অটোগ্রাফযুক্ত দু’টি ঘড়ি, ক্রাউন প্লাজা হোটেলে দু’রাত অবস্থানের সুযোগ, একটি মোবাইল ফোন ও ক্রাউন প্লাজা হোটেলের একটি গিফট ভাউচার। কুয়েত চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ক্লিনার বা পরিচ্ছন্নকর্মী আবদুল হক এ পুরস্কার জিতে আনন্দে আত্মহারা। গতকাল কুয়েত টাইমসের প্রথম পৃষ্ঠায় তার ছবিসহ এ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়, আবদুল হক ১২ বছর ধরে কুয়েতে অবস্থান করছেন। পুরস্কার জিতে আবদুল হক বলেন, প্রথম পুরস্কার জিতবো ভাবতেই পারিনি। তা যখন পেয়েই গিয়েছি আনন্দ আর রাখতে পারছি না। কুয়েত টাইমস রমজান কুইজ নামে একটি কুইজ চালু করেছিল। তাতে দ্বিতীয়বারের মতো অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এর আগে গত বছরও তিনি এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু সফলতা আসেনি। বৃহস্পতিবার রাতে কুয়েতের সুইমিংপুল কমপ্লেক্সে দর্শক শ্রোতাদের উপস্থিতিতে ওই কুইজের র‌্যাফেল ড্র হয়। এতে প্রথম তিনজনকে দেয়া হয় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরষ্কার। এছাড়া ৫০ জনকে দেয়া হয় সান্ত্বনা সূচক মূল্যবান পুরস্কার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্তকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন ইতিহাদ এয়ারওয়েজের জেনারেল ম্যানেজার নাবিল মাতারওয়ে। কুয়েত টাইমস জানায়, আলী রেজা আবদুল হক বিবাহিত। রোববার তিনি পুরস্কার হাতে পেয়ে বললেন, আমি এবার অনেক পুরস্কার পেয়েছি। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অপেক্ষা করছি সংসারটাকে সুন্দর করে সাজানোর জন্য। সংসার একটি গুরুদায়িত্ব। তাই আমি লন্ডন সফরের জন্য যে বিমান টিকিট পেয়েছি তা বিক্রি করে দিয়ে সংসারটাকে ভালভাবে চালাতে পারবো। রিপোর্টে বলা হয়, আবদুল হকের অফিসে রাখা হতো কুয়েত টাইমস পত্রিকা। সেখানে যে পৃষ্ঠায় কুইজ দেয়া হতো তিনি তা কেটে নিয়ে যেতেন বাসায়। তারপর তা পূরণ করে পাঠিয়ে দিতেন সংশ্লিষ্ট ঠিকানায়। কিন্তু তাতে প্রশ্নগুলো খুব সহজ ছিল না। তিনি বলেন, প্রশ্নগুলো ছিল কনফিউজ করে দেয়ার মতো। আমি সবগুলোর উত্তর দিয়েছি অনেক ভেবেচিন্তু।  এ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন আবদুল্লাহ ইসা (৫৩) নামে এক ব্যক্তি। তিনি পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন একটি নাইকন ক্যামেরা, একটি এলজি চকোলেট মোবাইল ফোন, একটি এলিসি ঘড়ি, ক্রাউন প্লাজা হোটেলে দু’রাত অবস্থানের সুযোগ, একটি স্মার্ট টেলিভিশন, আরডেকো মডেলের একটি মেকআপ সেট ও রুবিতে লাঞ্চ-ডিনারের ভাউচার। তিনি পাঁচ বছর আগে খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। পুরস্কার পাওয়ার পর তার প্রতিক্রিয়া- আমি সত্যের পথে এসেছি। তাই আল্লাহ আমাকে পুরস্কৃত করেছেন। আগে আমি বাইবেল পড়ে যে তৃপ্তি পেতাম এখন পবিত্র কোরান তেলাওয়াত করে তার চেয়ে বেশি প্রশান্তি পাই। সম্ভবত এটাই আমার জন্য বড় উপহার। এখন আমি আমার পরিবার ও বন্ধুদের কাছে এই দাওয়াত পৌঁছে দিতে চাই। আবদুল্লাহ ইসার বাড়ি ভারতের চেন্নাইয়ে। তিনি কুয়েতে টয়োটা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করেন। তৃতীয় পুরস্কার জিতেছেন মিশরের সামি নাদি আল সায়েদ (২৪)। তিনি একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে ব্রোকারের চাকরি করেন। তিনি পেয়েছেন একটি এলজি চকোলেট মোবাইল ফোন, কারলো কারদিনি মডেলের ঘড়ি, ক্রাউন প্লাজা হোটেলে দু’রাত অবস্থানের সুযোগ, একটি ডিই ১০০০ ডিকশনারি, একটি নাইকন ক্যামেরা, একটি স্মার্ট টিভি, একটি ডেক্সন ডিভিডি প্লেয়ার।

No comments:

Post a Comment